নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

নানান জাতের বাদামের পুষ্টিগুণ

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১৯

পুষ্টিগুণে ভরপুর বাদাম

নানান জাতের বাদামের পুষ্টিগুণ

বাদাম। আমাদের অতি পরিচিত মুখরোচক একটি ফল। খেতে খুব মজা বলে ছেলে বুড়ো সকলের কাছেই পছন্দের এটি। তাছাড়াও পুষ্টিগুণেও ভরপুর বাদাম। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাদামের রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। বাদাম কাঁচা যেমন খাওয়া যায়, বিভিন্ন ধরণের রান্নায়ও ব্যবহার করা যায় এটি। বাদাম রান্নার স্বাদ আরও বাড়িয়ে তোলে। বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার। রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি শরীরকে নানাবিধ রোগ থেকে মুক্ত রাখতে বাদাম দারুন কার্যকর। আজ আমরা আমাদের দেশে বহুল ব্যবহৃত বাদামগুলোর প্রকার, পুষ্টিগুণ, উপকারিতা এবং এর সাইড ইফেক্ট বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি সম্মন্ধে জানার চেষ্টা করবো।

প্রথমেই জেনে নেয়া যাক, বাদাম কি? - What are nuts?

উদ্ভিদগতভাবে বলতে গেলে বাদাম হল শক্ত বাইরের শেলের ভিতরে পাওয়া বীজ এবং শুকনো ফলগুলির সংমিশ্রণ। এটি একটি স্ন্যাক্স। অনেক রান্নায় এটি ব্যবহার করা হয়। বাদাম বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে।

এবার আসুন, জেনে নিই বাদামের প্রকার। হ্যাঁ, বাদাম কত ধরণের হয় বা পাওয়া যায়? How many types of nuts?

বাদাম কত প্রকার বলতে গেলে অনেক বাদামের কথা মাথায় আসে। তবে, বাদাম সাধারণত চার প্রকার। কাঠ বাদাম, চিনা বাদাম, পেস্তা বাদাম ও কাজু বাদাম। এছাড়াও বাজারে অনেক রকমের বাদাম পাওয়া যায়। যা আলাদা আলাদা ভিটামিন ও প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং তাদের স্বাদও ভিন্ন।

বাদামের পুষ্টিগুণ ও তার উপকারিতা -Nutritional value of Nuts and its benefits

এই চার রকমের বাদামে আলাদা আলাদা পুষ্টিগুণ রয়েছে এবং এই পুষ্টি উপাদানগুলি আমাদের শরীরের জন্য উপকার।

কাঠ বাদামঃ–

প্রতি আউন্স কাঠ বাদামে রয়েছে ১৬১ ক্যালোরি , ৫.৯ গ্রাম প্রোটিন, ১৩.৮ গ্রাম ফ্যাট। ক্যালোরি আমাদের দেহের শক্তি যোগায় এবং প্রোটিন দেহের বিকাশ করে। এছাড়াও বাদামে ৩৭ শতাংশ ভিটামিন ই রয়েছে যা ভিটামিন ই একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি যা দেহের অভ্যন্তরে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসাবে কাজ করে।

আমরা বাজার হতে যে কাঠ বাদাম ক্রয় করে থাকি সেই বাদামের গাছ

আমাদের দেশে এই গাছ সচরাচর চোখে পড়ে, এটাও কাঠ বাদামই, তবে এটাকে বলা হয় ভারতীয় কাঠ বাদাম

আমাদের পার্শ্ববর্তী ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মিরে ফুলে ফুলে ভরা কাঠ বাদামের গাছ

চিনা বাদামঃ-

প্রতি আউন্স চিনা বাদাম ১৬১ ক্যালোরি, ৪.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৭.১ গ্রাম প্রোটিন, ১৩.৬ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে। এই উপাদানগুলি আমাদের শরীরের ভালো রাখতে প্রয়োজন। চীনা বাদামে উপস্থিত আয়রন ৪.৬ মিলিগ্রাম ও জিঙ্ক ৩.৩ মিলিগ্রাম যা আমাদের সুস্থ রাখতে সহায়ক।

চিনা বাদাম

গাছসহ চিনা বাদাম

চিনা বাদামের খেত

পেস্তা বাদামঃ-

প্রতি আউন্স পেস্তা বাদামে ১৫৯ ক্যালোরি, ৭.৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৫.৭ গ্রাম প্রোটিন, ২.৯ গ্রাম ফাইবার, ১২.৪৯ গ্রাম ফ্যাট, ভিটামিন বি ৬- ২৪% আরডিআই থাকে। বি 6 দেহের শক্তি বিপাকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

