![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-সুপ্রিয় বিশ্ববাসী। প্রতিদিনের মতো আজও আমরা লাইভ কাভারেজ দিচ্ছি প্যালেস্টাইনে অনুষ্ঠিত বোমব্লাস্টিং খেলায়। আমি আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘের মহাসচিব আপনাদের বিনোদনের সেবায় নিয়োজিত সর্বদা।
আমার সাথে আছেন এই খেলার অন্যতম রূপকার ইজরাইলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। প্রভু বেঞ্জামিন সুপ্রভাত। আপনার দল ইজরায়েল অত্যন্ত সাফল্যের সাথে বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
-ধন্যবাদ আন্তোনিও। এই খেলার প্রস্তুতি নিতে আমাদের দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হয়েছে। ফার্স্ট অফ অল আমি ধন্যবাদ জানাই আমার প্রাক্তন পিতা ওবামাকে। উনার নামের মধ্যেই একটা মাধুর্য লক্ষ্য করবেন। ওবামা, বামা, বোমা…,এরপর আমার আরেক পিতা বাইডেনকেও ধন্যবাদ সহযোগিতার জন্যে। বর্তমান পিতা ট্রাম্পকেও ধন্যবাদ না জানালেই নয়!
-সুধী দর্শকমণ্ডলী, যারা এইমাত্র খেলা দেখতে বসলেন, তাদেরকে গত পাঁচদিনের খেলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিচ্ছি। গত ১০ দিনে ইজরায়েলি ড্রোন ১২টি হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এরপর থেকে একতরফা খেলা চলছে। ২০২৩ থেকে আজ পর্যন্ত ৪৮,২০০ জন নিহত। যার মধ্যে ১৬,৭০০ জন শিশু। চমৎকার স্কোর!
-ধন্যবাদ! ইজরায়েলের মূল শক্তি হচ্ছে টিম ওয়ার্ক, আর খেলাটির প্রতি একাগ্র সাম্যবাদী মনোভাব। আপনি খেয়াল করে দেখবেন, বুড়ো, শিশু, গর্ভস্থ শিশু, অন্তঃস্বত্তা মহিলা কাউকেই কিন্তু ছোট করে দেখা হয় নি। বোমা, গুলি, বেয়নেট সবার কাছেই সমানতালে গেছে।
-সত্যিই প্রশংসনীয় আপনাদের ঐক্য। এখন আমরা আজকের ম্যাচের লাইভ কাভারেজে চলে যাবো। আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি শিশু তার মায়ের কোলে লুকিয়ে আছে জড়সড়ো হয়ে, পুরাতন একটা বিল্ডিংয়ের বেসমেন্টে। আকাশে উড়ছে বোমারু বিমান। চমৎকার গতিতে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এগিয়ে চলছে। খুঁজে চলেছে তার শিকার। আজকে এখনও ১০০ হয়নি। খেলায় টানটান উত্তেজনা। এইমাত্র একটি বোমা ফেললেন পাইলট। কিন্তু না! বোমাটি ভবনের বেসমেন্টে না লেগে তার পাশের বৃক্ষরাজিকে আক্রমণ করলো। হোয়াট এ ওয়েস্ট! প্রভু নেতানিয়াহু , একটি চমৎকার সুযোগ কিন্তু মিস হয়ে গেলো!
