নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাঁর করুনাধারা খুঁজে কেটে যাক বাকি ক\'টা দিন

০৮ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:৩৫

ছবিঃ অন্তর্জাল।

তাঁর করুনাধারা খুঁজে কেটে যাক বাকি ক'টা দিন

সকল শুকরিয়া মহান রব্বুল আলামীনের জন্য। আলহামদুলিল্লাহ! তিনি তাঁর অপার করুনাধারায় আমাদের ঢেকে রেখেছেন। চলমান করোনা মহামারির দুর্যোগপূর্ণ সময়ে তিনি আমাদের সিয়াম সাধনায় ব্যাপৃত থাকার তাওফিক দান করেছেন। আমরা সৌভাগ্যলাভ করছি মাহে রমজানের রহমত ও মাগফিরাতের দশক অতিবাহিত করে নাজাতের দশকের রোজা রাখার। আমাদের ঐকান্তিক আহবান, নাজাতের এ দশকে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ দয়াময় প্রভুর দরবারে সকাতর প্রার্থনায় হাত উত্তোলন করবেন এবং ফরিয়াদ জানাবেন- তিনি যেন আমাদের সকলকে ক্ষমা করে জাহান্নামের অগ্নি থেকে নাজাত দিয়ে দেন এবং একইসাথে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকেও নাজাত বা মুক্তি প্রদান করেন গোটা বিশ্ব মানবতাকে।

লাইলাতুল কদর মহিমান্বিত করেছে শেষ দশককে

রমজানের শেষ দশকটি বিশেষ একটি কারণে মহিমান্বিত। এই দশকে রয়েছে ফজিলতপূর্ণ রাত লাইলাতুল কদর। হাজার বছর থেকেও উত্তম এই লাইলাতুল কদরের প্রত্যাশায় কাটতে থাকে মুমিন বান্দাদের বেজোড় রাতগুলো। তারা গভীর বিশ্বাস, একান্ত আগ্রহ এবং অনিঃশেষ প্রত্যাশা নিয়ে এ রাতের তালাশে নিজেদের ব্যাপৃত ও ব্যস্ত রাখেন। মহিমান্বিত এ রাত কখন আসে, কীভাবে আসে এবং কোন আরাধ্য আত্মার কাছে এসে ধরা দেয় সেই ধ্যান, জ্ঞান ও খেয়ালে তারা থাকেন সদা সজাগ ও সচেতন। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-

‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের তালাশ করো।’ -বুখারি, হাদিস : ২০১৭

অন্য হাদিসে প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘কদরের রাত হাজার রাতের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। যে এর কল্যাণ অর্জন পারে না- তার সকল কল্যাণই হাত ছাড়া হয়। সত্যিকার হতভাগ্য ছাড়া আর কেউ এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয় না।’ -ইবনু মাজাহ, হাদিস : ১৬৪৪

যে দোআ বেশি বেশি পাঠ করা প্রয়োজন

আয়েশা (রা.) নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন, যদি আমি শবে কদর পেয়ে যাই তাহলে কি দোয়া করবো? নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে শিখিয়ে দিলেন, তুমি পড়বে- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওবুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাআফু আন্নি।' অর্থাৎ : ‘হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাকারী, ক্ষমা করতে আপনি পছন্দ করেন। অতএব আমায় ক্ষমা করুন।’ -তিরমিজি, হাদিস : ৩৫১৩

