![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কি যোগ্য শিক্ষকের অভাব আছে? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কি এমন কেউ নেই যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হবার যোগ্যতা রাখে না? এ প্রশ্নগুলোতে একটু পরে আসছি।
গত বছর জাহাঙ্গীরনগরের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব আন্দোলন হয়েছিল্। ছাত্র-শিক্ষক সবাই এক কাতারে এসে আন্দোলন করেছিলেন বিতর্কিত উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবির স্যারের বিরুদ্ধে।যে ছেলে বা মেয়েটি মিছিল বা হালকা জটলা দেখলেই ভয় পেত, সেও এসে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল। ছাত্র-ছাত্রী,শিক্ষকরা একসাথে আমরণ অনশন করেছিলেন।জোবায়ের হত্যার পর সাবেক উপাচার্য শরীফ স্যারের পদত্যাগের দাবীতে এ আন্দোলন শুরু হয়।এছাড়াও সাংস্কৃতিক কর্মীদের উপর হামলা চালানো ছাত্রলীগের এক পক্ষের প্রতি সমর্থন প্রদানের অভিযোগ ছিল তাঁর নামে।
আন্দোলনের তীব্রতা ছিল চরম ও এর পরম ফলাফল রূপে গত বছরের ১৭ এপ্রিল পদত্যাগে বাধ্য হন সাবেক উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবির।
প্রায়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ড. আনোয়ার হোসেন স্যারকে জাবির নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন।
এর পর উপাচার্য প্যানেলে নির্বাচন হয় ১৯৭৩ এর অ্যাক্ট অনুযায়ী। জাহাঙ্গীরনগরের নতুন নির্বাচিত র্উপাচার্য হিসেবে আসেন ড. আনোয়ার হোসেন স্যার।ড. আনোয়ার হোসেন একজন স্বনামধন্য ব্যক্তি। এছাড়াও তাঁর আরও একটি পরিচয় তিনি কর্ণেল তাহের এর ভাই।তাই তাঁর প্রতি আশা-ভরসাও অনেক বেশি। তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থির পরিস্থিতি তিনি সামাল দিতে পারবেন। পারবেন সবুজ-শ্যামল এ বিশ্ববিদ্যালয়টাকে শান্ত করতে।বর্তমানে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে তিনি একমাত্র নির্বাচিত উপাচার্য।
ড. আনোয়ার হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাই রাষ্ট্রপতি তাঁকে নিয়োগ দেবার পর থেকেই আমার লেখার প্রথমাংশের প্রশ্নগুলো মুখে মুখে ঘুরতে থাকে।সত্যিই তো, জাহাঙ্গীরনগরে কি একজনও যোগ্য ব্যক্তি ছিল না? তাই অসন্তোষের শুরু সেই প্রথম দিন থেকেই।
রাজনৈতিক দলাদলি, শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং, রাজনৈতিক সুবিধাভোগীদের দল- এগুলো বাংলাদেশে চিরকালের সাধারণ ব্যাপার।এ বিষয়ে আমি কথা বলব না।
কিন্তু এগুলো পরিস্থিতিকে দিনের পর দিন অস্বাভাবিক করতে থাকে।
এরপর? :
গত বছরের ১ ও ২ আগস্ট রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভয়ানক ঘটনা ঘটে। এম.এম.এইচ হলের এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে ছাত্রদের সাথে প্রত্যক্ষ লড়াইয়ে জড়িয়ে পরে পুলিশ। রাবার বুলেট ছোড়া হয়।বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়। সে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রচুর ভাঙচুর হয়। আন্দোলনরত শিক্ষকরা সেটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলছেন। সে ঘটনার কোন বিচার হয় নি।
এবছরের ১২ ফেব্রুয়ারী মওলানা ভাসানী হলের এক ছাত্র মৃত্যু বরণ করেন। চিকিৎসায় গাফলতির অভিযোগে উঠে আসে। ক্যাম্পাসে আবার ভাঙচুর হয়। সে ঘটনারও কোন বিচার হয় নি।