পেস্তা বাদাম

থোকা থোকা পেস্তা বাদাম

পেস্তা বাদামের অপূর্ব দৃশ্য

পেস্তা বাদামের গাছ

কাজু বাদামঃ-

প্রতি আউন্স কাজু বাদামে রয়েছে ১৫৭ ক্যালোরি, ৮.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৫.১ গ্রাম প্রোটিন, ০.৯ গ্রাম ফাইবার, ১২.৩ গ্রাম ফ্যাট। এছাড়াও কাজু বাদামে ম্যাগনেসিয়াম উচ্চ পরিমাণে রয়েছে যা রক্তচাপ কমিয়ে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।

স্বাস্থ্যের জন্য ভিন্ন ধরনের বাদামের উপকারিতা – Benefits of different types of nuts for health

গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত বাদাম খান, তাদের দীর্ঘায়ু। বাদামে এমন গুন আছে, যা জীবনকে রাখে সর্বদা আনন্দময়।

কাজু বাদাম

সুদর্শন থোকা থোকা কাজু বাদাম ঝুলছে গাছে

ফলে ভরা কাজু বাদাম গাছ

কাজু বাদাম গাছ

কাঠ বাদাম – Almonds

সাধারণত কাঠ বাদাম আমন্ড বাদাম হিসাবে পরিচিত। কাঠ বাদাম দেখতে প্রায় গোলাকার। এই বাদামটিতে কাঠের মতো খোলস থাকে। কাঠ বাদাম বিশ্ব জুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছে। এটি রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে এবং অন্ত্রের জন্য উপকারী।

নিয়মিত এই বাদাম ক্ষুধা হ্রাস করে ওজন কমাতে সহায়তা করতে পারে। এই বাদামে যেহেতু প্রোটিনের পরিমাণ ভালো মাত্রায় আছে তাই বাচ্চাদের খাদ্য তালিকায় এই সুস্বাস্থ্য স্ন্যাক্সটি রাখা জরুরী।

এটি স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের যত্নও রাখে। কাঠ বাদাম বাটা ও কাঁচা দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে মাখলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসে।

Key Point: ডায়েটে বাদাম যুক্ত করলে রোজ গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সহায়তা করতে পারে।

কাঠ বাদামের পুষ্টিগুণ (The nutritional value of Almonds nuts)

100 গ্রাম কাঠ বাদামে পুষ্টিগুণ রয়েছে-

এনার্জি (৫৭১ ক্যালরি)
ফ্যাট (৫০ গ্রাম)
প্রোটিন (২১.৪৩ গ্রাম)
কার্বোহাইড্রেট (২১.৪৩ গ্রাম)
ফাইবার (১০.৭ গ্রাম)
আয়রন ( ৩.৮৬ মিলিগ্রাম)
ক্যালসিয়াম (২৮৬ মিলিগ্রাম)
ম্যাগনেসিয়াম (২৮৬ মিলিগ্রাম)
পটাশিয়াম (৭১৪ মিলিগ্রাম)
কপার (১.০৭ মিলিগ্রাম)
ম্যাঙ্গানিজ (২ মিলিগ্রাম)
ভিটামিন বি ২ (০.৯১১ মিলিগ্রাম)

কাঠ বাদামের পুষ্টিগুণের উপকারিতা (Nutritional benefits of Almonds nuts)

এনার্জি- আমাদের দেহে শক্তির জোগান দেয়।
ফ্যাট- হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। রক্তচাপ কমায়। কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস এবং হৃদয়ের স্বাস্থ্যের সমর্থন করে।
প্রোটিন- শরীরের ত্বক, চুল, নখ, হাড় বিকাশে প্রোটিন প্রয়োজন। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে শরীরকে প্রতিরক্ষা করে।
কার্বোহাইড্রেট- কার্বোহাইড্রেটগুলির প্রাথমিক কাজগুলির একটি হল আপনার শরীরকে শক্তি সরবরাহ করা। আপনার খাওয়া খাবারগুলিতে বেশিরভাগ শর্করা রক্ত প্রবাহে প্রবেশের আগে হজম হয় এবং গ্লুকোজে ভেঙে যায়।
ফাইবার- ফাইবার হজম স্বাস্থ্য এবং নিয়মিত অন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা এবং কোলেস্টেরল উন্নত করতে পারে।
আয়রন- রোগ প্রতিরোধক শক্তি বৃদ্ধি করে।
ক্যালসিয়াম- শরীরের হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করে।
ম্যাগনেসিয়াম- হৃদরোগ থেকে রক্ষা করার জন্য উপকারি এবং সুগারের রোগীদের জন্য উপকারি।
পটাশিয়াম- রক্তচাপ, কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য, হাড়ের শক্তি এবং পেশী মজবুত করে।
কপার- এটিতে শরীরের সমস্ত টিস্যুতে পাওয়া যায় এবং লাল রক্তকণিকা তৈরি করতে এবং স্নায়ু কোষ এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে।
ম্যাঙ্গানিজ- মানুষের হাড় গঠনের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য ম্যাঙ্গানিজ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
ভিটামিন বি ২- ভিটামিন বি ২ ভিটামিনগুলি স্বাভাবিকভাবেই শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়াগুলির জন্য প্রয়োজনীয় পদার্থ। শরীরের অনেক টিস্যু রক্ষণাবেক্ষণে এটি কাজ করে।

