![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাংস্কৃতিক কর্মী শিল্প তৈরি করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন..... তবে শিল্পীর শিল্প তৈরি হওয়া চাই-ই-চাই.......সাংস্কৃতিক কর্মীর মূল কাজ শিল্পীর তৈরি শিল্পকর্ম এবং জনগনের মধ্যে মেল বন্ধন অর্থাৎ সহজ ভাষায় বললে, সেতু তৈরি করা..... আর এই সেতু তৈরির কাজ সাংস্কৃতিক কর্মীর করা চাই ই-চাই....এখানে ফাঁকিবাজির সুযোগ নাই.....সুযোগ নাই শিল্পীর মতো ব্যক্তি কেন্দ্রিক চিন্তা করার..... সাংস্কৃতিক কর্মীকে তাই মাঝে মাঝে শিল্পীর চাইতে সংগঠকের ভুমিকায় বেশি অবতীর্ণ হন...... এতে দোষের কিছু দেখি না....সব ঠিকঠাক থাকলে সাংস্কৃতিক কর্মী নামক শব্দের উৎপত্তি ঘটতো না..... সবাই শিল্প চর্চাই করতো.....শিল্প চর্চা করতে এসে কেউ বিপ্লবের কথা বলতো না..... যেহেতু বিপ্লব একটি কঠিন সত্য...... বিপ্লব দীর্ঘজিবী হোক.....\\\\\\\\\\\\\\\\n(১৪ মার্চ ২০১৫, পল্টন ...........)
চলতি বাজেট অধিবেশনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের উপর শতকরা ১০ ভাগ মুল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। মুলতো ভোগ্য পন্যে বা নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের উপর ভ্যাট আরোপের চিরাচরিত নিয়ম দেখে আসলেও মাননীয় অর্থমন্ত্রী আমাদের দেখালেন তার নব কারিশমা। তিনি দেখালেন, শিক্ষা খাতেও ভ্যাট আরোপ করা যায়। তবে এ সিদ্ধান্তের জন্য তাকে সাধুবাদ জানাই এ কারনে যে, তিনি এটাই প্রমান করলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসলেই শিক্ষা বেচাকেনা হয়। তাহলে যেখানেই বেচাকেনা সেখানেই ভ্যাট কেনো নয়। ধন্যবাদ মাননীয় মন্ত্রী, কারণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকগণ এটা কখনোই স্বীকার করেন না যে তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছেন শিক্ষা প্রদানের নাম করে। এবং এসময়ের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসাগুলোর একটির সাথে তারা জড়িত।
কেনো এ ভ্যাট আরোপ তার যুক্তি হয়তো মন্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট মহল দিবেন। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ছাত্র হিসেবে আমার কাছে এই ভ্যাট আরোপ কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি। ঠিক একই ভাবে মনে হয়নি ২০১০ সালে যখন শতকরা ৪.৫ ভাগ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছিলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি'র উপর। একটা অবাস্তব ধারণা সকলে পোষণ করেন যে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানে ধনীর দুলালরা পড়ে। বিষয়টা অবশ্যই তা নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের মোট উচ্চশিক্ষা গ্রহনকারী শিক্ষার্থীর প্রায় ৬২% শিক্ষাগ্রহন করেন। এতো বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী যদি ধনীর দুলাল হয়, তবে সূত্র মতে তাদের পরিবারগুলোও ধনী। তাহলে দেশের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে তো এতো বিশাল ধনিক গোষ্ঠি চোখে পড়ে না। উল্টো দিনকে দিন মানুষের জীবন যাপন আরো ব্যয়সাপেক্ষ হচ্ছে এবং তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা অবনতির দিকেই যাচ্ছে।
