![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ সকালে কিশোরের একজন বন্ধু ‘জয়িতা’ চলে গেল না ফেরার দেশে। খবরটা শোনার পর থেকেই এক অদ্ভুত শুন্যতা ঘিরে ধরল তাকে। নচিকেতার একটি গান মাথায় ঘুরছে ...
“এজীবন আছে বলো কতক্ষণ ?
জীবনের বাজী ধরা ...... কভু জেতা... কভু হারা... এইতো জীবন ...... ”
ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝে খেয়া নৌকার উপর বসে পানিতে পা ডুবিয়ে ভাবছে কিশোর। কিছুদিন আগে সে একটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। তার দেখার ইচ্ছা ছিল শিক্ষিত বৃত্তবন্দী মানুষকে খুব ভালভাবে বোঝালে কত জন বৃত্তের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। ফলাফল থেকে বোঝা গেল ২-৩% মানুষ বৃত্তের বাইরে আসার সাহস দেখায় আর বাকীরা বৃত্তবন্দী থাকতেই পছন্দ করে বা নিরাপদ বোধ করে। নির্বাচনের মাধ্যমে তার সম্যক জ্ঞান হল কেন এই দেশে ক্ষমতা একি চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে!
কয়েকদিন আগে সে একটা রিয়েলিটি শো তে অংশ নিয়েছিল। এসব প্রোগ্রামে নাকি সিস্টেমে নিজেদের পছন্দের বা পরিচিত লোককে রেখে দেয়া হয়, এমন অনেক কথাই আগে শুনেছিল। এবার বাস্তব অভিজ্ঞতা হল! প্রোগ্রামগুলোতে আয়োজকদের একনায়কতন্ত্র থাকায় অংশগ্রহণকারীরা আসলে অসহায় অবস্থায় থাকে। কেউ সাহস করে প্রতিবাদ করলেও তারা কর্ণপাত করে না ।
কিশোর ভাবছে ...... হঠাৎ রূপবতীর কথা মনে পড়ে গেল। তার বন্ধু রূপবতী, জীবন সংগ্রামের এক সাহসী যোদ্ধা রূপবতী, ... রূপবতী ...... রূপবতী ......।
২০১০ সালের এক সন্ধ্যা বেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে দুজন মুখোমুখি বসে আছে। প্রায় দশ মিনিট যাবৎ রূপবতী কোন কথা বলছে না,শুধু কাঁদছে। রূপবতীর মন অসম্ভব খারাপ।
কিশোরঃ তুমি কি চাও?
রূপবতীঃ আমি খুব দ্রুত এদেশ ছেড়ে চলে যেতে চাই।
কিশোরঃ চলে যাওয়া তো কোন সমাধান না। আর দেশ ছাড়ার ব্যাপারটা সময় সাপেক্ষ।
রূপবতীঃ তাহলে আমার একটা চাকুরী দরকার।
কিশোরঃ চাকুরী তুমি পেয়ে যাবে। আগামী তিন মাসের মধ্যেই পেয়ে যাবে। এবার একটু হাসো। হাসলে তোমাকে খুব সুন্দর লাগে।
রূপবতীঃ তুমি বললেই হবে.........এই বলে রূপবতী আবার কাঁদতে শুরু করল।
কিশোরঃ তুমি আমার ডান হাতে হাত রাখ এবং স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা কর।
রূপবতী তাই করল। কিছুদিনের মধ্যেই রূপবতীর চাকুরী হয়ে গেল। সে ব্যস্ত হয়ে পড়ে নিজের জীবন নিয়ে।
২০১২ সালের এক রাত। সময় আনুমানিক রাত ৪টা। রূপবতীর এক বন্ধু ফোন দিয়ে জানাল রূপবতী আত্মহত্যা করেছে! ভূমিকম্পময় ২০১২ সালের কোন এক ভূমিকম্পের সময় অফিসের সবাই রাস্তায় নেমে যায়। রূপবতী টয়লেট থেকে বেরিয়ে দেখে তার বস তার জন্য অপেক্ষা করছে! তার মানুষরূপী পশু বস তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। রূপবতী বসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে চাকুরী ছেড়ে দেয়। অফিস কর্তৃপক্ষ তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঐ নরপশুকে মৌখিকভাবে সতর্ক করে দেয়!!! আইনের সাহায্য নিতে চাইলে তার পরিবার থেকে বাধা দেয়া হয়। তাই এক বুক কষ্ট বুকে নিয়ে রূপবতী স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নেয় ...
কিশোর আকাশের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি সীমানার বাইরের আকাশকে দেখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। বৃষ্টি শুরু হল। সে নৌকার উপর শুয়ে পড়ল। অঞ্জন দত্তের একটি গান মনে পড়ে গেল:
“আমি অনেক হেরে গিয়েও
হারটা স্বীকার করিনি
শুধু তোমায় হারাব
আমি স্বপ্নেও ভাবিনি ।”
কিশোর
২০/০৬/২০১৩
২| ২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:৩৩
এিভুবন বলেছেন: যখনই কোন অন্যায় দেখবেন, আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিবাদ করবেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতিরোধ করবেন। যাতে অন্যায়কারী একই অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি করার আগে দ্বিতীয়বার চিন্তা করে। আর অন্যায় এভাবে বাড়তে থাকলে একদিন সবাই সংঘবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:১২
বিভ্রান্ত মানুষ বলেছেন: বুজতে পারসি না কি বলা উচিত! আমাদের রুখে দারানর শময় আছেসে।