![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সব বান্ধবী মিলে ঠিক করল ফাহমিদার বিয়েতে শাড়ি পরবে। কিন্তু কোন রঙের শাড়ি পরবে এটা নিয়ে অনেক কথা হল কিন্তু কোন রং ই ঠিক করতে পারলনা। অবশেষে মিতু বলল, নীল শাড়ি হলে কি হবেনা?
মিতুর কথায় সবাই রাজি হয়ে গেল। মিতু সব বান্ধবীদের মাঝে একটু বেশিই সুন্দরী। সুন্দরী মেয়েদের কথায় একটু অন্য রকম গুরুত্ব থাকে। মিতুর ক্ষেত্রেও তাই হল। সবাই নীল শাড়ি কিনল।
বিয়ের দিন নীল শাড়ি পরে সবাই উপস্থিত হলো। নীল শাড়িতে সবাইকে খুব সুন্দর লাগছিল, তবে মিতুকে আরেকটু একটু বেশি সুন্দরী লাগছিল। মিতুরা সবাই সবে ইন্টার পাশ করেছে, ফাহমিদার বিয়ে হওয়ার পিছনে কোন গোপন কারণ ছিল তা হয়ত মিতুরা জানত না।
তারা সবাই ফাহমিদার সাথে গিয়ে ছবি তুলছিল, হঠাত মিতুর চোখ গেল সামনে দিকে। একটা ছেলে তার দিকে অপলকে তাকিয়ে আছে। মিতু ওই দিকে মনোযোগ না দিয়ে ছবি তুলাতে মনোযোগ দিল, তখ্ন বুশরা বলল, মিতু দেখ ছেলেটা তোর দিকে কিভাবে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।
তাকিয়ে আছে তো থাকুক, আমার কি? এসব ছেলেদেরকে আমার চেনা আছে। একটু দেখবে তারপর বলবে তোমাকে আমার ভাল লেগেছে। তোমার ফোন নাম্বার কি দেয়া যাবে?
মিতু কথা শেষ করতে না করতেই পিছনে থেকে একটি ছেলে থাকে ডাক দিয়ে বলল, আপু আপনার সাথে কিছু কথা কি বলা যাবে?
মিতু কিছু রেগে গিয়ে বলল, জ্বি কি বলবেন বলুন।
আপনি মিতু না?
জ্বি।
আমি আপনাকে চিনি। আপনি এম সি কলেজ থেকে ইন্টার দিয়েছেন তাইনা?
জ্বি ঠিক ধরেছে।
ধরিনি, নিশ্চিত হয়েই বলেছি।
নিশিচত যখন তখন আবার নতুন করে জিজ্ঞেস করার কি আছে?
আশ্চর্য আপনি এভাবে কথা বলছেন কেন? মনে হচ্ছে আমি আপনাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে এসেছি।
দিচ্ছেন না তবে দিতে কতক্ষণ? ছেলেদেরকে আমার খুব ভাল করে চেনা।
তাই নাকি? ছেলেদের উপর দেখি পি এইচ ডি করে বসে আছেন।
ওটা শুধু করার বাকি তবে খুব তাড়াতাড়ি করব।
মানে?
মানে আপনাকে বুঝতে হবেনা। বিয়েতে এসেছি বিয়েটা খেতে দেন।
বিয়ে খেতে এসেছেন?
জ্বি এসেছি। আপনার কোন সমস্যা?
মিতু কঠিন মেয়ে তার সাথে কথায় পারা যাবেনা। ছেলেটি চলে গেল।
রাত তখন এগারোটা মিতু বসে বসে দিনে তুলা ছবিগুলো দেখছে। হঠাত করে অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে ফোন আসল। মিতু অনেক ভেবে চিনতে ফোন ধরল। ফোন ধরতেই ওপাশ থেকেই।
মিতু আমি তিসান বলছি। আজ দিনে যে কথা হয়েছিল মনে আছে?
জ্বি আছে বলুন কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
আপনি কাস্টমার সার্ভিস খুলে রেখেছেন নাকি?
যদি মনে করেন তাই তবে তাই?
