নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুভূতি প্রকাশক!

এিভুবন

আপনার পাশের সীটে বসা অথবা পাশের বাড়ীতে থাকা লোকটার মতই সাধারন।

এিভুবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

যখন তুমি স্পর্শের বাইরে -৫

২৪ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:১৬

মেঘলা আকাশ। দ্রুত সন্ধ্যা নামছে। কাজ শেষ করে বাসার দিকে ফিরছে কিশোর। মনটা একটু অস্থির। তার জীবনের সবচেয়ে বিস্ময়কর সত্য হল: তার সকল সাফল্যই এসেছে বিনা পরিশ্রমে আর যা সে পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জন করতে চেয়েছে তাতে তার ব্যর্থতা এসেছে সব সময়! এজন্য মাঝে মাঝে তার মনে হয়, আমাদের জীবনের সব কিছুই পূর্বনির্ধারিত!!! কিশোর ভাবছে ...... এদেশকে সঠিক পথে চালানোর জন্য সকল ক্ষেত্রে সংস্কার দরকার, দরকার একজন প্রজ্ঞাবান সংস্কারক এবং সে নিজেই হতে চায় সেই সংস্কারক।



বারিধারা বসুন্ধরার ফুটপাত ধরে হাঁটছে কিশোর। একটি অদ্ভুত বিল্ডিং চোখে পড়ল তার। নীচ থেকে দুই তলা পর্যন্ত সিঁড়ি উঠে গেছে, তার উপর স্বচ্ছ পদার্থের তৈরি কয়েক তলা বিল্ডিং, বাইরে থেকে সব দেখা যাচ্ছে। মনে হয় এটা একটা অফিস। হঠাৎ তার মনে প্রশ্ন জাগল, অফিসের বিল্ডিংটা যতটা স্বচ্ছ, অফিসের কার্যকলাপও কি ততটা স্বচ্ছ? উত্তরটা অজানাই রয়ে গেল!



কেউ একজন তাকে হন্নে হয়ে খুঁজছে বা তাকে মিস করছে , চুম্বকের মতো কেউ তাকে টানছে ...... এমন অনুভূতি হচ্ছে তার। এই আহবানে সাড়া না দিয়ে উপায় নাই। বসুন্ধরার গেটে এসে সে একটি রিক্সায় উঠল। রিকশাওয়ালা বলল, কোথায় যাবেন? সে উত্তর দিল, জানিনা...... সামনে যতটুকু পারো নিয়ে যাও!! এমন অদ্ভুত উত্তর শুনে রিকশাওয়ালা কথা না বাড়িয়ে রিক্সা চালানো শুরু করল। কে তাকে খুঁজছে...... কে সে ?? কে তাকে টানছে ...কে ...??? মৃত্যু নাকি মানুষ। নিজের মনেই উত্তর খুঁজতে লাগল কিশোর।



আফতাব নগর পর্যন্ত এসে রিকশাওয়ালা আর সামনে যেতে চাইলো না। ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে সে হাঁটতে শুরু করল। রামপুরা টিভি সেন্টার এর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় একজন মহিলা তাকে ডেকে থামিয়ে বলল, চিনতে পারছ? কিশোর ভালভাবে তাকিয়ে তার বন্ধুটিকে চিনতে পেরে বলল , কেমন আছ?



বন্ধু: ভাল না। আমার এক দেবর হেফাজতে ইসলামের ডাকা অবরোধে অংশ নিতে গিয়ে মারা গেছে। মনটা খুব খারাপ।

কিশোর: সবাইকে চলে যেতে হবে। শুধু মন খারাপ করে থেকো না । তার জন্য দোয়া করো। আমিও তার আত্মার শান্তির জন্য দোয়া করবো।

বন্ধু: মাত্র পনের বছর বয়সী ছেলে ...... এটুকু বলেই কাঁদতে শুরু করল। কান্না থামিয়ে জিজ্ঞাসা করল, তুমি এখানে কেন? কোথায় যাও?

কিশোর: এখনো জানিনা কোথায় যাব।

বন্ধু: তুমি এখনো আগের মতোই হেয়ালী করে কথা বলো । এক যুগ আগে যেমন দেখেছিলাম তেমনি আছ। তবে অনেক মোটা হয়ে গেছো!!



বন্ধুর স্বামী চলে এসেছে। বন্ধু বার বার বাসায় যাওয়ার জন্য অনুরোধ করল, কিন্তু একবারও বাসার ঠিকানা মুখে উচ্চারণ করলো না!!!



ভারী বৃষ্টি শুরু হল। অদৃশ্য আহ্বানকারীর প্রতি টান আরো বাড়ছে। সাদা একটি মাইক্রোবাস এসে পাশে দাঁড়াল। ভিতর থেকে দরজা খুলে গেল, একজন তাকে উঠে বসার জন্য বলল। গাড়ি উড়ে চলতে শুরু করল! কিশোর কিছুক্ষণের মধ্যে তলিয়ে গেল গভীর ঘুমে।



ঘুম ভেঙে উঠে দেখে সে ঘাসের উপর শুয়ে আছে। সামনে একটি কবর। সেই কবর থেকে উঠে আসল সাদা পোষাক পরিহিত একটি মেয়ে। কিশোর চিনতে পারল মেয়েটিকে।



কিশোরঃ তোমার নাম মনে করতে পারতেছি না। আমাকে এতদূর ডেকে আনলে কেন?

মেয়েঃ আমার নাম হৃদি ।আপনাকে দেখতে ইচ্ছা হলো তাই ডেকে আনলাম। আমার খুব একা একা লাগছিল। রাগ করেছেন?

কিশোরঃ হৃদি ...হৃদয় থেকে যার উৎপত্তি ...হুমম...... হৃদয় থেকে যা উৎপন্ন হয় তার নাম মায়া। তোমার নাম হল মায়া। কিশোর কখনো মায়ার উপর রাগ করতে পারে না। চলো হাঁটি।



দুজন ঘুরে বেড়াতে লাগল রাতের নিস্তব্ধ প্রকৃতির মাঝে। ভোর হওয়ার আগে মায়া বিদায় নিল।



কিশোর হাঁটছে......একটি গান কানে বাজছে......

“ভুলা দেনা মুঝে...হ্যায় আলবিদা তুঝে...

তুঝে জি না হ্যায়......মেরে বিনা ...।

ফিজা কি শাম হু মে ...তু হে নয়ি সুবাহ

তুঝে জি না হ্যায়......মেরে বিনা ...”



(চলবে)

কিশোর

২৪/০৫/২০১৩































মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.