![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোমার অপূর্ণতা, পূর্ণতার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে বুঝে নিও তুমি জীবনটাকে যাপন করছ। আর যদি পূর্ণতার পাল্লা ভারী হয়, তবে বুঝে নিও তুমি জীবনটাকে যাপন করে ফেলেছ। -কলিকালের কালপ্রিট If your unfilled desires are more than your achievement, you realize that you are still living your life. If your achievements are higher than your unfilled desires, you realize that you have already been lived your life. ---Kolikaler Culprit
ইস! দেশটার যে কি হল? এইবার নাকি নব্বই হাজার ছেলে-মেয়ে গোল্লায় গেছে। এরা নাকি মাস্তানী, ছিনতাই, রাহাজানি, চুরি-ডাকাতি ছেড়ে দিয়ে পড়ালেখা করে A+পাইছে। ছি! ছি! বড় হয়ে এরা দেশটাকে ধ্বংস করে দেবে। সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, ও স্বজনপ্রীতির মত ঐতিহ্যবাহী প্রথা একেবারে ইঠে যাচ্ছে দিনকে দিন। কলিকাল বুঝি শেষ হল, সুখি-সমৃদ্ধশালী দেশ আসছে। কি যে হবে দেশটার? শয়তানের অভিশাপে দেশটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। শয়তান আমাদের আর্শীবাদ দাও, আমরা যেন আবার তোমার মনের মত দেশ গড়তে পারি। চারিদিকে যে ভাবে ভালর জোয়ার চলছে, তাকে তুমি থামাও। যুবক-যুবতী ছেলে-মেয়েদের সঠিক পথ দেখাও, তারা যেন রাস্তা-ঘাটে, পার্কে আবার লুচ্চামী করে, পড়ালেখার মত কাজ না করে। যৌবনের হাত ধরে যেন আবার কলিযুগ ফিরে আসে, আবার তোমার কালিমায় মুখরিত হোক আমাদের এই পৃথিবী। সেই দিনটা দেখে যেন মরতে পারি শয়তান। মিথ্যার মহত্ব শিকড় গড়ুক আমাদের রক্তে, শিরায় শিরায়। মিথ্যা হোক মানবতার একমাত্র মুক্তির পথ। কালটাকার উড়াউড়ি, মাতালের মাতলামি, বাসর ঘরের নব বিবাহিতা পত্নীর আর্ত-চিৎকারে ভারী হোক পৃথিবীর আকাশ-বাতাস।
আজ কেন ছেলেমেয়েদের আড্ডায় পড়ালেখা হয়? কেন আর সিগারেট-গাজার আসর জমে না আগের মত? পত্রিকায় নিউজ হোক এগার বছরের মেয়েকে এগার ঘন্টা ধর্ষণ করেছে এগার জন পুরুষ। দেশে আবারও সরকারি অনুমোদন পেল একশ পতিতালয়, যাতে হাজার অষ্টাদশীর কর্মসংস্থান হল, যৌনক্ষুধা মেটাতে পেরে উল্লসিত উঠতি বয়সী যুবকেরা, তারা বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে আনন্দ মিছিল করছে। প্রতিটা মিডিয়া দেখাক ব্লু-ফিল্ম, অভিনব পন্থায় সেক্স করার জন্য দেওয়া হোক সেক্সবেল এর মত পৃথিবীখ্যাত পুরস্কার। সেরা দুর্নীতিবাজকে দেওয়া হোক দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান। এদের শয়তানী দাও শয়তান।
কাওকে বা কোন বিশেষ সম্প্রদায়কে আঘাত করার জন্য আমি এই কথাগুলো বলছি না, তথাকথিত আধুনিক সভ্যতা কি আমাদের দিনের পর দিন মানবতাহীন ভাবে বাঁচার শিক্ষা দিচ্ছে না? আমরা কি আবার নষ্টামীর শিখরে যাচ্ছি না? উপরের কথা গুলো আমার মনের কোনে জেগে উঠা কিছু অর্থহীন প্রলাপ বলে মনে করলে এখানেই পড়া শেষ করতে পারেন।
যদি একটু ভেবে দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আমরা আধুনিক সভ্যতার অন্তরালে আবার নষ্টামীকেই আপন করে নিচ্ছি। যেভাবে বর্তমান সভ্যতা এগিয়ে যাচ্ছে তার গতি যদি অনতিবিলম্বে রোধ করা না যায় তাহলে হয়ত আমার এই অর্থহীন প্রলাপ গুলোই অদূর ভবিষ্যতে মানবতার একমাত্র স্লোগান হবে। সুদ, ঘুস, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি আজ আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে, ইভটিজিং রাস্তার প্রতিটি বাঁকে বাঁকে, মা-বোনেদের লজ্জা নিয়ে আমরা আজ প্রতিনিয়ত আড্ডায় মেতে উঠছি। আমাদের গৌরবোজ্জ্বল অতীত আজ স্মৃতির পাতায় কিংবা যাদুঘরে দশ টাকার টিকিটের অভাবে কীট-পতঙ্গের খাবার হবার অপেক্ষায় প্রহর গোনে। নবী-রাসূল, রাম-লক্ষণ, যিশু. বুদ্ধ কি আজ লজ্জায় মুখ লুকায় নি? আমাদের এই মানবতাহীন জীবনের নিষ্পেশনে তাঁরা কি প্রতিনিয়ত নিষ্পেশিত হচ্ছে না?
