![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সম্ভবত গত পরশু বা তার আগের দিন জার্মানিতে এক কিশোর একটি ব্যাংকে খেলনার পিস্তল দিয়ে ভয় দেখিয়ে অনেকগুলো টাকা নিয়ে পালিয়ে আসে। পরের দিন জার্মানি ছেড়ে অস্ট্রিয়া যাবার পথে সে ধরা পড়ে। কি ভয়ঙ্কর অবস্থা! আজকের দিনেও যে খেলনা পিস্তল দিয়ে ডাকাতি করা যায়, এই কিশোরটি তা দেখিয়ে দিল।
খুব ভালো করে পড়ুন।২০০৫ সালের আগস্ট মাসের ৬ তারিখ। ব্রাজিলের ‘ব্যাংকো সেন্ট্রাল ব্যাংক ব্রাজিল’ থেকে ৬৯.৮০ মিলিয়ন ডলার চুরি হয়ে যায়। ডাকাতরা ব্যাংক এর পাশে একটি বাড়ি ভাড়া নেয়। তারপর সেই বাড়ি থেকে ২৫৫ ফিট লম্বা গর্ত করে ব্যাংক থেকে টাকা চুরি করে।
আমাদের দেশে কিশোরগজ্ঞে হয়ে গেল আরও ভয়ানক কান্ড। দেড় বছর ধরে নাকি শুধু গর্তই তৈরী করেছে ব্যাংক এর টাকা চুরি করার জন্য। আর সেটা কেউই বুঝতেই পারেনি।
এরাও কিন্তু চুরির আগে ব্যাংক এর পাশে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল, তারপর সে বাড়ি থেকে গর্ত করেছিল সোনালী ব্যাংক পর্যন্ত।
আপনি যদি গুগল বা ফেইসবুক হ্যাক করতে পারেন বা তাদের কোন ত্রুটি ধরিয়ে দিতে পারেন, তবে এই স্বনামধন্য কোম্পানিগুলো কিন্তু যতটা না কষ্ট পাবে তার থেকে অনেক বেশি খুশি হবে। তারা এর বিনিময়ে আপনাকে পুরষ্কৃতও করতে পারে।
ব্রাজিল কিন্তু আজও সে ঐতিহাসিক ডাকাতির কোন কূল-কিনারা করতে পারেনি। কিন্তু আমরা পেরেছি।
না, আমি বলছি না যে ওই ডাকাতগুলোকে আদর করে সোনালী ব্যাংক এর চাকরী দিতে হবে, কিন্তু আমি নিশ্চিত, তাদের থেকে ব্যাংক ডাকাতি সম্পর্কে অনেক কিছু জানার আছে। যে দিন আসছে, তাতে ভবিষ্যতেও হয়ত বাংলাদেশে আরও ব্যাংক ডাকাতি হতে পারে(আমরা চাই না যে তা হোক)।
এদেরকে আসলে ডাকাত বলা যায় না, এঁরা অনেক বড় মাপের প্রকৌশলী।আমি বিগত ৪ বছর ধরে প্রকৌশল বিদ্যা পড়ছি। কিন্তু এঁদের মত কৌশলী হতে পারলাম কৈ?
২
ওদিকে আবার আমাদের দাদারা যাচ্ছেতাই দাবি-দাওয়া করে আমাদের মেরে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছে।বলছে, বাংলাদেশ নাকি টেস্ট খেলবে না। তাই কি আর হয়? দাদারা লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে বলে বসছে, দাবী না মানলে এ করব, সে করব- আরও কত কি। এসব দেখে আমি হাসি চেপে রাখতে পারিনা।
কিছুদিন আগে আমাদের এক নেতা বলেছিলেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি নাকি আত্মহত্যা করবেন! দাদাদেরও প্রায় একই রকম অবস্থা। ‘বিশ্ববেহায়া’ উপাধিটা তাদের জন্যও স্থির করার সময় এসে গেল কি না তা ঠিক বুঝতে পারছি না।
তবে দাদারা কিন্তু বেশ ভালো প্রকৌশলী। অনেক কৌশল খাটিয়েই ওনারা এতদূর এসেছেন। নিউজিল্যান্ডকেও কি সব দিয়ে নাকি তৈরী করে ফেলেছেন।
তা সত্ত্বেও দাদাদেরকে খুব ভালো প্রকৌশলী বলতে পারছি না। তাদের প্রস্তাবটা যে মাঠে মারা যাচ্ছে।
৩
রাজনীতিতে শুধুই কৌশল আর প্রকৌশলের খেলা। প্রকৌশল বিদ্যাটা কম জানা থাকার কারণে একটি দল এখন আর সংসদেই যেতে পারেনা। ঘরে বসে কান্নাকাটি করে আর হাজত থেকে জামিন পেয়ে খুশি থাকে। আরেকটি অন্ধ দল তাদের দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ কমিয়ে আনছে।কিন্তু তারা কিছুই করতে পারছে না।
অন্য একটি দল আবার প্রকৌশল বিদ্যাটা বেশি বোঝে।
