![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে, অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে-
বাংলাদেশের সবগুলো জাতীয় দিবসই আমরা দল-মত-জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে একসাথে পালন করে থাকি!
একটিই মাত্র জাতীয় দিবস, যেটা আমরা কখনোই সার্বজনীনভাবে পালন করতে পারি নি! প্রশ্ন হচ্ছে, কেন পারি নি?!
উত্তরটা খুবই সোজা— এ দিবসটিকে আমরা চরমভাবে রাজনীতিকরণ করে ফেলেছি!
যে দেশের 'জাতীয়' শোক দিবসে সবাই মিলিত-একাত্ম হতে পারে না, সে দেশের, সে জাতির প্রতিহিংসাপরায়ণতা কোন পর্যায়ের— সেটা বোঝাতে আর কোনো যুক্তি-প্রমাণের প্রয়োজন হয় না!
একটা লোক মারা গেল, তার জন্য আমরা 'জাতীয়' শোক পালন করতে যাবো কেন??
দেখুন, 'একটি লোক' ব্যাপারটা কিন্তু বড় দুশ্চিন্তার; কারণ, আপনার কাছে যিনি 'একটি লোক', আরেক জনের কাছে তিনি 'একটি দেশ'; আপনার কাছে যিনি 'একটি দেশ', অন্য জনের কাছে তিনিও 'একটি লোক'ই! ব্যাপারটা পরিপূর্ণরূপেই ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ দ্বারা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে! একটি জাতীয় দিবস ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ দ্বারা সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে— আমাদের জাতিগত সংকীর্ণতা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে ভাবতে পারেন?!!
আপনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনকে বা ধরে নিলাম বঙ্গবন্ধুকেই, পছন্দ না-ই করতে পারেন; আমার মধ্যেও তাঁর ব্যাপারে কিছু অভিযোগ-অভিমানের ব্যাপার রয়েছে— এটা একান্তই ব্যক্তিকেন্দ্রিক ব্যাপার!
কিন্তু দেখুন, আপনি যে দেশের আলো-বাতাসে বেড়ে উঠছেন, যে ভূমিতে হেঁটে বেড়াচ্ছেন, রাত্রে ঘুমাচ্ছেন, দিনে অর্থোপার্জন করছেন, যে দেশের জাতীয়তা ধারণ করে পৃথিবীর একজন 'নাগরিক' হিসেবে পরিচিতি অর্জন করছেন, যে দেশ আপনাকে লালিত-পালিত করছে, সেই দেশটি 'দেশ' হয়ে ওঠার পেছনে যে মানুষটির উদ্দীপনা-প্রেরণা-আত্মবিশ্বাস সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে, যে মানুষটি একাত্তরে আপনার-আমার হৃদয়ে স্বাধীনতার স্বপ্নবীজ বপণ করে দিয়েছেন, যে মানুষটির আহ্বানে আমাদের পূর্বপুরুষ এ স্বাধীন দেশটি স্থাপন করেছেন— সে মানুষটির মৃত্যুদিনে তাঁর জন্য আপনার মধ্যে যদি সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধ-মমতাবোধ কাজ না করে, তাহলে আপনাকে আমি অকৃতজ্ঞ ও বেঈমান বলে চিহ্নিত করতে চাই!
তা বুঝলাম; তাই বলে আমার এ দিনে জন্ম হয়েছে বলে কি আমি পাপ করে ফেলেছি যে আমি আমার জন্মদিন উদযাপন করতে পারবো না?!
কে বলেছে, আপনি আপনার জন্মদিন উদযাপন করতে পারবেন না?! অবশ্যই পারবেন! তবে হ্যাঁ, ব্যক্তিগত আনন্দ যেন 'জাতীয়' শোককে ছোট করে না ফেলে, এ দিবসের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে না ফেলে— সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে!
আপনি একটা কাজ করতে পারেন, পরিবারের লোকগুলোকে নিয়ে ঘরের মধ্যে ছোটোখাটো করে একটা অনুষ্ঠান উদযাপন করুন, কেক কাটুন, মজা করুন! এতে জন্মদিনের আনন্দটাও হলো, আবার 'জাতীয় শোক দিবস' এর মর্যাদাও রক্ষিত হলো!
আচ্ছা, সেটাও না-হয় মানা গেল; কিন্তু এই যে, ট্রাক ভরে ভরে লোক ভাড়া করে এনে শোক দিবসের জনসভা করা হয়, এটা কেন করতে হবে?!!
