নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি ছেলেবেলায় এক বোষ্টুমি তার আগমনী গান হঠাৎ থামিয়ে বলেছিল শুক্লা দ্বাদশীর দিন অন্তরাটুকু শুনিয়ে যাবে তারপর কত চন্দ্রভূক অমাবস্যা চলে গেলো কিন্তু সেই বোষ্টুমী আর এলো না পঁচিশ বছর প্রতিক্ষায় আছি। কেউ কথা রাখেনি- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপের এই যুগে নব্বই দশকের চিঠি একটি ভালোবাসা আর বিলাসিতার নাম। বিলাসিতা এইজন্য যেখানে সেকেন্ডের মধ্যে আপনি কি বলতে চাচ্ছেন বা বলেছেন তা অন্যজনের কাছে পৌঁছে যায় সেখানে লম্বা সময় নিয়ে প্রিয়, কল্যানীয়াসু, প্রিয়তমেষু সম্বোধন করে চিঠি লেখা বিলাসিতাই বটে। আর ভালোবাসা এইজন্য এখনকার যুগে খুব কম মানুষই রয়েছে যারা চিঠি পেয়েছে, সে বেনামী চিঠি হোক কিংবা প্রিয়জনের চিঠি। চিঠি শুধুমাত্র একটি যোগাযোগ মাধ্যম নয়, চিঠি একটি আবেগ, ভালোবাসা, যত্নের নিদর্শন। একজন মানুষ অতিযত্নে অনেকটা সময় নিয়ে তার প্রিয়তমেষুর জন্য চিঠি লিখে পাঠিয়েছে। পৃথিবীতে এর চেয়ে সুন্দরতম আর শুদ্ধতম উপহার আর দ্বিতীয়টি নেই।
মানুষ একটুখানি যত্নের অভাবে মরে যায়, ঠিক যেমন একটুখানি পানির অভাবে বারান্দার টবের মাধবীলতাটা মরে যায়।
পৃথিবীতে অনেক বিখ্যাত চিঠি রয়েছে। যেমন: কাফকার মিলেনাকে লেখা চিঠি, নজরুলের নার্গিসকে লেখা চিঠি, জোসেফিনকে লেখা নেপোলিয়নের চিঠিসহ আরো অনেক চিঠি রয়েছে। বাংলা চিঠির মধ্যে আমার পছন্দ বাকের ভাইয়ের মুনাকে লেখা চিঠি। চিঠিটি হুবহু তুলে ধরছি।
প্রিয় মুনা,
কেমন আছো? আমিও ভালো আছি। ইহকালে নামাজ-রোজা তেমন রাখি নাই! রমজান মাসেও লুকাইয়া লুকাইয়া চা-বিড়ি খাইছি! সুযোগ পাইলেই এরে ওরে হালকা মালিশ কইরা দিছি। কিন্তু আমি মরার পর তুমি নাকি দুই হাত তুইলা মরা কান্না কান্দো? যদিও এক্সেস ক্রায়িং ইজ ভেরি ব্যাড! কিন্তু তোমার দোয়া বড় সাংঘাতিক!
ইহকালে টর্চার কইরা আসলেও পরকালে কেউ আমারে টর্চার করতেছে না। তুমি এতো কান্দো ক্যান মুনা? এবার একটা বিয়া করো,সংসার করো। তোমারে কইছিলাম না?মাইরে ভিটামিন আছে। মাইরে কোন ভিটামিন নাই মুনা,ভিটামিন আছে প্রেমে,সংসারে!
ফাঁ/সি নিয়া আমার তেমন কোন দুঃখ নাই। অন্য কাউরে খু/ন না করলেও, তোমার মন রে আমি খু/ন করছি। মাইন্ড মার্ডার, বিগ মার্ডার! আগে বুঝি নাই মুনা।
তোমারে স্নেহ কইরা একটা আবদার করি;
এই দুনিয়া বড় উত্তম জায়গা, বাকেরের চিন্তা করার মতো ফালতু কাজ এইখানে মানায় না। যহন ছিলাম, তহন ছিলাম,এহন তো নাই! না থাকা জিনিস আর কতদিন সাজায় রাখবা, মুনা! ভুইলা যাওয়ার ফার্স্ট স্টেপ হইল পারডন করা! মেয়ে লোক সব পারে, কিন্তু সহজে পারডন করতে পারেনা৷ আমারে তুমি পারডন কইরো মুনা! " হাওয়া মে উড়তা যায়ে" গান না গাইয়া, একটা লাল দোপাট্টার মতন আমারে তুমি উড়ায়া দিও মুনা। আমারে তুমি উড়ায়া দিও!