আন্দোলনরত শিক্ষক সমিতি যে ১২ টি অভিযোগ বর্তমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে এনেছেন এ ঘটনাগুলো সেই ১২ টি অভিযোগের অন্তুর্ভুক্ত।
এছাড়াও গণমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নকারী কথা বলার অভিযোগ আছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে (ক্যাম্পাসে শিবির আছে/ শিবির হামলা করেছে/ যাকে-তাকে শিবির বলা)।
হামলা হয় উপাচার্যের বাসভবনেও। সে ঘটনারও কোন সুরাহা হয় নি।
ঘটনাগুলো খুব সহজেই লিখে ফেলা যায়। কিন্তু ঘটনাগুলো সত্যিই মারাত্মক।
তাই পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে থাকে দিনের পর দিন।
এর মধ্যে আবার ছাত্রলীগের সাথে উপাচার্যের গোপন গভীর সখ্যতার খবর পাওয়া যায়। ছাত্রলীগের সাথে উপাচার্যের কথা বলার গোপন অডিও ফাঁস হয়ে যায়।
(Click This Link)
এতে নাকি শোনা যায় তিনি ছাত্রলীগকে বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন ।
আন্দোলন:
আন্দোলন ও অসন্তোষ দানা বাঁধতে থাকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে।
শিক্ষক সমিতির এক অংশ আন্দোলন শুরু করেন উপাচার্যের পদত্যাগের দাবীতে। কর্মসূচি দিতে থাকেন একের পর এক। ক্লাস বর্জন করতে শুরু করেন শিক্ষকরা।
এক পর্যায়ে উপাচার্য পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের দাবীর মুখে তিনি আবার পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
কিন্তু দাবী ও আন্দোলন এতে থামে না। তাই আন্দোলন চলতে থাকে। ক্লাস বর্জন চলতে থাকে ও সে আন্দোলন আজও চলছে।
গত বুধবার উপাচার্য তাঁর কার্যালয়ে আসার পরপরই তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এখন পর্যন্ত তিনি অবরুদ্ধই আছেন। এ নিয়ে পত্র-পত্রিকা বা টিভি-চ্যানেল খুললেই জানা যায়।
উপাচার্য যা বলেন:
উপাচার্য বারবারই বলে আসছেন যে, তাঁর পদত্যাগ কোন সমস্যার সামাধান নয়। তাই তিনি পদত্যাগ করবেন না।
কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষকরা এত সহজেই ছেড়ে দেবেন? না, তা হয় না? তাই তাঁরা ক্লাস বর্জন অব্যাহত রাখলেন।সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কোন বাস ছেড়ে গেলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
নিরুপায় উপাচার্য।তিনি চাইলেন রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ।যেন রাষ্ট্রপতিকেই ত্রাণকর্তা হিসেবে পেতে চান উপাচার্য।
শেষে কি হবে ?:
এরপর কি হবে, তা এখনও কেউই বলতে পারেনা। হয়ত আন্দোলন আরও তীব্র হবে। হয়ত আন্দোলনের চাপে উপাচার্য সরে যাবেন। আসবেন নতুন উপাচার্য। হয়ত দুদিন পর আবার তাঁরও অনেক দোষ-ত্রুটি ধরা পড়বে। হয়ত আবার আন্দোলন শুরু হবে।
অথবা, হয়ত উপাচার্য পদত্যাগ করবেন না। মহামান্য রাষ্ট্রপতি একটি উপায় বাতলে দেবেন। একটি সমাধান বের হবে। বিশ্ববিদ্যালয় আবার স্বাভাবিক হবে।
অথবা, এই আন্দোলন আর অচলাবস্থা চলতে থাকবে দিনের পর দিন। কিন্তু এর পরিণতি কি হবে? ভাবা যাচ্ছে না।
কী পাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্র-ছাত্রীরা?:
বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। এ কথা সবাই একবাক্যে মেনে নেবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী হয় পড়াশোনা ও জ্ঞান চর্চার জন্য। এ কথাও সবাই মেনে নেবেন।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি ক্লাস না হয়? একদিন-দুদিন নয়, যদি দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস ক্লাস না হয়, তবে?
