নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুভূতি প্রকাশক!

এিভুবন

আপনার পাশের সীটে বসা অথবা পাশের বাড়ীতে থাকা লোকটার মতই সাধারন।

এিভুবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিরে দেখা শৈশব -৩

১৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ২:০৮

মানিকগঞ্জঃ



৫। ছেলেবেলায় কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করত, তুমি বড় হয়ে কি হবে? আমি বলতাম, ম্যারাডোনার মত ফুটবলার হব। আমার একটা লাল-সাদা মিশ্রিত রঙের চার নম্বর ফুটবল ছিল (৫ নম্বর ফুটবল দিয়ে বড়রা খেলত)। আমার ফুটবল খেলার অনেক সাথী ছিল, সবচেয়ে ভাল সাথী ছিল আমার বাবা (মোঃ গোলাম মোস্তফা)!!! ১৯৯০ সনের বিশ্বকাপ হয়েছিল ইটালীতে, রাত জেগে টিভিতে খেলা দেখতাম। ফাইনাল খেলা দেখেছিলাম আমি, আমার বাবা আর ছোট ফুপু (মুর্শিদা বেগম)। খেলা শেষ হওয়ার মাত্র পাঁচ মিনিট আগে “হারামজাদা” রেফারি ইচ্ছাকৃতভাবে একটা পেনাল্টি দেয় আর্জন্টিনার বিপক্ষে । পেনাল্টিতে গোল করে পশ্চিম জার্মানী হারায় আর্জের্ন্টিনাকে।ম্যারডোনার কান্না কাঁদিয়েছিল পুরো বাংলাদেশকে। এদেশের মানুষের সাথে ম্যারডোনার একটি বড় মিল আছে, আর এই মিলের জন্যই ডিয়েগো বাংলাদেশের মানুষের কাছে এত জনপ্রিয়। তাহল ম্যারাডোনা আমাদের মতই অতিরিক্ত আবেগপ্রবন!!!



৬। আব্বাকে অনেক ভয় পেতাম। কারন তিনি অদ্ভুত ধরনের শাস্তি দিতেন। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ শাস্তি ছিল অন্ধকার ঘরে আটকে রাখা!!! আব্বা আবার অনেক আদরও করতেন। আমি অসুস্থ হলে তিনি উদভ্রান্তের মত হয়ে যেতেন। তিন কন্যার পর এক ছেলে, স্বভাবতই অনেক আদরের ছিলাম আমি।ঐসময় আরেকবার মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম। ভাবছি “মৃত্যু ও মৃত্যুভয় এবং আমার কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা” এই শিরোনামে একটি লেখায় সব মৃত্যু সম্পর্কিত স্মৃতিকে লিপিবদ্ধ করব। ছেলেবেলার সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা আমার আম্মার (নুরজাহান চৌধুরী)পঞ্চম সন্তান তথা আমার ছোট ভাই “সীমান্ত” এর জন্ম। সীমান্তের জন্মের পর একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয়েছিল, মনে হচ্ছিল আমি আর ছোট নাই, আমার একটা ছোট ভাই আছে, তাই আমাকে দায়িত্ববান হতে হবে!!! সেদিন আমি আর আমার বোন মিলে পুরো বাসার দেয়ালে ওর নাম লিখেছিলাম পেন্সিল দিয়ে। যাইহোক, সরকারি কর্মকর্তাদের খুব কম বেতনে অনেক বেশী খাটতে হয়। আব্বাকে সব সময় দেখতাম বেশি বেশি অফিসিয়াল ট্যুর করতে (আমার ধারনা ভ্রমনভাতা নামক বাড়তি উপার্জনের জন্য তিনি এই কাজ করতেন)।তবে প্রকৃতিগতভাবে যারা চুরি বিদ্যায় অভ্যস্ত তাদের জন্য সরকারী চাকুরী খুব ভাল চাকুরী!!!

৭। যারা আরবী পড়ায় বা মসজিদের ইমাম বা মুয়াজ্জিন তাদেরকে হুজুর বলার একটা সংস্কৃতি আছে আমাদের দেশে, আমি আজও তাদেরকে হুজুর বলার কোন কারন খুঁজে পাই না। যাইহোক, আমি একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন খালেক ভাইয়ের কাছে আরবী পড়া শুরু করি। কোরাআন শরীফ পড়া শুরু করার পর সিন্ধান্ত নিলাম কুরআন মুখস্ত করব। সূরা আল বাকারার কিছু অংশ পর্যন্ত মুখস্ত করেছিলাম। এমন সময় আব্বার বদলী হল নেত্রকোনায়। আর আমার কুরআন শিক্ষা থেমে গেল চার বছরের জন্য !!! মাঝে মাঝে আফসোস হয়, হয়ত মানিকগঞ্জে আর একটা-দুইটা বছর থাকলে আমি কুরআনের হাফেজ হয়ে যেতে পারতাম!!! আল্লাহ ভাল জানেন কোনটায় কার ভাল হবে- এই বিশ্বাসের বলে বেরিয়ে আসি জীবনের সকল আফসোসের বৃত্ত থেকে। :)

(চলবে)

কিশোর

১৫/০৩/২০১৩

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.