![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমারে তুমি অশেষ করেছো, এমনি লীলা তব— ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ, জীবন নব নব
মাহতাব ভাই সামুতে মাহতাব সমুদ্র নামে ব্লগিং করতেন, এখন করেন কি না, তা জানি না। বর্তমান বইমেলাতে বের হয়েছে ওনার প্রথম গল্পগ্রন্থ 'তনিমার সুসাইড নোট।' অনুপ্রাণন প্রকাশন, স্টল ২৬৮ এ বইটি পাওয়া যাচ্ছে। পেশায় সাংবাদিক হলেও তিনি নেশায় গদ্যকার। প্রায় ১৪টি গল্প আছে উক্ত বইয়ে। ব্যস্ততার কারণে সাক্ষাৎকারটার জন্য সঠিক সময় বরাদ্দ করা হয়নি, আরেকটু সময় পেলে বোধ হয় ভালো হতো।
এই সাক্ষাৎকারে অবজারবেশন, আত্মকেন্দ্রিকতা, পাঠকচিন্তা, সংশয়, সমসাময়িক লেখকদের নিয়ে ভাবনা, ইচ্ছে'সহ অনেকগুলো খুচরো বিষয় নিয়ে ওঠে এসেছেন গদ্যকার মাহতাব হোসেন। তাই আপনাদের এই অন্বেষণে আমন্ত্রন।
আপনি যখন নারী চরিত্র নিয়ে কাজ করেন, তখন কি ভেবে লিখেন ? যেহুতু আপনি একজন পুরুষ মানুষ।
আসলে এই ফিলিংসের অনেকটাই আসে অধ্যয়নের কারণে। মানে একটা স্পেস তৈরি হয়। তারপরে আমি যে বিষয়টা নিয়ে লিখি, সেই বিষয়টার সাথে রিলেট করতে আমার পরিচিত মেয়ে, বন্ধু বা স্বজনের সঙ্গে কথা বলি। যখন আমার লেখা'র বিষয়বস্তুর সাথে মিলে যায়, নারীদের সাথে কিছুটা যোগসূত্র তৈরি হয়।
তাদের সাথে কথা বলার সময়, তাদের কথার গভীরতাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করি। মানে যেটা আমি তনিমার সুইসাইড নোট গল্পে এক্সপেরিমেন্ট করেছি। তাই ওই গল্প লেখার জন্য ৩ জন মেডিকেল ছাত্রীর সাথে কথা বলেছি, যারা ওই ধরনের অবস্থার ভেতর দিয়ে গেছে। এটাকে রিয়ালাইজ করার চেষ্টা করেছি। আমার মনে হয়, তনিমার জমানো কথাগুলো আমি তনিমার ভেতরে প্রবেশ করেই লিখেছি।
এই যে ভেতরে যাওয়ার কথা বললেন, বাংলা ভাষায় একজন গদ্যকার চাইলেই তো সব লিখতে পারে না, কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। এগুলো কি ফেস করেন লেখায় ?
আমি অসলগ্ন শব্দকে পরিশীলিত করে, প্রাঞ্জল করে লিখেছি। যেহুতু আমি এখন পর্যন্ত বলার মতো কিছু রচনা করিনি, সেহুতু ওই প্রতিবন্ধকতা এখনো আসেনি। হয়তো আসতে পারে, যখন আসবে, তখন দেখা যাবে।
তাহলে, অবজারবেশন আপনার লেখার অন্যতম উপাদান ?
হ্যাঁ, অবজারবেশন, সাথে অবশ্যই স্টাডি।
অবজারবেশনকে এতো গুরুত্ব দেন কেন ?
আসলে ভাসমান বিষয় আর বাস্তবতার মধ্যে তো বিশাল পার্থক্য। পাঠকের কাছে পৌঁছতে চাইলে, পাঠক যেন মনে করে— 'আরে! এটা তো আমার কথা।'
পাঠকের কথা বলার পাশাপাশি, আপনি সচেতনভাবে আপনার লেখায় কি বলতে চান ?
গল্প তো শুধু গল্প নয়। আমার বিভিন্ন গল্পে আমি কিছু এলাকার সংস্কৃতি, অসঙ্গতি, মানবিকতাবোধ, অনুপ্রেরণা এসবই তো বোঝানোর চেষ্টা করি।
পাঠকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন না ?
যখন পত্রিকায় লিখি সেটার ফিডব্যাক পাওয়া যায়। সেই অর্থে যোগাযোগ করা হয় না, তবে পাঠকের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা তো থাকেই।
তনিমার সুসাইড নোটের গল্পের মতোই সবসময় কি এভাবে চার্জ হয়ে লিখেন ?
সবসময় চার্জ থেকে লিখি না। মাথায় প্লট চলে আসার ব্যাপারও থাকে। আর তনিমার গল্প অজস্র মেয়েদের গল্প। এটা কয়েকজন মেয়ের মধ্যে পেয়েছি, তাই আমাকে আলোড়িত করেছে।
নারীদের আপনি পছন্দ করেন ?
কেন নয় ?
আপনার লেখায় নারী চরিত্রগুলো এক ধরণের আশ্রয় পায়।
না, সবসময় তো নয়। আর এটাকে বলা যায় ইন্সটিংক্ট। প্রয়োজন অনুযায়ী।
মানে অ'প্রয়োজনের সময় তাদের ওপর মমতা দেখান না ?
