নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধুর!

বিকট

হাসান মাহবুব

আমার অপদার্থতাকে মাহাত্ম্য ভেবোনা...

হাসান মাহবুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষদের জন্যে...

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৪৯



আমি জানি না সুইসাইডাল মানুষকে মোটিভেশনাল স্পিচ দিয়ে ফেরানো যায় কি না। আমি জানি না এমপ্যাথি দিয়ে ফেরানো যায় কি না। আমি জানি না কীভাবে এমন একজনকে ফেরানো যায়। কিন্তু ফেরাতে তো হবেই! ক্রিকেটে যেমন রান আউট মেনে নেয়া যায় না, কারো জীবনের শেষ সুইসাইডের মাধ্যমে হলেও মেনে নেয়া যায় না। শুধু জানি যে আমি একসময় সুইসাইডাল ছিলাম, এবং শেষ পর্যন্ত করি নি সাহসের অভাবে। ভাগ্যিস করি নি! অফিসের তিন তলার বারান্দায় গিয়ে বসে থাকতাম। লোভী চোখে তাকিয়ে থাকতাম নিচের দিকে। ঝুঁকে পড়তাম। মাঝে মাঝে মনে হত যে ঘটনা মনে হয় ঘটেই যাচ্ছে! এখুনি! কিন্তু কোন এক অজানা ভয়ে লাফ দেই নি কখনও। ধানমন্ডি লেকের পাড়ে বসে থাকতাম। মনে হত বারান্দা থেকে লাফিয়ে মরার চেয়ে পানিতে ডুবে মরাতে মনে হয় কষ্ট কম। তারপরেও শেষ পর্যন্ত লাফ দেই নি। ৫০টা ঘুমের ঔষধ খেয়েছিলাম দুইবার। আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে না অবশ্য। ঘুমের উদ্দেশ্যে। একবার স্টোমাক ওয়াশ করতে হয়েছিলো, আরেকবার এমনিই ঘুমিয়েছিলাম কয়দিন। আমি ১টা, ২টা, ৫টা, ১০টা ২০টা এভাবে ডোজ বাড়িয়ে রেজিস্ট্যান্স তৈরি করেছিলাম। এজন্যে হয়তো হারিয়ে যাই নি।

এসবই ঘটেছে ২০০৮ থেকে ২০১৪ এর ভেতরে। চরম হতাশার সময়।অনলাইনে এর মধ্যেই চুটিয়ে ব্লগিং করেছি, গল্প লিখেছি, সামুতে সেলিব্রেটি ব্লগার খেতাব পেয়েছি, একেকটা লেখায় ৩০০ এর কম মন্তব্য থাকতো না। কিন্তু কেউ কি জানেন এসব কথা? না, আমার ব্যক্তিগত কষ্টের কাঁদুনি কখনও জনসমক্ষে প্রকাশ করি নি। আজ কেন এসব বলছি? বলছি, যদি আত্মহত্যাপ্রবণ একটি প্রাণও অন্তত এই লেখা দেখে নিজেকে ফেরায়। একজন মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারার চেয়ে পূণ্য কর্ম আর হয় না।
কিন্তু ম্যাজিক টিপসটা কী? কী করলে আত্মহত্যাপ্রবণতা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে? কোন ম্যাজিক টিপস নাই। দাঁতে দাঁত চেপে কষ্ট সহ্য করে যেতে হবে। প্রেমে ব্যর্থতা, প্রিয়জন হারানোর কষ্ট, নিজের জীবনের গ্লানি, সবকিছুই একসময় না এক ফিকে হয়ে আসবে। সব কষ্টেরই শেষ আছে বলে বিশ্বাস করি। কেউ এসে কষ্ট কমিয়ে দিয়ে যাবে না। কিন্তু মানুষের সহ্যক্ষমতা অসীম। এক মাসে কষ্ট দূর হবে না, এক বছরে না, হয়তো পাঁচ বছরেও না। কিন্তু কষ্ট করে হলেও বেঁচে থাকলে একসময় না একসময় এর সুফল পাওয়া যাবে বলেই আমার বিশ্বাস।

আমার আত্মহত্যাপ্রবণতা কোন শখের বিষয় ছিলো না। আমাকে রিহ্যাবেও থাকতে হয়েছে। এতকিছুর পরেও যেহেতু স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পেরেছি, আমার মনে হয় আমাকে উদাহরণ হিসেবে দেখালে ভুল হবে না। মন্ত্র ঐ একটাই, সহ্য করতে হবে, অপেক্ষা করতে হবে, সামনে হয়তো বা রূপকথার মত সুন্দর দিন আসবে না, কিন্তু কিছুটা হলেও কষ্ট লাঘব হবে। তখন আর আত্মহত্যার কথা মনে নাও হতে পারে। এখন আমি ভাবি, যদি ঝাঁপ দিতাম জলে অথবা ওপর থেকে, কিংবা যদি ঘুমের ঔষধগুলি কাজ করেই ফেলতো...তাহলে কোথায় থাকতাম আমি!

