নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সহজ কথা কইতে আমায় কহ যে, সহজ কথা যায়না বলা সহজে ...

পেলব চক্রবর্তী

ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম...

পেলব চক্রবর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার দেখা সাম্প্রদায়িকতা-অসাম্প্রদায়িকতা

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৮

আমার এক ছোট ভাই ক্লাস নাইনে পড়ে। কিছুদিন আগে সে আমার কাছে এল ভীষণ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে।ওকে নাকি ওর বন্ধু-বান্ধবরা কথায় কথায় গরু খাবার কথা বলে। ও শুনে চুপ করে থাকে।মনে কষ্ট চেপে রাখে। কাউকে তো কিছু বলার নেই!



আমি নিজেও চুপ করে থাকি। কারণ আমি জানি, এদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকটি ব্যক্তিই জীবনে অন্তত একবার হলেও এমন মন খারাপ হওয়া ঘটনার শিকার হয়েছেন। ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে আমার বিশাল কোন জ্ঞান নেই। পবিত্র গ্রন্থগুলোর শিক্ষা ও আদর্শ বোদ্ধারা নিশ্চই উদ্ধৃতিসহ আলোচনা করে বুঝিয়ে দেবেন। আমার সাধারণ দৃষ্টিতে যা মনে হয় তাই বলি। তাই লিখি। সাধারণত একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি ছোট্ট বয়স থেকেই গরু খায় না এবং এ বিষয়টিকে মনে-প্রাণে মেনে নিতে পারে না। তাকে যখন মজা করেও গরু খাওয়ার কথা বলা হয়, সে তখন মনে কষ্ট পায়। মানুষের মন তো মন্দির। মানুষের মনে কষ্ট দেওয়া তো পাপ, তাই না?





১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট। উপমহাদেশের ইতিহাসের ভয়ানকতম দিনগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি দিন। পাকিস্তানের দাবীতে মুসলিম লীগ সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়।শুরু হয়ে যায় এক নৃশংসতম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। মাত্র ৭২ ঘন্টার মধ্যে চার হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান। এক লক্ষ বাসিন্দা গৃহহারা হন। দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে নোয়াখালি, বিহার, যুক্তপ্রদেশ…..।স্বাধীন পাকিস্তানেও (১৯৪৭ এর পর) এ বীভৎসতা প্রায় প্রায়ই ঝলসে উঠেছে। ধর্ম কি মানুষকে এই শেখায় ?



আমরা বর্তমান প্রজন্মের মানুষরা খুবই সৌভাগ্যবান যে, সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসার ভয়ার্ত দিনগুলো আমাদের দেখতে হয় নি। আমরা এখন মিলে-মিশে থাকা শিখেছি। হাতে হাত মিলিয়ে চলতে শিখেছি। আমরা বুঝতে শিখেছি, সাম্প্রদায়িকতায় বিদ্বেষে পড়ে থাকার সময় আর নেই।

না, বড় বড় অসাম্প্রদায়িকতার গালভর্তি বুলি আওড়াতে আজ আমি লিখতে বসিনি। যেটুকু লিখব, ভেতর থেকেই লিখব। যেটুকু বিশ্বাস করি, সেটুকুই লিখব। তার বেশি কিছু নয়।



উপমহাদেশে ইংরেজ শাসন শুরু হবার আগ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের চিহ্নও পাওয়া যায় না।ঠিক যখন থেকে ইংরেজদের শাসনতন্ত্র শুরু হল, তার পর থেকেই ছলে-বলে কৌশলে তারা ভারতবর্ষের হিন্দু-মুসলমানকে উসকিয়ে দিতে লাগল। ধর্ম যে কারও জন্যেই মারাত্মক স্পর্শকাতর একটি বিষয়। তারা সে স্পর্শকাতরতার সুযোগ নিতে লাগল। মানুষ নিজেদেরকে হত্যা করতে শুরু করল। কেউ এক জায়গায় মসজিদ ভাঙলে অন্যরা অপর জায়গায় মন্দির ভেঙ্গে ফেলতে শুরু করল। কেউ এক জায়গায় হিন্দু হত্যা করলে অন্যরা আরেক জায়গায় মুসলমান হত্যা করা শুরু করে দিল।

