নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিকাফ ও লাইলাতুল কদরসহ রমজানের শেষ দশকের উল্লেখযোগ্য আমল

০৪ ঠা মে, ২০২১ সকাল ১০:৫১

ছবিঃ অন্তর্জাল।

ইতিকাফ ও লাইলাতুল কদরসহ রমজানের শেষ দশকের উল্লেখযোগ্য আমল

দেখতে দেখতে মাহে রমজানের শেষ দশকে এসে পড়েছি আমরা। আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নেয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে পবিত্র মাহে রমজান। সৌভাগ্যবান লোকেরা এ মাসে আঁচল ভরে পাথেয় সংগ্রহ করছেন আর অন্ধকারের অলি-গলিতে উদ্ভ্রান্তের মত ঘুরে বেড়াচ্ছেন হতভাগ্যগণ। রহমতের বারিধারায় সিক্ত হননি যারা, তারা বুঝবেন কিভাবে এর স্বাদ, পুলক এবং শিহরণ? কল্যাণের, রহমতের, দয়ার, ক্ষমার, নাজাতের সেই বারি বর্ষণ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বন্ধ হয়ে যায়নি তাওবার দরজা। ফিরে আসার পথ এখনও উম্মুক্ত। করুনার বারিবর্ষনে উর্বর হয়ে উঠছে এখনও কতই না জমিন! করুনা আর ক্ষমার আরও বশি সুযোগ নিয়ে মাহে রমজানের শেষ দশক আমাদের মাঝে সমাগত। ক্ষুদ্র নিবন্ধে দেখার চেষ্টা করবো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের জন্য মাহে রমজানের শেষ দশকে কী কী উপহার সাজিয়ে রেখেছেন এবং আলোচনা করতে সচেষ্ট হব- আমরা কীভাবে তা সংগ্রহ করে নিজেদের পূণ্যের ঝোলাকে ভরে নিতে পারি-

প্রিয় পাঠক, আসুন, আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার দেয়া উপহারগুলো দু'হাত ভরে কুড়িয়ে রমজানকে আরও অর্থবহ করে তুলি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের তাওফিক দান করুন।

এক. নবীজী শেষ দশকে সারা রাত জেগে ইবাদত করতেনঃ

রমজানের শেষ দশকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রী-পরিবার সহ সারা রাত জেগে ইবাদত করতেন:

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন:

إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ شَدَّ مِئْزَرَهُ ، وَأَحْيَا لَيْلَهُ ، وَأَيْقَظَ أَهْلَهُ

“রমজানের শেষ দশক প্রবেশ করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোমর বেঁধে নিতেন, নিজে সারা রাত জাগতেন এবং পরিবারকেও জাগাতেন।”

কোমর বাঁধার অর্থ হল: পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে চেষ্টা-সাধনায় লিপ্ত হওয়া। কোন কোন আলেম এর ব্যাখ্যায় বলেন: স্ত্রী সহবাস থেকে দূরে থাকা।

দুই. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাযানে শেষ দশকে যত বেশি পরিশ্রম করতেন অন্য কখনো করতেন না:

আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন:

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَجْتَهِدُ فِى الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مَا لاَ يَجْتَهِدُ فِى غَيْرِهِ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাযানের শেষ দশকে (ইবাদত-বন্দেগীতে) যে পরিমাণ পরিশ্রম করতেন অন্য কখনো করতেন না।”

শবে কদর

১) শবে কদরে কুরআন অবর্তীণ হয়েছে:

আল্লাহ তায়ালা বলেন:

إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ

“আমি একে (কুরআন) অবর্তীণ করেছি শবে কদরে।” -সূরা কাদর: ১

২) শবে কদর এক হাজার মাসের চেয়েও উত্তম:

আল্লাহ বলেন:

لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ

“শবে কদর এক হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।”(সূরা কাদর: ৩)

৩) বরকতময় রাতঃ

আল্লাহ তায়ালা শবে কদরকে বরকতময় রাত বলে উল্লেখ করেছেন:

আল্লাহ তায়ালা বলেন:

إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ

“নিশ্চয় আমি ইহা (কুরআন)কে অবর্তীণ করেছি একটি বরকতময় রাতে।” (সূরা দুখান: ৩) (আর এ রাত হল শবে কদর।)

৪) গুনাহ মোচন হয়ে যায়ঃ

শবে কদরে রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী করলে পূর্বের সকল ছোট গুনাহ মোচন হয়ে যায়:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সোয়াবের আশায় শবে কদরে রাত জাগরণ করে নফল নামায ও ইবাদত বন্দেগী করবে তার পূর্বের সকল (ছোট) গুনাহ মোচন করে দেয়া হবে।”

শবে কদর কখন হবে?