লাইলাতুল কদর কে পায়, আর কে পায় না

বস্তুতঃ লাইলাতুল কদর তো কেবল তারই জন্য যিনি রমজানের পুরো একটি মাসজুড়ে কঠোর কষ্ট সাধনায় অবিরাম আরাধনায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। কেবল তিনিই দীর্ঘ একটি মাসের সাধনা, আরাধনা, প্রার্থনার পরিশেষে তার কাংখিত রাতের সন্ধান পাবে। আর এটাই হলো রমজানের নিবিড় ইবাদতের মর্মকথা। লাইলাতুল কদরের প্রকৃত তত্ত্বকথাও নিহিত রয়েছে এরই মাঝে। রমজানের যতসব কল্যাণ তার সবটুকুই সে মাসের শেষ দশকে এসে সঞ্চিত হয় আর সেই অংশের কোনো বেজোড় রাতেই আত্মগোপন করে থাকে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম ঐ রাত, ঐশী জগতে পবিত্র কুরআনুল হাকিমে যার নাম ‘লাইলাতুল কদর’। মহিমান্বিত এ রাতের নামে রয়েছে একটি পুরো একটি সূরা। সূরাতুল কদর। ইরশাদ হয়েছে-

إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ

আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে।

وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ

শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন?

لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ

শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।

تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍ

এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।

سَلَامٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطْلَعِ الْفَجْرِ

এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

পুণ্যে পরিপূর্ণ, কুরআন নাযিলের মহান এ রাতের সন্ধান পাওয়া নিতান্ত সাধারণ কোনো বিষয় নয়। মূলতঃ যেসব ভাগ্যবান ব্যক্তি বছরের প্রতিটি দিন এবং রাতকেই প্রার্থনায় রত হওয়ার জন্য গ্রহন করেন, মহান রব্বুল আলামীনের রহমতের বারিধারায় সিক্ত হওয়ার সৌভাগ্য লাভে ধন্য হন, ইবাদতে লিপ্ত থেকে পুণ্যতায় পূর্ণ হতে সক্ষম হন কেবল তারাই সন্ধান পাবেন সে রাতের সওগাত সম্ভারের, মনি মানিক্য রত্ন সমাহারের।

শেষ দশকে রাসুলে কারিম যেভাবে ইবাদত করতেন

বিশেষত শেষ দশক হলো- এ মাসের সবচেয়ে গুরুত্ববহ ও আবেদনময় সময়। এ সময়ে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইবাদত-বন্দেগি হতো বছরের অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এমনকি রমজানের প্রথম বিশ দিন থেকেও আলাদা বোঝা যেতো শেষ দশ দিনের ইবাদতে নিমগ্নতা। আয়েশা (রা.) বলেন, ‌‘রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশকে এতো ইবাদত করতেন, যা বছরের অন্য সময়ে করতেন না। -মুসলিম, হাদিস : ১১৭৫

তিনি আরও বলেন, ‘যখন রমজানের শেষ দশক আসতো- নবীজি তখন ইবাদতের জোর প্রস্তুতি নিতেন, নিজে রাত্রি জাগরণ করতেন এবং পরিবার- পরিজনকে জাগিয়ে তুলতেন।’ -বুখারি, হাদিস : ২০২৪

সদকাতুল ফিতর আদায়

শেষ দশকের অন্যতম আমল সদকাতুল ফিতর আদায় করা। সামর্থ্যবান প্রতিজন নারী-পুরুষ ছোট-বড় সবার জন্য রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটা ফরজ করেছেন। সেই সঙ্গে নির্দেশ করেছেন- যেন তা ঈদুল ফিতরের নামাজের পূর্বেই আদায় করা হয়। -বুখারি, হাদিস : ১৫০৩

ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, ‘নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করেছেন- যাতে করে এটা রোজাদারের রোজার বিচ্যুতি তথা অনর্থক কথা-কাজ ও অশালীন আচরণের ক্ষতিপূরণ হয় এবং অসহায় মানুষের খাবারের সুন্দর ব্যবস্হা হয়।’ -আবু দাউদ, হাদিস : ১৬০৯

আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আমরা ঈদুল ফিতরের দিনে খাদ্যদ্রব্যের এক সা' অথবা এক সা' যব, অথবা এক সা' খেজুর, অথবা এক সা' পনির, অথবা এক সা' কিসমিস সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম।’ -বুখারি, হাদিস : ১৫০৫