লাভ হত কাদের? রাজনৈতিক সংকীর্ণতাবাদীদের। ৫২’এর ভাষা আন্দোলনের সময় বাংলাকে হিন্দুদের ভাষা বলা হয়েছিল, যেন বাংলাভাষা চিরতরে হারিয়ে যায়। ৭১’এর বীভংসতার কথাগুলো আমার বলতেও লজ্জা লাগে। স্বার্থবাদীদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে মানুষ একে অপরকে খুন করেছে, ধর্ষণ করেছে। মানুষগুলো কত অবুঝ ছিল!



রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র নির্মাণ করা। এখানে সবাই সবাইকে ভালবাসবে, সবাই সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলবে। বুকের ভেতরে থাকবে একটি প্রখর চেতনা- তা হল, দেশের জন্য ভালবাসা। দেশের সংবিধান প্রণীত হল সেকথা মাথায় রেখেই। কিন্তু, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিক্ষিপ্ত রাজনৈতিক উত্তাপে মানুষের স্বপ্নগুলো যেন দুঃস্বপ্নের মত করে ঝরে ঝরে পড়তে লাগল। স্বৈরশাসন এল। স্বৈরশাসক এল। ১৯৯০ আসতে আসতে দেখা গেল, সংবিধানে আর ধর্মনিরপেক্ষতা নেই। বাংলাদেশ এখন একটি একধর্মপ্রধান রাষ্ট্র।



৯০ এর পর রক্তে রঞ্জিত হয়ে আরও একবার ফিরে এল গণতন্ত্র। মানুষ আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করল।ভালবাসতে শুরু করল। ঘর গোছাতে শুরু করল। শান্তি আসতে শুরু করল।



১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর।কট্টর হিন্দুপন্থীরা অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংশ করে দিল। মানুষের মন আবার অশান্ত হয়ে উঠল। অশান্তির অশুভছায়া ছড়িয়ে পড়ল। ইতিহাস থেকে কি মানুষ এতটুকুও শিক্ষা নেয় না?







লেখাটির নাম দিয়েছি ‘আমার দেখা সাম্প্রদায়িকতা-অসাম্প্রদায়িকতা’। কিন্তু যে ঘটনাগুলো আমি বলে ফেললাম, তার একটিও আমি দেখিনি।বাবরি মসজিদ ধ্বংশের সময়ও আমার বয়স মাত্র কয়েক বছর। দিন-দুনিয়ার তেমন কিছুই বুঝি না। যেদিন থেকে জ্ঞান-কান্ড হল, সেদিন থেকে নিজের ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিয়ে আসছি, কারণ, ইতিহাসের বীভংসতা গুলোকে আমার নিজের চোখ দিয়ে দেখতে হয় নি। কিছুদিন আগ পর্যন্তও বিশ্বাস করতাম, এ আধুনিক যুগে আমাকে হয়ত আর কোনদিন এসব দেখতে হবে না।



এবছরের ৩০ সেপ্টেম্বর।খবর পেলাম, কক্সবাজারের রামুতে রাতের আঁধারে দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়েছে।শত শত বছরের বৌদ্ধ মন্দিরে আগুন দিয়েছে, মূল্যবান সরঞ্জাম লুট করেছে, মানুষজন ঘর ছাড়া হয়েছে। তারপর সেটিকে নিয়ে চলেছে নোংরা রাজনীতি। রাজনীতিবীদেরা কি চিরটাকালই মানুষের মৌলিক অনুভূতি ও আদর্শগুলোকে নিয়ে খেলা করে যাবেন ?



