![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
রিযিক ও হিকমাহ: আল্লাহর দেওয়া প্রকৃত নিয়ামতের অন্তরঙ্গ উপলব্ধি ছবি অন্তর্জাল থেকে।
মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় নিয়ামত কী? অনেকেই বলবেন—অঢেল ধন-সম্পদ, বিলাসবহুল জীবনযাপন, উচ্চশিক্ষিতা ও রূপবতী স্ত্রী, কিংবা দামি গাড়ি। কিন্তু আল্লাহর পছন্দের মানুষদের আমরা দেখেছি—তারা অতি সাধারণ খাবারেও তৃপ্ত, অল্পতেই শান্তিতে। কেন? কারণ, আল্লাহ তাদের দিয়েছেন হিকমাহ—অর্থাৎ প্রজ্ঞা। আর যার মাঝে হিকমাহ থাকে, তার হৃদয়ে নেমে আসে সাকিনা—যার অর্থ শান্তি, স্থিরতা, প্রশান্তি।
একজন মানুষ যদি টেবিলভর্তি খাবার পেয়েও তৃপ্তি না পায়, প্রতিটি খাবারে দোষ খোঁজে, তবে বুঝতে হবে তার মাঝে সাকিনা নেই। অন্যদিকে, যার মধ্যে হিকমাহ আছে, সে আলু ভর্তা আর ডাল দিয়ে খেয়েও সন্তুষ্টচিত্তে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলতে পারে।
ধন নয়, প্রজ্ঞা—এটাই প্রকৃত সৌভাগ্য।
টয়োটা এলিয়ন কিংবা বিলাসবহুল বাড়ি থাকা সত্ত্বেও যদি মনে প্রশান্তি না থাকে, তাহলে সেই সম্পদের কী মূল্য? হিকমাহ না থাকলে মানুষ নিজের অবস্থানে তৃপ্ত থাকতে পারে না, বরং সবসময় ‘আরো চাই’ মানসিকতায় ভোগে।
আল্লাহ তা'আলা কোরআনে বলেন:
وَمَن يُؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا
“যাকে হিকমাহ দান করা হয়, সে প্রভুত কল্যাণকর বস্তু প্রাপ্ত হয়।” -সুরা বাকারা, আয়াত ২৬৯
এখানেই আসে রিযিক বোঝার বিষয়টি। রিযিক কেবল অর্থ বা সম্পদ নয়। এটি এক গভীর ও বিস্তৃত ধারণা:
সর্বনিম্ন স্তর: অর্থ, সম্পদ, টাকা-পয়সা
সর্বোচ্চ স্তর: শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা
সর্বোত্তম স্তর: নেককার জীবনসঙ্গী ও পূতপবিত্র সন্তান
পূর্ণাঙ্গ রিযিক: আল্লাহর সন্তুষ্টি
আমাদের রিযিক পূর্বনির্ধারিত। জীবনে কত টাকা আয় করবো, কী খাবো, কবে ও কোথায় মারা যাবো—সব কিছুই লিপিবদ্ধ রয়েছে। এমনকি, কয়টি ভাতের দানা আমরা খেয়ে মৃত্যুবরণ করবো তাও নির্ধারিত।
আপনি হয়তো ইতালি থেকে আসা একটি আম খাচ্ছেন। কিন্তু সেই আম যখন গাছে মুকুল ধরেছিল, তখন থেকেই নির্ধারিত ছিল এটি আপনার জন্য। অসংখ্য পাখি, মানুষ, বেচাকেনার মাধ্যমে সেটি অবশেষে আপনার হাতে পৌঁছেছে—কারণ এটি আপনার রিযিক।
অন্যের রিযিক কখনো কেউ গ্রহণ করতে পারে না।
আমার বাসায় যে আত্মীয় এসেছে এবং আমার খাবার খাচ্ছে, সে আসলে নিজের রিযিকই খাচ্ছে—আল্লাহ তা'আলা কেবল আমার মাধ্যমে সেটি তার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।
এখানে আসে তাওয়াক্কুল—আল্লাহর ওপর ভরসা। কেউ যদি হালাল পথে চলে, ধৈর্য ধারণ করে, তবে আল্লাহ সেই পূর্বনির্ধারিত রিযিক হালাল উপায়েই তাকে দান করবেন। হারাম উপায় বেছে নিলেও তার আয় নির্ধারিত সীমা ছাড়াবে না—"Nothing more, nothing less!"