অনেকেই বলে যারা আত্মহত্যা করে, তারা বলে কয়ে করে না, তারা অত নাটক করে না। কিন্তু এটা অত্যন্ত ভুল কথা। চোখের সামনেই উদাহরণ আছে। দেখবেন? অন্তর রাজ নামে একটা ছেলের টাইমলাইনে ঘুরে আসতে পারেন। তাই কারো মধ্যে নূন্যতম আত্মহত্যাপ্রবণতা দেখলে অবহেলা করবেন না। বিশেষ করে কাছের মানুষেরা।

আমি কীভাবে ফিরে এসেছি, সেই দীর্ঘ গল্প কখনই করবো না। প্রতিটা মানুষের কষ্ট তার একান্তই ব্যক্তিগত। প্রতিটা মানুষের লড়াই তার ব্যক্তিগত। একজনের সাথে আরেকজনেরটা মেলানো যাবে না। তাই টিকে থাকার উপায় নিজেকেই বের করতে হবে। কারো হয়তো বা একটু সহানুভূতি, কারো হয়তো বা নতুন কাজ, কারো হয়তো বা লেখালেখি, কারো হয়তো বা আঁকাআঁকি, আবার কারো জন্যে প্রার্থনা, ধর্মীয় আচার, কে কীভাবে শান্তি পাবে সেটা সেই ভালো জানে। তাকেই খুঁজে নিতে হবে। তবে তার জন্যে বেঁচে থাকার নূন্যতম ইচ্ছা থাকতে হবে। এই একটু শুভইচ্ছাকে যত্ন করে রাখলেই একসময় জীবন নিজের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজে লাগিয়ে নিজেকেই রক্ষা করবে।

একটা কথা বলে রাখি। ২০১২ তে আমার বিয়ে হয়। ২০১৩ তে বাবা হই। তারপরেও ২০১৪ পর্যন্ত ভয়াবহ সময় কেটেছে। অতলে তলিয়ে যাচ্ছিলাম। এজন্যে এই কথাগুলি বলছি, আমি কিন্তু আমার স্ত্রী বা মেয়ে বা বাবা-মার জন্যে ফিরে আসি নি। আমার অবস্থা এমন ছিলো, এত কাছের মানুষেরাও আমাকে বেঁচে থাকার প্রেরণা দিতে পারতো না। এজন্যে বলছি এই কথাগুলি, এমন অবস্থা থেকেও যে নিজের শক্তিতে ফিরে আসা যায়, এটা বোঝানোর জন্যে। প্লিজ, এই শক্তিটুকু ব্যবহার করো, হয়তো বা জীবনের খুব সাধারণ কিছুই একসময় অসাধারণ মনে হবে।

আবারও বলি, কোন ম্যাজিক টিপস নেই। ফিরে আসার পথ দীর্ঘ এবং ক্লান্তিকর। কিন্তু আমার মত দুর্বল মানুষ যেহেতু এই পথ পাড়ি দিতে পেরেছে, অন্যরাও পারবে।

আমি এখনও দুর্বল, অলস, অকর্মণ্য, জীবনে খুব বিশাল কিছু করে ফেলি নি, করার সম্ভাবনাও নেই। কিন্তু বেঁচে তো আছি! বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী…



মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


চিন্তার বিষয়। মানুষের মনে কেন আত্মহননরের ভাবনা আসে, সেটা ভেবে বের করাই কঠিন ব্যাপার।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩২

হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, মানুষের মন বড়ই জটিল।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



নীজের জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে আত্মহত্যা প্রবনতা প্রতিরোধের
বিষয়ে খুব সুন্দর করে যুক্তিসমুহ সমুহ তুলে ধরেছেন । আত্মহত্যা কোন সমস্যার সমাধান
নয় বরং জীবন থেকে পলায়ন মনোবৃত্তি ছাড়া আর কিছুই নয় । আত্মহত্যায় ইচ্ছুক
মানুষকে তার পারিপাশ্বিক মানুষদের কথাও ভাবতে হবে । তার অবর্তমানে
তার নিকট জনের ( স্বামী স্ত্রী , পিতা মাতা , ভাই বোন , ছেলে মেয়ে প্রমুখ )
কি পরিনতি হবে সে কথাটিও ভাবতে হবে ।