কাঠ বাদামের উপকারিতা (Benefits of Almonds nuts)

হার্ট ভালো রাখে (Heart keeps well)

এফ.ডি.এ অনুসারে, নিয়মিত ১.৫ গ্রাম ওজনের কাঠ বাদাম খেলে হার্ট ভালো থাকে। পুষ্টি ভরপুর কাঠ বাদাম হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। এই বাদামগুলি ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ, যা হার্ট অ্যাটাক এবং উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

২০১৫ সালে আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত খাবারের তালিকায় এই বাদাম থাকলে, এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি হ্রাস পায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ (Weight control)

কাঠ বাদাম স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার জন্য উপকারী। প্রোটিন, ফাইবার এবং ফ্যাট সমৃদ্ধ এই খাবারটি আপনার খিদে সন্তুষ্ট করতে সক্ষম। বাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং যা অতিরিক্ত খুদা হ্রাস করার চাবিকাঠি।

Key point: কাঠ বাদাম বডির কোলেস্টেরল শোষণ বন্ধ করতে সক্ষম এবং প্রচুর ওজন হ্রাস করতে কার্যকারী। কারণ বাদামগুলি স্বাভাবিক ভাবেই উচ্চ ক্যালোরি।

ক্যান্সার প্রতিরোধ (Cancer prevention)

কাঠ বাদামে রয়েছে বিশেষ ধরণের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। গবেষকরা মনে করছেন, চীনা বাদাম, আখরোট এবং কাঠ বাদাম স্তন ক্যান্সারের সুরক্ষা কবজ।

Notes: কাঠ বাদামে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভবনা বেশি। অ্যালার্জি আক্রান্ত ব্যক্তিদের না খাওয়াই ভালো ।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে (Relieves constipation)

কাঠ বাদাম এক ধরণের আঁশ রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে।

Notes: অত্যাধিক পরিমাণে খেলে আবার অন্য সমস্যা হতে পারে ।

গর্ভস্থ শিশুর জন্মকালীন সমস্যা হ্রাস (Reduces fetal problems)

কাঠবাদাম ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি। যা গর্ভস্থ শিশুদের জন্মকালীন সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা কম। তাই গর্ভবতী মায়েদের নিয়মিত কাঠ বাদাম খাওয়া উচিত।

অন্যান্য স্বাস্থ্যের উপকারিতা (Other health benefits)

কাঠ বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূরে রাখে পাশাপাশি ডায়াবেটিসের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে। প্রাইবায়োটিকগুলি অ-পচনশীল খাদ্য পদার্থ, যা অভ্যন্তরীণ এলাকা ভালো ব্যাকটেরিয়া হিসাবে খাদ্য সরবরাহ করে এবং স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

চিনা বাদাম – Peanuts

চিনা বাদাম

বাদামের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়তা বেশি এই বাদামে। চিনা বাদাম একটি পুষ্টিকর খাবার। চিনা বাদাম এইচডিএল মাত্রা বাড়িয়ে কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। এটি রক্তে খারাপ চর্বি এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

চিনা বাদাম মাখন একটি সুস্বাদু খাবার। এই খাবারের উপর স্বাস্থ্যকর উপায় হল এর থেকে বেশি বাদাম পাওয়া যায়। চিনা বাদামে রয়েছে খনিজ, ম্যাগনেসিয়াম, যা ত্বক ও চুল মসৃণ করার পাশাপাশি দাঁত ও মাড়ীকে মজবুত করে।

Notes: চীনা বাদামে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই অ্যালার্জি থাকলে এড়িয়ে চলুন।