-হ্যাঁ । তবে আমি আশাবাদী, আমাদের টিম অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা খুব দ্রুত স্কোর করবেই। যেভাবে করেছিলেন এ্যারিয়েল শ্যানন এবং শিমন পেরেজের নেতৃত্বাধীন দল। তারা নিপুনভাবে ট্যাংক নামিয়ে পিষে দিয়েছিলো গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। আমরা আমাদের সাফল্যের এই ঐতিহ্য ধরে রাখব।
-খেলায় ফিরে যাই আবার। মেয়েটি চিৎকার করছে ভয়ে, তার মা তাকে পাখির পালকের মত আবৃত করে রেখেছে। তুমুল উত্তেজনাকর অবস্থা। আরেকটি ইজ্রায়েলি বিমান আসছে। চমৎকার গতি। নিপুন দক্ষতা। পাইলট বিচক্ষণতার সাথে পজিশন দেখে নিচ্ছেন... এবং বলতে না বলতেই! বো...ম! চমৎকার নিখুঁত নিশানা।
একেবারে গুড়িয়ে দিয়েছে বেসমেন্টটা। আগুন জ্বলছে। স্প্লিন্টারের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত মা তার শিশুটিকে কোলে নিয়ে অন্য কোথাও যাবার চেষ্টা করছেন। শিশুটির নাক, কান আর গলা দিয়ে প্রচুর রক্ত ঝরছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যাবার সম্ভাবনা। পাইলট নিরিখ করছেন পজিশন। হয়তো বা আরেকটা বোমা ফেলবেন। এবং... চমৎকার মৃত্যু। রিপ্লে দেখুন আপনারা। অত্যন্ত সাফল্যের সাথে সম্পাদিত হয়েছে। প্রতিপক্ষ দলের আহত খেলোয়াড়, যিনি মা লেখা জার্সি নিয়ে খেলছেন, তিনি কিন্তু সম্পূর্ণ পরাস্ত! তার শিশুকে নিয়ে দৌড়ে পালাতে গিয়ে একটি ইটের সাথে গোত্তা খেয়ে মুখ থুবরে পড়লেন, এবং শিশুটি মাথায় আঘাত পেয়ে পড়ে গিয়ে আর উঠলো না।
আমরা থার্ড আম্পায়ারের কাছে যাচ্ছি শিশুটি আসলেই মারা গেছে কি না বুঝতে। অত্যন্ত উৎকণ্ঠার সময়। এবং... মৃত্যু! উল্লাসে মেতেছে গ্যালারি। গ্যালারিতে শুধু ইজরায়েলি সমর্থকরাই নেই, তাদের সাথে তাল মিলিয়ে গান গাইছে আমেরিকা, ইউ এন, ইংল্যান্ড, এবং মধ্যপ্রাচ্যের সমর্থকেরা। অভাবনীয় দৃশ্য।
আরব বিশ্বের সমর্থকেরা প্রথমে প্যালেস্টাইনকে সমর্থন দেবে বললেও তারা কোনো পক্ষ না নিয়ে খেলা উপভোগ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্যাটজ দা স্পোর্টিং স্পিরিট!
খেলায় ফিরে আসি। ইজরায়েল এখন নার্ভাস নাইন্টিজে দাঁড়িয়ে । দেখা যাক আজকে তারা সেঞ্চুরি করতে পারে কি না। রাস্তা দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে একজন প্যালেস্টাইনি বালক, তবে ইজরায়েল যেভাবে চেপে ধরেছে তাতে তার রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ইজরায়েল এবার খেলার ধরণ পরিবর্তন করার পথে।
বোমারু বিমানের বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে মর্টার শেল। দর্শকেরা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানালো। ছেলেটি দৌড়ুচ্ছে, দৌড়ুচ্ছে, দৌড়ুচ্ছে, অত্যন্ত ক্ষিপ্রগতিতে। কিন্তু মর্টার শেল থেকে বাঁচতে পারলো না। তার মাথায় শেল ঢুকে কান দিয়ে বের হয়ে গেছে। রক্ত বেরুচ্ছে।, মগজের কোষ থেকে থিকথিকে ধুসর পদার্থ বের হয়ে আসছে। ছেলেটি পড়ে গেলো। কাঁপছে। এবং আরো একটি মৃত্যু।
অভিনন্দন ইজরায়েল। এই ছেলেটির মৃত্যুর মাধ্যমে তাদের শতক পূর্ণ হলো। গ্যালারিতে তুমুল উল্লাস! সবাই হাই-ফাইভে ব্যস্ত। ইতিমধ্যেই ইজরায়েলের আক্রমন আরো জোরদার হয়েছে। খুব দ্রুত লাশ পড়ছে। কারো ঘাড় ভাঙা, কারো চোয়াল উড়ে গেছে কেউ পাথরে চাপা পড়ে গেছে , আবার কেউবা মাতৃগর্ভেই বিনষ্ট হয়েছে। এখন পর্যন্ত ইজ্রায়েলের স্কোর ১২১। ওয়েল প্লেইড প্রভু নেতানিয়াহু!
