![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিশু জিহাদ
শিশু নীরব
শিশু নীরবের মা
পৃথিবীতে সবথেকে করুণ মৃত্যু নাকি শিশুমৃত্যু, আর সবথেকে করুণ পরিণতি নাকি পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ। বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হার দিনদিন কমে আসছে, চিকিৎসাব্যবস্থার দিগন্তবিস্তৃতিতে শিশুমৃত্যু আরও কমুক, আমরা সবাই তা চাই। তবে রাস্তা-ঘাটে মাঝে মাঝে ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা থাকলে যে শিশুমৃত্যুগুলো ঘটে, সেগুলোকে কোন তালিকায় আনা যায়? কোন নেশাখোর হয়ত নেশার খরচ জোগাতে ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে নিয়ে গিয়ে একশত টাকায় সেটা বিক্রি করেছে। তাতে ওর নেশার রসদ জুগেছে সেইরাতে। সেই থেকে ওই খোলামুখটি হয়ে গেল মৃত্যুফাঁদ। ওয়াসা কর্তৃপক্ষের এত সময় নেই যে ঢাকা শহরের কোথায় কোন ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা আছে সেটা খুঁজে বের করবেন। ওনাদের কাছে থেকে এমনটা আশা করাও অনুচিত! আর যে নেশাখোরেরা ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি করে বেঁচে খায়, ওদের ধরে এনে বিচার করার ব্যাপারটি আমাদের কাছে স্বপ্নের মত।
পরিত্যাক্ত পাইপে পড়ে গিয়ে শিশু জিহাদ যখন মৃত্যুর আবছায়াকে খুব কাছ থেকে দেখছে, পুলিশ তখন তার বাবা-মা’কে সন্দেহ করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। শুধু পুলিশ নয়, সন্দেহ ছিল আরও অনেকের মনেই- সত্যিই ওখানে কোন শিশু পড়ে গিয়েছে তো? নাকি পুরোটাই রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে দেশবাসীর নজর ঘোরানোর জন্য একটি অপকৌশল?
২৭ ডিসেম্বর, ২০১৪। বিকেল ৩ টা। অবশেষে সব সন্দেহ উবে যায়। একটি নিস্তব্ধ শিশুদেহ আমাদের সব কৌতূহল আর সন্দেহকে চিরতরে থামিয়ে দেয়। জিহাদকে আমরা বিদায় জানাই নত মাথায়, আমাদের সকল পাপ আর অবহেলার দায় স্বীকার করে।
এমন একটি হৃদয়ছেড়া ঘটনার পরও শোনা যায় নি যে কর্তৃপক্ষ এই জাতের বিপদজ্জনক পাইপগুলোর বিনাশ সাধন করেছে বা চুরি হওয়া ম্যানহোলের ঢাকনাগুলোর কোন সদগতি করেছে। তাই যা হওয়ার তাই হল, আবারও ডিসেম্বর এল, আবারও চোখ ভিজল, বুক চিড়ল, বিদায় নিল শিশু নীরব।
দেখি কর্তৃপক্ষ আর কতকাল নীরব থাকে, আর কতকাল ঢাকনা চুরি হওয়া ম্যানহোলগুলো ঢাকার বুক জুড়ে মৃত্যুর হাতছানি বুনে রাখে। শিশু নীরবের মত আমরাও নীরব হয়ে থাকি, নীরবে আত্মগ্লানির আগুনে পুড়ি। ঢাকা শহরের নবনির্বাচিত মেয়রদ্বয়ের কাছে আমাদের অনেক আশা। আমরা মনে মনে ভাবতে বসেছিলাম, ওনারা আমাদের প্রিয় ঢাকা শহরটাকে সিঙ্গাপুরের মত পরিচ্ছন্ন বানিয়ে ফেলবেন। আমরা বাঙ্গালী, তাই একটু বেশিই আশা করি। সঙ্গত কারনেই আশাভঙ্গের হতাশায় বিমর্ষ হই।
নবনির্বাচিত মেয়রদ্বয়ের কাছে অনুরোধ, ঢাকাকে সিঙ্গাপুর বানাতে হবে না। আপনারা শুধু আমাদের হারিয়ে ফেলা ঢাকাকে ফেরত দিন। যে ঢাকাকে আমরা হারিয়েছি, সে ঢাকা আমাদের কাছে সিঙ্গাপুরের চেয়েও বেশি কিছু। আপনারা আমাদেরকে শুধু সেটুকু এনে দিন। হেঁটে যাওয়ার পথে মৃত্যুকূপগুলোকে মেরে ফেলুন। স্যুয়ারেজ লাইনের ২৪৫ ফুট গভীর থেকে নিষ্পাপ শিশুর আর্তনাদ হয়ত শোনা যায় না, কিন্তু অস্ফূট অভিশাপ ঠিকই এসে বিষাক্ত বানের মত বেঁধে।
আমরা বিষে নীল হয়ে মারা যাচ্ছি। মেয়রদ্বয়, আপনারা ছাড়া আশেপাশে কাউকে দেখছি না। দয়াকরে আমাদেরকে এত নির্মমভাবে মরতে দেবেন না।
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৭
পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: এটুকুই চাওয়া।
২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭
রাজ হাসান বলেছেন: নীরবকে আমি মনে করি বাচানো যেত যদি তাৎক্ষনাত ভাবে জরুরী ভিত্তিতে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া যেত তাহলে।কিন্তু কি হল নীরবকে যখন উদ্ধার করা হল তার পর থেকে শুরু হল ফটোশেসন,
এতটুকু একটা বাচ্চাকে কেনইবা দুইজনের ধরে রাখতে হল?
ক্যামেরা দিকে জড়ো হয়ে দাঁড়ানোর কি আদৈ কোনো প্রয়জোন ছিল?
ফায়ার এর একজন কর্মকর্তাও পাশে দাঁড়িয়ে পোজ কেনই বা দিতে গেল?
এত ঠান্ডার ভিতর কেন সাথে সাথে বাচ্চাটির শরীর থেকে ভেজা কাপড় না সড়িয়ে বাচ্চাটিকে ঐ ভেজা শার্ট দিয়ে জড়িয়ে রাখা হল?
এরকম আরও অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে যার উত্তর কিন্তু কারও কাছে নেই।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৬
পেলব চক্রবর্তী বলেছেন: কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে ক্ষতি করে ফেলা আর উপকার করতে গিয়ে অপকার করার ইতিহাসটা বাঙ্গালীর জন্য নতুন নয় একেবারেই। সবশেষের পরিণতিটা নির্মম। কষ্ট সহ্যের সীমা তা ছাড়িয়ে যায় সহজেই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৪
বিলুপ্ত প্রায় বলেছেন: নবনির্বাচিত মেয়রদ্বয়ের কাছে অনুরোধ, ঢাকাকে সিঙ্গাপুর বানাতে হবে না। আপনারা শুধু আমাদের হারিয়ে ফেলা ঢাকাকে ফেরত দিন।