নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথাই মানুষের প্রাণ। যতদিন মানুষ হৃদয় উজাড় করে কথা বলতে পারবে ততদিন মানুষ বেঁচে থাকবে।

দূর দ্বীপবাসী

আমি হিমুর মত উদ্ভট টাইপের কেউ।আমার ভালোলাগে ভাবতে,হাঁটতে,কথা বলতে,নীরবে অপলক চেয়ে দেখতে। আমি আমার মত করে গড়ে উঠা এক আদম। নিরিবিলি প্রশান্ত মন নিয়ে প্রগাঢ় চিন্তায় ডুবে থাকতে ভালোবাসি। আমার পথ আমি বেঁচে নিয়ে,যে পথে হেঁটে চলবো অনন্ত সময়।

দূর দ্বীপবাসী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেকারত্ব ও বাংলাদেশ

০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৪০

আপনি যেখান থেকেই গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করুন না কেন তৃতীয় জমানায় এসে বাংলাদেশে একটা থার্ড ক্লাস চাকরি পাওয়াটা খুবই কঠিন ব্যাপার।
সর্বত্রই মামা (সুপারিশ) ও তামার (টাকাপয়সা) বিশাল দাপট। চাকরির বাজারগুলোতে এসবের ব্যাপক ডিমান্ড।
অনেক ক্ষেত্রে তামা হলেও মিলে না আজকাল, সরকারি দলের মামাও লাগে।

তাছাড়া বেসরকারি সেক্টরেও আজ রাজনীতি ঢুকে গেছে,
কারণ বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ী আর কর্পোরেট সেক্টরের কর্মকর্তারাও বিশাল মাপের রাজনীতিবিদ।
বেসরকারি সেক্টরে ম্যানেজমেন্ট পর্যায়ের কেউ যদি আপনার বাঁ হাতের কনিষ্ঠ আঙুল না ছোঁয় তবে আপনি ক্রিস গেইলের হাঁকানো বিশাল ছক্কার বলের মত গ্যালারির বাইরে অর্থাৎ বেকার সমিতির গোপন কুঠুরীতে।
একজন ঝাড়ুদারের জন্যও আজকাল মিনিস্ট্রি থেকে সুপারিশ আসে। ইন্টারভিউয়ের নামে আজকাল সম্ভবত কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট কমিটি সাজুগুজু করা সুন্দরি মেয়েদের দেখার একটা শো করে মাত্র, ছেলেদের সেখানে ডাকা হয় জেন্ডার ডিসক্রিমিনিশন তাড়াবার জন্য।

তারপর কোটা তো বেকার সমাজের ৯৭% বার্নিং বডিতে সোয়া কেজি কাঁচা লবণ ছিটানোর মত একটা ব্যাপার।
চাকরির ১০০ টা পদের মধ্যে ৬৫ টা তুলে নিলো হেড মিনিস্টার থেকে এলাকার ছোঁচা টাইপের রাজনীতির পোষা বিড়ালরা, আর বাকি ২৫ রাখা হলো মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য, যেখানেও ২৩ টা টাকায় বিক্রি হয়,বাকি ২টা দেশপ্রেম রক্ষার্থে উজাড় করে দেওয়া হয়।..
বাকি রইলো ১০ টা, সেখান থেকে ৩ টা আদিবাসী কোটায় বিতরণ, বাকিগুলো রাখা হয় প্রাতিষ্ঠানিক আমলাদের পার্টি বিল ম্যানেজ করার জন্য।
মাঝখান থেকে বিজ্ঞপ্তি ও আবেদন, পরীক্ষার ছলে বাবার ঘাম ঝরানো, মায়ের গয়না বেঁচা, ভাইয়ের হালের বলদ বেচা কিংবা নিজের টিউশনি থেকে আদায় করা কিংবা এক বেলা খাবারের বাঁচানা টাকা দিয়ে আবেদন করা লাখো যুবকের তলপেটে সজোরে লাথি মারা হয়।

চাকরির ব্যাপার বাদ,
চলেন দেখি উদ্যোক্তা হয়ে ব্যবসা করবেন সেখানে কি হয়?
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের ভিটেমাটি ছাড়া অতিরিক্ত কোন জমি নেই বা সম্পত্তি নেই যে বিক্রি করে ব্যবসায়ে পুঁজি খাটাবে।
যদিও কারো থেকে থাকে তবে সেখানে আছে তের অংশীদার কিংবা মামলা মোকদ্দমার বেড়াজালে আটকা,
কিংবা পরিবারের অমত... অতএব বিক্রি করে ব্যবসায়ের জন্য মূলধন পাওয়ার চান্স নেই।

যাবেন ব্যাংকের কাছে ঋণের জন্য, সেখানেও বিরাট ক্যাচাল,
জামানত ছাড়া, সুপারিশ ছাড়া ঋণ মিলে না।
ঋণ পেতে হলে রাজনৈতিক কোন হর্তা কর্তার সুপারিশ কিংবা ব্যাংকের কেউ আত্মীয় হলে তার সুপারিশ লাগে।
আর আপনি ঋণ নিবেন একলাখ, সেখান থেকে ম্যানেজার বাবু রেখে দিবে বিশ হাজার।
ধরুন,
মূলধন ম্যানেজ করলেন,
লাইসেন্স, আর লোকেশন পেতে সীতার মত অগ্নি পরীক্ষা দিয়ে টিকতে হবে।
এ যুগে ব্যবসা করতেও রাজনীতির কিংবা উপরস্থ ব্যবসায়ী মহলের আশীর্বাদ লাগে,
না হলে তো প্রথম যাত্রাতেই চাকা ফুটো হয়ে পড়বে।
আজকাল হকারি করতে হলেও সমিতিভুক্ত হতে হয়, চাঁদা দিতে হয়।
ভাবছেন দালালি করবেন,
রাজনীতির আর্শীবাদ নিয়ে আসুন, না হলে হবে না।