-ধন্যবাদ আন্তোনিও। আমাদের দলের মুল্যবান খেলোয়াড় রাফায়েল সিস্টেম খুব ভালো পারফর্ম করছে। নতুন স্পনসর এসেছে এবার, লকহিড মার্টিন, বোম্বার্ডিয়ার, রেথিয়ন। সবাই মিলে খেলাটাকে বিশ্বমানের করে তুলেছে। আর এজন্যে আমাদের আমেরিকান পিতা এবং সৌদি পুত্রদের ধন্যবাদ জানাতেই হয়।
-এইমাত্র পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরো একটি শিশুর মুখ উড়ে গেছে। তার মা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। গ্যালারি দাঁড়িয়ে গেছে। দর্শকেরা উল্লাসে ফেটে পড়েছে।
-আন্তোনিও, আমরা চাই এই খেলাটা অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হোক।
কারণ, এটা শুধু খেলা না,এটা ঐতিহ্য। এটা আমাদের অস্তিত্ব। আর আমাদের সমর্থনে আছে বিশ্বের সেরা এবং শক্তিমান খেলোয়াড়েরা।
-আমি একমত, প্রভু নেতানিয়াহু । খেলাটি অলিম্পিকে অন্তর্ভূক্ত করার পাশাপাশি এটার বিশ্বকাপও হওয়া উচিত নিয়মিত। আপাতত খেলা আজকের মতো এখানেই শেষ। সুধী দর্শকমণ্ডলী, খেলা চলবে। গোলমাল করবেন না। আপনাদের মানবিকতার পায়রা আমাদের ডলার শ্বাপদ গিলে খেলবে।
সুতরাং স্টে টিউনড অ্যান্ড ইনজয়!
২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:২৫
নতুন নকিব বলেছেন:
এই ব্যঙ্গধর্মী খেলার ধারা বিবরণীটি এক নির্মম বাস্তবতার কাব্যিক প্রতিবাদ। লেখাটি গভীরভাবে শৈল্পিক হলেও হৃদয়বিদারক—যেখানে "খেলা"র নামে গণহত্যা, নিষ্পাপ শিশুর আর্তনাদ, এবং বিশ্বশক্তির নির্লজ্জ নীরবতা উঠে এসেছে। এটি কেবল একটি লেখা নয়, বিবেকের উপর এক চপেটাঘাত।
৩| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:২৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: হৃদয় ছিন্নভিন্ন করে ফেলা এক মর্মন্তুদ স্যাটায়ার!
৪| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:২২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এদের বিচার কারা করবে ?
৫| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:০৩
রানার ব্লগ বলেছেন: হামাসের প্রধান কেও এদের পাশে দাড় করিয়ে দেন৷ সেই লোক এর দায় কি করে মুক্তি পেলো?
৬| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:২০
নতুন বলেছেন: কিছু অমানুষের কাছে মানুষের মৃত্যু সুধুই সংখ্যা মাত্র।
রাজনিতিকরা সম্ভবত এমনি ভাবে মানুষের মৃত্যুকে সংখ্যা দিয়ে বিচার করে, তাকে কতটুকু রাজনিতিক লাভ হলো চিন্তা করে।
৭| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:২৭
সাইফুলসাইফসাই বলেছেন: আল্লাহ বিচার করো ইজরায়েল খুনিদের।
৮| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:৫২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
যুদ্ধ
নয়
শান্তি
চাই।
৯| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৩৪
রাসেল বলেছেন: বীভৎস, বীভৎস। সাধারণ মানুষ হিসাবে আমরা এই খেলার শেষ চাই।
১০| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৪৩
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: বিশ্ববিবেক কীভাবে থমকে আছে! আরবরা আবাবিলের অপেক্ষায় উটের বারবিকিউ করছে!!
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: এই আধুনিক যুগে এসে যুদ্ধ!! তারা মানে কি মানুষ আজও সভ্য হয়নি?
একটা দেশের সব মানুষ তো আর খারাপ হতে পারে না। এই যুদ্ধের মুল কারন ধর্ম। ধর্ম সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই মারামারি কাটাকাটি, খুন হত্যা লেগেই আছে। ধর্ম বড় ডেঞ্জারেস। ধর্ম ক্ষতিকর। পৃথিবীতে ধর্ম না থাকলে ভালো হতো। ইজরায়েলের উচিৎ শুধু পুরো গাজা ধ্বংস না করে ধর্মীয় সংগঠন হামাসকে ধ্বংস করা।