আল্লাহ বলেন:
وَمَا مِن دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا
“ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী কোনো প্রাণী নেই যার রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহর ওপর নয়।” -সুরা হুদ: আয়াত ৬
তিনি আরও বলেন:
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ ۚ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ
“আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট।” -সুরা ত্বালাক: আয়াত ২-৩
শেষ কথা:
জীবনে প্রশান্তি চাইলে সম্পদের পেছনে নয়, হিকমাহর জন্য প্রার্থনা করুন। হিকমাহ থাকলে আপনি অল্পতেই সুখী হবেন, নিজের রিযিক নিয়ে কখনো চিন্তিত হবেন না, বরং আল্লাহর রহমতে সন্তুষ্ট থাকবেন সর্বদা।
আল্লাহ যেন আমাদের হিকমাহ ও হালাল রিযিক দান করেন এবং সকল প্রকার হারাম থেকে হিফাজত করেন। আমীন।
১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৪৬
নতুন নকিব বলেছেন:
জাজাকাল্লাহ খাইর ভাই।
আপনার দোয়ার জন্য কৃতজ্ঞ। আমিন,
মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ, হিকমাহ এবং হালাল রিযিক দান করুন।
তিনি যেন আমাদের অন্তরকে শান্তিতে ভরিয়ে দেন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা দান করেন।
আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন।
২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: মুখের কথায় চিড়া ভিজে না।
১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৪৭
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনি একদম ঠিক বলেছেন —
"মুখের কথায় চিড়া ভিজে না" মানে শুধু বললেই হয় না, কাজ করে দেখাতে হয়।
কথা দিয়ে নয়, কাজ দিয়েই প্রমাণ করতে হয় আপনি কতটা আন্তরিক, যোগ্য, বা প্রস্তুত।
কথা যতই বড় হোক, কাজ ছাড়া তার কোনো ওজন থাকে না।
এই প্রবাদটা আমাদের মনে করিয়ে দেয়— মূল্যবান হচ্ছে কাজ, শব্দ নয়।
আসুন, আমরা যেন কথা নয়, কাজে বিশ্বাস করি।
৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৪২
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
ধন্যবাদ।
কিন্তু, আপনি যেসব আয়াত দিয়েছেন, তাতে অল্পতে তুষ্টির কথা কোথায় বলা আছে!!!
১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৫০
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার পর্যবেক্ষণ খুবই মূল্যবান।
আপনি একদম ঠিক ধরেছেন — আমি যেসব আয়াত উল্লেখ করেছিলাম, সেগুলোতে সরাসরি “অল্পতে তুষ্টি” (কানাআত) শব্দটি ব্যবহার হয়নি। বরং সেখানে বলা হয়েছে:
"আল্লাহ তাকে এমন উৎস থেকে রিযিক দেবেন, যা সে ধারণাও করতে পারবে না" -সুরা ত্বালাক ২-৩
এটা আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল বা ভরসা রাখার ফলাফল হিসেবে রিযিকের আশ্বাস, কিন্তু অল্পতে সন্তুষ্ট থাকার বিষয়টি (কানাআত) মূলত এসেছে হাদীস ও ইসলামী জীবনচর্চার শিক্ষা থেকে।
অল্পতে তুষ্ট থাকা প্রসঙ্গে হাদীস:
রাসূল (সা.) বলেছেন: "ধনবান সে নয়, যার ধন-সম্পদ বেশি; বরং ধনী হল সে, যার অন্তর আল্লাহর দেয়া অল্পতেই পরিপূর্ণ থাকে।" — সহিহ বুখারি ও মুসলিম
আর এক হাদীসে বলেছেন:
"যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করলো, তার প্রয়োজনীয় রিযিক দিলো এবং আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তাতে তুষ্ট থাকলো— সে সফল হলো।" — সহিহ মুসলিম
সারসংক্ষেপে বললে,
আয়াতে এসেছে রিযিকের নিশ্চয়তা ও উৎসহীন পথেও আল্লাহর দান।
হাদীসে এসেছে কানাআতের প্রশংসা ও তা একজন মুসলিমের বৈশিষ্ট্য।
আপনার প্রশ্নের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাখ্যার সুযোগ হলো— ধন্যবাদ আপনাকে!