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগে বেশ কিছুদিন ধরে কোন ক্লাস হয় না। শিক্ষকরা ক্লাসে আসেন না। তারা পড়ান না।
ছাত্র-ছাত্রীরা নাকি যখন শোনে যে তাদের ক্লাস হবে না, তখন তারা আনন্দিত হয়। কথাটা হয়ত সত্য। ক্লাস পালাতে প্রায় সবারই ভালো লাগে।
কিন্তু, যদি মাসের পর মাস ক্লাস না হয়, যদি সেশন জটের চোখ রাঙ্গানি সামনে এসে বিভীষিকা দেখায়, তখনও কি ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস না করাতেই সুখ পাবে? আমার কিন্তু তা মনে হয় না।
সাবেক উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবির স্যারের পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলনের সময় সবাই রাস্তায় নেমেছিল।একথা আগেই বলেছি।
কিন্তু বর্তমান উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা নিশ্চই চান না যে তাঁদের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়ুক।
ছাত্র-ছাত্রীদের চলমান আন্দোলনের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তাদের কোন দোষও নেই। কিন্তু কেন তারা আন্দোলনের বিষবাষ্পের তোপে পড়বে?
শিক্ষকগণ অবশ্য বলেছেন যে, তাঁদের দাবী আদায় হলে তাঁরা অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে ঘাটতি পুষিয়ে দেবেন। কিন্তু এ আশ্বাসে কি আর দুশ্চিন্তা কাটে ?
শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের কাছে তাই অনুরোধ, আপনারা আন্দোলন করুন, কিন্তু ক্লাস নিন।ক্লাস নেবার সাথে শুধু আপনাদের নয়, ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থও জড়িত।
আর বিশ্ববিদ্যালয়? বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে কালো ব্যানারে সাদা হরফের কিছু শব্দ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অবাঞ্চিত।
এমনিতেই জাহাঙ্গীরনগরের নামে হাজার রকম কথা-বার্তা রটে যায় হাজার জায়গায়। সেগুলো আবার পত্র-পত্রিকায়, মিডিয়ায় আসে হাজার রকমের রস-কস মিশিয়ে।ফলে, জাহাঙ্গীরনগরকে আর ভালো চোখে খুব বেশি মানুষ দেখে না।
বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী হয় আরও একটি উদ্দেশ্যে। সেটি হল, পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন সম্পর্কে শিক্ষিত করে তোলা। ছাত্র-ছাত্রীদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করে তোলা।
কিন্তু শিক্ষক আর উপাচার্যের এই মুখোমুখি অবস্থান দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখছে, সেটি কি একবারও কেউ ভেবে দেখেছে ?
(E mail: [email protected])
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০
পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: সত্যিই খেয়া ঘাট, রাজনীতিটা বড়ই নোংরা ।।
২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০১
কালাভীমরুল বলেছেন: তিনি অবাঞ্চিত উপাচার্য।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৩
পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ভাষায় ।
৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪৬
অচেনাসময় বলেছেন: কিছু স্বার্থান্বেষী শিক্ষক নামধারীরা আন্দোলনের নামে ছেলে খেলায় মত্ত । সরকারের উচিত শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করা । উপাচার্যের বিরুদ্ধে তেমন কোন জালিয়াতির অভিযোগ নেই। আর আন্দোলনকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানারকম দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগ আছে ।আন্দোলনকারী শিক্ষকরা কারো প্ররোচনায় এমন কাজ করছে এটা নিঃসন্দেহ ! দলবাজীই একমাত্র কারণ
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৫০
পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: হয়ত আপনার কথাই সত্য ।
৪| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:১৯
কষ্টসখা বলেছেন: জাবির বর্তমান ছাত্র হিসাবে আমি জানি এই ভিসি কতটা নিন্ম মানষিকতার অধিকারী! শরীফ স্যারকে আমি রাজনৈতিক দিক দিয়ে ভালো বলব না কিন্তু একাডেমিক,প্রশাসনিক দিক দিয়ে তিনি এই ভিসি থেকে হাজার গুন ভালো ছিলেন।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫২
পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: হম্ । এমন কথাও অনেকের কাছেই শোনা যায় ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭
খেয়া ঘাট বলেছেন: অডিও ক্লিপ শুনে হতবাক হয়ে গেলাম।
ছিঃ কী নোংরা রাজনীতি।