এর মাত্র মাস তিনেক আগে এক ভয়ানক দাঙ্গার কবলে পড়ে মিয়ানমার। আর দশটা সাধারণ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মত তারাও একে অন্যের ঘর পুড়িয়েছে। খুন করেছে। রক্ত নিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েছে। নিঃস্ব রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের কাছে আশ্রয় ভিক্ষা চেয়েছে। পায়নি। শুনেছি, ৭১’এ নাকি আমাদের পূর্বপুরুষরা একইভাবে বাস্তুহারা হয়ে প্রাণভয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। ইস্, ভারত যদি তখন আশ্রয় না দিত, তবে কি কান্ডটাই না হোত, ভাবা যায় ?



এই আধুনিক যুগেও আমাকে এমন বর্বরতা দেখে যেতে হল। মনে-প্রাণে চেয়েছিলাম, এই ভয়ার্ত সময় যেন আর কখনওই ফিরে না আসে। এখন নিজের জন্য আর কিছু চাইতে ইচ্ছে করে না। আমার ভাষাগত দক্ষতা খুবই কম। আমার খারাপ লাগাগুলোকে আমি লিখে বুঝিয়ে দিতে পারব না।







সাম্প্রদায়িকতার শুরু কোথা থেকে? আমার দৃড় বিশ্বাস, এর শুরু হয় পরিবার থেকে। একটি শিশু যদি প্রথম থেকেই শুধু নিজের ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে শেখে, নিজের ধর্মকেই শ্রেষ্ঠ মনে করে, অপর ধর্মকে ভুল বলে জেনে আসে, অপর ধর্মকে বিদ্রুপ করতে শেখে- তবে তার পক্ষে সাম্প্রদায়িক মনোভাব সম্পন্ন হয়ে ওঠা খুব সোজা কাজ। এই সাম্প্রদায়িকতাকে সহিংস করে তোলে সংকীর্ণ শিক্ষা, জ্ঞান। এই সংকীর্ণ শিক্ষা বা জ্ঞানই অপর ধর্মকে বিদ্রুপ করতে শেখায়, অপর ধর্মকে বিদ্রুপ করে নোংরা আনন্দ পেতে শেখায়।



আমার চারপাশে অনেকেই ছিল, যারা হিন্দুধর্ম, মূর্তিপূজা নিয়ে এমন সব কথা বলত, কোন গোড়া হিন্দুর কানে যদি সেসব কথা যায়, তবে সেখানেই হাতাহাতি শুরু হয়ে যাবে। এ ছোট্ট হাতাহাতিই চলে যাবে পরিবারে-গোষ্ঠীতে, তৈরী হবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। ইতিহাস তো আমাদের তাই বলে।অধুনা কিছু ওয়েবসাইটেও দেখা যায়, কোরবানি ঈদের সময় নানারকমের নোংরা লেখা, পূজোর সময় মূর্তিপূজোকে কটাক্ষ করে নোংরামো। তারা নিজেদেরকে নাস্তিক বলে দাবী করে। আচ্ছা, নাস্তিকতা মানে কি নোংরামো? নাস্তিকতা মানে কি অশ্লীলতা? নাস্তিকতা মানে কি অপরকে অসম্মান করা ?



আর ধর্ম পালন করেই বা কি লাভ,যদি আমাদের ধর্ম আমাদেরকে সহনশীলতা না শেখায়? আমাদেরকে শ্রদ্ধাশীল হতে না শেখায়? রক্ত ঝরানো, বোমাবাজি করা, তীর্থস্থান ধ্বংশ করার কথা পৃথিবীতে শুধু একটি ধর্মেই আছে। তার নাম অধর্ম।



আমাদের ইতিহাস অনেক গর্বের ইতিহাস। আমরা স্বামী বিবেকান্দকে স্মরণ করতে পারি। আমরা স্মরণ করতে পারি মহাত্মা গান্ধীকে-মানুষকে বাঁচানোর জন্য জীবনের কতগুলো দিন যে তিনি অনশন করে কাটিয়েছেন, তার কোন হিসেব নেই। আমাদের সামনে রয়েছেন শেখ মুজিবর রহমানের মত ব্যক্তিত্ব,আছেন রবীন্দ্রনাথ, আছেন কাজী নজরুল ইসলামের মত অসাম্প্রদায়িক মানুষ। আছেন সুকান্ত, জীবনানন্দ। তাঁরা সবাই চেয়েছেন, মানুষ যেন মানুষকে হত্যা না করে। মানুষ যেন মানুষকে ঘৃণা না করে। একটু সদিচ্ছা আর সচেতনতাই কি যথেষ্ট নয়, তাঁদের চাওয়াগুলোকে পূর্ণতা দিতে ?







