নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে নিজেকে আঠেরো শতাব্দীর অঘোষিত সাফল্যহীন কবি মনে হয়। যার কিছু লেখা নামহীন বাজারি পত্রিকায় ছাপা হয়ে ছিল কিন্তু কেউ তা পড়ে দেখিনি।

পবিত্র হোসাইন

আমি মানুষ, রোবট নই।

পবিত্র হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হঠাৎ সন্ধ্যা (৩য় পর্ব )

১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৪৩



সেদিন হঠাৎ সন্ধ্যা নেমে বসলো। আকাশ কালো করে মেঘেরা ঝুম ঝুমিয়ে গাইতে লাগলো। আচমকা বিদ্যুৎ ঝলকানি মনে ভয় ধরিয়ে দেয়। মনে হয় কেউ জগৎকে আলোকিত করার বৃথা চেষ্টা করছে। এই আলো নিভুর খেলায় মীরা আপাকে খুব মনে পড়ছে। বৃষ্টির দিনে আমি আর আপা বাড়ীর পেছনে আমড়া গাছ তলায় চলে যেতাম। আঁচল ভরে আমড়া কুঁড়িয়ে আনতাম। আপার হাতে জাদু ছিল। আপা বেশী করে কাঁচা মরিচ দিয়ে আমড়া মাখাতো। আপার ঝাল ঝাল আমড়া মাখা অমৃত মনে হতো। সেই স্বাদ আজও মুখে লেগে আছে। কিন্তু আজ আপা নেই, গাছটিও নেই। গাছও হয়তো মানুষের ভালবাসা বুঝে। তাই আপার মত সেও অভিমান করে চলে গেছে। যে চলে যায় সে কখনো ফেরে না। আপাও চলে গিয়েছে তার রাজকুমারের হাত ধরে হয়তো সেও ফিরবে না।

মনের শত শত কল্পনা ভেঙ্গে গেল সদর দরজার শব্দের আঘাতে। এই বৃষ্টি সন্ধ্যাবেলায় কে এলো? বাবাতো এতো আগে বাড়ী ফেরেন না। অনেক রাতে যখন মায়ের কান্নার শব্দ শোনা যায় তখন বুঝি বাবা এসেছে। আজকাল বাবা খুব রাতে বাড়ী ফেরেন। পৈতৃক ব্যবসাটা ধংস্ব করে মদ খাওয়টা ভালই শিখেছেন। আসলে বাবা যে হোমিওপ্যাথিক বিদ্যা শিখছেন এটা তার ফলাফল। মোতালেব আংকেল যে হোমিওপ্যাথিক বিদ্যার নামে বাবাকে মদের নেশায় ডুবিয়েছেন সেটা আর কেউ না জানলেও আমি জানি। আজকাল বাবার মাতলামি সবাইকে আরোও অতিষ্ট করে তুলেছে। জানিনা মা কিভাবে সহ্য করে। তবে এজন্য আমি মাকে দোষ দেই তার অতিরিক্ত পতিভক্তি বাবাকে আরো হিংস্র করে তুলেছে। সেদিনকার ঘটনা- বাবা মদ খেয়ে অনেক রাতে বাড়ী ফিরছেন। রাস্তার কুকুরটা বাবাকে দেখে ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো। বাবা সেখানে দাঁড়িয়ে হইচই করতে লাগলেন। বলতে লাগলেন-হারামজাদা আমার বড়ো মেয়েকে খেয়েছিস এখন আমাকে খাবি? আমি তোকে গুলি করে মারবো। এ বলেই বাবা গালি দিতে দিতে বাড়ীতে ঢুকলেন। হিংস্র হয়ে আলমারী থেকে বন্দুক বের করে আবার রাস্তায় নেমে পড়লেন। কুকুরটিকে গুলি করে মারলেন। তারপর শান্ত হয়ে হয়ে ঘরে ফিরে মাকে বললেন- মাগী একটি ছেলে জন্মাতে পারিস নাই। তোর মেয়েকে নিয়ে রাশেদ পালায়। শালাকে গুলি করে রাস্তায় ফেলে এলাম। ফের যদি তোর মেয়েকে রাশেদের সাথে দেখি ওই শালীকেও গুলি করে মারবো। বাবা এতেই চুপ রইলেন না। কথায় কথায় বন্দুক বের করতেন বলে পরের দিন আবারো বন্দুক নিয়ে হ্ট্টগোল শুরু করলেন। বড় চাচার সামনে বন্দুক রেখে বললেন- তিনি এই পুরনো বাড়ীতে আর থাকতে চান না। বাড়ীটা বিক্রি করে একটি নতুন বাড়ী কিনতে চান। মোতালেব আংকেলের এক পরিচিত লোক বাড়ীটা কিনতে আগ্রহী সে মোটা টাকা দিতে চাচ্ছে তার কাছে বাড়ীটা বিক্রি করে নতুন বাড়ী কিনবেন। বড় চাচা তার এমন পাগলামি দেখে কিছু বললেন না। চুপচাপ নিজের ঘরে চলে গেলেন। বাবা তখন কিছুটা হতাশ হলেও পরে লোক ডেকে বাড়ী মাপতে লাগলেন।

