নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুভূতি প্রকাশক!

এিভুবন

আপনার পাশের সীটে বসা অথবা পাশের বাড়ীতে থাকা লোকটার মতই সাধারন।

এিভুবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

যখন তুমি স্পর্শের বাইরে -৪

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৩

সন্ধা নামছে। প্রায় জনমানবশুন্য পথঘাট। প্রচন্ড জ্বর নিয়ে কাঁটাবন মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে কিশোর। ঝড়ো বাতাস বইছে। ঘনকালো মেঘ অন্ধকারকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ক্লান্তপায়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরের মধ্যে হাঁটছে কিশোর। বৃষ্টি শুরু হল। বৃষ্টির সময় দোয়া কবুল হয়। সে দোয়া করার চেষ্টা করছে, কিন্তু একটি গানের লাইন মনে আসছে বার বার .....

If You Miss The Train I’m On, You Will Know That I Am Gone

You Can Hear The Whistle Blow A Hundred Miles,

A Hundred Miles ….. A Hundred Miles ….. A Hundred Miles ….. A Hundred Miles…

You Can Hear The Whistle Blow ….. A Hundred Miles …..



ফুলার রোডের ফুটপাতে বসে ঝড়, বৃষ্টি আর বজ্রপাত উপভোগ করছে কিশোর। পাশে পড়ে থাকা একটি লিফলেট চোখে পড়ল তার, চাকুরী প্রাপ্তির জন্য কোচিং করানো হয় সেখানে। ঐ কোচিং এর প্রধান একজন শিক্ষকরুপী চাকর হিসাবে কর্মরত ছিলেন একটি নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তারপর তিনি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা (ইংরেজী শিখানোর, চাকুরীর পরীক্ষা পাশ করানোর, বিদেশে পাঠানোর) শুরু করেন। তিনি নিজে চাকুরী ছেড়েছেন অথচ সর্বদা বিজ্ঞাপন দিয়ে বেড়ান কিভাবে মোটা অংকের চাকুরী পাওয়া যাবে তার ওখানে কোচিং করলে !!! অদ্ভূত !!! লোকটা মনে হয় মানুষ হিসেবে সুবিধার না !!! কিশোর ভাবছে, এই দেশের শিক্ষিত যুব সমাজ চাকর হওয়ার প্রতিযোগীতায় ব্যস্ত, কারন কেউই তাদেরকে উদ্দোক্তা হতে বলে না বা উদ্দোক্তা হওয়ার সাহস যোগায় না বা উদ্দোক্তা হওয়ার কোচিং করায় না!!! (ইউনুস সাহেব এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম)



কে যেন দূর থেকে ‘কিশোর” বলে ডাকছে, কিশোর ভালভাবে তাকিয়ে চিনতে পারল মায়াকে। কিশোরকে চমকে দিয়ে “মায়া” হাজির ...এসেই বলল, বৈশাখের প্রথম বৃষ্টিতে একজন কবি-লেখকের সাথে ভিজতে চলে আসলাম। কিশোর বলল, আমি কবি বা লেখক কিছুই না, আমি একজন অনুভূতি প্রকাশক মাত্র। মায়া বলল, চলেন আজ আপনাকে এক অজানা দেশে নিয়ে যাই। কিশোর বলল, ঠিক আছে... নিয়ে চলো ...... মায়া। প্রচন্ড শব্দ আর আলোর ঝলকানির ঘূর্ণিতে ওরা ধীরে ধীরে উপরে উঠতে লাগল। কিশোর মনে মনে দোয়া ইউনুস পড়ছে। কিছুক্ষণ পর কিশোর নিজেকে আবিষ্কার করল অসম্ভব সুন্দর প্রকৃতির মাঝে । কিশোর মায়াকে জিজ্ঞাসা করল, এটা কি বেহেশত? মায়া মুচকি হেসে বলল, কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় না। আপনি নিজের মনে করে সব ঘুরে দেখুন, আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছি।



কিশোর ঘুরে দেখতে লাগল চারপাশ। একজন শিশু এসে কিশোরের হাত ধরে বলল, শাহীন, আমাকে চিনতে পারছো? আমি তোমার বড় বোন ফাতেমা। চলো, আব্বা তোমাকে ডাকছে। কিশোর বলল, চলো আপু আব্বার কাছে যাই। বাবাকে দেখামাত্রই কিশোর তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলল, কেমন আছ আব্বা? বাবা বললেন, ভাল আছি। তোর উপর আমি খুব খুশি। মৃত্যুর আগেরদিন সন্ধায় তোকে যেসব নির্দেশ দিয়েছিলাম,তুই সবই সঠিকভাবে পালন করেছিস। তোকে আরো কিছু কথা বলা দরকার, মনোযোগ দিয়ে শোন। যেকোন ঘটনা ঘটবার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় আছে , তাই ধৈর্য্য সহকারে ঐ সময়ের অপেক্ষায় থাকতে হবে। সবসময় আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে। তোর বিবেক যেটাকে সঠিক মনে করে, তাই করবি। হিংসা, ভয়, সংকোচ,রাগ, ক্ষোভ, ঘৃনা, দ্বিধা মুক্ত হয়ে সবসময় ঠান্ডা মাথায় সিন্ধান্ত নিবি। আল্লাহ তোর সহায় হোক। ভাল থাকিস।



কিশোর আর মায়া হাঁটছে। মায়া বলল, ৯ই আগস্ট,২০১৩। আমার মৃত্যুর প্রথম বর্ষপূর্তি হবে, ঐদিন ঈদুল ফিতরও হবে, ঐদিন আপনার সাথে আবার দেখা হবে। খুব ভালো থাকবেন।



ফযরের আযান হচ্ছে। ফুলার রোড থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের দিকে যাচ্ছে কিশোর। অনেকদিন পর সে আজ ফযরের নামায পড়বে।

(চলবে)



কিশোর

২৩/০৪/২০১৩









মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.