নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হিমুর অন্য নাম

তিসান

১২৩৪

তিসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিলন বসন্ত।।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪৭

কোচিং থেকে বাসায় ফিরে দেখি আমার খালাত বোন পিংকি আমাদের বাসায় এসেছে। পিনকিকে এখন যেন আর চেনাই যায়না। আগের চেয়ে অনেক বেশি সুন্দরী হয়ে গেছে। দেহে অনেকটা পরিবর্তন এসেছে। আগের মতো কিশোরী কিশোরী ভাবটাও এখন আর নেই।
তিন বছর আগে একবার আমাদের বাসায় এসে অনেক দিন থেকে ছিল। এরপর একেবারে যে আসেনি তা কিন্তু না দু তিনবার এসেছে কিন্তু আমার সাথে একবার দেখা হয়েছে মাত্র । তাও সামনাসামনি হওয়াতে কথা না বলে পারেনি তাই কথা বলেছে।
আজ তাকে দেখে মনে পড়ে গেল তিন বছর আগের সেই ঝড়ের রাতের কথা। সে তখন মাত্র দশমে পড়ে আর আমি অনার্সে উঠেছি মাত্র। মা রান্না করছিল। আমি আর পিংকি বসে গল্প করছিলাম। গল্প করতে করতে সে বায়না ধরল সে ভূতের গল্প শুনবে। আমিও কিছু না বুঝে বায়না ধরে বসলাম ভূতের গল্প শুনতে হলে লাইট বন্ধ করতে হবে। ভূতের গল্প শুনার নেশায় সে চুপচাপ উঠে গিয়ে লাইট বন্ধ করে দিয়ে এসে আগের জায়গায় বসল। আমি শুরু করলাম ভূতের গল্প। যা মনে আসে তাই বলতে লাগলাম। ভয়ে পিংকির শরীরের সবকটি লোম কাটা দিয়ে উঠছিল। ভয় পেতে পেতে কখন সে এসে আমার কোলের উপর বসল তা আমরা দুজনেই বুঝতে পারিনি ।তারপর.........। পরদিন পিংকি আম্মুর কাছে বলে সে নাকি বাড়িতে চলে যাবে। আমিই তাকে নিয়ে দিতে গেলাম। কথা তো দূরের কথা দুজন দুজনের মুখের দিকে তাকাতেই পারিনি।
আম্মুর কাছে জানতে পারলাম সে নাকি কি একটা পরীক্ষা দিতে শহরে এসেছে কালই চলে যাবে। মনে মনে ভাবলাম এবার আমি সুযোগ হাতছাড়া করব না। এবার আমি পিংকির সাথে কথা বলব। সে কেন আমার সাথে কথা বলেনা জানতে হবে।
হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হতেই মাকে দেখলাম পিংকির জন্য নাস্তা নিয়ে যাচ্ছেন। আমি মাকে বললাম, মা এক কাপ চা দাও তো। আমি পিংকিকে চা দিচ্ছি তুমি জলদি চা দাও।
মায়ের কাছ থেকে ট্রে নিয়ে অনেক সাহস করে পিংকির রুমের দিকে এগুতে লাগলাম। অনেক দিন পর পিংকির সাথে কথা হবে মন খুলে এটা ভাবতেই মন যেন ভালো হয়ে উঠল।
পিংকি মায়ের রুমে বসে পড়ছিল। আমাকে দেখেই পাশে রাখা ওড়নাটা পরে নিতে নিতে বলল, মেয়েদের ঘরে ঢুকতে হাক ডাক দিতে হয় জানেনা না?
পিংকির গলার স্বর অনেকটা পালটে গেছে। আমি তার ওই কথায় পাত্তা না দিয়ে বললাম, চেখে দেখতো চিনি হয়েছে কিনা?
আপনি বানিয়েছেন?
হুম।
কখন এলেন?
বাঃরে এত জলদি আপনি হয়ে গেলাম।
পিংকি কিছু বলল না। চুপচাপ চা খেতে লাগল।
আমি বললাম, কিসের পরীক্ষা?
আগে দেই। দেখি কি হয়।
প্রস্তুতি কেমন?
খারাপ না।
কখন যাবে?
আসতে না আসতেই তাড়িয়ে দিতে চাচ্ছেন? সহ্য হচ্ছেনা?
আমি মনে ভাবলাম, এমন চাঁদপানা মেয়ে যদি আমার ঘরে সারজীবন থেকে যায় তবে আমার ঘরে বাতিই লাগবেনা। তাড়ানোর চিন্তাইবা কেন করব?
কি ভাবছেন?
না বলছিলাম কাল পরীক্ষায় যাবে কখন?
আটটায় পরীক্ষা। সাতটায় বের হবো।
একা যাবে?
হুম কি আর করা?
ইদানীং শহরের অবস্থা ভালো না।
ললাট ফলকে যা আছে তাই হবে?
সাপের গর্তে হাত দিয়ে যদি বল ললাটে যা আছে তাই হবে তাহলে তো ললাটের অসাম্মান হয়ে যাবে।
অসম্মান হবেনা, দেখা যাবে সাপ গর্তেই ছিল না।
যাকগে বাদ দাও ওসব। আমি যদি সাথে যাই অসুবিধে হবে?
ঠিক এমন সময় আমার চা নিয়ে মা ঢুকে বললেন, অসুবিধে হবে কেন? আমি তো তোকেই যাওয়ার কথা বলব ভাবছিলাম। একা একটি মেয়ে এতো সকালে আমি তো আর ছাড়তে পারিনা তাইনা?
