নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেখ হাসিনাই \'গুলি করার নির্দেশ\' দিয়েছিলেন: আল-জাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ভয়াবহ তথ্যফাঁস

২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:৩০

শেখ হাসিনাই 'গুলি করার নির্দেশ' দিয়েছিলেন: আল-জাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ভয়াবহ তথ্যফাঁস

ছবি, এআই দিয়ে তৈরিকৃত।

বিশ্বখ্যাত সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট (আই-ইউনিট) সম্প্রতি এমন এক গোপন ফোনালাপ ফাঁস করেছে, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে তীব্র আলোড়ন তুলেছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই নিরাপত্তা বাহিনীকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের ‘ওপেন’ নির্দেশ দিয়েছিলেন। রেকর্ডকৃত ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “যেখানে পাবে, সোজা গুলি করবে।”

বিক্ষোভ ও গোপন নির্দেশনার পটভূমি
গত বছর বাংলাদেশজুড়ে ছাত্র আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে, যা শেষ পর্যন্ত সরকারবিরোধী গণআন্দোলনে রূপ নেয়। আল-জাজিরার তথ্যমতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই আন্দোলনে গুলি চালিয়ে প্রায় ১,৪০০ জনকে হত্যা করে এবং আহত করে ২০,০০০-এরও বেশি মানুষকে।

এই সহিংস দমন নীতির পেছনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশনা ছিল কি না—এই প্রশ্নের উত্তর মিলেছে গোপনে রেকর্ড করা ফোনালাপে, যা আল-জাজিরার হাতে এসেছে। শেখ হাসিনার বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি নিজেই ‘লিথাল ওয়েপন’ ব্যবহারের ‘ওপেন অর্ডার’ দেন এবং বলেন, তিনি এতদিন শিক্ষার্থীদের ‘সেফটি’র কথা চিন্তা করে তা আটকে রেখেছিলেন।

ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে। ওপেন নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি একদম। এখন লিথাল ওয়েপনস (প্রাণঘাতী অস্ত্র) ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে, সোজা গুলি করবে। ওইটা বলা আছে। আমি এত দিন বাধা দিয়ে রাখছিলাম...ওই যে স্টুডেন্টরা ছিল, ওদের সেফটির (নিরাপত্তার) কথা চিন্তা করে।’

হেলিকপ্টার থেকে গুলির নির্দেশ এবং প্রতিক্রিয়া
অপর এক ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও তৎকালীন মেয়র ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে আলোচনা করতে শোনা যায় হেলিকপ্টার ব্যবহার করে বিক্ষোভ দমনের বিষয়েও। তিনি বলেন, “যেখানেই গ্যাদারিং দেখবে, সেখানে ওপরে থেকে করা হচ্ছে... অলরেডি শুরু হয়ে গেছে।”

ঢাকায় পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে জানানো হয়, তাঁরা এমন গুলিবিদ্ধ রোগীদের চিকিৎসা করেছেন যাদের শরীর থেকে গুলি বের করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকরা জানান, এসব গুলি লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে এবং তা শরীরে গভীরভাবে প্রবেশ করেছে।

ময়নাতদন্তে কারসাজির অভিযোগ
আন্দোলনে নিহত রংপুরের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট নিয়েও ছলচাতুরির অভিযোগ এসেছে প্রতিবেদনে। শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা আইজিপির মধ্যে ফোনালাপে এই প্রতিবেদন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ পাওয়া গেছে। চিকিৎসক রাজিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তাঁকে পাঁচবার প্রতিবেদন পরিবর্তনে বাধ্য করা হয় যাতে গুলির কথা লুকানো যায়।

ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও আইনি অগ্রগতি
আল-জাজিরা জানিয়েছে, তারা এই অডিও রেকর্ডগুলোর কণ্ঠ ও প্রযুক্তিগত সত্যতা যাচাই করতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ফরেনসিক পরীক্ষা চালিয়েছে। ফলে প্রমাণের বিশ্বাসযোগ্যতা আরও জোরালো হয়েছে।

এই ফোনালাপ ও সংশ্লিষ্ট তথ্য এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুলিরা প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করছেন। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা ও তাঁর দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী আগস্টে।

সরকারের প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেওয়া লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা কখনোই ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহারের নির্দিষ্ট অনুমতি দেননি। এই রেকর্ডিং বিকৃত করা হতে পারে বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “আমি জানি এটা রেকর্ড করা হচ্ছে; সমস্যা নেই।”

উপসংহার: রাজনীতির ইতিহাসে এক ভয়াবহ অধ্যায়
এই অনুসন্ধান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নয়া অধ্যায়ের সূচনা করতে যাচ্ছে, যেখানে শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা, এবং জনআন্দোলন এক ভয়াবহ সংঘাতে জড়িয়েছে। ফোনালাপ ও ময়নাতদন্তের কারসাজির অভিযোগ রাষ্ট্রযন্ত্রের নিরপেক্ষতা ও মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

যদি আল-জাজিরার এই প্রমাণ আদালতে গ্রহণযোগ্য হয়, তবে শেখ হাসিনার শাসনকালকে ঘিরে ইতিহাস পুনর্লিখনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