একটি জনগুরুত্বপুর্ণ পোষ্ট । প্রিয়তে তুলে রাখলাম ।

শুভেচ্ছা রইল

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনার জন্যেও শুভেচ্ছা।

৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: প্রতিটা আত্মহত্যাই আসলে হত্যা।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: তা তো বটেই।

৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: হাসান মাহবুব,





যেভাবে বাঁচি , বেঁচে তো আছি ....
এটুকুই না হয় হোক বেঁচে থাকার শেষ সলতে।

আপনার এমন জীবন ভালোবাসার কাহিনীকে সাধুবাদ দিতেই হয়। এমন লেখা তো অনুপ্রেরণাদায়কও বটে।
গিঁড়িখাতের প্রান্ত থেকে ফিরে প্রানের উপত্যকায় এই যে ফিরে আসা, সেটা ফুল হয়ে ফুটুক প্রতিদিন.................

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: শুভেচ্ছা জী এস ভাই।

৫| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১৮

অনল চৌধুরী বলেছেন: নিজের স্ত্রী-কন্যা থাকার পরও আপনার সমস্যা কি ছিলো, সেটা জানতে পারলে ভালো হতো।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ছিলো আর কী কিছু সমস্যা।

৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৫২

অনল চৌধুরী বলেছেন: সেটা বিস্তারিত বললেই সবার উপকার হতো।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৫৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: ড্রাগ এ্যাডিকশন এবং ক্যারিয়ারে পিছিয়ে পড়াজনিত সমস্যা।

৭| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৫৩

সাইফুল ফরিদপুর বলেছেন: আপনার লেখা অনেক পড়েছি। ভালো মনের মানুষ বলে জানি আপনাকে!

আল্লাহ আপনার সকল সমস্যা দূরে করে, দুনিয়া আখিরাতের সফলতার জীবন দান করেন।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৫৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনার শুভকামনার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ সাইফুল।

৮| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:০২

অনল চৌধুরী বলেছেন: আমি কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং শরীরচর্চার মাধ্যমে ছোটোবেলা থেকেই নিজেকে সব নেশা থেকে মুক্ত রেখেছি। ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পর দেশে ফেন্সিডিল আসার কিছুদিনের মধ্যেই আমার প্রায় সব বন্ধুই সিগারেটের সাথে সাথে এর নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলো। কিন্ত আমি সেইসময় গরমের দিনে সকাল ৪:৪৫ আর শীতের দিনে আরামের ঘুম ছেড়ে সকাল ৫:৩০ এর রমনা উদ্যানে দৌড়ে গিয়ে শরীরচর্চা করতাম। ৭ টা সময় আমি যখন বাসায় আসতাম, তখন অন্য অনেকে সেখানে যেতো। আর আমার সেই বন্ধুরা তখন বেলা ১২টা ১ টার সময় ঘুম থেকে উঠতো।
আমি চাপ দিয়ে ওদেরই কয়েকদিন শরীরচর্চার মাধ্যমে মাদকের নেশা থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করেও সফল হইনি। সকালে উঠে ব্যায়াম করতে ওদের ভালো লাগেনি।
এরা এখন ১৬/২২ বছরের সন্তানের বাবা হওয়ার পরও ফেন্সিডেলের নেশায় আসক্ত।
এসব মেনে চলার কারণেেই দেশ-জাতির জন্য কিছুটা হলেও করতে পেরেছি।
আপনি নিয়মিত যেকোনো ধরণের শরীরচর্চা করলে এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারতেন।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:১৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার। আশা করি এই সুঅভ্যাসটি এখনও বজায় রেখেছেন।

৯| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১১

ওমেরা বলেছেন: মানুষ চেষ্টা করলে সব কিছুই পারে , যেমন আপনি আপনি ফিরে এসেছেন স্বাভাবিক জীবনে । আপনার এই লিখা পড়ে অনেকেই উৎসাহিত হবেন , আশাকরি ।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:২৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: আমারও সেই উদ্দেশ্য নিয়েই লেখা। ধন্যবাদ ওমেরা।

১০| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:২৬

করুণাধারা বলেছেন: মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের দেশে এমন ট্যাবু বিষয় যে মানুষ এটা নিয়ে কথা বলাকেও অপরাধ মনে করে। আপনার এই লেখা নিয়ে অনেক আলোচনা হতে পারতো, কিন্তু কোন আলোচনাই হলো না। অথচ এই পোস্ট দেখুন, আত্মহত্যা চমৎকার আলোচনা হয়েছে। 