উচ্চশিক্ষা নিয়ে সরকারের নিদারুন উদাসীনতা ফলেই এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসার সুযোগ পাচ্ছে। যে পরিমান শিক্ষার্থী প্রতিবছর এইচএসসি পাশ করে সে পরিমান শিক্ষার্থীকে যায়গা দেয়ার মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নেই এখানে। তাই শিক্ষার্থীদের বাধ্য হতে হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে দৌড়াতে। কিন্তু এখানেও এক ধরনের মেধা, ভাগ্যসহ আরো নানান আজগুবি কিছু বিষয় সামনে নিয়ে আসা হয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিকতে না পারা শিক্ষার্থীটির সামনে। অথচ সরকারের ব্যর্থতা কেউ দেখায় না। কর আরোপের আগে মন্ত্রী একবার দেখেছেন কি, এই ঢাকা শহরে কি করে বসবাস করছে এতো বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী? সকলের পক্ষে কি সম্ভব এই কর দেয়া? শিক্ষা কি অধিকার না সুযোগ নাকি এটা বাজারে পন্য? এই কর আরোপের মাধ্যমে তিনি কাদের স্বার্থ রক্ষা করতে চান? উচ্চ শিক্ষা কাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ করতে চান? নাকি হীরক রাজার দেশের মতো “জানার কোন শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই” নীতি অবলম্বন করে দেশের বিশাল তরুন সমাজকে উচ্চ শিক্ষা থেকে বিরত রাখতে চাইছেন?
শুধু কি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধনীর দুলাল পড়ে? পাবলিক বিম্ববিদ্যালয়, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন যে কোর্স সেখানে সন্ধ্যারপর যে পরিমান বিলাশবহুল গাড়ির বহর দেখা যায় তা ৭০ ভাগ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দেখা যায় না। আমি এ বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জের সাথে নিতে পারি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বলতে যদি বসুন্ধরা বারিধারর কিছু প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়কে ধরা হয় তবে এর চেয়ে ভুল আর কিছুই হতে পারে না। সেক্ষেত্রে একটা ঘটনা না বললেই নয়, একবার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে কোন একটি কাজে যাওয়া হয়েছিলো। সে ক্যাম্পাসটি ধানমন্ডির সংকরে অবস্থিত। বিল্ডিংয়ে ঢুকতেই দেখি সিড়ির গোড়ায় কাঠালের উচ্ছিষ্ট, বিড়াল হাঁটছে। দোতলায় ছেলে মেয়েদের চেচামেচি। বিদ্যুৎ নাই। আর তাদের বসার জন্য স্কুলের কাঠের বেঞ্চির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব দেখে কয়েকটা বিষয় আমার মাথায় এসেছে, এরা এখানে পড়তে বাধ্য কারণ, বাজারে যে দরদাম সে হিসেবে এথানে তুলনামুলক কম টাকায় তারা 'সার্টিফিকেট'টা পাবে, দিন দিন তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগছে, এবং এও বুঝতে পারছে তারা অনুপায় তাই এই পরিস্থিতিকে নিয়তি হিসেবে মেনে নিয়েছে। অথচ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ঢাবি'র একজন সাবেক ভিসি। উচ্চ শিক্ষা নিয়ে তার উচ্চ কথা প্রায়ই শোনা যায়। তো, যত্রতত্র দু'তিনটা খুপড়ি ঘরে ক্যাম্পাস বানিয়ে বিশ্ববিদ্যালগুলোর টাকা কামানোর ধান্দা বন্ধ না করে, শিক্ষার্থীদের গিনিপিগ বানিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান একটারপর একটা প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিচ্ছে শিক্ষা প্রদানের নাম করে, টিউশন ফি’র নামে রক্ত চোষা ক্ষুদ্রঋণ প্রদান সংস্থার মতো আচরন যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের উপর কর আরোপ তামাশা ছাড়া কিছুই নয়। একে উদর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানো ছাড়া আর কিবা বলা যেতে পারে?