জানতে চাইবেন না কিভাবে আপনার নাম্বারটা পেয়েছি।
যেকোন ভাবে পেয়েছেন হয়ত এটা জানাটা খুব দরকা্রি না , তবে কেন ফোন দিয়েছেন এটা জানাটা দরকারি।
তেমন কোন কারণে ফোন দেইনি। দিনে কথা বলে ভালো লেগেছে তাই আরেকটু কথা বলতে ইচ্ছে করছে।
কিন্তু আমার তো আপনার সাথে কথা বলতে ভাল লাগছেনা।
না লাগলে কি আর করা আচ্ছা রাখি।
মিতু ফোন রেখে দিয়ে ভাবতে শুরু করল, এই ছেলেটা তাকে চিনে কিভাবে? সে তো কিছু জানতে চায়নি। কিছু জানা দরকার ছিল।
মিতু ছেলেটাকে ফোন দিতেই ওয়েটিং দেখতে পেল। কেন জানি ওয়েটিং দেখে মিতুর খুব খারাপ লাগল। কেন লাগল তা সে নিজেও জানেনা।
একটু পর ছেলেটি ফোন দিল।
কি ব্যাপার ফোন দিলেন যে? কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে নাকি?
জ্বি না।
ভুলে চলে গেছে।
মিতু আবার ফোন কেটে দিল। সে কেন মিথ্যে বলল? তার এই মিথ্যা বলার পিছনে কারণটা কি? সে কিছুই বুঝতে পারছেনা।
প্রায় দুইদিন পার হয়ে গেল ছেলেটি মিতুকে আর ফোন দিল না। মিতুই ফোন দিল। ছেলেটি ওপাশ থেকে বলল, আজও কি ভুলে চলে আসছে।
কি ব্যাপার আপনি এমন করছেন কেন? আপনার কি আমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করেনা।
ছেলেটা হাসল। ছেলেটির হাসি অদ্ভুত সুন্দর। মিতু এরকম সুন্দর হাসি এর আগে কখনোই শুনেনি।
কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর মিতু বলল, আপনি আমার সাথে দেখা করবেন?
হঠাত?
করবেন কিনা বলেন?
কবে?
কাল।
একটা শর্ত আছে রাখবেন?
আবার শর্ত কেন?
খুব ছোট্ট শর্ত। রাখবেন?
জ্বি বলেন।
আপনি নীল শাড়ি পরে আসবেন।
হাহাহাহা এই কথা? নীল শাড়ি পছন্দ নাকি?
হুম খুব।
তাহলে তাই হবে। শুনুন একটা প্রশ্ন করি?
জ্বি করুন।
কিছু মনে করবেন না তো।
আরে না বলুন।
আপনার কি জি এফ আছে?
কাল সরাসরি বলি?
মিতু আর কিছু বলল না। তার খুব লজ্জা লাগছে। হঠাত করে সে পালটে গেল কিভাবে? কত ছেলে তার সাথে দেখা করতে চেয়েছে কিন্তু সে তো কারো সাথে দেখা করেনি কিন্তু এই ছেলের সাথে নিজ থেকে দেখা করতে চাইছে কেন? এসব ভাবতে ভাবতে তার মাথা কেমন জানি হয়ে যাচ্ছে।
পরদিন মিতু একটি নীল শাড়ি পরে তিসানে সাথে দেখা করতে গেল। সে গিয়ে দেখল, ছেলেটি একটি মেয়ের সাথে বসে আছে।
মিতুকে দেখে সে বলল, দেখ পল্লবি এই মেয়েকে নীল শাড়িতে কেমন লাগে? তোমাকে কত করে বলেছি, একটা দিন নীল শাড়ি পরবা কিন্তু কে শুনে কার কথা। আচ্ছা মিতু পরিচয় করিয়ে দেই ও হচ্ছে আমার জি এফ পল্লবি। কাল জানতে চেয়েছিলে তাইতো।
মিতু কিছু বলতে পারছেনা। তার চোখ দুটি ভারি হয়ে উঠেছে। সে তার ভেজা চোখ আড়াল করতে চাইছে কিন্তু পারছেনা। এর নাম কি ভালবাসা? যদি তাই হয় তবে ভালবাসা সময় বুঝেনা। সময় অসময়ে কাদায়।
লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান।
এম সি কলেজ, সিলেট।
২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:০০
তিসান বলেছেন: কষ্ট দিতে হলে ভালো করেই দিতে হয় যাতে সারাজীবন মনে রাখে।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৪৫
আমি মাধবীলতা বলেছেন: এভাবে কষ্ট দিতে নেই !!