আমি বললাম, আচ্ছা মা ও পড়ুক ওর কাল পরীক্ষা । চলো আমারা দুজন ওই রুমে যাই।
আমি আর মা খেতে বসেছি। পিংকি নাকি রাতে খায়না। মা অনেক জোরাজোরি করল খাওয়ার জন্য তবু সে রাজি হলো না। একবিংশ শতাব্দির মেয়েরা স্বাস্থ্যের ব্যপারে খুব যত্নশীল। খেতে খেতে মা বলল, চাকুরি বাকরি একটা কর। এই মেয়েটা আমার খুব পছন্দ। ওকেই ঘরের বউ করতে চাই আমি। হঠাত যদি কিছু হয়ে যায়। সুন্দরী মেয়েরা শৌখিনদের ভূষন। কখন কার ভালো লাগে আর নিয়ে যায় এই চিন্তায় মরি।
আমি মায়ের সামনে বসে আর ভাত গিলতে পারছিলাম না। পিংকির মতো একটি মেয়েকে নিজের বউ ভাবতেই কেমন জানি একটা শিহরন পুরো শরীরে বয়ে যাচ্ছিল।
খেয়েদেয়ে নিজের বিছানায় এসে পিংকিকে নিয়ে ভাবতে লাগলাম। অনেক দিন পর কাল সকালে তার পাশে বসব। তার হাতে হয়ত আমার হাতটি লাগবে। এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়ি বুঝতে পারিনি।
সকালে ঘুম ভাঙল মায়ের ডাকে। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে পিংকিকে নিয়ে বের হলাম।
আমরা দুজন একটা রিকশায় উঠলাম। রিকশায় উঠতে গিয়ে আমি পিংকির হাত ধরলাম পিংকি হাত সরিয়ে নিল।আমি পিংকিকে বলতে চেষ্টা করলাম যে পিংকি ওই দিন রাত্রে যা হয়েছে তার জন্য আমি দুঃখিত। ওটা মনে ধরে এভাবে বসে থাকলে তো চলবেনা। কিন্তু সাহস করে আর বলা হলো না। সে কঠিন মুখ করে অন্যদিকে তাকিয়ে রিকশায় বসে রইল।
রিকশা থেকে নেমে পিংকি বলল, আপনি বাসায় চলে যান।আমি পরীক্ষা দিয়ে যেতে পারব। কিন্তু আমি বাসায় গেলাম না। পিংকির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ভাবছিলাম পিংকির জন্য কোন উপহার কিনা যায় কিনা? এখন গিয়ে কিনে আনব? নাকি তাকে সাথে গিয়ে কিনব? এখন কিনে আনতে গেলে এসে যদি দেখি সে চলে গেছে তাহলে সব বৃথা। তাহলে থাক তাকে সাথে নিয়ে গিয়ে কেনা যাবে।
আমি রাস্তার মোড়ে একটা দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম। হঠাত দেখালাম পিংকি আসছে। তার সাথে একটা ছেলে। আমি যে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কাছে এসে সে বলল, ভাইয়া ও হচ্ছে রাসেদ। আমার বয়ফ্রেণ্ড। সব কিছু কেমন যে উলট পালট লাগছিল। কোন সমীকরণই যেন মিলছে না। ছেলেরা কি অদ্ভুত প্রাণী কাঁদতে চাইলেও কাঁদতে পারেনা। এর চেয়ে কঠিন শাস্তি কি আর হতে পারে।
হঠাত বুঝতে পারলাম কেউ একজন আমার ঘাড়ে হাত রেখেছে। আমি পিছনে ফিরে তাকালাম। পিংকি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তার মুখে আগের মতো কঠিন ভাব নেই। সে বলল, আজ থেকে তিন বছর আগে যে ভুলটা করেছিলাম তো্মাকে পাওয়ার মাধ্যমে সে ভুলটা শুধরে নেব।
এই বলে পিংকি আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি নিজেকে সঁপে দিলাম পিংকির কো্মল বক্ষে।

লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, এম সি কলেজ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২১

শামছুর রহমান বলেছেন: অনেক ভাল লাগল, জানিনা এটা একটি কল্পিত গল্প না , সত্য ঘটনা যা হোক বেশ উপভোগ করলাম !

২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৩৮

ওমেরা বলেছেন: সত্য মিথ্যা যাই হোক সুন্দর হয়েছে ।

৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৫১

অবনি মণি বলেছেন: চলুক!!

৪| ০৫ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৫৮

তিসান বলেছেন: ধন্যবাদ হে প্রিয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.