এই ব্যাপারটাতে আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণরূপে একমত! একুশে ফেব্রুয়ারি জাতিগতভাবে আমাদের সবচেয়ে বড় শোকের দিন; এ দিনে তো ট্রাক ট্রাক লোক এক জায়াগায় এনে (সে ভাড়া করা হোক, বা অন্য কোনোভাবে) সমাবেশ করার প্রয়োজন পড়ে না! আসলে এভাবে লোক ডেকে এনে গলা ফাটিয়ে দুচারটা জ্বালাময়ী বাক্য ডেলিভারি দিয়ে শোক জাগানো যায় না! অনেককেই বলতে শুনি, 'এ শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে'! আরে ভাই, আগে শোকটা তো ভেতরে জাগ্রত হতে হবে, না-কি! শোনেন, যারা এভাবে লোক ডেকে এনে সমাবেশ-সভা করে অর্থ ও একই সাথে নিজ কণ্ঠস্বরের শ্রাদ্ধ করছেন তাঁদের বলছি, এগুলো করে কোনো জাতীয় স্বার্থ হাসিল করা যাবে না, জনতাকে এভাবে জাগানো যায় না! শোকটাকে হৃদয় থেকে হৃদয়ে পরিবাহিত করতে হবে, ট্রাকে-বাসে করে মানুষ পরিবহণ না করে বরং যিনি যে এলাকার মানুষ, তিনি সে এলাকার যুব-কিশোর সম্প্রদায়কে নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান করুন, সেখানে শোক-'উৎসব' নয়, শোক-'আবহ' নিশ্চিত করুন! দশ হাজার মানুষকে এক জায়গায় জড়ো করে গলা ফাটানোটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, দশ জন মানুষের হৃদয়ে শোকটাকে 'প্রকৃত অর্থে' সঞ্চারিত করুন— এটাই জাতীয় শোক দিবসের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হবে!
সবশেষে, শুরুতে যে বলেছিলাম, দিবসটিকে 'রাজনীতিকরণ' করা হয়েছে; সেটা কেন বললাম?
যে শ্রেণিটি এ 'জাতীয় শোক দিবস' এর প্রবক্তা, এ দিবসটিকে আসলে তাঁরাই 'সার্বজনীন' করতে ব্যর্থ হয়েছেন, অথবা, বললে বোধহয় ভুল হবে না যে, এ দিবসটি 'সার্বজনীন' রূপ পাক— এটা তাঁরা আসলে অন্তর থেকে কামনাই করেন নি! এবং এর পেছনে রাজনৈতিক স্বার্থহাসিলের ব্যাপারটি যে সরাসরি জড়িত— এতে কোনোই সন্দেহের অবকাশ নেই!
এই যে তাঁদের বলতে শোনা যায় ইদানিং, "এ দিনটিতে জন্মদিন পালন করবেন না; আসুন সকলে সম্মিলিতভাবে জাতীয় শোক দিবস পালন করি"; এ আসলে তাঁদের মনের কথা না, তাঁরা আদতে অন্যটাই চান! কারণ, তাতে বিষয়টা নিয়ে 'রাজনীতি' চালিয়ে যাওয়ার সুযোগটা থেকে যায় বৈ কি!
তাই, সম্পূর্ণরূপে অরাজনৈতিক একজন মানুষ হিসেবে সকলকে আহ্বান জানাই, আসুন, দল-মত-জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে সম্মিলিতভাবে 'জাতীয় শোক দিবস' পালন করি; হৃদয়ে হৃদয়ে এ শোকের চেতনা পরিবাহিত করি; এবং অতঃপর এ শোককে শক্তিতে পরিণত করি যাতে করে নতুন করে আর কখনো কোনো শোকের উপলক্ষ এ দেশমাতৃকার বুকে সৃষ্টি না হয়!
২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:২৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
রাজনীতি যাদের ব্যবসা, তাদের জন্য ১৫ই আগস্ট ব্যবসার একটি দিন।
৩| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:২১
ওয়াহেদ সবুজ বলেছেন: ধন্যবাদ!
৪| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:২৩
ওয়াহেদ সবুজ বলেছেন: ১৫ আগস্টকে যে যেভাবে পারে স্বীয় স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে! 'বঙ্গবন্ধু' ব্যবসায়ের পণ্য হয়ে গেলে সেটা মেনে নেয়া যায না আসলে! #চাঁদগাজি
৫| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩
নীল আকাশ ২০১৬ বলেছেন: শেখ মুজিবকে নিয়ে অনেকের অনেক রকম প্রশ্ন আছে। সবচেয়ে গুরুতর প্রশ্ন "৭১ এ জাতিকে এতবড় বিপদের মুখে রেখে তিনি কিভাবে পালিয়ে গেলেন?"
৬| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৩১
পান-সুপারি বলেছেন: নীল আকাশ ২০১৬ ছাগু, সামুর বাইরে যায়া কাঁঠালপাতা খাও গিয়া আর নাইলে সোনাব্লগ চালু করার ধান্দা কর গিয়া। সামুতে আসলে সোগায় লাত্থি খায়াই চলতে হইবে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:২৬
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ভাল বলেছেন।