![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধানমন্ডি প্লাজা এ আর এর নীচে সিঁড়িতে বসে আছে কিশোর। মোবাইল সেটটা স্যামসং এর সার্ভিস সেন্টারে দিয়ে এসেছে মেরামত করার জন্য। পকেটে সীম কার্ড। নিজেকে খুব হালকা লাগছে মোবাইল ফোন ছাড়া!!! রৌদ্রজ্জল ঝিমধরা দুপুর বেলায় কিশোর ভাবছে......... একের পর এক হরতাল চলছে এদেশে । সরকারী দল, বিরোধী দল, সরকারী দল বা বিরোধীদল সমর্থিত (প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে) কোন দল বা গোষ্ঠী ইচ্ছে হলেই হরতাল ডাকছে । হরতাল ডাকাটাও খুব সোজা। কিছু সাংবাদিক ডেকে তাদেরকে বলে দিলেই হলো অমুক তারিখে হররতাল। বাকী কাজটা সাংবাদিকরা করে দেয় মানে আমাদেরকে হরতালের খবর সাংবাদিকরা জানায়!!! মিডিয়াগুলো যদি বেঁকে বসে যে তারা হরতাল সংক্রান্ত কোন নিউজ কাভার করবে না , তখন আমাদের হরতাল ও ক্ষমতাপ্রেমিক দলগুলো কি করবে? ঘটনাটা ভেবে কিশোর নিজের মনে হাসতে লাগল।
(মায়া কোন মানুষের নাম নয়। মায়া একটি স্বর্গীয় আত্না । মায়া চাইলে যেকোন বয়সী জীবিত বা মৃত নারী দেহে অবস্থান নিতে পারে।)
কিশোর নিঃসঙ্গতা কাটানোর জন্য একটি সিগারেট (বেনসন সুইচ, অকেশনাল স্মোকার হিসেবে এটাই তার পছন্দ।) ধরাল। কয়েক সেকেন্ডর জন্য চোখ বন্ধ করে আবার চোখ খুলেই দেখে পাশে মায়া বসে আছে। মায়া আসার কারন ব্যাখ্যা করে বলল আপনার সাথে সিগারেট খেতে ইচ্ছা হল তাই চলে এলাম। আপনি কি জানেন আপনাকে আমি উপর থেকে সবসময় দেখি, আমার পোস্টিং বেহেশতে হওয়ায় আমি যা চাই , তাই পাই ... এই বলে কিশোরী মায়া হাসতে লাগল .....। সে এক ভুবন ভোলানো স্বর্গীয় হাসি ।
মায়াঃ চলেন হাঁটি। আপনার হাত ধরে পৃথিবীর রোদ উপভোগ করব বলেই আমার আসা। সিগারেটটা দেন।
কিশোরঃ মায়াকে সিগারেট দিয়ে বলল সিগারেট শেয়ার করে খাওয়ার মজাই আলাদা।
ওরা দুজন ধানমন্ডি লেকের দিকে হাঁটতে লাগল। লেকে পৌছে ওদের সেই জায়াগাটায় বসল দুজন।
ছাপোষা মধ্যবিত্ত মানুষ আমার কিছু টাকা লাগবে... এই বলে মায়া কিশোরের মানিব্যাগ নিয়ে নিল ... টাকা গুনে বলল এতটাকা কেন মানিব্যাগে? আমি তো আপনার কাছে ***** টাকা ধার চেয়েছিলাম ...... তখন তো দেন নাই।
মায়ার অভিমানী চোখ মুখ দেখে কিশোর বলল কিছুক্ষন আগে বুথ থেকে টাকা তুলেছি। আর তুমি যে সময় টাকা চেয়েছিলে তখন সত্যিই আমার কাছে টাকা ছিল না। আর তোমার মতো ধনীর দুলালীকে কারো কাছ থেকে ধার করে টাকা দেয়াটা আমার কাছে অর্থহীন মনে হয়েছে।
মায়াঃ আরেকটা সিগারেট দেন...... আপনার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নাই। আপনি জানেন আমি শুধু আপনার সাথে দেখা করার জন্য মাঝে মাঝে পৃথিবীতে আসি। সব দোষ আমার মা-বাবার । ওরা আমাকে অযথা প্রেশার দিত।
কিশোরঃ তুমি আরেকটু বড় হলে তোমার মা-বাবাকে ভালভাবে বুঝতে পারতে। তোমার বয়সে সবাই মা-বাবাকে ওমনই ভাবে।
মায়াঃ বড় হব কিভাবে ......ওরা তো আমাকে বাঁচতে দিল না।
কিশোরঃ কিছুক্ষন চুপচাপ থেকে বলল, মানুষের হায়াত-মউত-রিযিক মাতৃগর্ভে থাকার সময় নির্ধারন হয়ে যায়।
মায়াঃ বলতে পারেন , আমার হায়াত এত কম হল কেন ......???
অশ্রু বৃষ্ট বর্ষিত হচ্ছে মায়ার দুচোখ দিয়ে ......তা কিশোরের মাঝেও সংক্রমিত হল।
কিশোরঃ এর কোন উত্তর আমার জানা নেই । এটা আল্লাহ ভাল জানেন।
কান্না শেষে মায়া বলল, আমাকে একটা গান শোনান জলদি, আমাকে যেতে হবে। আপনার মনে আছে আপনি সর্বশেষ আমাকে “কিছু কিছু নাম্বার থেকে আর আসবে না টেলিফোন ” এই গানটা শুনিয়েছিলেন। তার কয়েক দিন পরই আমি মারা যাই ।
এক ধরনের শুন্যতা কিশোরকে গ্রাস করে নিল ......কিশোর গান গাইতে শুরু করলঃ
And so it is just like you said it would be……Life goes easy on me……..most of the time…
And so it is the shorter story…….No love, no glory………….No hero in her sky…….
I can't take my eyes off you…….. I can't take my eyes off you…….
I can't take my mind off you……….I can't take my mind off you……….
পাশে তাকিয়ে দেখে মায়া চলে গেছে। কিশোর কিছুক্ষণ নিথর হয়ে বসে রইল।
(চলবে)
কিশোর
০৮/০৪/২০১৩
©somewhere in net ltd.