আল-জাজিরা প্রকাশিত ডকুমেন্টরিটি দেখে নিতে পারেন নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে-

ইংলিশ ভার্সনঃ
36 Days in July: Sheikh Hasina’s secret orders revealed I Al Jazeera Investigates

বাংলা ভার্সনঃ
জুলাইয়ের ৩৬ দিন: উন্মোচিত হচ্ছে শেখ হাসিনার গোপন আদেশনামা

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:৩৮

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: হাসিনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শেষ পেরেক টা মনে হয় আল-জাজিরা মেরে দিল।

২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:৫০

নতুন নকিব বলেছেন:



এই প্রামান্য তথ্যচিত্রটার খুবই প্রয়োজন ছিল। রাতে পুরোটা শুনলাম। বাংলা এবং ইংলিশ দুই ভার্সনই করেছে। অসাধারণ একটি ডকুমেন্ট। মাত্র ৪৯ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের এই একটি ডকুমেন্টরি বানাতে গিয়ে আল-জাজিরাকে যে পরিমান ইফোর্ট দিতে হয়েছে, তা এককথায় অভাবনীয়। সত্যিকারের অনুসন্ধানি সাংবাদিকতা একেই বলা যায়।

আল-জাজিরার আই ইউনিটকে বাংলাদেশের আপামর জনতার পক্ষ থেকে হৃদয়ছোঁয়া ধন্যবাদ।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:০৮

মেঘনা বলেছেন: আলজাজিরা CNN বা বিবিসি এর মত নিরপেক্ষ না। এরা সুন্নি মতাদর্শী মিডিয়া। এখানে হাসিনার বিরোধীপক্ষ যেহেতু জামাত তাই আল জাজিরা জামাতের পক্ষ নিবে এটাই স্বাভাবিক।

২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:১৫

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। তবে আল-জাজিরাকে শুধু "সুন্নি মতাদর্শী" বা "জামাতপন্থী" বলেই রিপোর্ট বাতিল করা যৌক্তিক নয়। প্রতিবেদনটি ভিত্তিহীন দাবি করার কোনো সুযোগ নেই, কারণ এতে অডিও রেকর্ড, ফরেনসিক বিশ্লেষণ, চিকিৎসকদের সাক্ষ্য ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তথ্য রয়েছে। মিডিয়ার পরিচয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তথ্যের সত্যতা। সন্দেহ থাকলে নির্দিষ্ট প্রমাণ চ্যালেঞ্জ করা উচিত, শুধু পক্ষপাতের অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়।

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:২৮

কিরকুট বলেছেন: আল জাজিরা :P এর থেকে বাংলার মাই টিভি বেশি সত্য কথা কয়।

২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



তাই না কি? ভালো ইনফরমেশন!

তাহলে সত্য জানতে হলে তো মাঝেমাঝে মাই টিভি দেখতেই হয়! আচ্ছা, মাই টিভিটা কাদের?

৪| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: আল জাজিরার সমস্যা আছে।
এরা নিরপেক্ষ নয়।

২৫ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:২২

নতুন নকিব বলেছেন:



আল-জাজিরা তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে প্রামান্য ডকুমেন্ট বানিয়েছে। পারলে তাদের ডকুমেন্টরির স্পেসিফিক কোনো পয়েন্টের ভুল ধরিয়ে দিন। মুখস্ত কথা বললে তো হবে না। তারা কোথায় কোথায় ভুল করেছে, সেটা বলুন।

৫| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:২১

মেঠোপথ২৩ বলেছেন: বিবিসি , আলজাজিরা সব জামাত শিবির। বাকি আছে কেবল ইন্ডিয়াকে জামাত শিবির ট্যাগ দেওন। 'ভয়ানক চাপে ভারতে আশ্রিত আওয়ামী লীগাররা'

২৫ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



আওয়ামীলীগের বিপক্ষে গেলেই জামাত শিবির ট্যাগ, তা সত্য মিথ্যা যা-ই হোক না কেন। এই পুরনো খেলায়ই ওরা এখনও বুঁদ। যদিও এসব পুরনো বস্তাপচা চেতনাবাজিকে দেশের সাধারণ মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

৬| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৪

মেঘনা বলেছেন: মানুষ কি চায় সেটা জানার জন্য নির্বাচন দরকার।

৭| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৫৩

জুল ভার্ন বলেছেন: আল-জাজিরার বলবে কি- এটাতো জগতের সবাই জানে, তবে আওয়ামীরা বিশ্বাস করে না।

৮| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:৩০

শ্রাবণধারা বলেছেন: হাসিনা যে গুলি চালানোর নির্দেশদাতা, এতে বাংলাদেশে কারো মনেই কোনো সন্দেহ নেই। তারপরও এই ধরনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া অত্যন্ত জরুরি।

হাসিনার শাস্তি দৃষ্টান্তমূলক হবে এটা আশা করি। এমনভাবে শাস্তি হওয়া উচিত যাতে তার তৈরি করা বিকৃত রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুসরণ করার আগে ভবিষ্যতের কোনো শাসক হাসিনার শাস্তির কথা মনে করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.