শবে কদর হবে রামাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে:

ক) আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

« تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِى الْوِتْرِ مِنَ الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ »

“তোমরা রামাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর অনুসন্ধান কর।”

খ) আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

« أُرِيتُ لَيْلَةَ الْقَدْرِ ثُمَّ أَيْقَظَنِى بَعْضُ أَهْلِى فَنُسِّيتُهَا فَالْتَمِسُوهَا فِى الْعَشْرِ الْغَوَابِرِ

স্বপ্নে আমাকে লাইলাতুল ক্বদ্‌র দেখানো হল। কিন্তু আমার এক স্ত্রী আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়ায় আমি তা ভুলে গিয়েছি। অতএব, তোমরা তা রামাযানের শেষ দশকে অনুসন্ধান কর।”

কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে, দু ব্যক্তির বিবাদের কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা ভুলে গেছেন।

গ) শবে কদর কি শুধু রামাযানের সাতাইশ রাতের জন্য নির্দিষ্ট?

আমাদের দেশে সাধারণত: মানুষ শুধু রামাযানের সাতাইশ তারিখে রাত জেগে ইবাদত বন্দেগী করে এবং ধারণা করে এ রাতেই শবে কদর অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এ ধারণা, সুন্নতের সাথে সঙ্গতীপূর্ণ নয়। কারণ, আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

« تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِى الْوِتْرِ مِنَ الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ

“তোমরা রামাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিগুলোতে লাইলাতুল ক্বদর অনুসন্ধান কর।”

আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

« أُرِيتُ لَيْلَةَ الْقَدْرِ ثُمَّ أَيْقَظَنِى بَعْضُ أَهْلِى فَنُسِّيتُهَا فَالْتَمِسُوهَا فِى الْعَشْرِ الْغَوَابِرِ »

স্বপ্নে আমাকে লাইলাতুল ক্বদ্‌র দেখানো হল। কিন্তু আমার এক স্ত্রী আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়ায় আমি তা ভুলে গিয়েছি। অতএব, তোমরা তা রামাযানের শেষ দশকে অনুসন্ধান কর।”

ঘ) তবে শেষ সাত দিনের বেজড় রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি:

যেমন, নিম্নোক্ত হাদীসটি:

ابْنِ عُمَرَ – رضى الله عنهما – أَنَّ رِجَالاً مِنْ أَصْحَابِ النَّبِىِّ – صلى الله عليه وسلم – أُرُوا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِى الْمَنَامِ فِى السَّبْعِ الأَوَاخِرِ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صلى الله عليه وسلم – « أَرَى رُؤْيَاكُمْ قَدْ تَوَاطَأَتْ فِى السَّبْعِ الأَوَاخِرِ ، فَمَنْ كَانَ مُتَحَرِّيَهَا فَلْيَتَحَرَّهَا فِى السَّبْعِ الأَوَاخِرِ »

ইবনে উমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত যে, কয়েকজন সাহাবী রামা যানের শেষ সাত রাত্রিতে স্বপ্ন মারফত শবে কদর হতে দেখেছেন। সাহাবীদের এ স্বপ্নের কথা জানতে পেরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমি দেখছি তোমাদের স্বপ্নগুলো মিলে যাচ্ছে শেষ সাত রাত্রিতে। অত:এব কেউ চাইলে শেষ সাত রাত্রিতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করতে পারে।” -সহীহ বুখারী ও মুসলিম এ মর্মে আরও হাদীস রয়েছে।

কোন কোন সালাফে-সালেহীন সাতাশ রাত শবে কদর হওয়ার অধিক সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ করেছেন। সাহাবীগণের মধ্যে ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু, মুআবিয়া, উবাই ইবনে কা’ব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা এর মতামত থেকে এটাই বুঝা যায়।

কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এভাবে নির্দিষ্টকরে লাইলাতুল কদর হওয়ার কোন হাদীস নাই। তাই উপরোক্ত সাহবীদের কথার উপর ভিত্তি করে বড় জোর সাতাইশে রাতে শবে কদর হওয়াকে অধিক সম্ভাবনাময় বলা যেতে পারে। নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। সঠিক কথা হল, শবে কদর কখনো ২১, কখনো ২৩, কখনো ২৫, কখনো ২৭ আবার কখনো ২৯ রাতে হতে পারে।

সুতরাং শুধু সাতাইশ তারিখ নয় বরং কোন ব্যক্তি যদি রামাযানের শেষ দশকের উপরোক্ত পাঁচটি রাত জাগ্রত হয়ে ইবাদত-বন্দেগী করে তবে নিশ্চিতভাবে শবে কদর পাবে। কিন্তু শুধু সাতাইশ রাত জাগলে শবে কদর পাবে তার কোন নিশ্চয়তা নাই। বরং অন্যান্য রাত বাদ দিয়ে শুধু সাতাইশ রাত উদযাপন করা বিদআতের অন্তর্ভূক্ত। বিশেষ করে আমাদের দেশে যেভাবে শুধু সাতাইশ তারিখ নির্দিষ্ট করে নেয়া হয়েছে সেটা বিদআত ছাড়া অন্য কিছু নয়। তাই বিদআত বর্জন করে সুন্নতী পন্থায় আমল করা আমাদের জন্য অপরিহার্য।

ঙ) শবে কদরের বিশেষ দুয়া:

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যদি জানতে পারি যে, কোন রাতটি লাইলাতুল কদর তাহলে তখন কোন দুয়াটি পাঠ করব? তিনি বললেন, তুমি বল:

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّى

“হে আল্লাহ, আপনি মহানুভব ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করা পছন্দ করেন। অত:এব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।” -তিরমিযী, অনুচ্ছেদ, কোন দুয়াটি শ্রেষ্ঠ। তিনি বলেন: হাদীসটি হাসান, সহীহ

ইতিকাফ

ক) রামাযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত:

আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা হতে বর্ণিত। আল্লাহ তায়ালা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে মৃত্যু দেয়া পর্যন্ত রামাযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। তাঁর ওফাতের পর তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন।” -সহীহ বুখারী

আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রামাযানে দশ দিন ইতিকাফ করতেন। এক বছর সফরে যাওয়ায় ইতিকাফ করতে পারেন নি। তাই যে বছর তিনি ইন্তিকাল করেন সে বছর বিশ দিন ইতিকাফ করেন ।

খ) ইতিকাফ সংক্রান্ত ভুল ধারণা:

আমাদের দেশে মনে করা হয় যে সমাজের পক্ষ থেকে এক ব্যক্তিকে অবশ্যই ইতিকাফে বসতে হবে তা না হলে সবাই গুনাহগার হবে। কিন্তু এ ধারণা মোটেই ঠিক নয়। কারণ, ইতিকাফ হল একটি সুন্নত ইবদাত। যে কোন মুসলমান তা পালন করতে পারে। যে ব্যক্তি তা পালন করবে সে অগণিত সোওয়াবের অধিকারী হবে। সবার পক্ষ থেকে একজনকে ইতিকাফে বসতেই হবে এমন কোন কথা শরীয়তে নেই।

আল্লাহ তাআলা সকল ক্ষেত্রে তার নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নতকে যথাযথভাবে পালন করার তাওফীক দান করুন এবং সকল বিদআত ও সুন্নত বিরোধী কার্যকলাপ থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মে, ২০২১ সকাল ১০:৫৭

জটিল ভাই বলেছেন: ছুম্মা আমিন।

০৪ ঠা মে, ২০২১ দুপুর ২:৪৫

নতুন নকিব বলেছেন:



আমিন। শুকরিয়া।

২| ০৪ ঠা মে, ২০২১ সকাল ১১:৫১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আল্লাহ তাআলা সকল ক্ষেত্রে তার নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নতকে যথাযথভাবে পালন করার তাওফীক দান করুন এবং সকল বিদআত ও সুন্নত বিরোধী কার্যকলাপ থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

০৪ ঠা মে, ২০২১ দুপুর ২:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



আমিন। আপনার প্রার্থনা কবুল করুন মহান আল্লাহ তাআ'লা।

কৃতজ্ঞতা।

৩| ০৪ ঠা মে, ২০২১ সকাল ১১:৫৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: শুভ কামনা রইলো ।

০৪ ঠা মে, ২০২১ দুপুর ২:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, শুকরিয়া। আপনার জন্যও শুভকামনা।

৪| ০৪ ঠা মে, ২০২১ দুপুর ১২:৪৫

রানার ব্লগ বলেছেন: ইতিকাফ ও মৌনব্রত্য পালনের মধ্যে তফাত টা কি ?

