![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম আস্সালামুয়ালাইকুম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে এই ব্লগে লেখালেখির সুযোগ করে দিয়েছেন। ইসলাম আজ বহু অভিযোগে অভিযুক্ত একটি জীবন-ব্যাবস্থা।এর অনেক কারণের একটি কারণ, ইসলামের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে অভিযোগকারীদের অজ্ঞতা(আপনারা ভাববেন না যে আমি নিজেকে আপনাদের সামনে বিজ্ঞ বলে প্রমাণ করতে চাচ্ছি)।আর আমি আপনাদের সামনে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরব-(ইনশা’আল্লাহ), বিশেষত তাওহীদ সম্পর্কে। জাযাকাল্লাহু খাইর(আল্লাহ আপনাদের উত্তম বিনিময় দান করুন)
প্রশ্ন ১: আপনার রব কে?
উত্তরঃ আমার রব হচ্ছেন আল্লাহ।
প্রশ্ন ২: রব অর্থ কি?
উত্তরঃ রব দ্বারা উদ্দেশ্য, মালিক, সৃষ্টিকর্তা, রিযিক্বদাতা, নিয়ন্ত্রণকারী, আকৃতিদানকারী ও প্রতিপালনকারী। তাঁর অনুমতি ব্যতিত কিছুই হয় না এবং তাঁর অনুমতি ও ইচ্ছা ব্যতিত কোনো কিছু সামান্যতম নড়াচড়াও না।
প্রশ্ন ৩: আল্লাহ অর্থ কি?
উত্তরঃ যাবতীয় ইবাদত এবং উপাসনা পাওয়ার যোগ্য একমাত্র সত্বা-ই হচ্ছেন আল্লাহ।
প্রশ্ন ৪: আল্লাহ কোথায়?
উত্তরঃ আমার প্রভু আল্লাহ উর্ধ্বে, আরশের উপরে আছেন।
মহান আল্লাহ নিজের সম্পর্কে বলেন,
“পরম দয়াময় আল্লাহ আরশের উপর উঠেছেন” (ত্বা-হা ৫)।
সত্যিকার অর্থেই আল্লাহ্র সত্বার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমনভাবে তিনি আরশের উপর উঠেছেন; তাঁর আরশের উপর উঠার বিষয়টিকে কোনোরূপ পরিবর্তন-পরিবর্ধন করা যাবে না এবং এটির কল্পিত কোনো আকৃতি যেমন স্থির করা যাবে না, তেমনি কোনো সৃষ্টির সাথে এর কোনোরূপ সাদৃশ্য বিধানও করা চলবে না।
অতএব, আপনি কোনো অবস্থাতেই বলতে পারেনন না যে, আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান। কেননা সর্বোচ্চে অবস্থান মহান আল্লাহর একটি প্রশংসনীয় বিশেষণ। আর সে কারণেই তো আমরা সেজদাতে বলে থাকি, ‘আমার প্রভু সর্বোচ্চ’। ইমামগণ একমত পোষণ করেছেন যে মহান আল্লাহ যমীনে অবতরণ করেন না। যে ব্যাক্তি এই আক্বীদা পোষণ করে যে, আল্লাহ তাঁর কোনো সৃষ্টির মধ্যে প্রবিষ্ট হন, সে ব্যাক্তির কুফরীতে নিপতিত হওয়ার ব্যাপারেও তাঁরা একমত পোষণ করেছেন। বরং মহান আল্লাহ দুনিয়ার নিকটতম শেষ আসমানে এমনভাবে অবতরণ করেন, যেমন অবতরণ করা তাঁর মহত্ত্বের সাথে মানানসই। রাতের শেষাংশে আল্লাহ্র শেষ আসমানে অবতরণ এবং অবস্থানের ধরন সম্পর্কে কেউ কিছু জানে না। এই সময় তিনি বলেন, “কোনো প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তার প্রার্থনা মঞ্জুর করব”(বুখারী ও মুসলিম)।
কেউ প্রশ্ন করতে পারে , তাহলে নিম্নোক্ত আয়াতটির অর্থ কি?
“তিনি তোমাদের সাথে আছেন, তোমরা যেখানেই থাক”(হাদীদ ৪)। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। জবাবে বলব, এখানে সবার সঙ্গে থাকার অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর ইলম এবং শক্তি। কারণ তাঁর পবিত্র সত্ত্বা সর্বোচ্চ আরশে আছে; কিন্তু তাঁর জ্ঞান এবং শক্তি সবার সাথে আছে। কোনো কিছুই তাঁর শক্তি এবং জানার বাইরে নেই।
প্রশ্ন ৫: আপনি কিভাবে আপনার প্রভুকে চিনেন?