চিনা বাদামে কি কি পুষ্টি আছে (What Are The Nutrients In Peanut)

১০০ গ্রাম চিনা বাদামে পুষ্টি উপাদান রয়েছে –

ক্যালরি (৫৬৭)
প্রোটিন (২৫.৮ গ্রাম)
জল (৭ শতাংশ)
চিনি (৪.৭ গ্রাম)
কার্বোহাইড্রেট (১৬.১ গ্রাম)
ফাইবার (৮.৫ গ্রাম)
ফ্যাট (৪৯.২ গ্রাম)
ওমেগা -৬ (১৫.৫৬ গ্রাম)
ভিটামিন ই (৫৫ শতাংশ)
আয়রন (৪.৫৮ মিলিগ্রাম)
সোডিয়াম (১৮ মিলিগ্রাম)
ক্যালসিয়াম (৯২ মিলিগ্রাম)
ম্যাগনেসিয়াম (১৬৮ মিলিগ্রাম)
পটাসিয়াম (৭০৫ মিলিগ্রাম)

চিনা বাদামের পুষ্টিগুণের উপকারিতা (Nutritional Benefits Of Peanut)

ক্যালরি: দেহের শক্তির উৎস ক্যালরি। আমাদের দেহে শক্তির জোগান দেয়।

প্রোটিনঃ প্রোটিন আমাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রোটিন ছাড়া আমাদের শরীরের ত্বক, চুল, নখ, হাড় কিছুই বিকাশ অসম্ভব। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে শরীরকে প্রতিরক্ষা করে।

কার্বোহাইড্রেট: কার্বোহাইড্রেটগুলি আমাদের দেহে গ্লুকোজ হিসাবে দ্রুত রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে। স্বাস্থ্যকর ওজন এবং জীবনধারা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ফাইবারঃ হজম স্বাস্থ্য এবং নিয়মিত অন্ত্রের জন্য ফাইবার প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা এবং কোলেস্টেরল উন্নত করতে পারে। এটি ডায়াবেটিস, অন্ত্রের ক্যান্সার রোগের জন্য উপকার।

ফ্যাটঃ ফ্যাট আমাদের ডায়েটের একটি অপরিহার্য অঙ্গ এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরণের চর্বি রয়েছে, কিছু ফ্যাট অন্যদের চেয়ে স্বাস্থ্যকর থাকে।

ওমেগা -৬ঃ লোকেরা যদি পর্যাপ্ত ওমেগা -6 ফ্যাটি অ্যাসিড না খায় তবে কোষগুলি সঠিকভাবে কাজ করবে না।

ভিটামিন ই: ভিটামিন ই শরীরের অনেক অঙ্গের সঠিক ক্রিয়াকলাপের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন। এটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও। এর অর্থ এটি কোষের ক্ষতিগ্রস্থ প্রক্রিয়াগুলি ধীর করতে সহায়তা করে।

আয়রনঃ নিমিয়া রোগের জন্য উপকারী এবং রোগ প্রতিরোধক শক্তি বৃদ্ধি করে।

সোডিয়ামঃ মস্তিষ্কের কাজ, রক্ত, হৃদয় ইত্যাদির জন্য উপকারী। আমাদের দেহে সঠিক পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

ক্যালসিয়ামঃ শরীরের হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করে।

ম্যাগনেসিয়ামঃ সুগারের রোগীদের জন্য উপকারি এবং হাড় মজবুত রাখে। হৃদরোগ থেকে রক্ষা করার জন্য উপকৃত।

পটাসিয়ামঃ রক্তচাপ সঠিকভাবে বজায় থাকে এবং এটি পেশী শক্তিশালী করে।

চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা (Benefits Of Eating Peanut)

প্রচুর শক্তির উৎসঃ- চিনা বাদাম প্রচুর পরিমানে খনিজ, পুষ্টি, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ধারন করে এবং প্রচুর পরিমাণ শক্তির উৎস এটি।

খারাপ কোলেস্টেরল মাত্রা কমায়ঃ- কোলেস্টেরল হওয়ার একমাত্র কারণ হল অপুষ্টিকর খাবার এবং অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাদ্য গ্রহণ। নিয়মিত চিনা বাদাম খেলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে পাশাপাশি ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে।

পাকস্থলী ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করেঃ- পলি-ফেনোলিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলি চিনা বাদামে উচ্চ মাত্রায় উপস্থিত। যা পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।

দেহের বিকাশঃ- চিনা বাদাম উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ। এর মধ্যে উপস্থিত অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরের উন্নয়ন এবং বিকাশের জন্য উপকারি।

রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ- পুষ্টির অভাব জনিত কারনে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায়। যার দরুন নানা ধরনের রোগের উৎপত্তি হয়। যেমন- সর্দি, কাশি, জ্বর, মাথা ব্যথা, শরীরে দুর্বলতা ইত্যাদি। চিনা বাদামে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়।

স্বাস্থ্যকর ত্বকঃ- বাদামের মধ্যে উপস্থিত ফাইবার দেহের টক্সিন এবং বর্জ্য পদার্থ বর্জন করার জন্য অপরিহার্য। শরীরের ভেতরে থাকা দূষিত পদার্থ আমাদের বাইরের চেহারায় প্রতিফলিত করে। যার ফলে মলিনতা, অতিরিক্ত তেল সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন চিনা বাদাম, আপনার শরীরের অতিরিক্ত বিষাক্ত পদার্থ নিঃসারিত করে স্বাস্থ্য লাবণীয় ত্বক দিতে সহায়তা করে।

ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করেঃ- চিনা বাদাম রয়েছে ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেসিয়াম যা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে ত্বক গ্লোয়িং করে তোলে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত চিনা বাদাম খাওয়ার ফলে ত্বকে ফুসকুড়ি হওয়ার প্রবণতা কম থাকে।

চুলের পুষ্টি জোগায়ঃ- চুলের স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে যে সমস্ত প্রোটিনের প্রয়োজন তা চিনা বাদামে রয়েছে। এতে উচ্চ মানের ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা মাথার স্ক্যাল্প শক্তিশালী করার পাশাপাশি চুলের বৃদ্ধি করে ।

চুল বৃদ্ধি করেঃ- ভিটামিন ই এর অভাবে চুলের গোঁড়া দুর্বল হয়ে পড়ে। যার দরুন অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ে। ভিটামিন ই হল স্ক্যাল্পের পুষ্টি, যা চিনা বাদামে উপস্থিত। তাই নিয়মিত চিনা বাদাম খেলে চুল পুষ্টি পায় পাশাপাশি চুল বৃদ্ধি হয় ।

তাহলে দেখলেন তো চিনা বাদাম খাওয়া কতটা উপকার। তাহলে আজ থেকেই আপনার খাবারের তালিকায় চিনা বাদাম যোগ করুন নিজেকে সুস্থ রাখতে।

চিনা বাদামের সাইড এফেক্ট (Side Effects Of Peanut)

যেকোনো খাবার খাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে। আপনি যদি মাত্রাতিরিক্ত খান তাহলে শরীরে খারাপ প্রভাব পড়ে। ঠিক তেমন চিনা বাদাম অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে তার কিছু সাইড এফেক্ট থাকে। চিনা বাদাম মাত্রাতিরিক্ত খেলে আমাদের যা সমস্যা হতে পারে সেগুলি হল-

আপনার ত্বকের চুলকানি এবং ফুসকুড়ি হতে পারে।
বেশি পরিমাণে চিনাবাদাম গ্যাস, বুক জ্বালা বা অ্যাসিডিটি হতে পারে।
চিনাবাদাম অ্যালার্জি হতে পারে।
গরমে অতিরিক্ত খেলে পেট খারাপ হতে পারে।
থাইরয়েড যাদের আছে তাদের সমস্যা হতে পারে।

চিনা বাদামের খেত

পেস্তা বাদাম – Pistachio Nuts

পেস্তা বাদাম

পেস্তা বাদাম কি? (What are Pistachios?) পেস্তা একধরনের শুকনো ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম পিস্তাসিয়া ভেরা। পেস্তা পুষ্টিতে সমৃদ্ধ একটি ফল যা আমাদের খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে পুষ্টি উপাদানের অভাব পূরণ করে এবং ভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি থেকে প্রতিরোধ করে।

পেস্তা বাদামে কি কি পুষ্টি রয়েছে (What are the nutrients in Pistachios)

পেস্তা বেশ পুষ্টিকর, এক আউন্স পেস্তা বাদামে পুষ্টিগুণ রয়েছে-

ক্যালোরি (১৫৯)
প্রোটিন (৬ গ্রাম)
কার্বস (৮ গ্রাম)
ফাইবার (৩ গ্রাম)
ফ্যাট (১৩ গ্রা্ম)
ফসফরাস (১১ শতাংশ RDI)
পটাসিয়াম (৬ শতাংশ RDI)
কপার (৪১ শতাংশ RDI)
ম্যাঙ্গানিজ (১৫ শতাংশ RDI)
ভিটামিন বি ৬ (২৮ শতাংশ RDI)