০৪ ঠা মে, ২০২১ দুপুর ২:৫১

নতুন নকিব বলেছেন:



ইতেকাফ তো বুঝি এবং জানি। ইতেকাফে কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, তাসবিহ পাঠ, দুআ মুনাজাত, দরূদ সালাম ইত্যাদি ইবাদতে সময়কে কাজে লাগানো হয়। এসবের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলারও অনুমতি রয়েছে ইতেকাফ অবস্থায়।

কিন্তু মৌনব্রতটাও কি এমন? এ সম্মন্ধে আমার একটু জানতে হবে। আপনার জানা থাকলে আশা করি জানাবেন। তাহলে পার্থক্যটা বুঝতে পারবো। ধন্যবাদ।

৫| ০৪ ঠা মে, ২০২১ বিকাল ৪:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: জীবনে আমি কোনো আমল করলাম না। মনে হয় শেষ বয়সে এজন্য আমাকে আফসোশ করতে হবে।

০৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:১০

নতুন নকিব বলেছেন:



হয়তো।

ধন্যবাদ।

৬| ০৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:১৫

রানার ব্লগ বলেছেন: একই জিনিস আমরা মুসলমানরা কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, তাসবিহ পাঠ, দুআ মুনাজাত, দরূদ সালাম করি ,

হিন্দুরা ওই গিতা পাঠ, পুজা, তসবিহ, দোয়া ও প্রার্থনা এই গুলাই করে। এবং মুখ বন্ধ রাখে। কারো সাথে কথা বলে না অতি প্রয়জনে আকার ইঙ্গিতের আশ্রয় নেয়।

০৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:৫৫

নতুন নকিব বলেছেন:



ইতেকাফ এবং মৌনব্রত পালনের কিছু বিষয় মিলে গেলেও তফাত তো কিছু রয়েছেই। যেমন-

১। ইতেকাফ নির্ধারিত স্থান অর্থাৎ, মসজিদে অবস্থান করেই পালন করতে হয়। মহিলাদের জন্য বাসা বাড়িতে ইতেকাফ করার অনুমোদন রয়েছে।

পক্ষান্তরে মৌনব্রতের ক্ষেত্রেও কি একই নিয়ম?

২। ইতেকাফ অবস্থায় কথাবার্তা বলা যায়েজ।

পক্ষান্তরে মৌনব্রতের ক্ষেত্রে আপনি জানালেন যে, মুখ বন্ধ রাখতে হয় এবং কথা বলে না অতি প্রয়জনে আকার ইঙ্গিতের আশ্রয় নেয়।

৩। ইতেকাফে কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, তাসবিহ পাঠ, দুআ মুনাজাত, দরূদ সালাম ইত্যাদি ইবাদতে সময়কে কাজে লাগানো হয়।

পক্ষান্তরে মৌনব্রতের ক্ষেত্রে হয়তো গিতা পাঠ, পুজা অর্চনা ও প্রার্থনা ইত্যাদি করা হয়ে থাকে।

এ ছাড়া আরও পার্থক্য থেকে থাকতে পারে। এ বিষয়ে আমার জ্ঞান সীমিত।

ভালো থাকার প্রার্থনা। ধন্যবাদ।

৭| ০৫ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:১৫

রানার ব্লগ বলেছেন: আমার জানা মতে মৌনব্রত পালনে নিদৃষ্ট জায়গা নেই, একজন মৌনব্রত ধারন করলে সে তার সৃষ্টিকর্তার আরাধোনা করতে পারে যেকন জায়গায়।

ইতিকাফে কথা বলা যায় ?? আমি যতোদুর জানি যায় না। অতি প্রয়জনে কাগজে লিখে দিতে পারে বা আকার ইঙ্গিতের সাহায্য নিতে পারে।

