![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া কয়েকজন ভাগ্যবতীদের মধ্যে শিমুও একজন। চান্স পাওয়ার খুশিটা মিইয়ে এসেছে থাকার কথা ভাবতেই। কোথায় থাকা যায়?
মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে শিমু। কোন মতে লেখাপড়াটা চালিয়ে যেতে পারলেই হলো। একটা প্রাইভেট হোস্টেলে কথা বলে সে জানতে পারে সেখানে থাকতে গেলে অনেক টাকা লাগে। ভার্সিটির হলেও ঊঠা যাচ্ছেনা। হলের মেয়েরা নাকি ভালো হয়না। হলে থেকে পড়লে মেয়েদেরকে নাকি বিয়ে দেয়া যায়না। ব্লা ব্লা ব্লা
থাকার জায়গা খুজে না পেয়ে শিমু যখন খুব চিন্তিত ঠিক তখনি তার মামা ফোন করে জানালেন উনার এক খালাতো বোনের বাসা ভার্সিটির পাশে, চাইলে সে ওখানেই থাকতে পারে। মাসে কোন টাকা পয়সা দিতে হবেনা শুধু খালার একটা ছেলে আছে এবার মাত্র দশমে পড়ে তাকে একটু পড়ালেই হয়ে যাবে। এই খবরটা পেয়ে শিমু স্বস্থির নিঃশ্বাস ছাড়ল।
জাহেদা খালা খুবই ভালো একজন মহিলা। খালাকে শিমুর খুব ভালো লাগল। শিমু যাওয়ার পর তিনি খুব যত্ন করে তাকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে বললেন, মা এটা তোমার ঘর। খালাকে কখনো পর মনে করনা। নিজের মায়ের মতো ভেবে নিও। আর যখন যা লাগবে আমাকে বলো।
জুনেদের সাথেও পরিচয় করিয়ে দিলেন শিমুকে। জুনেদ দশম শ্রেনীর ছাত্র, যাকে শিমু পড়াবে। খালা তার বড় ছেলের সাথেও পরিচয় করিয়ে দিলেন, বড় ছেলের নাম সুহেদ। সে অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ে। সুহেদকে শিমুর খুব ভালো লাগল, জেন্টল, ও পলাইট একটা ছেলে।
খালার বাসা ভার্সিটির পাশেই তাই যাতায়াত খরচটা লাগছেনা। শিমু ঠিক মতোই তার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারছে।
কিন্তু হঠাত করে একদিন শিমু সুহেদকে নিয়ে ভাবা শুরু করল। কোন এক অজানা কারণে সে সুহেদকে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলল। অথচ সে জানেনা সুহেদ কোন মেয়েকে ভালোবাসে কিনা? কিন্তু এই বিষয়টা সে সুহেদকে বুঝতে দিলনা। আর তাছাড়া সুহেদের সাথে তার দেখা একদম হয়না বললেই চলে।
একদিন বিকেলে শিমু ভার্সিটি থেকে বাসায় যাচ্ছিল, হঠাত করে সে দেখল সুহেদ হেটে হেটে ভার্সিটির দিকে যাচ্ছে। সে ডাক দিল, সুহেদ ভাইয়া কোথায় যাও?
সুহেদ শিমুকে দেখে বলল, আরে আপনাকেই খুজছিলাম।
ভাইয়া কতদিন তোমাকে বলেছি আমাকে আপনি করে না বলতে।
ওহ হ্যা ভুলে যাই। আমার তোমার সাথে কিছু জরুরি কথা ছিল।
কি কথা? আমি বাসায় যাব, দেরি হয়ে যাচ্ছে পরে খালা বকা দিবে।
আরে রাখো খালা চল আমার সাথে চলো।
কোথায়?
গেলেই দেখতে পারবে।
শিমু সুহেদের সাথে হেটে যাচ্ছে কেন জানি তার খুব ভালো লাগছে। তার ইচ্ছে করছে সে সুহেদের হাতটা একটু ধরবে কিন্তু সে সুযোগ নেই কারণ সুহেদের সাথে হাত ধরাধরির মতো সম্পর্ক তার হয়নি।
সন্ধ্যা প্রায় ঘনিয়ে এসেছে, সুহেদ আর শিমু পাশাপাশি বসে আছে কিন্তু কেউ কিছু বলছেনা।
শিমু বলল, ভাইয়া কি এমন বলবে যে এখানে নিয়ে এসেছ?
সুহেদ বলল, শিমু তোমাকে এত দিন থেকে যেটা বলব বলব করেই বলতে পারছিনা তা আজ বলব।
শিমুর বুক ধড়ফড় করে উঠল। সুহেদ ভাইয়া কি তাকে সেই কথাটা বলতে যাচ্ছে যা শুনার জন্য সে এত দিন থেকে অপেক্ষা করছে।
শিমু, আমি খুব গুছিয়ে তোমাকে বলতে পা্রিনা কারণ গুছিয়ে কথা বলার অভ্যেস আমার নেই। আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। জানিনা তুমি কথাটাকে কিভাবে নিবে কিন্তু আমি এত দিন থেকে বলব করেও বলতে পারছিনা। প্লিজ তুমি মনে করনা যে তুমি আমার বাসায় থাক বলে আমি সুযোগ নিচ্ছি। আর হ্যা প্লিজ আমাকে মেনে নাও আর নাইবা নাও আমার এই কথার জন্য আমাদের বাসা থেকে যেও না। এতে তোমার পড়ার অনেক ক্ষতি হবে।
আর কিছু বলার আগেই শিমু সুহেদকে জড়িয়ে ধরে কেদে ফেলল। জোরে জোরে কান্না করে শিমু বলল, প্লিজ সারজীবন এভাবে বুকে আগলে রেখো। আমি তোমার সাথে সারা জীবন থাকতে চাই। প্লিজ কখনো আমাকে ছেড়ে যেওনা।
লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
এম সি কলেজ, প্রাণীবিদ্যা বিভাগ।
©somewhere in net ltd.