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মালিকপক্ষকে একচ্ছত্র আধিপত্য দিয়ে ২০১০ সালে সাংশোধন করা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ। অধ্যাদেশের ৪১ নং অনুচ্ছেদের ৪ নং ধারায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অর্থের অন্যতম উৎস হিসেবে শিক্ষার্থী ফি'কে দেখানো হয়েছে। মুলতো ১, ২, ৩ নং ধারায় বিভিন্ন আয়ের উৎস দেখানো হলেও শিক্ষার্থী ফি'কেই প্রধান এবং একমাত্র আয়ের উৎস হিসেবে দেখে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অথচ ১৯৯২ সালের অধ্যাদেশে স্পষ্ট বলা আছে বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়(বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) পরিচালনা করা যাবে না। মালিকদের প্রবল চাপে ২০১০ সালে সে ধারা বাদ দিয়ে এসব ধারা যোগ করা হয় অধ্যাদেশে। মালিকরা সদা প্রস্তুত ধাকেন নিজেদের মুনাফা আদায়ে যেনো কোন সমস্যা না হয়। তাই খুলে বসেছেন "ওনার্স এসোসিয়েশন"। ওদিকে শিক্ষার্থীরা যে কিছু বলবে তাদের নিজস্ব দাবি দাওয়া নিয়ে, তার জন্য নেই কোন প্লাটফর্ম। ট্রাস্টিবোর্ডের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারনে যখন তখন বহিস্কারের ভয়ে ছেলে মেয়েরা টু'শব্দটি করে না। তবে ২০১০ সালে যে ভ্যাট বিরোধী ছাত্র আন্দোলন হয়েছিলো সে আন্দোলনের একজন কর্মী এবং সংগঠক হিসেবে সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে চাই, সেসময়ও এমন “নিয়মনীতি”র খড়গ শিক্ষার্থীদের মাথার উপর ছিলো। কিন্তু তারা পিছ পা হয়নি। অনেকেই আন্দালন করার অপরাধে বহিস্কারও হয়। তবে ভ্যাট বাতিলে বাধ্য হয় সরকার। এ কথাও সত্য যে, ক্লাসরুমে ছেড়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামুক এটা কারোরই কাম্য নয়। তাই আরেকটি ২০১০ সালের ২৬-২৭ জুলাই না ঘটার আগেই এ কর আরোপের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এই প্রত্যাশা করি।
(১০ জুন ২০১৫, পল্টন)
২| ১৩ ই জুন, ২০১৫ রাত ১:১৯
কাল হিরা বলেছেন: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসলেই শিক্ষা বেচাকেনা হয়। তাহলে যেখানেই বেচাকেনা সেখানেই ভ্যাট কেনো নয়
ঠিক
৩| ১৩ ই জুন, ২০১৫ রাত ৩:০৩
মোহাম্মদ জামিল বলেছেন: জানার কোন শেষ নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই.... ভাই আপনার পর্যালোচনা বাস্তবসম্মত..কি কথা হল, ইহা বোঝার মত দক্ষ, শিক্ষিত, সত মন্ত্রী আমাদের দেশে একটা ও নাই।
৪| ১৩ ই জুন, ২০১৫ সকাল ১০:০৮
ঢাকাবাসী বলেছেন: শিক্ষা বেচা কেনা জিনিসটা উৎসাহিত করছেন আমাদের শি. মন্ত্রী নিজেই মনে হয়। তার দরকার বেশী বেশি গোল্ডেন ফাইভ, শিখল কি না শিখল তাতে তাদের কিছুই আসে যায় না।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জুন, ২০১৫ রাত ১২:৩৯
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: খুবই সুন্দর পর্যালোচনা।। আমরা উল্টোপথেই চলছি,অবিরত।। নিয়ম-নীতির বলাই নেই।।
ওদিকে শিক্ষার্থীরা যে কিছু বলবে তাদের নিজস্ব দাবি দাওয়া নিয়ে, তার জন্য নেই কোন প্লাটফর্ম। ট্রাস্টিবোর্ডের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারনে যখন তখন বহিস্কারের ভয়ে ছেলে মেয়েরা টু'শব্দটি করে না বড্ড কঠিন বাস্তব।।