প্রতিদিন কারো না কারো আত্মহত্যা করার কথা শুনতে হয়। ক'দিন আগে পত্রিকায় দেখলাম করোনায় মৃত্যুর দ্বিগুণ মারা গেছে আত্মহত্যা করে। আজকে দেখলাম ফ্রান্সে এক বাঙালি ছেলে আত্মহত্যা করেছে, কদিন আগে এমেরিকায় অত্যন্ত মেধাবী এক ছাত্র ল্যাবে আত্মহত্যা করেছে... আমাদের একটু সচেতনতা একজন মানুষকে জীবনের পথে চলমান রাখতে পারে। আফসোস, আমাদের সচেতনতাটুকুর তীব্র অভাব।

ধন্যবাদ আপনাকে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে এমন একটি সাহসী লেখা দেবার জন্য, শুভকামনা।

গতকাল আত্মহত্যা করেছে এমন এক ছেলের মৃত্যুর আগে ফেসবুকের লেখা পেয়ে নীচে দিলাম। ছেলেটিকে আমি দোষ দেই না, বরং কেউ ওকে সাহায্য করেনি ভেবে গভীরভাবে দুঃখ পাচ্ছি।

"কি দিয়ে শুরু করব, বুঝে উঠতে পারছি না। এখন আমাকে অনলাইনে দেখলে নির্ঘাত সবাই গালি গালাজ করবে। কেউ বলবে নাটকবাজ, কেউ বলবে ভাইরাল হতে চাই, কেউ বলবে কাউকে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করতে চাচ্ছি, কেউ কুলাঙ্গার বলে গালি দিবে, কেউ বলবে টাকা মেরে খেয়েছি আরো কত কি!!

হ্যাঁ আসলেই আমি নাটকবাজ, কারণ আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোন ওয়ে পাচ্ছিলাম নাহ! তাই বাধ্য হয়ে নাটক করতে হয়েছে। অবশ্য পুরোপুরি নাটক বলাও চলে নাহ, কারণ প্রতিটা নাটকের সমাপ্তি আমি জীবন দিয়েই শেষ করতে চেয়েছিলাম। পারিনি কিংবা করতে দেয়নি আমাকে। সুইসাইড পোস্ট করেছিলাম যদি এটা দেখে কারো করুণা হয়, কেউ যেনো আমার জীবনটা ভিক্ষা দেয়, কিন্তু হয়নি এমন কিছুই! আমাকে বাচিয়ে রাখার আশা দেখিয়ে ঠকিয়েছে প্রতিনিয়ত! তাই যেতে পারিনি সময় করে, তাই আমি আজ নাটকবাজ।

ভাইরাল? আরে ভাই, ভাইরাল হয়ে কি হবে? যে মানুষ প্রচন্ড মানুষিক যন্ত্রণায় তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে তাকে এভাবে কেউ ট্রিট করে। খাঁড়াও, মরলে ভূত হয়ে তোমাদের ঘাড় মটকাবো।

হ্যাঁ আমি ইমোশনাল টর্চার করতে চেয়েছিলাম, করেছিও। কেনো করেছি জানেন, কারণ আমি মরতে চাইনি। আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম। যে জিনিসটা চেয়েছি, তার জন্য কি এতোটুকুও করা যায় না? জীবন বাঁচানো ফরজ, আমি ফরজ কাজটিই করতে চেয়েছিলাম। যেখানে বেঁচে থাকার একটিই মাত্র৷ পথ সেখানে সেই পথে হাঁটতে চাওয়া কি অপরাধ? কে মরতে চাই বলুন তো!

হ্যাঁ অবশ্যই আমি কুলাঙ্গার। যে মানুষগুলো আমাকে গায়ের রক্ত পানি করে তিলে তিলে গড়ে তুলেছে, তাদের কথা আমি ভাবিনি। যে মানুষগুলো আমার প্রতি বিশ্বাস রেখে বড় করেছে, বড় হয়ে তাদের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য, আমি তাদের কথা ভাবিনি। যে ছোট ভাইটা, আমার এসব পাগলামী দেখে কেদে চোখ ভাসিয়েছে, তার চোখের জলের দাম আমি দিতে পারিনি। আমি তো কুলাঙ্গারই। কিন্তু কাউকে তিলে তিলে কষ্ট না দিয়ে একবারেই সব শেষ করে দেওয়াটা কি বেটার অপশন নাহ। প্রিয়জনদের সামনে ধুকে ধুকে মরার কষ্টটা না দিয়ে একবারেই সব শেষ করে দিলাম। বছর ধরে না কেঁদে একবারই কাদুক।

চলার পথে আর্থিক লেনদেন হয়েই থাকে। দু একজন পাওয়ানাদার, দেনাদার থেকেই যায়। আমার কাছেও দু একজন পাবে, আমিও পাঁচ-ছয় জন থেকে পাবো। সব কিছু শেষ করেই যেতে চেয়েছিলাম, পারিনি। কারণ এত কষ্টের মাঝে এসব মাথায় ঢুকাতে পারিনি। সবাইকে শোধ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। সময় মত পেয়ে যাবেন। আর যদি না পান, তাহলে মাফ করে দিয়েন। আমার শরীরে মাংস বেশি নেই যে আখিরাতে শোধ করে নিবেন। লস হবে আপনাদের!