পেস্তা বাদামের পুষ্টিগুণের উপকারিতা (Nutritional benefits of Pistachios)

ক্যালোরি – আমাদের দেহে শক্তির জোগান দেয়।
প্রোটিন – শরীরের ত্বক, চুল, নখ, হাড় বিকাশে প্রোটিন প্রয়োজন।
কার্বস – কার্বোহাইড্রেটগুলি আমাদের দেহে গ্লুকোজ হিসাবে দ্রুত রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে।
ফাইবার – ফাইবার হজম স্বাস্থ্য এবং নিয়মিত অন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান।
ফসফরাস – ফসফরাস একটি খনিজ যা দেহকে বিভিন্ন ধরণের প্রয়োজনীয় কাজগুলি সম্পাদন করা প্রয়োজন।
পটাসিয়াম – রক্তচাপ, কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য, হাড়ের শক্তি এবং পেশী মজবুত করে।
কপার – এটিতে শরীরের সমস্ত টিস্যুতে পাওয়া যায় এবং লাল রক্তকণিকা তৈরি করতে এবং স্নায়ু কোষ এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে।
ম্যাঙ্গানিজ – মানুষের হাড় গঠনের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য ম্যাঙ্গানিজ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
ভিটামিন বি ৬ – বি 6 দেহের শক্তি বিপাকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। চোখের জন্য উপকারী।

স্বাস্থ্যের জন্য পেস্তা বাদামের উপকারিতা (Health benefits of Pistachios)

1. ডায়াবেটিস থেকে রক্ষাঃ- পেস্তা বাদাম ডায়াবেটিসের মতো ভয়ঙ্কর রোগ থেকে রক্ষা করে। আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় ৬০ শতাংশ ফসফরাস পূরণ করে এক কাপ পেস্তা বাদাম। যা ডায়াবেটিস থেকে আমাদের রক্ষা করে। পেস্তায় উপস্থিত ফসফরাস প্রোটিনকে অ্যামিনো অ্যাসিডে ভেঙ্গে দেয় যার ফলে শরীরের গুলুকোজের শক্তি বৃদ্ধি করে।

2. স্নায়ুবিক সিস্টেমঃ- পেস্তা বাদামে রয়েছে ভিটামিন বি ৬ যা স্নায়বিক সিস্টেমের জন্য খুব উপকারি। এই ভিটামিন নার্ভ তন্ত্রগুলির চারপাশে মায়েলিন ঘনত্ব তৈরি করে, যা নার্ভের তন্ত্রগুলির মাধ্যমে অন্য স্নায়ু থেকে বার্তা প্রেরণ করে।

3. হৃদয় সুস্থ রাখার জন্যঃ- নিয়মিত পেস্তা বাদাম খেলে হৃদয় সুস্থ থাকে, হৃদরোগ সংক্রান্ত রোগগুলির প্রবণতা কম হয়। এটি পেশীর শক্তি বৃদ্ধি করে হার্টকে শক্তিশালী করে তোলে। পাশাপাশি খারাপ এলডিএল কম করে এবং ভাল এলডিএল বৃদ্ধি করে।

4. হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিঃ- পেস্তা বাদামে উপস্থিত ভিটামিন বি ৬ নামক প্রোটিনের উপাদান, যা রক্তে অক্সিজেন বহন করে। যদি প্রতিদিন এটা খাওয়া যায় তবে রক্তে হিমোগ্লোবিন এবং অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

5. জ্বলন থেকে রক্ষাঃ- এই বাদামে জ্বালা প্রতিরোধ করার গুণাবলী প্রচুর। পেস্তায় সমৃদ্ধ ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং জ্বলন প্রতিরোধী ক্ষমতা রয়েছে হ’ল যা শরীরের কোনও রকমের সমস্যায় হাত থেকে রক্ষা করে।

6. প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ- আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি শক্তিশালী হয়, তবে সহজেই আমরা অনেক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারি। ভিটামিন বি ৬ পেস্তায় পাওয়া যায়, যা প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি রক্ত গঠনে এবং শরীরে রক্ত সঞ্চালন করার জন্য সহায়ক। এটি মস্তিষ্ক সক্রিয় করে তোলে।

7. ক্যান্সার থেকে রক্ষাঃ- ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ, যা সহজেই নিরাময় করা যায় না। কিন্তু যদি আপনি নিয়মিত পেস্তা বাদাম খান তবে আপনি এই মারাত্মক রোগ থেকে বাঁচাতে পারবেন। এটিতে উপস্থিত ভিটামিন বি ৬, রক্তের কোষের সংখ্যা বাড়ায়।

