নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টুকটাক লেখালেখির অভ্যাস আছে। যদি ও তা অখাদ্য! তা ও লেখি। কেন লেখি তা জানি না! ।ফেসবুকে আমার আইডি :-\n\n.\n http://www.facebook.com/khaledulislampriyo\n\nধন্যবাদ সবাইকে :)

অপ্রিয় প্রিয়

অপ্রিয় প্রিয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

"প্রেম"

২০ শে মে, ২০১৫ রাত ৮:১৮

আমার কল্পনা করার ক্ষমতা খারাপ। খুব খারাপ। আমি কোন ভাল জিনিস কল্পনায় আনতে পারি না। একটু ও আনতে পারি না। যদি কেউ বলে "এই" ব্যাপারটা কল্পনায় আনো বা করো তাহলে ও তা করতে পারি না। উল্টো সেই ব্যাপারটা তো দূরের কথা উল্টো একটা আজগুবে ব্যাপার আমার কল্পনায় চলে আসে।

একবার "পায়েল" আমাকে কল্পনা করতে বলেছিলো। বলেছিলো, "চোখ বন্ধ করে কল্পনা করো যে, আমরা নদীর পাড় দিয়ে হাঁটছি। দুজন দুজনার হাত ধরে।"

আমি চোখ বন্ধ করে কল্পনা করার চেষ্টা করি। কল্পনার জগৎ এ পৌছালাম। কিন্তু পায়েল যা বললো তা কল্পনা করতে পারলাম না। আমি যা কল্পনা করলাম তা হলো, "আমি আমার পায়েল টি এস সি তে হাঁটছি। হঠাৎ পায়েল কোন কিছুর সাথে উষ্টা খেয়ে পড়ে যায়। তারপর আমি তাকে না তুলে উল্টো হা হা করে হাসলাম। পরে পায়েল নিজে উঠে আমাকে তার ভ্যানিটি ব্যাগ দিয়ে ইচ্ছা মতো বাড়ি দিতে থাকলো!"

আমি কল্পনার ব্যাপার টা পায়েলের কাছে বলতেই পায়েল তার ভ্যানিটি ব্যাগ দিয়ে আমাকে বাইড়াতে শুরু করলো। যাক তবুও ভাল যে কল্পনার প্রথম অংশ সত্যি না হলেও দ্বিতীয় অংশ সত্য হয়েছে।

এমন প্রায় ই হয়ে থাকে। তাই পায়েল আর আমাকে কোন জিনিস কল্পনা করতে বলে না। যদি আমি নিজ থেকে বলি,

- "চলো পায়েল আমরা কল্পনার জগৎ এ হারিয়ে যাই।"

তাহলে পায়েল বলে,

-"থাক তোমার যে কল্পনার করার অবস্থা তাতে তুমি কল্পনা করে হারিয়ে গেলে তোমিকে খুজে পাওয়া যাবে না। তার থেকে বরং আমারা বাস্তব জগৎ এ ই থাকি! "

পায়েলের কথা শুনে আমি নিরাশ হয়ে একটা ম্লান হাসি দেই। পায়েল সেই হাসি দেখে মুখ বাঁকায়!

##

রাত প্রায় ২.৩০। এতো রাতে আমার ঘুম ভাঙার কথা না। তবুও ঘুম ভেঙে গেল আমার। আর ঘুম ভাঙার কারন রহমান সাহেব। যার সাথে আমি মেছ এ থাকি। প্রচন্ড গরম তার উপর তিনি ফ্যান বন্ধ করে রেখেছেন।

- রহমান সাহেব ফ্যান টা কেন বন্ধ করেছেন?
- জ্বর আসবে আমার
- এখনো আসে নাই?
- না। তবে আসবে।
- ওহ্! মনে হয় বনানীর সিগনালে আটকা পরেছে। খুব শীঘ্রই এসে পড়বে। চিন্তা না করে ঘুমিয়ে পড়ুন।

আমার কথা শুনে রহমান সাহেব একটু রাগ মুখে আমার দিকে তাকালো। আমি সেই রাগ মুখে তাকানো উপেক্ষা করে মোবাইলটা নিয়ে ছাদে চলে গেলাম। মোবাইলের লক খুলার সাথে সাথেই দেখলাম ১৮ টা মিসকল পায়েলের নাম্বার থেকে। এবার বুঝলাম রহমান সাহেবের ফ্যান অফ করার কারন। আমার ফোনের শব্দে তার ঘুম ভেঙেছে তাই তিনি ফ্যান অফ করে আমার ঘুম ভাঙিয়েছে। কি নিষ্ঠুর ব্যাক্তি!! এতো কষ্ট দিয়ে কেউ কারো ঘুম ভাঙায়!!

