নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কথা

আমি সত্যের এবং সুন্দরের পুজারী। কজন মানুষের সাথে হাসিমুখে মিষ্টি ভাষায় যারা কথা বলে তাদের প্রতি আমার অপরিসীম শ্রদ্ধা । আর যারা নিজেদের অনেক বড় ভাবে, তাদের প্রতি আমার রয়েছে করুণা ।

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭

আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। জীবনটাকে সহজ করে ই দেখতে পছন্দ করি ।

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অটোপসি রুম

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:০০







অমিত একটু বিরক্ত। সারাদিনের কাজ শেষে যখন বাসায় ফিরে যাওয়ার সময় হল, তখনি খবর এল, আরো একটা পোস্ট মর্টেম এর কেইস এসেছে। এটার কাজ তাকে শেষ করে যেতে হবে। মনে মনে গজ গজ করতে করতে অমিত সম্মতি জানিয়ে বলেছে, সে কাজটা করে দিয়ে যাবে। আনমনে একবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে নিল; বাসায় মিশা একা, ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ও, এখন তাই কাজের বাইরে বাকি সময় টা বাসাতেই থাকার চেষ্টা করে অমিত। মিশার এই সময়টা অনেক বিশ্রাম এর দরকার। আজ ও রাত হবে বাসায় ফিরতে ফিরতে ভেবে অমিত নিজের উপরেই আরো একটু ক্ষেপে উঠল।



অফিসরুম থেকে বেরিয়ে পড়ল অমিত। বাইরে প্রচন্ড মেঘ করেছে। কয়টাই বা বাজে এখন বড় জোর বিকাল ৪ টা। অথচ দেখে মনে হচ্ছে বাইরে যেন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আজ রাতে প্রচন্ড বৃষ্টি হবে মনে হচ্ছে। আনমনে একটা সুর ভাঁজতে ভাঁজতে হাসপাতালের পেছন দিকে থাকা লাশকাটা ঘরের দিকে দ্রুত গতিতে হাঁটতে লাগল ও। কাজ টা তাড়াতাড়ি শেষ করে যদি সন্ধ্যার আগেই ফিরতে পারে! এমন একটা দিনে হঠাত করে বিদ্যুত চলে গেলে পড়ে গিয়ে মিশা না আবার একটা অঘটন ঘটায়।



অটোপসি রুম এর বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে ও। জাফর মনে হয় আগেই চলে গেছে। এই ছেলেটা সাথে থাকলে সবকাজ বেশ দ্রুতই হয়ে যায়। ছেলেটা বেশ ভাল। অনেক দক্ষও বটে। ও সাথে থাকলে ওকে আলাদাভাবে কোন নির্দেশ দেয়া লাগে না। লাশের শরীরে যেখানে যেখানে কাটা দরকার, অভ্যস্ত হাতে দ্রুত গতিতে সে সব জায়গা কেটে ফেলে। জাফরের এতক্ষণ থাকার কথা না। এই ছেলেটার সাথে কাজ করতে করতে ওরা দুইজন একেবারে বন্ধুর মত হয়ে গেছে। অমিত জানে, স্ত্রী সীমা বলতে জাফর পাগল। প্রায় ই দেখা যায়, দুইজন নানা গল্পে মেতে উঠে। দেখে কেউ বলতে পারবে না, কে ডাক্তার আর কে ডোম।







অটোপসি রুম এর দরজা খুলে ঢুকতেই সেই পরিচিত গন্ধটা নাকে ধাক্কা দিল অমিত এর।
এই গন্ধটা আগে সহ্যই করতে পারত না। এতদিন কাজ করার পরেও এখনো অভ্যস্ত হতে পারে নাই পুরোপুরি। রুম এর দোতলায় উঠার সিড়ি দিয়ে উঠতেই অবাক হয়ে দেখল আরেক ডোম শাহাদাত বসে আছে চুপচাপ। অমিত অবাক হয়ে গেল। ও এখনো যায় নাই! যাক, জাফর না থাকলেও শাহাদাত তো আছে। শাহাদাত কে জিজ্ঞাসা করল লাশ এর ব্যাপারে। শাহাদাত তার মত করে উত্তর দিল, বয়স পঁচিশ, মাইয়া মানুষ,……আরো কি যেন বলছিল, অমিত আর শুনতে পেল না। ও দ্রুত গতিতে উপরে উঠছে। মনে মনে আরো একবার বিরক্ত হলো, আবারো সুইসাইড কেইস! এই মেয়েগুলা জীবনের মূল্য ই বুঝল না! দোতলায় উঠেই দ্রুত গতিতে তৈরি হতে লাগল অমিত। আমেনা খালা এখনো আছে, তাকে বলল, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আর সব কাগজপত্র নিয়ে আসতে।আর কেউ বা জাফর না থাকলে শাহাদাত কে পাঠাতে।



মূলঘরের দরজা খুলেই অবাক হয়ে গেল অমিত।
জাফর যায় নাই। ও আছে। ওকে দেখে অমিত মনে মনে খুশি হলো। জাফর চুপচাপ বসে আছে মেয়েটার লাশ সামনে নিয়ে। কত অল্পবয়স মেয়েটার। অমিত ও দুঃখিত ভাবে তাকিয়ে থাকে। আবার দ্রুত গতিতে চেয়ার টেবিল এগিয়ে নিয়ে আসে।



