নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধুর!

বিকট

হাসান মাহবুব

আমার অপদার্থতাকে মাহাত্ম্য ভেবোনা...

হাসান মাহবুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতালি যে ভুল করেছে, আমরাও কি সেই ভুল করছি?

১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:১৪


যেহেতু আমাদের দেশে করোনা ভাইরাস “সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে” আছে, এবং স্থানীয় পর্যায়ে ভাইরাস না ছড়ালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কোন প্রয়োজনীয়তা নেই, তাই আমরা আয়েশ করে দুর্গত দেশগুলির অবস্থা দেখতে পারি। রেডিটে একজন ইতালিয়ান তাদের দেশের করোনা আক্রমণের কিছু পর্যায় বলেছেন। সেগুলি এমন-

পর্যায় ১- করোনা ভাইরাসের প্রথম কেস ধরা পড়লো। এটা আর কী এমন! ফ্লু এর মত কিছু একটা। আর তাছাড়া আমার বয়স তো ৭৫+ না। ভয়ের কী আছে। সবাই অযথাই আতঙ্কিত হচ্ছে। ভয়ের কিছু নেই।

পর্যায় ২- আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। বাড়তে বাড়তে একটা বলার মত পর্যায়েই এসে গেছে। দুই একটা ছোট শহরকে রেড জোনে রাখা হয়েছে। যাক, তারা তাদের মত চিকিৎসা নিতে থাকুক, আমরা আমাদের মত ঘুরে বেড়াই। মিডিয়া অযথাই প্যানিক ছড়াচ্ছে। এদের কি আর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই! আমাদের এলাকায় সবাই ভালো আছে। ভালোভাবেই খেয়ে-পরে-ঘুরে-ফিরে বেঁচে আছে। যাই, আমার এক বন্ধুর বাসায় পার্টি আছে আজ।

পর্যায় ৩- ঘটনা কী! হঠাৎ করে লাফিয়ে লাফিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে কেন? কাল যা ছিলো, আজ তার দ্বিগুণ হয়ে গেছে! দেশের এক চতুর্থাংশকেই বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। আক্রান্ত অঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলেও অফিস-আদালত-রেস্তোঁরা-বার খোলা আছে। দেশের বাকি অংশ অবশ্য স্বাভাবিকভাবেই চলছে। এর মাঝে রেড জোনের দশ হাজার “বুদ্ধিমান মানুষ” তাদের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেতে স্বাধীনতা লাভের প্রবল আকাঙ্খায় দেশের অন্যান্য অংশে চলে গেলো। যাবে না কেন? তাদের দেশের বাড়ি সেখানে। আত্মীয় স্বজনের সাথে থেকে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করা দরকার। যদিও টিভিতে অনবরত বলা হচ্ছে ৫ জনের বেশি লোকের জমায়েত করা ঠিক না, বারবার হাত ধুতে হবে, হ্যান্ডশেক করা যাবে না, তবে মানুষজন আমলে নিচ্ছে না তেমন।

পর্যায় ৪- আক্রান্তের সংখ্যা ভয়ংকরভাবে বাড়তে শুরু করছে। সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষিত হয়েছে। জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করা হয়েছে। হাসপাতালগুলিতে জায়গা নেই। পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের ডেকে আনা হচ্ছে অবস্থা সামাল দেয়ার জন্যে। এবং অবশ্যই, চিকিৎসকরাও আক্রান্ত হচ্ছে, তারাও তাদের পরিবারকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। নিউমোনিয়া এবং শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা ভয়ংকরভাবে বাড়ছে। এখন অবস্থাটা এমন, “যোগ্যতমরা টিকে থাকবে” এই নীতিতে বয়স্ক, এবং অধিক সংকটে জর্জরিত রোগীদেরকে চিকিৎসা না করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে, একটু জোয়ান এবং স্বাস্থ্যবানদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