তবে আমি যতটুকু জেনেছি, তা হল, প্রকৌশল বিদ্যাটা বেশি জানা ভালো নয়।এটা যেমনই ভালো, আবার তেমনই খারাপ। প্রকৌশল বিদ্যায় ভুলের কোন ক্ষমা নেই।এবার আবার বেশ কিছু লেখাপড়া না জানা ব্যক্তির হাতে প্রকৌশল বিদ্যার ভার পড়েছে। আমি যদি মন্ত্রী হয়ে মঞ্চে উঠে সিগারেট টানি, তারপর আমি যতই ক্ষমা চাই না কেন, প্রকৌশল বিদ্যা আমাকে ক্ষমা করবে না। কিংবা আমি যদি বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ রেখে সংবর্ধনা দেবার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে রাখি, তারপর যত আইনই পাস হোক না কেন, প্রকৌশল বিদ্যা আমাকে ক্ষমা করবে না।
৪
তাহলে প্রকৌশল বিদ্যাটা সব থেকে ভালো জানে কে? সাধারণ মানুষ। তার ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে। কিন্তু সমস্যা হল, এখন প্রকৌশল বিদ্যার কল-কব্জাগুলো ঠিক আর সাধারণ মানুষের হাতে নেই। কিন্তু বিদ্যাটা ঠিকই জানা আছে। যদি কোনদিন কল-কব্জাগুলো সাধারণ মানুষের হাতে চলে আসে, সেদিন কি হবে বলা যায় না।
আসছে আমাদের ভাষা আন্দোলনের মাস। এ মাসে আমরা আবার কৌশলী হয়ে উঠব। আমরা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো…’ গান গাইব, বইমেলায় বই কিনতে যাবো, কিন্তু ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারব না।
এ আমাদের এক ভয়ঙ্কর কৌশল। ইস্, এই জাতের কৌশল বিদ্যাটা যদি আমাদের মাঝ থেকে মুছে যেত! তাহলে বোধহয় আর লজ্জায় মাথা হেট করতে হত না।
৫
এবার সিদ্ধান্তে আসার পালা। পৃথিবীর সকল বিদ্যার মধ্যে প্রকৌশল বিদ্যা সর্বশ্রেষ্ঠ। এতক্ষণে নিশ্চই এ নিয়ে আর কোন সন্দেহ নেই। থাকা উচিত নয়, যদি আপনি প্রকৌশল বিদ্যা পড়েন। আর যদি আপনি প্রকৌশল বিদ্যা না পড়ে থাকেন, তবে আপনার অবশ্যই দ্বিমত থাকা উচিত।কারণ, প্রকৌশল বিদ্যা বলে, তুমি দ্বিমত পোষণ কর, পারলে ত্রিমত,চতুর্মত বা আরও কোন মত থাকলে তাও পোষণ কর।প্রকৌশল বিদ্যা অন্ধবিশ্বাসী হতে নিষেধ করে। প্রকৌশল বিদ্যা সবাইকে নিয়েই এগুতে চায় ।
খালি যদি আমাদের প্রকৌশল বিদ্যার কল-কজ্জাগুলো ধরে রাখা মানুষগুলো একথাটা বুঝত!
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৪০
পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: প্রিয় সুস্মিতা শ্যামা,
আপনি প্রকৌশল বিদ্যার প্রতি শ্রদ্ধাশীল- ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকাল অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবার ব্যাপারটা কমে যাচ্ছে।
একাডেমিক না হলেও আমিও একজন সাহিত্যের ছাত্র। প্রকৌশল যদি আমার মাথা জুড়ে থাকে, তবে সাহিত্য থাকে আমার বুক জুড়ে।
চমৎকার একটি মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৩৩
ভোরের শিশির । বলেছেন: প্রকৌশল বিদ্যা মানব জগতের কি ! তা বোধহয় আমরা প্রকৌশল বিদ্যার ছাত্র রাই জানি । তাইতো আজ প্রকৌশলীদের এই অবস্থা ।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৩৯
পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: প্রিয় ভোরের শিশির,
এটা তো খুবই স্বাভাবিক যে প্রকৌশলবিদ্যার মানবমুখী দিক গুলো প্রকৌশলীরাই জানবে।
তবে প্রকৌশলীদের অবস্থাটা কিন্তু আপনার মন্তব্য থেকে ঠিক বুঝতে পারলাম না।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:২৬
সুস্মিতা শ্যামা বলেছেন: আমি প্রকৌশলী নই। তবু প্রকৌশল বিদ্যার অনন্যতা, বিশিষ্টতা এবং প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করি। তবে, এটিই সর্বশ্রেষ্ট বিদ্যা-এটা মানতে পারলাম না।
আপনার দেওযা অনুমতির সুযোগ নিয়েই দ্বিমতটা জানালাম। সাহিত্য বিভাগের চার বছর পড়াশোনা আমাকে অন্যের বিভাগের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল হতে শিখিয়েছে।
আপনাকে ধন্যবাদ প্রাণবন্ত একটা লেখা লেখার জন্য।