আজ আমরা ভালবাসার মানুষ গুলোর সাথে, ভালবাসার সাথে ক্ষণে ক্ষণে প্রতারণা করছি, নিজেকে বিকিয়ে দিচ্ছি টাকার হাতে, মনুষত্বকে হাতের পুতুল বানিয়ে জঘন্য খেলায় লিপ্ত হচ্ছি, দিনের বেলা ভাল মানুষটি সেজে রাতের আঁধারে ঝাঁপিয়ে পড়ছি হিংস্র পশুর মত কোন নারীর শরীরে, চেঁটেপুটে নিচ্ছি তার জীবনীশক্তি, তারপর ছুড়ে ফেলছি ময়লার স্তূপে। পরের দিন পত্রিকার নিউজ দেখে আপসোস করে বলছি দেশটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এই দেশে আর থাকার মত নেই। নিজের সন্তানদেরকে ভাল হবার উপদেশ দিচ্ছি, নিজেকে নিয়ে নিজের কুকর্ম গুলোকে থামানোর কোন চেষ্টায় করছি না্।
কেও যখন খারাপ কাজের প্রতিবাদ করে তাকে বাহবা দিই, কিন্তু যখনই সে আমার কাজের প্রতিবাদ করছে তখন তার নামে যাচ্ছেতাই কথা বলছি, ক্ষমতা থাকলে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতেও দ্বিধা করছি না, তার পরিবার পরিজনকে পরক্ষণেই সান্ত্বনা দিচ্ছি, আর অভিনয় করে বলছি আহ! ছেলেটা অনেক ভাল ছিল। এভাবে চলে যাবে ভাবতে পারি নি, তার নামে মনুমেন্ট হচ্ছে, তাকে দেবতা বানিয়ে বানিজ্য চলছে।
আজ আমরা এতটা নিচে নেমে গেছি যে বিধাতাকে ব্রান্ড বানিয়ে, ধর্ম নিয়ে বাণিজ্য করতে আমাদের বাধে না। মাজার-মন্দিরকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বানিয়ে, নিজের আখের গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত কিছু পশু। এই পথচলা যদি শেষ না হয় তবে আমার প্রথম দিকের কথাগুলো বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে দাঁড়াবে মানবতার দোঁড়গোড়ায়।
সময় এখন জেগে উঠার, পৃথিবীকে বদলে দেবার। সত্য পথের বিপুল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে সুখী-সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ার, তারুণ্যের রক্তে আগুন লাগার, ধ্বজভঙ্গ যৌবনকে জাগিয়ে তোলার। বদলে দেওয়ার, বদলে যাওয়ার। পরিবর্তনের কোন নেতার আশায় না থেকে. নিজেকে পরিবর্তিত সৈনিক হিসেবে গড়ে তোলার। মিথ্যার নাগপাশ পদদলিত করে, দূরে থাকা ভবিষ্যৎকে আজকের বর্তমান করার। জাগুক ঘুমন্ত বিবেক, ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বিলুপ্ত হোক মিথ্যা আর মিথ্যাচারীরা। তারুণ্যের এই পৃথিবী হাতে হাতে হাত মিলিয়ে গড়ে উঠুক, ভ্রাতৃত্বের অটুট বন্ধনে টিকে থাক ভালবাসা। ছোট্টবেলায় হাতে খড়ির সময় শপথ নেওয়া সেই বাক্যগুলো আপন দ্বীপ্তিতে উজ্জ্বল হোক, আলোকিত করুক হৃদয়, আলোকিত হোক পৃথিবী।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:১১
কলিকালের কালপ্রিট বলেছেন: ঘুনে ধরা সমাজের উচ্চবিত্ত মানুষের অট্টহাসি যখন কানে আসে, তখন কলিকালের কালপ্রিট হতে সাধ জাগে মনে।