মৌনব্রতে খাওয়া দাওয়া নিয়েও কিছু বিদি নিষেধ আছে মনে হয়

০৬ ই মে, ২০২১ সকাল ৯:৫৫

নতুন নকিব বলেছেন:



ইতিকাফে কথা বলা যায় ?? আমি যতোদুর জানি যায় না। অতি প্রয়জনে কাগজে লিখে দিতে পারে বা আকার ইঙ্গিতের সাহায্য নিতে পারে।

-ইতিকাফ অবস্থায় অতি প্রয়োজনীয় কোন কথা মোবাইল যোগে কিংবা কোন আগন্তুক ব্যক্তির সাথে বলা যায়। রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইতিকাফ অবস্থায় দু’জন আগন্তুক ব্যক্তির সাথে প্রয়োজনীয় কথা বলেছিলেন। হাদিসের মূল আরবি-

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ صَفِيَّةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا جَاءَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَزُورُهُ فِي اعْتِكَافِهِ فِي الْمَسْجِدِ، فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ، فَتَحَدَّثَتْ عِنْدَهُ سَاعَةً، ثُمَّ قَامَتْ تَنْقَلِبُ، فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَعَهَا يَقْلِبُهَا، حَتَّى إِذَا بَلَغَتْ باب الْمَسْجِدِ عِنْدَ باب أُمِّ سَلَمَةَ مَرَّ رَجُلاَنِ مِنَ الأَنْصَارِ، فَسَلَّمَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهُمَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ عَلَى رِسْلِكُمَا إِنَّمَا هِيَ صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَىٍّ ‏"‏‏.‏ فَقَالاَ سُبْحَانَ اللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ وَكَبُرَ عَلَيْهِمَا‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَبْلُغُ مِنَ الإِنْسَانِ مَبْلَغَ الدَّمِ، وَإِنِّي خَشِيتُ أَنْ يَقْذِفَ فِي قُلُوبِكُمَا شَيْئًا ‏"‏‏.

আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... নবী-সহধর্মিনী সাফিয়্যা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, একবার তিনি রমযানের শেষ দশকে মসজিদে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফরত ছিলেন। তিনি তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। তারপর ফিরে যাবার জন্য উঠে দাঁড়ান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে পৌছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়ালেন। যখন তিনি (উম্মুল মুমিনীন) উম্মে সালমা (রাঃ) এর গৃহ সংলগ্ন মসজিদের দরজা পর্যন্ত পৌছলেন, তখন দুজন আনসারী সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁরা উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাম করলেন। তাঁদের দুজনকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা দুজন থাম। ইনি তো (আমার স্ত্রী) সাফিয়্যা বিনত হুযায়্যী। এতে তাঁরা দু’জনে সুবহানাল্লাহ ইয়া রাসূলাল্লাহ বলে উঠলেন এবং তাঁরা বিব্রত বোধ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ শয়তান মানুষের রক্ত শিরায় চলাচল করে। আমি আশংকা করলাম যে, সে তোমাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করতে পারে। -সহিহ বুখারী হা/২০৩৫; সহিহ মুসলিম হা/২১৭৫

একই বিষয় একটু ভিন্ন কথায় অন্য হাদিসে এসেছে-

حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ صَفِيَّةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ‏.‏ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَسْجِدِ، وَعِنْدَهُ أَزْوَاجُهُ، فَرُحْنَ، فَقَالَ لِصَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَىٍّ ‏"‏ لاَ تَعْجَلِي حَتَّى أَنْصَرِفَ مَعَكِ ‏"‏‏.‏ وَكَانَ بَيْتُهَا فِي دَارِ أُسَامَةَ، فَخَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَعَهَا، فَلَقِيَهُ رَجُلاَنِ مِنَ الأَنْصَارِ، فَنَظَرَا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ أَجَازَا وَقَالَ لَهُمَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ تَعَالَيَا، إِنَّهَا صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَىٍّ ‏"‏‏.‏ قَالاَ سُبْحَانَ اللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ قَالَ ‏"‏ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَجْرِي مِنَ الإِنْسَانِ مَجْرَى الدَّمِ، وَإِنِّي خَشِيتُ أَنْ يُلْقِيَ فِي أَنْفُسِكُمَا شَيْئًا