সদকাতুল ফিতর আদায়ে সামর্থ্যবানদের উচিত ফিতরার সর্বনিম্ন হারকে নিজেদের জন্যে গ্রহণ না করে- ফিতরার উচ্চ হারগুলো প্রতিষ্ঠিত করা। যাতে করে সমাজের অসহায় মানুষরা বেশি লাভবান হয়। আল্লাহ তাআ'লা আমাদের তাওফিক দান করুন।

আসুন, সিক্ত হই তাঁর করুনাধারায়

আসুন! রমজানের অবশিষ্ট দিনগুলোকে সিয়াম সাধনায় নিবিড়চিত্তে নিবেদিত হয়ে সেই মাহাত্ম্য আহরণে মত্ত হই। রোজা পালন ও তদসঙ্গে কুরআন তেলাওয়াত করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য অতীব পুণ্যের কাজ। আত্মাকে ঐশী সাজে সাজানোর এক বিশেষ সময়।

তবেই হাশরের দিন রমজান ও কুরআন এ বলে আমাদেরে সুপারিশ করবে যে, রোজা বলবে, হে আল্লাহ! আমি তাকে পানাহার এবং কু-প্রবৃত্তি থেকে নিবৃত্ত রেখেছি, এ কারণে তুমি তার জন্য আমার সুপারিশ গ্রহণ করো আর কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতে ঘুম থেকে বিরত রেখেছি এবং তাকে ঘুমাতে দেইনি, সুতরাং এই কারণে তুমি তার জন্য আমার সুপারিশ কবুল করো।’ -বায়হাকি

ইবাদতে চাই আন্তরিকতা এবং একাগ্রতা

তাই ইবাদতে আমরা যত নিবিড়ভাবে নিয়োজিত হবো ততই রমজানের আগমন আমাদের জন্য কল্যাণকর হবে। হাদিসে এসেছে-

হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সৎকর্মশীলতার দিক দিয়ে আল্লাহর দৃষ্টিতে রমজানের শেষ দশকের চেয়ে মহৎ ও প্রিয় আর কোনো দিন নেই।’ -মুসনাদে আহমাদ

অর্থাৎ এই শেষ দশকে আল্লাহ তাআলা অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক বেশী মাহাত্ম্য দান করেন। নইলে, কোন দিন বা রাত আল্লাহর কাছে কী করে মহান হতে পারে? মহান এ দিক দিয়েই যে, এই দশকে আল্লাহর সংস্পর্শে যারা আসে, তাদেরকে এটি মহানে পরিণত করে।

প্রার্থনায় রত হই, নত হই তাঁর দয়ার প্রত্যাশায়

মহান আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক যতো নিবিড় হবে, গাঢ় হবে, মজবুত হবে- সেই বান্দার মর্যাদাও তত বৃদ্ধি পাবে। তাকেও আল্লাহ তাআ'লা উচ্চাসনে আসীন করবেন। তার সম্মান, ইজ্জত এবং গ্রহণযোগ্যতা তাকে ততটাই মহানে পরিণত করতে থাকবে। তাই আসুন, রমজানের অবশিষ্ট এ দিন ক'টা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার বিশেষ অনুকম্পা এবং সন্তুষ্টি কামনায় অতিবাহিত করি। যাতে তিনি আমাদের রোজাগুলো গ্রহণ করে নেন, আমাদের অপরাধগুলোকে ক্ষমা করে দেন, আমাদের পূণ্যগুলোকে অনেক অনেক গুন বৃদ্ধি করে দেন, আমাদের সামনের জীবনকে সহজ করে দেন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ নতুন নকিব ভাই
রমজানের বিশেষ আমলগুলো
নিয়ে বিস্তারিত লেখার জন্য।
এমন লেখায় পাঠক নাই
পাঠক হুমড়ি খেয়ে পড়ে
পাগলে !!

২| ০৮ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০২

জটিল ভাই বলেছেন: আমিন।

৩| ০৯ ই মে, ২০২১ রাত ১২:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মে কর্মে লোকজন পাওয়া যায় না। গানবাজনার অনুষ্ঠানে লোকজনে রভাব হয় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.