8. সুস্থ ত্বকের জন্যঃ- সুস্থ ত্বক পেতে চান? তাহলে নিয়মিত পেস্তা বাদাম খান। স্বাস্থ্যকর চামড়ার জন্য ভিটামিন ই খুব প্রয়োজনীয়, যা পেস্তায় প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এতে থাকা তেলটি আপনার ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে রাখে এবং শুষ্কতার হাত থেকে রেহাই দেয়। এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। এটি ত্বক বৃদ্ধির বাধা দেয় এবং আপনাকে অল্প বয়স্ক দেখায়।

9. চুলের পুষ্টির জন্যঃ-[/sb রোজ পেস্তা বাদাম চুলের সমস্যা দূর করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি এসিড থাকে, যা চুলের গোঁড়া শক্তিশালী এবং ঘন করে তোলে। এই বাদাম ব্যবহার করে যে হেয়ার মাস্ক তৈরি হয়, যা আপনার ভেতর থেকে ময়শ্চারাইজ করে এবং চুলের পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। এর পাশাপাশি চুলের আগা ফাটা এবং চুল পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

10. চোখের সমস্যা থেকে মুক্তিঃ পেস্তা চোখের জন্যও খুব উপকারি এবং চোখের রোগের সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এটি মাস্কুলার বিকৃতি থেকে রক্ষা করে, যা বৃদ্ধ বয়েসে চোখের সাধারণ সমস্যা এবং যার ফলে চোখের দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে যায়। পেস্তা বাদামে লুটিন এবং জ্যাক্স্যান্থিন নামক দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহ পাওয়া যায়, যা এই মুক্ত রেডিকেলসকে আক্রমণ করে এবং তাদের ধ্বংস করে। কোষগুলোকে ধ্বংস থেকে রক্ষা করে।

এই বাদাম সালাদ তৈরি করতে বা রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। একে আদর্শ খাবারের তালিকায় রাখা যায়। কারণ এই বাদামে ভিটামিন বা প্রোটিন কোনও কিছু কমতি নেই। হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে, ওজন কমাতে ও উচ্চ রক্তচাপ কমাতে এটি অতুলনীয়।

নিয়মিত পেস্তা বাদাম খেলে ফুসফুসে ক্যান্সার রোধ হয়। পাশাপাশি পেস্তার তেল ত্বকের পরিচর্চায় খুব কার্যকারী। ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচায়।

Key Point: পেস্তায় ভিটামিন বি ৬ উচ্চ পরিমাণে রয়েছে। হিমোগ্লোবিন তৈরির জন্য ভিটামিন বি 6 প্রয়োজন।

ফলবান পেস্তা বাদাম গাছ

কাজু বাদাম – Cashew Nuts

কাজু বাদাম

কাজু বাদাম প্রধানত ভিয়েতনাম ও নাইজেরিয়া থেকে আমদানি হয়। চীনে এই বাদামের তৈরি খাবার খুব সুস্বাদু। গবেষণায় দেখা গেছে, কাজু বাদাম ডায়াবেটিসের প্রকোপ কমায়। এছাড়াও হার্টের অসুখ রোধ করে, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং চুলের সৌন্দর্যতা বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন এক মুঠো কাজু বাদাম খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়।

Key Point: কাজু হ’ল ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভাল উৎস, একটি খনিজ যা মানবদেহে অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়াকলাপ চালায়।

বাদাম কত প্রকার আলোচনায় এখানে কিছু জনপ্রিয় বাদামের আলোচনা করা হল। এছাড়াও আরও সুস্বাদু বাদাম রয়েছে।

বাদামের সাইড ইফেক্ট - Side effects of nuts

আমরা সকলেই জানি যে শুকনো ফলগুলি বিভিন্ন ধরণের পুষ্টিতে সমৃদ্ধ, পাশাপাশি এতে প্রচুর ফাইবার থাকে, যদিও হজমে ফাইবারের প্রয়োজন হয়। তবে যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ না খেয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে খাই তখন আমাদের শরীরের কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়। পেট ফোলা ভাব, পেটে গ্যাস, ডায়েরিয়ার সমস্যা, কিছু কিছু বাদামে অ্যালার্জির সমস্যা হয়, যার ফলে স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে।

কাজু বাদাম খেত

বাদামের দর দাম নিয়ে কিছু কথা:

