নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পথিক জন

পথিক জন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কীট

২১ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৩৬



গাড়ীর মেঝেটা অমৃসন/কর্কশ ছালা জাতীয় কিছু একটা বিছানো/গরম কম যে লাগছে তা কিন্ত না/তবু মন্দের ভালো/অবশ্য গা যে পুড়ে যাচ্ছে তাও না,বরং শীত শীত লাগছে/শরীরের নীচের শক্ত জিনিসটাকে গায়ে জড়াতে পারলে ভালো হত/
পুলিশের গাড়ি এতদিন শুধু দুর থেকেই দেখেছে এর ভেতরে ঢোকার সৌভাগ্য আজই হল/
তপুর চোখের সামনে কয়েক জোড়া শক্ত বুট,মাঝে মাঝে কলির ফোঁপানির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে/
ধরা পড়ার পর গাড়িতেই তপুকে প্রচন্ড মার খেতে হয়েছে /কলিকে মার খেতে হয়নি কিন্ত আর সব ব্যবহার সে ঠিকই পেয়েছে/
পালানোর পরিকল্পনা দুজনেরই ছিল/না পালালে ভালোবাসার মানুষকে পাওযা যাবে না এমনই ভেবেছিলো দুজন/হোক বেকার তপু , নাই বা থাক কোনোকিছু---ভালো তো বাসি—কলি ভেবেছিলো/
তপু –কালো-মায়াবী মেয়েটাকে ছাড়া বাঁচবে না-তার জীবন চলবে না/মেয়েটাকে পাশে পেলে ইট ভেংগে সংসার চালাবে/তপু মেয়েটাকে নিয়ে একদিন পালাবে ভেবেছিল/
পুলিশে চাকরী করা মামাতো ভাইয়ের সাথে কলির বিয়ে ঠিক হল/
পালালো কলি আর তপু/
এদেশে বড় বড় সন্ত্রাসী, র্দূনীতিবাজরা দিনের পর দিন ধরা না পড়লেও চব্বিশ ঘন্টার
মধ্যে ধরা পড়ল ওরা/
গাড়ির কাঁপুনি একসময় থেমে গেল/ওকে মাড়িয়ে বুটজুতাওয়ালারা কলিকে নিয়ে নেমে গেল/ওকেও
নামানো হল/কেউ একজন ওর চোখে মুখে পানি ঢেলে দিল/মেঝেতে একটা লাল পানির একটা পুকুর তৈরী হল/তপু সেই পুকুরেই পড়ে রইল/যেন অনেক মজা পাচ্ছে/
‘এ্যাই এ্যাই—উঠ-উঠে বস, এই ওষুধগুলো খাও,শরীরের ব্যথা কমবে/”
প্রথমে জুতা তারপর পুরো মানুসটাকে দেখে/ এত বড় মাথা ,খোচা খোচা দাড়ি ,সারা মুখে বাচ্চাদের মত সরলতা/তপু ভাষাহীন চোখে তাকিয়ে থাকে/
তপুর ফুলে যাওয়া মুখের দিকে তাকিয়ে মানুষটার বুকের ভেতর মুচরে উঠে/কেন যেন এখনও
সে পুলিশ হতে পারল না/
সারারাত লোকটা কাকুতি মিনতি করেছে,”স্যার মাইরেন না আর ,মইরা যাইবো,স্যার আপনি বসেন,চা খান—মাথা ঠান্ডা করেন/”
সকাল আর দুপুরের মাঝামাঝি সময়ে অপু চালান হয়ে যায় আদালতে/কোথাও কলিকে চোখে পড়ে না/
কলি হাসপাতালে/জবানবন্দি দিয়েছে পুলিশের কাছে/
”আমি কলি আক্তার,বাবা....,ঠিকানা....,কলেজে পড়ি/গতকাল ভোরে কলেজে যাওয়ার পথে তিন চারজন ছেলে আমাকে জোর করে ধরে নিয়ে যায/তপু নামের ছেলেটা আমার.............”
তপুর ফেঁটে যাওয়া ঠোঁট থর্ থর্ করে কেঁপে উঠে/শব্দহীন হয়ে যায় আশপাশ/
রিক্সায় যেতে যেতে একদিন কলির হাত খানা তুলে ঠোঁটে ছুঁয়ে ছিল,সে টুকুতেই কলির কি অভিমান!
বিয়ের পর—তখন সবটুকুই তপুর/
তপুর কাচুঁমাচু মুখের দিকে তাকিয়ে বোধহয় মায়া হয়েছিল কলির/মাথা রেখেছিল তপুর কাধেঁ/কলির
হাতখানা আবার তুলে নিয়েছিল নিজের হাতে/সেই তপু কলিকে........!!
কলি কি করে পারল ?
অন্ধকার গরাদহীন ছোট্ট ঘরটায় তপুর দিন কাটে..রাত কাটে/দেয়ালে লিখে যায়....
কি ভাবে পারলে
এতখানি অন্ধকারে ঠেলে দিতে আমায়
ভালোবেসে কেবল হাতখানিই তো ধরেছিলাম
ছুঁয়ে দেইনি তোমার দেহের এতটুকু সীমানা
তবে কেন নর্দমার কীট হলাম আমি?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.