নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুভূতি প্রকাশক!

এিভুবন

আপনার পাশের সীটে বসা অথবা পাশের বাড়ীতে থাকা লোকটার মতই সাধারন।

এিভুবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিরে দেখা শৈশব - ২

১২ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ২:১৯

মানিকগঞ্জঃ

২। আশির দশকের শেষের দিকে এবং নব্বই দশকের শুরুর দিকে পড়াশোনার জন্য এই দেশের ছাত্রদের স্বপ্নের দেশ ছিল রাশিয়া বা আমেরিকা। বর্তমানের বাবা মায়ের মত সেদিনের বাবা-মাও চাইতো সন্তান যেন বড় হয়ে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বা সরকারী কর্মকর্তা বা সামরিক কর্মকর্তা হয় অথবা প্রবাসী হয়।বাবা-মার চিন্তাও একি বৃত্তে ঘুরপাক করত, তেমনি সন্তানদের ক্যারিয়ারও তাই। যাই হোক, এই কথাগুলো বলার পিছনে একটা কারন আছে। আমি এমন একজন মহিলাকে চিনি, যিনি অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল ও সমাজ সচেতন হওয়ার পরও তার দুই ছেলেকে বিকেএসপি তে ভর্তি করছিলেন ফুটবলার ও ক্রিকেটার বানানোর জন্য (দুর্বার ও দুর্জয়) এবং তার মেয়েকে (সিমিকে, নামটা ভুল হতে পারে, অনেকদিন আগের কথা। মানিকগঞ্জ থেকে চলে আসার সময় আব্বার বিদায় অনুষ্ঠানে তিনি গান গেয়েছিলেন।) তিনি কন্ঠ শিল্পী বানিয়েছিলেন। আমার দেখা সেসময়ের একজন আধুনিক মহিলা, তার নাম নীনা রহমান । এই জন্য এখন আমি নীনা আপাকে আমি একটু বিশেষ সম্মান করি। ছোটবেলায় বুঝতে পারি নাই, এখন বুঝতে পারি।

৩। ১৯৮৮ সালের বন্যার সময় মানিকগঞ্জ শহরে পানি উঠেছিল। আমার কাছ থেকে দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। বন্যার সময় খুব ভয়ে ভয়ে সময় কাটাতাম। কত রকমের যে ভয়- সাপের ভয়, ডাকাতের ভয়, পানিতে ডুবে যাওয়ার ভয় ……… হাহাহা ……… বন্যার সময় আল্লাহর রহমতে তেমন কিছু হয়নি। বন্যার পর বাড়ীর পাশের পুকুরে গোসল করতে গেছি আমি আর আমার বড় দুই বোন (নাহিদ আপু ও সুবর্না আপু। আমার আরেকজন বড় বোন ছিল, তার নাম ছিল ফাতেমা। সে আমার জন্মের আগেই মারা যায়।)। আমাদের মাঝে শুধু আমার বড় বোন সাঁতার কাটতে পারত।যাই হোক, আমি পুকুর পাড়ের কাছাকাছি ডুব দিতে দিতে পা পিছলে পড়ে গেলাম এক গভীর গর্তে। আমার বড় বোন আমাকে টেনে তুলে ওখান থেকে। জীবনে প্রথম বারের মত মৃত্যকে দেখলাম খুব কাছ থেকে। এরপর আর কখনও পুকুরে নামি নাই।সব দুঃসময়ের মাঝেও কিছু সুখস্মৃতি থাকে। বাবার অফিসে হলুদ রঙের একটা স্পীডবোট ছিল, বন্যার সময় ওই স্পীডবোটে মাঝে মাঝে আমরা ঘুরে বেড়াতাম সপরিবারে।

৪। ছোটবেলা থেকেই আমি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি সচেতন ছিলাম!!! এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় বাসার ছাদ থেকে মিছিল দেখতাম আর ভাবতাম কবে মিছিল করব। স্রষ্টা মানুষের কোন ইচ্ছা অপূর্ণ রাখে না। এরশাদের পতনের পর বিজয় মিছিলের সময় আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে মিছিল দেখছিলাম। ওই সময় টুকু ভাই (মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিল) আমাকে কোলে নিয়ে কিছুদূর পর্যন্ত নিয়ে যায়। ঐ আমার প্রথম মিছিল করা। তবে সবচেয়ে মজা লাগত জাসদের মিছিল দেখতে কারন ওরা মশাল জ্বালিয়ে মিছিল করত। ওই সময় জাসদের ছেলেদের সবাই খুব ভয় করত। প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় আমি প্রতিদিন ইত্তেফাক পত্রিকায় টারজানের পাশাপাশি ইরাক যুদ্ধের খবর পরতাম। সাদ্দাম হোসেনের পরাজয়ে খুব দুঃখ পেয়েছিলাম।১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনের মাধ্যমে সেই সময়ের আপোষহীন নেত্রীর দল বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে। আব্বার পাশে বসে সারারাত জেগে নির্বাচনের ফলাফল দেখেছিলাম বিটিভিতে। ঐদিন রাতে বিটিভিতে বুলবুল আহমেদ অভিনীত “মহানায়ক” সিনেমাটা দেখাচ্ছিল।তখন প্রেম ভালবাসা ঠিকভাবে না বুঝলেও ওই সিনেমার “পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই” এই গানটা আমার খুব ভাল লেগেছিল !!! :)

(চলবে)

কিশোর

১২/০৩/২০১৩

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.