আমি পায়েলের নাম্বারে কল দিলাম। জানি এখন ফোন দিলে ইচ্ছা মতো ঝাড়ি খেতে হবে। তবুও দিলাম। কিন্তু প্রথমবারে রিসিভ করলো না। পায়েল ঘুমিয়েছে মনে করে আমি আর কল দিলাম না। আমি রাতের অাকাশ দেখতে লাগলাম। কিন্তু সেই আকাশ দেখায়া বিঘ্ন ঘটালো মোবাইলের ভাইব্রেশন আর রিংটোন একসাথে।

- হ্যালো! পায়েল?
- তুই কি মরার ঘুম ঘুমাচ্ছিলি
- কই না তো! আমি তো বেঁচে আছি। এইতো তোমার সাথে কথা বলতেছি। তুমি শুনতে পাচ্ছ না?
- একদম ফাইজলামি করবি না। তোকে আমি কয়বার ফোন দিয়েছি জানিস?
- জানি। ১৮ বার
- আবার বলিস ১৮ বার!? তাহলে ধরিস নাই কেনো?
- ঘুম দিয়েছিলাম। মরার ঘুম।
- দেখ একদম ফাইজলামি করবি না আমার সাথে। আমার এখন প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। তুই জানিস আমি এখনো তোর সাথে কথা বলার জন্য জেগে আছি? আর তুই ঘুমাচ্ছিলি?
- ঘুম জিনিস টা খুব খারাপ
- আমার সাথে ফাইজলামি করলে তোকে আমি মহাখালি ফ্লাইওভার থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবো।
- আমি কি তাহলে মহাখালি আসবো?
- না। তুই যেখানে আছিস সেখানেই থাক।আমার রাগ কমলে তোকে ফোন দিবো। যদি ঘুমাস তাহলে তোকে আমি মেরে ফেলবো। যাষ্ট মেরে ফেলবো।

আমি কিছু বলার আগেই পায়েল ফোন কেটে দিলো। পায়েলের প্রচন্ড রাগ উঠেছে। পায়েলের রাগ উঠলে পায়েল আমাকে 'তুই' করে বলে। আর এমনিতে সমসময় তুমি করে বলে। পায়েলের রাগ কমানোর সাধ্য আমার নেই তবে রাগ বাড়িয়ে দেয়ার আছে। তবে সেটা বাড়ানো ঠিক হবে না। এমনিতেই যথেষ্ট রেগে আছে। তার থেকে বরং পায়েলের ফোনের জন্য অপেক্ষা করা ভাল।

- হ্যালো,
- হ্যালো পায়েল! বলো
- কিছু না
- তোমার রাগ কমছে? নাকি আমঅকে মহাখালির ফ্লাইওভার থেকে না ফেলে দিলে রাগ কমবে না?
- ফেলে না দিলে কমবে না। হি,,হি
- না কমানোর দরকার নেই। রাগ টা জমিয়ে রাখো।
- আচ্ছা।তুমি কি করতেছো?
- ছাদে দাড়িয়ে আছি
- আমার তোমার কাছে আসতে ইচ্ছে করছে
- আসো
- কিভাবে? আমি তো অনেক দূরে
- কল্পনায় চলে আসো
- না,,আমি সত্যিই আসতে চাই
- সেটা তো এখন সম্ভব না
- সম্ভব না হলে আমার মন খারাপ হবে। আমি কাঁদবো
- তাহলে আমি হাসবো
- কি!!?? আমি কাঁদবো তা দেখে তুই হাসবি!!
- না মানে,,
- কি?
- কালকে তো দেখা হবেই
- হুম,,তবুও এখন যে আসতে ইচ্ছে করছে!
- কি করা যায় তাহলে?
- এক কাজ করো
- হুম,, বলো
- মনে করো, তুমি আর আমি রাতে হাঁটছি রাস্তা দিয়ে। দুজনার হাত ধরে হাঁটছি। তারপর আমি তোমার কাধে মাথা রাখলাম
- তারপর?
- ব্যাপারটা চোখ বন্ধ করে কল্পনা করো। তারপর আমাকে বলো

আমি চোখ বন্ধ করে কল্পনার জগৎ এ প্রবেশ করলাম। দেখলাম, "আমি আর পায়েল রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। আর কোথাথেকে যেনো একটা লোক এসে পায়েলের ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে দৌড় দিলো। পায়েল বলল, আমার ব্যাগ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে!ধরো ওকে। আমি বললাম, ভাল হইছে, খুশি হইছি। এইকথা শোনার পর ইচ্ছা মতো পায়েল আমাকে পিঠে ঘুষি দিতে লাগলো। কিন্তু পায়েলের ঘুষিতে তেমন ব্যাথা পাচ্ছি না!