পর্যায় ৫- পুরো দেশকেই কোয়ারেনটিন করে রাখা হয়েছে। তবে দোকানপাট, ব্যবসাবাণিজ্য এখনও খোলাই আছে। সবকিছু বন্ধ করে দিলে অর্থনীতির ভেঙে পড়বে না? (ভেঙে পড়েছে ইতিমধ্যেই)। এক শহর থেকে আরেক শহরে বিশেষ কোন কারণ ছাড়া যাওয়া নিষিদ্ধ। এর মাঝেও কিছু মানুষ নিজেদের অমর ভাবছে। দল বেঁধে ঘোরাফেরা করছে। রেস্টুরেন্টে খাচ্ছে।

পর্যায় ৬- মাত্র দুইদিন পরের ঘটনা। সব ধরণের ব্যবসাবাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র সুপারমার্কেট, আর ফার্মেসি খোলা থাকবে। বাইরে বের হতে হলে বিশেষ সনদ লাগবে। সনদ দেখাতে না পারলে ২০০ ইউরো জরিমানা। আর যদি করোনা পজিটিভ অবস্থায় পাওয়া যায়, তাহলে ১২ বছরের জেল।

এই হল ইতালির গত এক মাসের করোনা টাইমলাইন। আজ থেকে এক মাস পরে আমাদের অবস্থাও কি এমন হবে? আমরাও কি সেই একই ভুলগুলি করছি না?

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:২৫

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আমার ঠিক এই ভুলগুলোই করছি। সব কিছুতে আমাদের আন্দোলন করতে হয়। একজন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আর নির্দেশ ছাড়া কোন কিছুই সম্ভব হয়না। :(

২| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৩৮

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: আমরা এই ভুলগুলোই করছি। ইতালি থেকেও দেশে আসছি, স্বজনপরিজনের সাথে দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য।

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:০৬

রাশিয়া বলেছেন: আমরা যদি এই ভুলগুলো নাও করি, তাহলেও করোনা ঠিকই ছড়াবে। এই সরকারেরও কিছু করার নেই, আমাদেরও কিছু করার নেই। সব কিছু আল্লাহ্‌র হাতে ছেড়ে দিয়ে আমাদের এখন ব্লগার রাজীব নূরের "যে কটা দিন বাঁচব - আনন্দ নিয়ে বাঁচতে চাই" মনোভাব নিয়ে চলতে হবে।

৪| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:০৬

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




ইতালির গত এক মাসের করোনা টাইমলাইন দেখে আমারো মনে হচ্ছে আজ থেকে এক মাস পরে আমাদের অবস্থাও কি এমন হবে? আমরাও কি সেই একই ভুলগুলি করছি না? দেশের জনগণ দেশের প্রবাসী, দেশের সরকার সব উম্মাদ। আর উম্মাদের কি সমস্যা হয় তা একমাত্র সময় বলে দিবে আর আমরা ভয়ঙ্কর সময়ের জন্য অপেক্ষা করছি মাত্র।




৫| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৫৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: বিজ্ঞব্লগার সময়োপযোগী পোস্ট। এটা পড়ার পর বিষয়টি সহজগম্য হয়ে গেল ।

আর সময় থাকতে সিদ্ধান্ত নিতে হয় না হলে পস্তাতে হয় । আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ দারুন একখানি পোস্টের জন্য ।
চূড়ান্ত সাবধানতার এখনই সময় । অশেষ কৃতজ্ঞতা ।

৬| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: ৪র্থ শিল্পবিপ্লব, ৭ জি নেটওয়ার্ক, হ্যান ত্যান ভবিষ্যত, সব কিছু ভাইরাসের কাছে হেরে ভূত। অকেজো আগামী। ভুল আশা। ব্যাক টু স্কয়ার ওয়ান।

৭| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:১০

করুণাধারা বলেছেন: ভালো বিষয়ে লিখেছেন। করোনা ভাইরাস সাধারণ ফ্লু ভাইরাসের মতো নয়, অথচ আমরা একে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছি না। ইতালির মত দেশ হিমসিম খাচ্ছে, আমাদের দেশে ইতালির মত হলে কী হবে... আল্লাহ ভরসা করে বসে থাকা ছাড়া আমাদের মতো আমজনতার আর কীইবা করার আছে!!