সেটা নয়, গল্পের প্রয়োজন যতোটুকু।
কয়েকজন গদ্য লেখকের নাম বলেন, যারা আপনার গদ্য লেখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা।
প্রতিবন্ধকতা নয়। আমার প্রিয়'র তালিকা দীর্ঘ। সুনীল, সমরেশ, শীর্ষেন্দু, সুচিত্রা, মার্কেজ, ড্যান ব্রাউন, সত্যজিত, বুদ্ধদেব গুহ, মইনুল আহসান সাবের, ইমদাদুল হক মিলন ও হুমায়ূন আহমেদ।
আপনার এই বইয়ে ১৪টি গল্প আছে। এই গল্পগুলোতে কাহিনির পাশাপাশি আপনি কতোটুকু আছেন ?
একটা পুরো গল্পে আমি কখনোই নেই। কোন কোন গল্পে রয়েছি। 'স্নিগদার টেলিফোন' গল্পে প্রায় এক তৃতীয়াংশ জুড়েই
আমি। আসলে গল্পের কাছাকাছি ঘুরতে গিয়ে, কখন যেন নিজেকে মিশিয়ে ফেলি .. খুব।
নিজেকে মেশাতে ভালো লাগে ?
আসলে ভালো মন্দের বিষয়টা এখনো এক্সপেরিমেন্ট করে দেখি নি। নিজেকে মেশালেই চলবে কেন? আবার পাঠক নেবেই বা কেন? এই প্রশ্নের উত্তর আরও কিছুদিন পরে দিতে পারবো মনে হয়।
একজন পাঠক বা পাঠিকাকে তার কাঙ্খিত বইটি খুঁজে পেতে, অনেক লেখকের বাজে বইয়ের সাথে পরিচিত হয়ে আসতে হয়। আপনার কি মনে হয় বর্তমানের পড়ুয়া'রা এতো ধৈর্যশীল ?
পাঠক-পাঠিকাদের একটা বড় অংশ অবশ্যই ধৈর্যশীল। বর্তমানে যারা লিখছে কিংবা ফেসবুক পরিচিতির মাধ্যমে বই বিক্রি হচ্ছে, আল্টিমেটলি এসবের রেজাল্ট পাওয়া যাবে ৩ থেকে ৪ বছর পরে। তারা ভালো লিখলে টিকে থাকবে, ওঁরা মানে পাঠক পাঠিকারা থাকবে তাঁদের সাথে।
আর যদি ভালো'র ধারাবাহিকতা না থাকে— কিংবা ভালো'ই না হয়, তাহলে তাদের লেখা থেকে অবসর নিতে হবে। পাঠক বা পাঠিকারা অবশ্যই অন্তত জাজ করার মতো ধৈর্য রাখবে, যদি তাঁরা সত্যিই পড়ুয়া হয়।
মানে বর্তমানে যারা লিখছেন, তাদের অনেকের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার সংশয় আছে ?
অবশ্যই আছে, আমার নিজেরও আছে।
আপনার নিজের সংশয় থাকে কেন ?
সবাই-ই তো লিখবো, কিন্তু পাঠপ্রিয়তা পাবে কি না সেটা একটা বিষয়।
চব্বিশ ঘণ্টার লেখক হতে ইচ্ছে করে না ?
এতো জানি না। তবু পুরোদস্তুর লেখক তো হতে চাই।
বারোমাস ঘুরে এসে, ফেব্রুয়ারিতেই এতো বই প্রকাশের ভিড়ে, এটা কি সম্ভব ?
আমি তো বারোমাস'ই লিখবো। শুধু বইমেলা'ই বা প্রকাশের জায়গা কেন হবে? আমি চাই আরও পাঠক তৈরি হোক, সারাবছর পড়ুক, প্রকাশনা হোক। আর জার্নাল, পত্রিকাগুলো তো আছেই।
[ মাহতাব ভাইয়ের শেষ উত্তরটা শুনে আইয়ুব বাচ্চুর একটা গান মনে পড়ল, প্রিন্স ভাইয়ের লেখাও সুর। 'আমি বারো মাস তোমায় ভালোবাসি।' একজন লেখকের বারো মাসই লেখায় থাকা দরকার। শুধু ফেব্রুয়ারিতে হলে কেমন যেন লাগে! সারা বছর খোঁজ নেই, বইমেলা এলেই খবর পাওয়া যায়। এই এক মাসে যত চাপ পরে, প্রকাশক বা প্রুফ রিডারদের ওপর, এই চাপ যদি কমানো যায়, আমরা অনেক নির্ভুল বই, যত্নশীল মুদ্রণসহ পেতে পারি।]
২১শে ফেব্রুয়ারি।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭
নাজমুস সাকিব রহমান বলেছেন: হ্যাঁ ভাই, আমার নেয়া।
ভালো লাগলেই আমার কষ্টটা সার্থক।
শুভেচ্ছা নেবেন।
২| ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৩৯
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: সাক্ষাৎকারটি একটা অনলাইন পত্রিকায় পড়ছি মনে হচ্ছে।আবার পড়লাম।খুব ভালো লাগল
১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:০৯
নাজমুস সাকিব রহমান বলেছেন: হ্যাঁ, একটি অনলাইনে প্রকাশ করেছিলাম। তবে প্রথমে ব্লগে দিয়েছি, পরে পত্রিকায়।
ধন্যবাদ জাহেদ ভাই। ভালো থাকা হোক।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২৮
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সাক্ষাৎকারটা কি আপনার নেয়া?
ভালো লাগল পড়ে।