- কি হলো? কল্পনা করেছো?
- হু
- কি দেখলা

আমি পুরো ব্যাপারটা পায়েলকে বললাম। পায়েল রাগ হয়ে বললো, শয়তান,বান্দর তুই থাক তোর কল্পনা নিয়ে। আমি রাখি।
তারপর পায়েল ফোন রেখে দেয়। রেখে দেবার ই কথা।

ঘুম থেকে উঠে দেখি ৮.৩০ বাজে। পায়েল বলেছিলো তার সাধে যেন ঠিক ৯.৩০ এ দেখা করি। নাহলে মহাখালির ফ্লাইওভার থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবে। আমি তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে রওনা দিলাম।
যেতে যেতে ৯.৩৮ বাজলো। আমি পায়েলের সামনে যেতেই একটা পায়েল মুখ গম্ভীর করে দাড়িয়ে আছে

- এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? তোমার কি ক্ষুদা লাগছে?
- কয়টা বাজে?
- ৮ মিনিট লেট! দোষটা জ্যামের
- মিথ্যা বললে মাইর দিবো
- না, সত্যি!
- আচ্ছা চলো
- কোথায়?
- জানি না
- যাবো কোথায়?
- প্রেম করতে,, হি,,হি

কথাটা বলেই পায়েল হেসে দিল।
হাসির আউয়াজ যেন ঠিক কাঁচের
চুড়ি মেঝেতে পরে ভাঙার মতো।
পায়েল অনবরত চুড়ি ভেঙেই যাচ্ছে।
আর আমি তা মুগ্ধ হয়ে শুনছি!

- চলো তাহলে
- চলো
- হাঁটবে,, না রিক্সা নিবো?
- রিক্সা
- আচ্ছা,,

রিক্সা না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাসে উঠতে হলো। তা ও লোকাল বাসে। আর যাই হোক, ঢাকার শহরে লোকাল বাসে প্রেম করা যায় না। সেই ব্যাপার টা ভালভাবেই বুঝতে পারছি। আমার থেকে বেশী বুঝতে পারছে পায়েল। সেজন্যই বোধহয় পায়েল আগে আমাকে বললো,

- চলো নেমে যাই
- নেমে কোথায় যাবো?
- চন্দ্রিমায়
- সেখানে যেয়ে কি করবো?
- প্রেম করবো

কথাটা বলেই পায়েল জোড় করে নেমে গেলো। পায়েল আর আমি হেঁটে হেঁটে উদ্যানে প্রবেশ করলাম।

- আচ্ছা পায়েল
- বলো
- এখানে কি কেউ প্রেম করতে আসে?
- হুম আসে?
- কারা?
- আমরা আসছি। তোমার কোন সমস্যা?
- না,
- তাহলে বসো
- আচ্ছা

আমরা গাছের নিচে বসলাম। ঢাকা শহরে গাছের বড় অভাব! সেই অভাবটা খানিকটা এখানে পূরন হয়। পায়েল আমার কাঁধে মাথা রেখে বললো:

- আমি সারাজীবন এইভাবে তোমার সাথে থাকতে চাই
- অবশ্যই! কেনো নয়!?
- তুমি রাখবে?
- হুম,
- আচ্ছা,,আমাদের বিয়ের পর ও আমরা এখানে আসবো। কেমন?
- আচ্ছা
- বিয়ে কবে হবে?
- হবে
- কবে?
- সামনে একটা কাজী অফিস আছে। চলো আজই,,
- হি,,হি,, তারপর?
- একসাথে থাকবো
- তারপর?
- তারপর কি?
- তারপর আমাদের ছোট্ট একটা ঘর হবে। ছোট্ট একটা সংসার, আমরা রাত জেগে ছাদে বসে তারা গুনবো। চোখে থাকবে অজস্র ঘুম। আর,,,
- আর কি?
- আর ঠোঁটে ঠোঁটে ভালবাসা হবে,, হি,,হি,

(অপ্রিয় প্রিয়)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.