আমি যতগুলো কথা বললাম, তার সব কথার সাথে সবাই একমত হবে, এমনটা আমি কখনওই আশা করি না। মতাদর্শগত বৈচিত্র থাকবেই। দর্শণ,চিন্তা,ভাবধারা,ভালবাসা- সবকিছুতেই বৈচিত্র থাকবে। আর এই বৈচিত্রই তো সৌন্দর্য। ভিন্নতা আছে বলেই তো পৃথিবীটা এত সুন্দর, তাই না?



আমি তরুণ।যেকোন ভাল কিছু তারুণ্য ছাড়া অসম্ভব। আমরা যারা আজকের তরুণ-তরুণী, তারাও একদিন বাবা-মা হব। আমাদেরও একটি পরিবার গড়ে উঠবে। আমরা যদি এই মুহূর্ত থেকে একটা শপথ নিতে পারি যে, আমাদের সন্তানকে বা পরিবারকে আমরা কখনওই সাম্প্রদায়িকতা শেখাবোনা,আমাদের সন্তানকে বা পরিবারকে কখনওই ধর্মান্ধ করে তুলব না, আমাদের সন্তানকে বা পরিবারকে কখনওই অন্য ধর্মকে গালি দিতে দেব না বা বিদ্রুপ করতে দেব না- তার থেকে ভাল আর কিছুই হতে পারে না। কারণ মানুষ তার প্রতিটি মৌলিক অনুভূতি পরিবার থেকেই পায়। পরিবার যদি সাম্প্রদায়িকতা না শেখায়, তবে বাংলাদেশের একটি পরিবারও ধর্মান্ধ থাকবে না। রক্তস্নাত এ বাংলায় ধর্মীয় সংকীর্ণতার কারণে আর কখনওই রক্ত ঝরবে না। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যেন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সাম্প্রদায়িক নোংরামো-এসবকে শুধু ইতিহাসের পাতাতেই খুঁজে পায়। তাদেরকে যেন নিজের চোখে কখনও এগুলো দেখতে না হয়।।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৫৬

বীরেনদ্র বলেছেন: ইংরেজদের আগে সাম্প্রদায়িকতা ছিল না - ইতিহাস কিন্তু অন্য কথা বলে। গোড়ার মুঘলদের আমলের জিজিয়া কর যা আকবর তুলে দেন এবং আঔরঙ্গজেব এসে তা পুনরায় চালু করেন। সুলতান মাহমুদ বা মোহাম্মদ বিন কাসেম এর ইতিহাস একটূ পড়ুন। কতগুলো মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ তৈরী করেছিলেন মুসলমান শাসকেরা ভারত বর্ষে তার ইতিহাস ও পড়ুন।

সুতরাং যখনই ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িকতার জন্ম তখন থেকেই। শাসক বা কুচক্রীশ্রেনী ধর্ম কে পুজি করে স্বার্থসিদ্ধির জন্যে । এরাই সাম্প্রদায়িক্তাকে লালন করে যতটা না ধর্মের জন্য তার চেয়ে বেশী ধর্মের দোহাই দিয়ে স্বার্থ সিদ্ধির।

ভারতে মুসলমানেরা সাম্প্রদায়িক নয়, অন্ততঃ প্রকাশ্যে কারন সেখানে তারা সংখ্যা লঘু। একই ভাবে বাংলাদেশে হিন্দুরা প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িক নয়।

২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৪০

পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: প্রিয় বীরেনদ্র, আপনাকে ধন্যবাদ আমাকে এত সব তথ্য দেবার জন্য । এত কিছু আমার সত্যিই জানা ছিল না।