এগুলো আমার আত্মসমর্পণ করার চেষ্টা মাত্র। যারা এমন ভাবেন তারা যদি এসব শোনার পরও খুশি না হোন, তাহলে আমার লাশকে আবার ফাসিতে ঝুলায়েন। শাস্তি দিয়েন আমাকে।

এই পোস্টটা যখন পড়ছেন, তখন হয়ত আমার ডেড বডিতে পচন শুরু হয়েছে কিংবা কোন এক লাশ কাটা ঘরে লাশ সনাক্ত না হওয়ায় পড়ে আছে বেওয়ারিশ হিসাবে দাফনের জন্য। আমি জানি আমি চলে যাওয়াতে কারো বাল ছেড়া যাবে না। গেলে আমার ফ্যামিলিরই যাবে। বাড়ির বড় ছেলে। প্রতিবেশিদের হাজার কথা শুনতে হবে। আমি সরি মা, আমি সরি বাবা, আমি সরি মাসুদ। এছাড়া আমার কোন উপায় ছিলো না। আমি খুব কষ্টে ছিলাম মা, বুঝাতে পারব না মা এই কষ্ট কতটা তীব্র। এই কষ্ট সহ্য করার সামর্থ আমার নেই মা। মাফ করো তোমরা আমাকে। আমি বেঁচে থাকলে আরো জ্বলতে হতো তোমাদের, অনেক জ্বালিয়েছি, আর জ্বালাবো না তোমাদের।

আর কেনো মরছি, কার জন্য মরছি, কিসের জন্য মরছি এটা না হয় ঘোলাটেই থাকুক। আমিও প্রকৃতির মতই রহস্য রাখতে পছন্দ করি কিংবা রাখতে হয়।

আল-বিদা বলতে বলতে হাঁপিয়ে উঠেছি, আপনাদেরকেও বিরক্ত করেছি। কথা দিচ্ছি আর কখনো বিরক্ত করবো না। আসি এবার, আল্লাহ হাফেজ। পরের জন্মে দেখা হবে।"

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:২১

হাসান মাহবুব বলেছেন: ঐ লেখাটি দেখেই আমি এই লেখাটি লিখতে উদ্যোগী হই। খুব খারাপ লাগছিলো। ছেলেটা আমার এক কলিগের খুবই ঘনিষ্ঠ ছোটভাই ছিলো। এই জীবনে যদি একজন আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষকেও ফিরিয়ে আনতে পারি, জীবন ধন্য হবে।

১১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: তা তো বটেই।

আমার এক পরিচিত মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যা খুবই ভয়াবহ ব্যাপার।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:২২

হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ।

১২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪২

ঢুকিচেপা বলেছেন: আমি অবাক হয়ে গেলাম ৫০ টা ঘুমের ঔষধ খাওয়ার কথা শুনে।
আপনি বেঁচে আছেন তাই + দিয়ে গেলাম।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:২৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: যাক, বেঁচে থাকার বিনিময়ে একটা প্লাস পেলাম!

ধন্যবাদ।

১৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ভোর ৫:০৬

অভি চৌধুরী বলেছেন: হাসান ভাই আপনার পুরো পোষ্ট পড়িনি, সময় নেই। তবে এটা বুঝলাম মরতে বসা কেউ একজন কে আপনি ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছেন। আমার সাজেশান তাকে মরতে দিন, বরং তরার মরার উপকরণ না থাকলে কিনে দিন,কারণ যে শুধু ভাবে তার মরে যাওয়া উচিৎ তার মরে যাওয়াই ভালো সে এই পৃথিবীর জন্য নিতান্তই অভিশাপ। এই দুনিয়াতে কোটি কোটি মানুষ যুদ্ধ করছে বাঁচতে অন্যকে বাচাতে। সেখানে এমন প্রাণী হাস্যকর।

আই যাষ্ট হেট দোজ কাইন্ডস অব পিপলস হাসান ভাই, সরি টু সে

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ঠিক আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.