হ্যাঁ, দাম দরে একটু হলেও ধারণা নিয়ে রাখা উত্তম। না হলে বাদাম কিনতে গিয়ে দোকানির মুখে এক কেজি বাদামের দাম শুনে হোচট খাওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। বর্তমান বাদামের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন দোকানে এবং ফুটপাতেও বাদাম বিক্রয় হয়। বাদামের মানের ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের দামে বাদাম বিক্রয় হয়। কাজু বাদাম ৭২০-৮৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হয়। সাধারণত ফুটপাতে যে বাদাম পাওয়া যায় সেটার দাম সবচেয়ে কম এবং এগুলো কিছুটা নিম্নমানের। ছোকলাসহ চিনা বাদাম এখন বিক্রয় হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা দামে। ১৫০-১৬০ টাকা খোসা ছাড়ানো বাদাম দোকানে বিক্রয় হচ্ছে, যার ১৮-২০ % বাদামই নষ্ট এবং পঁচা। দেশি প্রজাতির ফ্রেশ চিনা বাদাম ৪০০ টাকা পর্যন্ত দাম আছে। কাঠ বাদামও একইভাবে বিভিন্ন দামে বিক্রয় হয়। কাঠ বাদাম ৮০০-৯০০ টাকা এবং পেস্তা বাদাম ১,৮০০-২,০০০ টাকায় পাওয়া যায়।

শেষের কথা:

দীর্ঘ নিবন্ধে বিভিন্ন প্রকার বাদামের বিষয়ে বিস্তারিত জানা এবং সেগুলোর কিছু গুনাগুণ সম্মন্ধে আমাদের ধারণালাভের সুযোগ হলো। তাহলে আর দেরি নয়, চলুন, আজ থেকেই নিয়মিতভাবে ডায়েটে যুক্ত করে নিই অনেক গুণের অধিকারী বাদাম। তবে শেষে এসে আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, খেতে হবে নিয়মিত তবে পরিমিত পরিমাণে। অতিরিক্ত কোন কিছুই সুখকর নয়। অতিরিক্ত বাদাম ভক্ষনও হতে পারে ক্ষতির কারণ। সুতরাং, প্রত্যেকের স্বাস্থ্যের চাহিদা বিবেচনায় প্রয়োজন মত বাদাম নিত্য দিনের খাদ্য তালিকায় রাখা হলে তা আমাদের সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ।

সকল ছবি অন্তর্জাল হতে সংগৃহিত। তথ্য সংগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা উইকিপিডিয়া ও অন্যান্য অনলাইন মাধ্যম।

নতুন বছরের কুয়াশাচ্ছন্ন হিম শীতল এই সকালে সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। ধৈর্য্য নিয়ে পোস্টটি পাঠের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও শুভকামনা প্রিয় পাঠকদের প্রতি।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:২৪

শায়মা বলেছেন: আমার পছন্দ মেকাডামিয়া, পেস্তা আর কাজুবাদাম।

২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৩৬

ফয়সাল রকি বলেছেন: বাদাম সং ভাইরাল হবার পর থেকেই বাদাম-এলার্জি তৈরি হয়েছে!

৩| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:২০

চাঁদগাজীর সমর্থকগোষ্ঠী বলেছেন:

সিলেটে বাদাম দেওয়া অর্থ 'মার দেওয়া' বুঝায়!

৪| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৩১

অপু তানভীর বলেছেন: বাদাম আমার খুবই প্রিয় কিন্তু এতে ফ্যাট রয়েছে । করোনা কালে এই বাদাম খেয়েছি আমি প্রচুর । চীনা আর কাজু বাদাম । এই বাদাম খেয়েই ভুড়ি মোটা হয়ে গেছে । এখন আর কমাতে পারছি না ।

এই পোস্ট পড়ার সময়েও আমার টেবিলে একটা বাদামের কৌটা রয়েছে ।

৫| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:১৮

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: এখনই পুরো লেখা পড়তে পারছি না। পরে পড়বো, ইন শা আল্লাহ।

প্রতি ধরণের বাদামের সাথে একটা করে ছবি জুড়ে দিলে আমার মত নাদানের বুঝতে সুবিধা হতো যে কোনটা সম্পর্কে বলছেন।

৬| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২২ ভোর ৫:০৪

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: অনুরোধ রাখবার জন্য ধন্যবাদ। সবাই অনুরোধ রাখতে জানে না।

পোষ্টটি খুব ভালো লাগলো, তথ্যে ভরা।

সম্প্রতি বাদাম খাচ্ছি বেশ। কিটো ডায়েটের অংশ হিসাবে।

ভালো থাকুন, এই আশাই রাখি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.