ইতি,
বাকের ভাই।
হুমায়ুন আহমেদের "কোথাও কেউ নেই" নাটকে মুনাকে লেখা বাকের ভাইয়ের শেষ চিঠি ছিল এটি।
প্রিয়জনকে চিঠি লিখুন, সময় দিন, যত্ন নিন। যত্নে থাকুক মাধবীলতাটা। ভালো থাকুন।
পুনশ্চঃ মানসিক অবসাদগ্রস্ত। সারাদিন প্রচন্ডরকম ব্যস্ত থাকার পরেও বাড়ি ফিরে কোন কারণ ছাড়াই হতাশা আকঁড়ে ধরে। আজকে হঠাৎ খেয়াল করলাম, গত দুমাস ধরে খুব জোর করে হাসছি, ভদ্রতাসূচক হাসি। বেচেঁ আছি আবার নেই ও।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫১
কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী বলেছেন: অবশ্যই।
আপনি ভালো আছেন শুনে ভালো লাগল। ভালো থাকবেন।
২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৪১
আজব লিংকন বলেছেন: ❝চিঠি না দাও অন্তত একটা মামলা দিও
তারিখে তারিখে দেখা তো হবে।।❞
অনেক সুন্দর লিখেছেন। এইতো কিছু দিন আগে ১ সেপ্টেম্বর চিঠি দিবস গেল তখন এই লিখাটা বেশ ভাইরাল হয়। আমার পছন্দের লেখক হুমায়ুন আহমেদ। এখন লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৪৫
কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী বলেছেন: মামলার বদলে চিঠিই দিন। মামলায় আবেগ থাকেনা, শুদ্ধতা থাকেনা।
ভালো থাকবেন।
৩| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫৬
শায়মা বলেছেন: আপুনি
আজ ছুটির দিনে আরেকটা চিঠি লেখো!
ছুটির দিনের চিঠি!
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬
কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী বলেছেন: আজ চিঠি লিখব না তবে আপনার জন্য আমার প্রিয় আরেকটা চিঠি সম কবিতার কয়েক লাইন দিচ্ছি। কবিতাটি পড়েছেন কিনা জানিনা। লাইনগুলো হেলাল হাফিজের প্রস্থান কবিতা থেকে নেয়া।
এখন তুমি কোথায় আছ কেমন আছ পত্র দিও
এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালি তালপাখাটা
খুব নিশীতে তোমার হাতে কেমন আছে পত্র দিও
ক্যালেণ্ডারের কোন পাতাটা আমার মত খুব ব্যাথিত
ডাগর চোখে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে পত্র দিও।
কোন স্মৃতিটা উস্কানি দেয় ভাসতে বলে প্রেমের বানে
পত্র দিও, পত্র দিও
আর না হলে যত্ন করে ভুলেই যেও আপত্তি নেই।
৪| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩০
শায়মা বলেছেন: থ্যাংক ইউ তবে এই কবিতা পড়েছি!!
৫| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮
শায়মা বলেছেন: এই চিঠিটা পড়ো আপুনি.....
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪১
শায়মা বলেছেন: আপুনি আমি কিন্তু জোর করে হাসি না। আমার চারপাশে এত এত হাসির উপকরণ তার মাঝে বাচ্চাদের মাঝে থেকে তাদের কান্ড দেখাও এক মহা দুঃখভোলার উপায়।
গতকাল একটা এডমিশন টেস্ট চলছিলো। নার্সারীর বাচ্চা। ছোট ছোট ইংলিশে সবাই উত্তর দিতে পারে। সেই বাচ্চাটা বাংলা জানে শুধু। তাতে কোনো সমস্যা নেই তবে আমি তাকে জিগাসা করলাম বেবি তুমি কি ইংলিশ বলতে পারো? সে মাথা নাড়লো মানে পারে। তারপর বললো "ইংলিশ".....
আর আজ একটা রিল দেখে সেই সন্ধ্যা থেকেই হাসছি। তুমিও হাসতে চাইলে সেই রিলটা দিতে পারি।