নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সহজ কথা কইতে আমায় কহ যে, সহজ কথা যায়না বলা সহজে ...

পেলব চক্রবর্তী

ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম...

পেলব চক্রবর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

রায় দিয়ে কি হয় ?

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৬:২৬

একটি একটি করে রায় হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের। অনেক দেরীতে হলেও শেষ পর্যন্ত জাতীয় শত্রুদের বিচার আমরা করতে পারছি। এটা আমাদের জন্য গর্বের ব্যাপার।



জানতাম, এ বিচার কিংবা রায় কিংবা রায়ের কার্যকরণ কোনকিছুই একাত্তরের রক্তের দাগ মুছতে পারবে না। এ বিচার কোন বিধবার সিঁথিকে রাঙ্গিয়ে তুলতে পারবে না। যুদ্ধ পরবর্তী হা হুতাশ আর বেদনার্ত মুহূর্তগুলোকেও বিস্মৃত করে দিতে পারবে না।



মুক্তিযুদ্ধের পর পেরিয়ে গ্যাছে অনেকগুলো দিন। বছরের হিসেবে ৪২ বছর। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীরাও এখন জীবন সায়াহ্নে। ঘাতক-দালালদের অনেকে আর বেঁচেও নেই।



তাই প্রশ্ন উঠতেই পারে,আজ এতদিন পর বিচার করে কি লাভ? আর ক দিন পর তো ওরা মরেই যাবে।



তবুও আমরা বিচার করছি। বিচারের দাবীতে গলা ফাটাচ্ছি। যুদ্ধাপরাধী দলটির সন্ত্রাসীদের আঘাতে আহত হচ্ছি, নিহত হচ্ছি। তবুও চিত্কার থামছে না। বিচার না হওয়া পর্যন্ত চিত্কার থামবেও না।



কারণ, যুদ্ধাপরাধীদের স্বাভাবিক মৃত্যু আমাদের কাম্য নয়। যুদ্ধাপরাধীরা আমাদের দেশকেই যেখানে স্বীকার করে না, সেখানে সেই দেশেরই আইন ব্যবস্থার অধীনে সাজা ভোগ করা তাদের জন্য অপমানের। ওরা তো আমাদের কে অনেক অপমান করেছে। এখনও করছে। আমরা ওদের কে এটুকু অপমান করতে চাই।



ট্রাইব্যুনাল এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তারা সঠিক বিচার করছে না, রায় আগে থেকেই ঠিক করা আছে,বিরোধী দলকে দমন-পীড়নের জন্য এ ট্রাইব্যুনাল ইত্যাদি ইত্যাদি। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হতে পারে। কিন্তু এ ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে দেবার যে দাবী, তার সাথে একমত হওয়া যায় না। এই ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে গেলে অন্য কেউ এসে খুব সু্ন্দর বিতর্কমুক্ত একটি ট্রাইব্যুনাল তৈরী করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে, এমনটা বিশ্বাস করার দিন আর নেই। এসব কথা শুনলে যেন মনে হয় রূপকথার গল্প শুনছি।



সবার উপরে রাজনীতি- আমরা তো এই দেখে আসছি বছরের পর বছর ধরে। ক্ষমতাসীন,বিরোধীদল – সবাই রাজনীতি করে আমাদের নিয়ে।



শোনা যায়, সরকার পদ্মা সেতুর দুর্নীতি ও কোটাবিরোধী আন্দোলন দমাতে বা মানুষের নজর অন্যদিকে সরিয়ে নিতেই যুদ্ধাপরাধীদের রায় দিয়েছে, গণজাগরণমঞ্চ তৈরী করেছে,হেফাজত তৈরী করেছে। এসবের সত্য-মিথ্যা যাচাই করার জন্য অনেকেই আছেন। আমার খারাপ লাগে শুধু একটি কথাই ভেবে যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কোন রাজনৈতিক ইস্যু হবার কথা ছিল না। এটি এদেশের প্রত্যেকটি মানুষের প্রাণের দাবী হবার কথা ছিল। আমরা জাতিটাই দুর্ভাগা, নিজেদের অপমানের প্রতিশোধ নিতেও আমরা এক হতে পারি না।



গত দু দিনের সহিংসতায় মারা গেছে ৯ জন। একটি করে রায় হয়, একটি-দুটি-তিনটি-চারটি হরতাল হয়। জীবন থেমে থাকে কয়েকদিন। কিছু দোকান ভাঙচুর হয়। কিছু মানুষের পা ককটেলের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়, কিছু মানুষের চোখ নষ্ট হয়ে যায় । কিছু যানবাহন ভেঙ্গে যায়। কয়েকটি রাস্তায় টায়ার জ্বলে। অর্থনীতির ক্ষতি হয় ইত্যাদি ইত্যাদি।



একজন যুদ্ধাপরাধীর রায় পেতে গিয়ে দেশের একজন মানুষকে প্রায় সাত থেকে আট প্রকার আতঙ্কে থাকতে হয়। এর মধ্যে কিছু কিছু আতঙ্ক কারও কারও জন্য সত্য হয়ে যায়। সে কাঁদে,তার পরিবার পরিজন কাঁদে। এসব খবর পত্রিকায় দেখে কাঁদি আমরাও।



আগেই বলেছি সবাই রাজনীতি করে আমাদের নিয়ে। সরকার চায় বিরোধীরা এসব সহিংসতা চালাক। যাতে মানুষ তাদেরকে ঘৃণা করে ভোট না দেয়। বিরোধীরা সহিংসতা চালায়, মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় চাঁদে মুখ দেখা যাবার মত তথ্য। দুর্ভাগা বাঙ্গালী তাই বিশ্বাস করে। তাই দুর্ভাগ্য তাদের পিছু ছাড়েনা।



যুদ্ধাপরাধীদের রায় পেতে গিয়ে এই স্বাধীন দেশের কতগুলো মানুষ সহিংসতার শিকার হয়েছে, তার পরিসংখ্যান দেখলে চমকে উঠবে যে কেউ। এই মেয়াদে রায়গুলো দিয়ে ভোটের সময় সরকার হয়ত বলবে, আমাদেরকে আবার ভোট দিন, রায় কার্যকর করার জন্য।



কিন্তু বাঙ্গালী জাতি খুবই ভুলোমনা। তারা কখনও এক দলকে পরপর দুইবার ক্ষমতায় আনবে না। তারা ফিরে যাবে তাদের আগেই পছন্দটিতে, সে পছন্দ যত ভালো বা যত খারাপই হোক না কেন।



তাই মোটামুটি ধরে নেয়া যায়, একসময় মুখ থুবেড়ে পড়বে এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।



শুধু ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ও হবে কিছু ব্যবসায়ী, কিছু স্কুলগামী বালক-বালিকা, কিছু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রার্থী মানুষ।



কোথায় যেন শুনছিলাম, বিস্মৃতিপরায়ণ জাতির জন্য পুণরাবৃত্তিই একমাত্র পরিণতি। কথাটি খুবই সত্য। নিজেদেরকে দেখলেই তো তা বোঝা যায়।।





(e-mail: [email protected])

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৭:০০

সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: রায় কার্যকর করুন ।

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৭:২৪

পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: একমত। রায় কার্যকর করুন।

২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:২৮

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত এসব রায় ফায় অর্থহীন । একটা রায় কার্যকর হতে কতদিন লাগে ?

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৩৭

পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: রায় ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যদি রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে যায়, তবে তা বাস্তবায়িত হবার সম্ভাবনাও কমে যায় ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.