সা‘ঈদ ইবনু ‘উফফার (রহঃ) ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... আলী ইবনু হুসাইন (রহঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিণী সাফিয়্যা (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ইতিকাফ অবস্থায়) মসজিদে অবস্থান করছিলেন, ঐ সময়ে তাঁর নিকট সহধর্মিণীগণ উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা যাওয়ার জন্য রওয়ানা হন। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাফিয়্যা বিনতে হুয়ায়্যীকে বললেনঃ তুমি তাড়াতাড়ি করো না। আমি তোমার সাথে যাব। তাঁর [সাফিয়্যা (রাঃ)] এর ঘর ছিল উসামার বাড়ীতে। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে সঙ্গে করে বের হলেন। এমতাবস্থায় দুজন আনসার ব্যাক্তির সাক্ষাত ঘটলে তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখতে পেয়ে (দ্রুত) আগে বেড়ে গেলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের দুজনকে বললেনঃ তোমরা এদিকে আস। এ তো সাফিয়্যা বিনত হুয়ায়্যী। তাঁরা দুজন বলে উঠলেন, সুবহানাল্লাহ ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ শয়তান মানব দেহে রক্তের মত চলাচল করে। আমি আশংকা বোধ করলাম যে, সে তোমাদের মনে কিছু সন্দেহ ঢুকিয়ে দেয়। -সহিহ বুখারী হা/২০৩৮

তবে, যেহেতু জগতের সব আকর্ষণ থেকে মুক্ত হয়ে, সব মোহ–মায়া ত্যাগ করে, সব বাধা বন্ধন উপেক্ষা করে একান্তভাবে আল্লাহ জাল্লা শানুহুর সন্নিধানে যাওয়ার নাম ইতিকাফ। ‘ইতিকাফ’ শব্দটির অর্থের দিকে তাকালেও এর বিধি বিধান কিছুটা অনুধাবন করে নেয়া যায়। ‘ইতিকাফ’ শব্দটির অর্থই অবস্থান করা, আবদ্ধ করা, আবদ্ধ হওয়া বা আবদ্ধ রাখা। পরিভাষায় ইতিকাফ হলো ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ রাখা। যিনি ইতিকাফ করেন, তাঁকে ‘মুতাকিফ’ বলে। তাই ইতিকাফের পবিত্রতাবিরোধী কোন কথা বলা যাবে না এবং প্রয়োজনীয় কথাও অতি সংক্ষেপে সারতে হবে।

ইতিকাফ অবস্থায় ইতিকাফকারী ফরজ ইবাদতের বাইরে কোনো নফল ইবাদত না করলেও ইতিকাফের সওয়াব পাবেন। তবে অতিরিক্ত নফল ইবাদত করলে আরও বেশি ফজিলতের অধিকারী হবেন। যেমন কোরআন কারিম তিলাওয়াত করা, নফল নামাজ পড়া, কাজা নামাজ আদায় করা, দোয়াদরুদ পাঠ করা, জিকির আসকার করা, তাসবিহ তাহলিল পাঠ করা, জিকির আসকার ও তাওবাহ ইস্তিগফার করা। এ ছাড়া দীনি কথাবার্তা ও ধর্মীয় জ্ঞান চর্চা করাও সওয়াবের কাজ। যেমন কোরআন, হাদিস, ফিকাহ, তাফসির ইত্যাদি পাঠ করা ও তালিম করা।

ইতিকাফ অবস্থায় এমন সব কথা বলা ও কাজ করা বৈধ, যাতে কোনো গুনাহ নেই। প্রয়োজনীয় সাংসারিক কথাবার্তা বলতেও নিষেধ নেই; তবে অহেতুক অযথা বেহুদা অনর্থক কথাবার্তা বলা যাবে না। ইতিকাফকারী মসজিদে বা ইতিকাফের স্থানে সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারবেন এবং মাথায়, দাড়িতে ও চুলে তেল লাগাতে পারবেন। মাথার চুলে ও দাড়িতে চিরুনিও ব্যবহার করতে পারবেন। (খোলাসাতুল ফিকহ)।

সংক্ষেপে এগুলোই ই'তিকাফের বিধান।

অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.