শ্রমসাধ্য চমৎকার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

৮| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৩৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: একমাত্র আল্লাহই রক্ষাকর্তা ।

৯| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৩৬

এম এ হানিফ বলেছেন:



যে আগামীর কথা ভাবে সেই বুদ্ধিমান। আর যে আগামীকে চোখের সামনে স্পষ্ট দেখতে পেয়েও নির্বাক থাকে, তার মত অধম আর কে আছে?

আমাদের সামনে এখন যুদ্ধ, মহাযুদ্ধ। অতি ক্ষুদ্র এক জীবানুর সাথে মানবের লড়াই। আসুন প্রস্তুত হই সকলে। সকলের চেষ্টা ছাড়া এ যুদ্ধ জয় অসম্ভব।

১০| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:২০

নীল আকাশ বলেছেন: হাসান ভাই,
এটা বাংলাদেশে হলে কী হবে সেটা শুধু আল্লাহ রাব্বুল আলামীনই জানেন!!!!
দেশে কোন রকম প্রিপারেশন নেই। আল্লাহর ওয়াস্তে চলছে সব।

১১| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৪

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ইটালিয়ানরা যে রকম স্বাস্থ্য সচেতন আমরা এর সিকি ভাগও নই।
তাঁদের নাকানি চুবানি অবস্থা, আমাদের কি হবে তা আল্লাহ মালুম !

১২| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ৯:২৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দেশের মালিক জনগণ বললেও প্রকৃত পক্ষে আমাদের
দেশ চালায় সৃষ্টিকর্তা মহান রব্বুল আলামিন। আমাদের
দেশের নেতা নেত্রীরা অবলোকন করছেন " দেখিনা কি হয়"
এমন একটা পরিস্থিতি। এ দেশকে আল্লাহ রক্ষা না করলে
কারোর কিছু করার থাকবেনা। আল্লাহ আমাদে হেফাজত করুন।
আমিন

১৩| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১০:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: জনাব, রাশিয়া সবাইকে তো মরতে হবে। তাই আসুন যেক'টা দিন বাঁচি আনন্দ নিয়ে বাঁচি।

১৪| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১০:৩৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: হাসান মাহবুব,





কে জানে! হয়তো বা.....................

১৫| ১৭ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১:১৯

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
কোয়ারেন্টিন সবচেয়ে কার্যকর একমাত্র পদ্ধতি।

হংকং বর্তমানে এভাবেই সম্পুর্ন করনা মুক্ত।
এই রোগ প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার না হলেও এই জীবানুর আচরনটা বুঝা গেছে।
খুব দ্রুত ছড়ালেও। মানুষের দেহ বাদে প্রকৃতিতে বাচে না, অন্য পশু পাখিতেও ভর করতে পারে না।
আগে বলা হচ্ছিল এটি কম তাপমাত্রায় ছড়ায়, গরম তাপমাত্রায় ছড়াতে পারে না, পরে জানা গেছে তাপমাত্রার সাথে এই ভাইরাসের কোন সম্পর্ক নেই।
যে কোন তাপেই দেহের বাহিরে বেশিক্ষন টিকতে পারেনা এই ভাইরাস।

হংকংয়ে প্রবেশ করা প্রত্যেককে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা সরকারিভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে হংকংয়ে, এখন আইনে পরিনত করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন যথাযথভাবে হচ্ছে কিনা তা মনিটর করছে হংকংয়ের পুলিশ প্রশাসন।
এখানে সরকারিভাবে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং হোম কোয়ারেন্টিন বা ঘরে কোয়ারেন্টিনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা ঘরে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন তাদের নিয়মিত ফোন করে খোঁজখবর রাখছে প্রশাসন।
শুরুর দিকে দু'জন কোয়ারেন্টিন ব্রেক করেছিল, তাদের খুঁজে বের করে মোটা অংকের জরিমানা করে আবারো কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
করনা মুক্ত করতে হংকং পার্ফেক্ট উদাহরন।

১৬| ২০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১১:১৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: সবাইকে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.