নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হিমুর অন্য নাম

তিসান

১২৩৪

তিসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

খিধার জ্বালা।।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৪৪

মা বাবারে কইও চাইল আনতে, ঘরে চাইল না।
তোর বাবারে কি খুইজা পাওয়া যায়? সারাদিন কই যায় না যায় আমারে কি কইয়া যায়? পকেটে টাহা থাকলে তারে কি আর ঘরে পাওয়া যায়।
খিধার জ্বালা সইতে যে পারিনা। মা তোমার খিধা লাগেনা?
না আমার খিধা লাগেনা। আমি পেটে পাথর বেধে নিয়েছি।
মা পেটে পাথর কিভাবে বাধে আমিও বাধব। আমি যে খিধার জ্বালা সইতে পারিনা।
পাচ বছরের মেয়ের মুখে এমন কথা শুনে মার চোখ দিয়ে পানি ঝরতে থাকে। মা কিছু বলতে বলতে পারেনা। তার কোন উপায় নেই, সে নিরুপায়। পাচ বছরের মেয়ে ফিরোজা এসে মায়ের আচলে টেনে বলল, মা তোমারে না হারুন কাকা কিছু টাকা দিতে চাইল তুমি নিলে না কেন?
মা একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। ফিরোজা নাছোড়বান্দা সে আবার তার মাকে বলল, মা বলোনা তুমি কাকার কাছ থেকে টাকা নিলেনা কেন? টাকা নিলে তো আমরা কিছু কিনে খেতে পারাতাম।
মারে পুরুষ মাইনষরে বিশ্বাস নাই। বিপদে সাহায্য করতে আইব ঠিকই কিন্তু বিনা লাভে সাহায্য করনের মানুষ এই দুনিয়ায় নাই সাহায্য কইরাই তোমার কাছে ছাইয়া বইব অনেক কিছু। আর পুরুষ মানুষ স্বার্থ ছাড়া কোন নারীরে সাহায্য করেনা। মারে দুনিয়াডা বড়োই কঠিন।
মা আমাদের তো কিছু নাই। কি ছাইব হারুন কাকা?
মারে তুই বুঝবিনা। জগতে কত ধান্ধার মানুষ আছে। উপর থাইকা সবরেই ভালো মনে হয় কিন্তু কে আসলে ভালো সেটা বুঝা বড় দায়।
মা দুইদিন দইরা কিছু খাইনা কিছু খেতে দাওনা মা।
ফিরোজার এমন আকুল আবেদন ফিরোজার মাকে স্পর্শ কাতর করে। মেয়ের জন্য তাকে কিছু করতে হবে। এখনো সে জোয়ান। কাজ করে খাওয়ার শক্তি তার আছে। অন্তত মেয়ের জন্য হলেও সে কাজ করবে।
ফিরোজার মা বের হোন রাস্তায় কাজের আশায়। সারদিন ঘোরাঘুরি করে কোন কাজ পেল না সে। খিধা নিয়ে হাটা যেন দায়। মাথা ঝিম ঝিম করছে তার। চোখে খুব ভালো দেখছিল না সে। হঠাত করে একটি ভাঙ্গা ইটের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায় মাটিতে। এর পর তার কিছু আর মনে নেই। সে ঘুমের ঘোরে দেখছে, ফিরোজা বিরিয়ানি খাচ্ছে। খেতে খেতে বলছে, মা মাংশের ঝোলটা খুব ভালো হয়েছে। তুমি কি রেধেছ?
ফিরোজার যখন জ্ঞান ফিরল তখন দেখল সে একটি গোডাউনে পড়ে আছে। তার পাশে কয়েকটি লোক। লোকগুলোকে দেখে ভদ্র মনে হচ্ছেনা। চুলগুলো উশখো খুসখো, কথাবার্তা কেমন জড়ানো গলায়। এদের মধ্যে সে একজনে চিনতে পারল তার নাম হারুন।
সে হাত দিয়ে দেখল তার শাড়ি ভেজা ব্লাউজের অনেক অংশ ছেড়া। কোমর মাটি থেকেই তুলতে পারছেনা সে।
হারুন নামের লোকটি তার দিকে এগিয়ে আসল। আগে যেরকম ভদ্র মনে হতো আজ সেরকম মনে হচ্ছেনা। হারুন নামের লোকটি এসে তাকে একখানা পাচশ টাকার নোট দিয়ে বলল, চলে যা।
সে অনেক কষ্টে সেখান থেকে বেরিয়ে আসল। মেয়ের জন্য এবং তার নিজের জন্য দু প্যাকেট বিরিয়ানি কিনল।
ফিরোজা বিরিয়ানি খাচ্ছে। খেতে খেতে বলল মা মাংশের ঝোলটা খুব ভালো হয়েছে। তুমি টাকা কই পেলে? ফিরোজা আর কিছ বলার আগের তার গলা জড়িয়ে এলো। সে জড়ানো গলায় বলল, মা তুমি আমাকে কি খাইয়েছ? আমি চোখে অন্ধকার দেখছি কেন? মা আমার গলায় খুব ব্যাথা করছে। মা আমার খুব কষ্ট হচ্ছে মা.।.।.।.।।।
ফিরোজার মায়েরও একই অবস্থা। সে মেয়েকে শান্তনা দিইয়ে বলল, মা তুই খেয়ে ঘুমিয়ে পড়। ঘুমালে সব ব্যাথা সেরে যাবে। আর তোকে আর আমাকে খিধার জ্বালা সইতে হবেনা। মা তুই চোখ বন্ধ কর।বন্ধ কর, বন্ধ কর।
মা মেয়ের আর কোন কথা শুনা গেলনা। তারা আর কোনদিন কথা বলতে পারবে না। নিষ্টুর এই পৃথিবী থেকে তার চির বিদায় নিয়েছে।

লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
এম সি কলেজ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


বেশী ছেলেমী ধরণের প্লট হয়ে গেছে; বিশ্বে ক্ষুধা নিয়ে গড়ে ১০% মানুষ বেঁচে আছেন; তবে, প্লটের গঠন শক্ত হয়নি।

২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৮

তিসান বলেছেন: আমার মনে হয় আপনার জানা তথ্য ভুল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.