উত্তরঃ আল্লাহ্র নানা নিদর্শন ও এবং তাঁর সৃষ্টি সমূহ দেখে আমি তাকে চিনি। মহান আল্লাহ বলেন, “তাঁর নিদর্শন সমূহের মধ্যে রয়েছে রাত, দিন, সূর্য ও চন্দ্র”। (ফুছছিলাত ৩৭)
তাঁর সৃষ্টিসমূহের মধ্যে সাত আসমান, সাত যমীন এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু অন্যতম। এরশাদ হচ্ছেঃ “নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর আরোহন করেছেন। তিনি রাতের ভেতর দিনকে প্রবেশ করান এমনভাবে যে, দিন দৌড়ে রাতের পেছনে আসে। তিনি সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজী সৃষ্টি করেছেন; সেগুলি তাঁর আদেশের অনুগামী। জেনে রেখো, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান। বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ বরকতময়” (আরাফ ৫৪)।
প্রশ্ন ৬: আল্লাহ আপনাকে কেন সৃষ্টি করেছেন?
উত্তরঃ সর্ব প্রকার শির্ক বর্জন করে যাবতীয় ইবাদত কেবলমাত্র তাঁর উদ্দেশ্যে সম্পাদন এবং তাঁর আদিষ্ট বিষয়সমূহের বাস্তবায়ন ও নিষিদ্ধ বিষয়সমূহকে পরিত্যাগের মাধ্যমে তাঁর আনুগত্যের জন্যই তিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। এরশাদ হচ্ছে, “শুধুমাত্র আমার ইবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি” (যারিয়াত ৫৬)। অন্যত্র ঘোষিত হয়েছে, “আর তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না” (নিসা ৩৬)।
প্রশ্ন ৭: আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বড় পাপ কোনটি?
উত্তরঃ যে গুনাহ দিয়ে আল্লাহ্র নাফরমানি করা হয়, তার সবচেয়ে বড়টি হচ্ছে, শির্ক।
মহান আল্লাহ বলেন, “যারা বলে যে, মারিয়াম-তনয় মাসীহ-ই আল্লাহ, তারা কাফের। অথচ মসীহ বলেন, হে বনী ইসরাঈল ! তোমরা আমার পালনকর্তা এবং তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ্র ইবাদত কর। নিশ্চয় যে ব্যাক্তি আল্লাহ্র সাথে শির্ক করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন; তার বাসস্থান হচ্ছে জাহান্নাম। আর অত্যাচারীদের কোনো সাহায্যকারী নেই” (মায়েদাহ ৭২)।
আর শির্ক হচ্ছে আল্লাহ্র সমকক্ষ সাব্যস্ত করা, চাই তা হোক কোনো বাদশাহ, কিংবা নবী-রাসূল বা কোনো আলী। আল্লাহ ব্যাতিত অথবা আল্লাহ্র সাথে তাকে ডাকা, বা তাকে ভয় করা বা তার উপর ভরসা করা বা তার কাছে কোনো কিছু চাওয়া অথবা অন্য কোনো ইবাদত তার জন্য সম্পাদন করা।
প্রশ্ন ৮: ইবাদত অর্থ কী?
উত্তরঃ আল্লাহ ভালবাসেন এবং সন্তুষ্ট হন প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য এমন যাবতীয় কথা ও কাজকে ইবাদত বলে। যেমনঃ দোয়া করা। আল্লাহ বলেন, “আর (এই অহিও করা হয়েছে যে,) মসজিদসমূহ আল্লাহকে স্মরণ করার জন্য। অতএব, তোমরা আল্লাহ্র সাথে কাউকে ডেকো না” (জিন ১৮)।
আর আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকলে যে কাফের হয়, তার প্রমাণ হচ্ছে, “যে ব্যাক্তি আল্লাহ্র সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকে, যে ডাকার পক্ষে কোনো প্রমান নেই, তার হিসাব তো তার পালনকর্তার কাছেই। নিশ্চই কাফেররা সফলকাম হবে না” (মুমিনূন ১১৭)।
©somewhere in net ltd.