আমাদের বাড়ীটা অনেক পুরোনো। উঠান পেরিয়ে সদর দরজায় যেতে হয়। এই বৃষ্টি সন্ধ্যায় একা একা সদর দরজা খোলার সাহস হয় না কিন্তু আমাকে যেতে হবে। আজ দু-দিন হলো মা জ্বরে কাবু। জানি বড় চাচাকে ডাকলেও কাজ হবে না। তিনি সারাদিন নিজেকে ঘরে বন্দি করে রাখেন। ডাকলেও সাড়া দেন না। তাকে ডাকার বৃথা চেষ্টা না করে ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। সকল ভয় ভেঙ্গে দরজা খুলতেই আমার সারা শরীর কাঁটা দিয়ে উঠলো। আমার সামনে জাকির মাস্তান দাড়িয়ে আছে।

(চলবে)

(হঠাৎ সন্ধ্যা) ১ম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন

(হঠাৎ সন্ধ্যা) ২য় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন



মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:১৪

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আর একটু বড়ো করে পর্ব করা যায় না? সুন্দর লেখা।

১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:৪১

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: ঠিক আছে আরেকটু বেশী লিখবো। আপনার ভালো লেগেছে জেনে আরাম পেলাম।
অনেক শুভ কামনা। !:#P

২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৩:০১

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: গল্প ভালোই এগুচ্ছে। মানুষরূপী শয়তান মোতালেব এর শয়তানী রূপটা ভালোই এঁকেছেন, মনে হচ্ছে কোন বাস্তব ঘটনার ছায়া অবলম্বনেই গল্পটি। প্রতিটি পর্বের ধৈর্ঘ্য আর একটু বর্ধিত হলে মনে হয় মন্দ হতো না।

১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:৪৫

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: না ভাই ! সত্য ঘটনা অবলম্বনে লিখা নয়। প্লটটা চিন্তা করেছিলাম অন্যরকম, কোনো যেন বদলে যাচ্ছে। শেষে কি হবে এখনো জানি না।
অনেক ধন্যবাদ।

৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:০১

সোনাগাজী বলেছেন:


বাড়ীটার অবস্হান শহরতলীতে, গ্রামে, শহরে?

১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:৫১

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: বাড়ীটার অবস্হান শহরতলীতে, গ্রামে, শহরে?


শহরতলী চিন্তা করলে সেটা খারাপ না। আবার ৯০ দশকের পুরোনো ঢাকাকে ভাবা সমম্ভব। পাঠক যেভাবে নিবে ।
আমাকে প্রশ্ন করলে আমি বলবো -আমি শুধু একটি মহল্লা এবং একটি পুরোনো বাড়ি দেখছি ।

৪| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: পবিত্র হোসাইন,




আগের খন্ড পড়ে এখানে আসা। ভালোই হচ্ছে।

ইরার জীবনে কতোই যে ঝকমারী!!!!!!!

১৭ ই অক্টোবর, ২০২২ সকাল ১১:২৯

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: সবকয়টি খন্ড পরার জন্য অনেক ধন্যবাদ। পরের পর্বের নিমন্ত্রণ রইলো।

৫| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১০:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। ভাষা অতি মনোরম।

১৭ ই অক্টোবর, ২০২২ সকাল ১১:৩০

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: রাজীব ভাই আপনার জন্য শুভকামনা।

৬| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:২২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: রাজীব ভাই আপনার জন্য শুভকামনা।

ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।

৭| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৮

মিরোরডডল বলেছেন:

নতুন উপদ্রব, জাকির মাস্তান ...

২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ১১:৩৩

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: সত্যি তাই, জাকিরটা বড় জ্বালাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.