![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"আচ্ছা কখন ভেবে দেখছ কেন বেচে আছি? " নীলার আপাত অদ্ভুত প্রশ্ন শুনে একটু চমৎকৃত হল শৌভিক । আজকাল সে আর তেমন অবাক হয় না এই ধরণের প্রশ্নে। অনেকদিন ধরে চেনে সে নীলাকে, অভ্যাস হয়ে গেছে তার।
" আচ্ছা এটা বল, Existential Crisis কি জিনিস !!" ,নীলা আবার প্রশ্ন করল।
" হুম , অস্তিত্ববাদের সংকট বলে এটাকে !!", শৌভিক একটু কৌতুকের স্বরে উত্তর দিল।
নীলা বিরক্ত হয়ে বলল ," তোমাকে আমি ট্রান্সলেশন জিজ্ঞেস করি নাই!! ঠিক করে বল ।"
"তুমিই বল কি, আমি শুনি ।"
"যখন একটা মানুষ তার বেচে থাকার অর্থ খুজে পায় না তার অস্তিত্বের ভিত্তি খুজে পায় না তখন বলা যায় ওই মানুষটা অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে ।"
" কিন্তু এটা তো খাটি বিষণ্ণ মানুষের কথা বলা হল না ?"
"হুম তাই কারন বিষন্নতার ফলাফলই হল অস্তিত্বের সংকট ।", হঠাত নীলাকে একটু বিষন্ন লাগছে ,"শৌভিক, তোমার কোনদিন মনে হয় না তুমি আমি মারা যাবার পর আমাদের কাজগুলোর কি হবে । আমাদের সবাই ভুলে যাবে, কি দরকার এত কষ্ট করার ?"
শৌভিক উত্তর দিল, " কে বলল ভুলে যাবে ? শেক্সপিয়ার কে মানুষ ৪০০ বছর পরেও মনে রেখেছে না ? এরিস্টটল কে তুমি আজ কি মনে কর না ? এমন কিছু একটা করে যাবে যেন সবাই তোমাকে মনে রাখে । "
"তা বুঝলাম কিন্তু তবুও কি লাভ এগুল করে , মানে আমাদের জন্মের উদ্দেশ্য টা কি আসলে ? খ্যাতি ? খ্যাতি কি বলতে পার ? নিজের উন্নতির কথা বলতে চাও ? আরে আমরা অর্ধেক জীবন বাচি বাবা মায়ের জন্যে আর বাকিটা সন্তানদের জন্যে । "
" বাহ নীলা এত ভারি ভারি কথা শিখলে কোথা থেকে । দেখো নীলা আমরা আমাদের জন্যে বাঁচি । জীবনটাকে উপভোগ করতে বাঁচি । "
নীলা শ্লেষ মাখা একটা হাসি ছড়িয়ে দিয়ে বলল ," তুমি কে শৌভিক ? এত কষ্ট করে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছ তুমি কি আসলেও একে উপভোগ করা বলবে ? তুমি না গায়ক হতে চাইতে ? এটাই কি তোমার উপভোগের সংজ্ঞা ? দেখো আমরা কিছুই না ,কার খেয়ালের সৃষ্টি মাত্র ।"
"আমি এত গভীরে যেতে চাই না । তুমি হয় তোমার অস্তিত্বের খোজে সারাজীবন ঘুরপাক খাবে অথবা so called জীবনটাকে উপভোগ করবে ।" ,বলে উঠে পড়ল শৌভিক, " যাই আজ, বাসায় কাজ আছে। ", বলে হাটতে শুরু করল সে।
পেছন থেকে নীলা বলে উঠল, " শুনে যাও এই অস্তিত্ববাদের সংকট কিন্তু আত্মহত্যার প্রধান ১০ টা কারণের একটা ।" শৌভিক থামল না শুধু একটা রহস্যময় হাসি দিল । নীলা লেকের পাড়ে বসে ইয়ারফোন কানে ছেলেটাকে হেটে যেতে দেখল ।
পরেরদিন ভোর বেলা ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গল নীলার । ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে উঠল,"তুমি নীলা বলছ।"
"জ্বী,বলছি ।আপনি কে?"
"আমি শৌভিকের চাচা বলছি। তুমি কি মা এখনি একটু শৌভিকের বাসায় আসতে পারবে ।" তখনি নীলা আধ ঘুম অবস্থায় বের হয়ে এল বাসা থেকে ।
শান্তিবাগে শৌভিকদের বাসাটায় অনেক মানুষের ভীড় । নীলা খোলা দরজা দিয়ে ঢুকতেই একজন মহিলা তাকে ধরে বলল ,"তুমি নিশ্চয় নীলা ,এস আমার সাথে ।" বাসার ভেতর যেতে যেতে নীলা ভেতরের একটা রুমে একটা বিছানায় শৌভিকের মাকে দেখতে পেলে । কে যেন ভদ্র মহিলার মাথায় পানি ঢালছে ।
"এই নাও, এই চিঠিটার উপর তোমার নাম লেখা ছিল । শৌভিকের বিছানার উপর ছিল ।" ,বলে নীলার হাতে একটুকরো ভাজ করা কাগজ দিল শৌভিকের চাচি ।
কাগজটা ধীরে ধীরে খুলল নীলা।
" নীলা,
খুব জানতে ইচ্ছা করল হঠাত আমাদের অস্তিত্বের উদ্দেশ্যটা কি । আমারা বাঁচি কেন । কিভাবে বাঁচি আমরা ? তাই একটু ব্যাপারটা পরীক্ষা করে দেখলাম । তুমি আবার মাইন্ড করো না যেন তোমাকে ছাড়াই করলাম ।
I'm a reckless mistake
I'm a cold night's intake
I'm one night too long
I'mma come on too strong"
"Polaroid" Imagine Dragons
©somewhere in net ltd.