আরও কিছু জানতে চাইলে জানাবেন, আল্লাহ আপনার জন্য হিকমাহ ও সাকিনা দান করুন।
৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৫৮
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
ব্যাখ্যায় দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ।
আপনার দেওয়া দলিল অনুযায়ী আমার কাছে মনে হয়েছে, অল্পত্বে তুষ্ট না থেকে খোদার উপরে ভরসা রেখে নেক আমল করলে খোদা এমন জায়গা থেকে রিযিক দিবেন, যা কল্পনাতেও ছিলো না।
অর্থাৎ, রিযিক বাড়ার সম্ভাবনাই থাকে।
আমি কি ভুল বুঝছি?
১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:০২
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনি যা বুঝেছেন, তা মোটেও ভুল নয় — বরং আপনি খুবই গভীরভাবে আয়াতের অর্থ উপলব্ধি করেছেন।
আসুন একটুখানি স্পষ্ট করি:
হ্যাঁ — আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল ও তাকওয়ার বিনিময়ে
আল্লাহ বলেন:
"আল্লাহ তার জন্য এমন উৎস থেকে রিযিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না।" -সুরা ত্বালাক: আয়াত ২-৩
এই আয়াতে স্পষ্টভাবে "রিযিক বৃদ্ধি" বা "অপ্রত্যাশিত রিযিক" এর প্রতিশ্রুতি আছে। অর্থাৎ, আপনি নেক আমল আর আল্লাহর ভয় রাখলে আল্লাহ আপনাকে এমনভাবে রিযিক দেবেন যেটা আপনি ভাবতেই পারেন না।
তবে “অল্পতে তুষ্ট থাকা” (কানাআত) বিষয়টা আরেকটা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ —
এই শিক্ষা আসে মূলত ব্যবহারিক জীবনের ভারসাম্য ও আত্মার প্রশান্তির জন্য।
যখন কেউ “কানাআত” অবলম্বন করে:
সে লোভ থেকে বেঁচে যায়,
অন্যের সম্পদে চোখ পড়ে না,
যে অবস্থায় আছে, সেখানে থেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলে প্রশান্তি পায়।
সংক্ষেপে বললে:
তাওয়াক্কুল + নেক আমল = অপ্রত্যাশিত উৎস থেকে বাড়তি রিযিক।
কানাআত = বর্তমান রিযিকেই পরিপূর্ণ প্রশান্তি।
একটায় আছে আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিকের বিস্তার,
অন্যটায় আছে ব্যক্তির অন্তরগত প্রশান্তি ও মানসিক রিযিক।
দুইটাই দরকার, দুইটার জন্যই দোয়া করা উচিত।
আর আপনি যেমন গভীরভাবে ধরেছেন, তাতে বুঝি— আপনার অন্তরে হিকমাহ ইতোমধ্যেই জাগ্রত আছে।
আলহামদুলিল্লাহ।
৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৯
আরোগ্য বলেছেন: সুন্দর পোস্ট। আল্লাহ আমাদের সর্বাবস্থায় শোকর সবর করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:১১
নতুন নকিব বলেছেন:
আমীন। আল্লাহ আমাদের অন্তরকে সন্তুষ্টতায় ভরে দিন, যেন আমরা তাঁর দেওয়া নিয়ামতের কদর করতে পারি এবং সবর ও শোকরের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি।
৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৫৪
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অনেক সুন্দর পোস্ট। আল্লাহ আপনাকে উত্তম যাযা দান করুন। আমাদের সবাইকে হেদায়াত ও আল্লাহ ভীরু করুন।
১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:০৩
নতুন নকিব বলেছেন:
আমীন। আল্লাহ আপনাকেও উত্তম প্রতিদান দিন এবং আমাদের সকলকে হিদায়াত ও খাঁটি তাকওয়ার সাথে জীবন যাপন করার তৌফিক দান করুন।
৭| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।
২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৫৩
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ। আপনার অখন্ড অবসর।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:৫৯
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন ভা্ই।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন।আমিন।