কিন্তু ভারতীয় মুসলমানরা যদি সাম্প্রদায়িরক না ই হয়, তবে এতগুলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কে তৈরী করল। স্বাধীন ভারতেও ২০০২ এ গুজরাটে দাঙ্গা হয়েছে।আপনি কি বলতে চাচ্ছিলেন যে, ‘সংখ্যালঘুত্ব’ এই বিশেষণটা একটি সম্প্রদায়কে সাম্প্রদায়িকতা থেকে দূরে রাখে?

জানালে উপকৃত হতাম।।

৩| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:১৫

বীরেনদ্র বলেছেন: হ্যাঁ সংখ্যা কম হওয়ার কারনেই ধর্মীয় জানোয়ার গুলোই অবদমিত থাকে।

ধর্মীয় সম্প্রীতি মোটামুটীভাবে বিদ্যমান তা বাংলাদেশেই বলুন বা ভারতেই বলুন। মোটামুটি বলছি এই কারনেই যে কিছু অদৃশ্য ব্যাপার থাকে যা দাঙ্গা না হলেও কিন্তু নিন্দনীয় ব্যাপার। যেমন আমার উপর হয়ত হামলা হয় নি কিন্তু আমাকে বিদ্রুপ্ পূর্ন মন্তব্য সহ্য করতে হয়েছে, বা ধর্মীয় পরিচয়ে অবিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছে। এটা বাংলাদেশে এবং ভারতে সবখানেই হয়। মাঝে মাঝে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা যা ভারতে হয় বা বাংলাদেশে হয় তা কিন্তু হয় গুটিকয়েক লোকের জন্য যারা সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে স্বার্থসিদ্ধি করে। দাঙ্গা হয়ত হয় না কিন্তু এক সম্প্রদায়ের অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃনা কিন্তু ধর্মেরই ফসল। প্রত্যেক ধর্মই দাবী করে সর্বশ্রেষ্ঠ। এই দাবী দলভারী করার অপকৌশল মাত্র। যে মুসলমান হিসেবে জন্ম নিলো তার ধর্ম অনুযায়ী সে বিশ্বাস করে কলেমাতে এবং যে কলেমাতে বিশ্বাস করে সে ধর্ম অনুযায়ী বেহেশ্তে যাবে। এই বিশ্বাস সে পায় পরিবার ও সামাজিক পরিবেশ থেকে। বাংলাদেশের যে যুদ্ধ শিশুটিকে নরওয়ের দম্পতি দত্তক নিয়েছিলেন যে বড় হয়েছিল খৃস্টান হিসেবে যদিও জন্ম পরিচয় তার ছিল না বা ধরে নিতে পারি সে ছিল মুসলমান।

সুতরাং ধর্ম কারো পরিচয় হতে পারে না বা হওয়া উচিত নয় যদিও তা অত্যন্ত যত্ন সহকারে পালন করা হয় ভারত বাংলাদেশে বা পাকিস্তানে।


৪| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:৩২

পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: দারুণ বলেছেন। খুব সম্ভবত কোন ধর্মগ্রন্থেই লেখা নেই যে, সেই ধর্মই সর্বশ্রেষ্ঠ। এ ধরণের চিন্তা-ভাবনা মানুষেরই ভুল। মানুষযে ক্যান এই ভুল গুলা বুঝতে পারেনা?
জীবনটা তো অঙ্কের মত। একই সমস্যার একাধিক সমাধান থাকতে পারে। শুধু নিজের সমাধানটাকে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাবা রীতিমত বোকামো।
কিন্তু সমস্যা হল, আমাদের ধর্মগুরুরা, অধিকাংশ ধর্মপ্রচারকরা এবং আমাদের সমাজ কিন্তু আমাদের তাই শিখিয়ে আসছে।

৫| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৫

অচেনা_ শুভ বলেছেন: +++

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২০

পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ প্রিয় অচেনা_ শুভ ।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.