ভাবছেন বিদেশ যাবেন,
সেটা তো কত কঠিন ব্যাপার তা পরিচিত দশটা মুখের দিকে তাকালেই বা তাদের খোঁজ খবর নিলেই জানতে পারবেন।

ভাবছেন,
কৃষি কাজ করবেন,
কিন্তু উপায় নেই শিল্পায়নের প্রভাবে ও নদীভাঙনের কারনে, ঘনবসতির কারনে চাষাবাদি জমির বড়ই অভাব,
জমি বর্গাও পাবেন না।তার উপর উপকরণের যা দাম।
অভিজ্ঞতা ও পরিশ্রম অপরিহার্য,যা আপনার মত গ্রাজুয়েটের দ্বারা অসম্ভব ।

ভাবছেন মাস্টারি কিংবা মুন্সিগিরি করবেন,
তাও একই জিনিস লাগবে,
রাজনীতি কিংবা সংশ্লিষ্টদের তদবিরের মত আশীর্বাদ।

ভাবছেন ঘর জামাই হবেন,
তাও চান্স নেই,
মেয়ের বাপেরা আজ প্রতিষ্ঠিত ছেলে চায়,
হাজার হ্যান্ডসাম হন না কেন,
ঘুরে ফিরে প্রতিষ্ঠিত বুইড়ার কাছেই বিয়ে হবে আপনার সুহাসিনীর।
কোন লাভ নেই স্বপ্ন দেখে,
সব স্বপ্ন এক জায়গাতে গিয়ে হোঁচট খায়।
দিনশেষে শূন্য পকেট আর জরাজীর্ণ মুরগির খোয়ারের মত বিছানা, সঙ্গীহীন রাত্রিই জুটে কপালে।
ডাবল বোনাস হিসেবে আছে পরিবারের কথার যন্ত্রণা আর সমাজের লাঞ্চনা।

ভাবছেন বিষ খাবেন,
পকেট হাতড়ে দেখেন বেকারের পকেটে বিষ কিনার মত কানাকড়িও নেই।
তাছাড়া আত্মহনন মহাপাপ আর কাপুরুষের কাজ।

কোন একদিন হয়তো আপনার বন্ধু বলবে দোস্ত,
কতদিন হলো কিছু খাওয়াস নাই,
চল কিছু খাওয়াবি।
তখন হয়তো বলবেন,
"আরে খাওয়াবো তো।এই তো বেশি দিন লাগবেনা। মিষ্টি বানাতে আঁখের বীজ পুতেছি। ছোট একটা গরু কিনেছি, বড় হলে গাই হবে। এক্কেবারে পিওর মিষ্টি খাওয়াব।"
বন্ধুকে আর মিষ্টি খাওয়াতে হবে না,
সপ্তাহান্তের মাথায় হয়তো নিজের বান্ধবীর বিয়ের মিষ্টি পরখ করতে হবে।

বেকারত্ব নাকি অভিশাপ,
বেকাররা জাতির তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিকও নয়।
কতটুকু সত্য?
সবাই তো স্লোগান বুঝে, বাস্তবতা বুঝে কতজন?
কি দরকার লাখ লাখ এ প্লাস, হাজার হাজার ফার্স্ট ক্লাস দিয়ে কেন অতদূর স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে যুব সমাজকে।
হয়তো ফেল করিয়ে দিতেন,
হাল ধরতো না হয় জাল ধরতো,
না হয় বিষ খেয়ে জাহান্নামে যেতো।

এদেশে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী মেধাকে দীর্ঘকাল ধরে অবমূল্যায়ন করতো, আর সর্বশেষ ১৪ ই ডিসেম্বর মেধাকে চিরতরে ফিনিশ করে দিয়েছিলো।
স্বাধীনতার পর জাতি ভাবতো মেধার মূল্যায়ন বুঝি পাবে,
কিন্তু বাঙালির দুর্ভাগ্য দ্বিগুণ হারে এখন মেধার অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে আর নীরবে মেধাকে বিনাশ করতেছে।

মেধার মূল্যায়ন আজ কড়িতে,
মেধার মূল্যায়ন আজ রাজনীতিতে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৬

সজীব মোহন্ত বলেছেন: এভাবে চলবে

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫২

দূর দ্বীপবাসী বলেছেন: হুম।।

২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪২

জনি চৌধুরী বলেছেন: কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে এই বিশাল জনগণকে জনসম্পদে পরিণত করতে পারলে বেকারত্তের সমস্যা কমে আসবে, শুধু পাশের সার্টিফিকেট ধরিয়ে দিলে জ্ঞানী আর দক্ষ হওয়া যায় না। আমাদের দেশের শিক্ষা কারিকুলাম ঠিক নেই গতানুগতিকভাবে চলছে।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫৩

দূর দ্বীপবাসী বলেছেন: অবশ্যই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.