প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে, অমিত স্বভাবসুলভ গলায় নির্দেশ দেয় খুলি কাটার।
জাফরকে এতক্ষণে লক্ষ্য করল অমিত। ওর দুই চোখ দিয়ে পানি। মানসিক ভাবে প্রচন্ড শক্ত জাফরকে এমন অবস্থায় দেখে অভ্যস্ত নয় অমিত। মৃত মেয়েটার মুখের সারল্য কি ছুঁয়ে গেছে ডোম এর ইস্পাত কঠিন ঋদয়কেও! ওকে এত ধীর স্থির, শান্ত, নিশ্চুপ ভাবে আর কখনো কাজ করতে দেখে নাই অমিত। খুব আস্তে পরম যত্নে সে মৃতার মাথাটা হাতে নিয়ে রাখল জায়গামত। খুব আস্তে আস্তে যত্নের সাথে তার চুল গুলা কাটতে লাগল জাফর। আনিস ধৈর্য্য নিয়ে অপেক্ষা করছে আর ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। সাড়ে ৫ টা বেজে গেল প্রায়। সাড়ে ৬ টা পেরিয়ে গেলেই মিশা অস্থির হয়ে যাবে। কোন ভাবে আট টা বেজে গেলে কথাই নাই। পাগলের মত ফোন করতে থাকবে। আনিস আরো একটু তাগাদা দিতে জাফর খুলিকাটা যন্ত্র টা নিয়ে আসল। কিন্তু ওর হাত আজ এত কাঁপছে কেন! এমন তো হবার কথা না! অমিত ভিকটিম এর খাতাটা খুলল। নাম দেখে চমকে উঠল: NAME: SHEEMA AHMED, HUSBAND: ZAFAR AHMED. ভয়ানক চমকে উঠল অমিত।







একটু ধাতস্থ হয়ে জাফরের পেছনে এসে দাঁড়াল। জাফর এর পিঠে হাত রাখতেই জাফর আর নিজেকে সামলে রাখতে পারল না। অমিত কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলল। অমিত যে শুধু ডাক্তার নয়, তার বন্ধুও। অমিত সান্ত্বনা দেয়ার কিছু খুঁজে পেল না। পিঠে হাত বুলিয়ে ওকে স্বান্তনা দিতেই ও ফিসফিস করে বলল, স্যার, আমি জানি এটা আত্মহত্যা না, এটা হত্যা। যেই ফ্যাকটরি তে কাজ করত, সেই ফ্যাকটরির ই কেউ ওকে মেরে ফেলছে। কিন্তু এটা কে ওরা আত্মহত্যা বলতেছে স্যার। আমি বিশ্বাস করি না। আমার সীমা আর আমি মিলে যে অনেক কিছু প্ল্যান করেছিলাম। ও আমাকে ছেড়ে হঠাত চলেই যেতে পারে না। অমিত এক ফাঁকে চোখের পানি মুছে ফেলে শাহাদাত কে ডাক দিল। জাফর কে নিচের রুম এ নিয়ে বসাতে বলল। আমেনাকে সাথে নিয়ে অমিত নিজে ই পুরা পোস্ট মর্টেম এর কাজ শুরু করে দিল।



যতই সময় যাচ্ছে, অমিত অবাক হয়ে যাচ্ছে, আর নিঃসন্দেহ হচ্ছে এটা মোটেই আত্মহত্যা না।
এটা হত্যাকান্ড। জাফরের প্রচন্ড কষ্ট অমিতকেও দারুণভাবে নাড়া দিয়ে গেছে। এই হত্যাকারীকে সে ছেড়ে দিবে না। আইনের চোখে এই জঘন্য ঠান্ডা মাথার খুনীকে সে পরিচয় করিয়ে দেবে। ফরেনসিক এক্সপার্ট সে। শুধু আত্মহত্যা না হত্যা তা বের করেই সে থেমে থাকবে না। খুনীকে ধরতে পারার মত সব আলামত সে তুলে দেবে পুলিশ এবং আদালতের হাতে। নিজের কাজে একেবার মগ্ন হয়ে যায় অমিত।



বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি পড়ছে। বাতাসের বেগ বেড়েছে অনেক। মাঝে মাঝে বিজলী চমকানো শুরু হয়েছে। অটোপসি বিল্ডিং এর বাইরে এসে থামল একটা মাইক্রোবাস। অটোপসি রুম এর বাইরে এসে দাঁড়ালো ওরা কয়েকজন। অটোপসি রুম এর দরজায় কয়েকবার আঘাত করতেই শাহাদাত দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসল। শমসের মিয়ার সাথে আরো ৪ জন। শমসের বলল, “শাহাদাত, চা খাবা নাকি? চল চা খাইয়া আসি”। শাহাদাত ও ভাবছিল চা খেয়ে আসা দরকার। একটা চা খেয়ে বাকি সবার জন্য চা নিয়ে আসা যাবে। এদের মাঝে কে যেন একজন ডাক্তার অমিত এর খোঁজ করল। ডাক্তার অমিত কে ডেকে দিয়ে শাহাদাত বেরিয়ে পড়ল শমসের মিয়ার সাথে চা খেতে।



অমিত বাইরে বেরিয়ে আসল।
বৃষ্টির মাঝে এরা কারা তার সাথে দেখা করতে এসেছে? দেখা করার কারণ জিজ্ঞাসা করতেই একজন সামনে এগিয়ে আসল। একটা কাগজ সামনে বের করে দিল। সেখানে signature করতে বলল। অমিত অবাক হয়ে গেল এই উটকো ঝামেলা দেখে। তারপরেও কি মনে করে হাতে টেনে নিল কাগজটা। অবাক হয়ে দেখে, লেখা আছে, SHEEMA AHMED, AGE 25, HUSBAND: ZAFAR AHMED. MODE OF DEATH: SUICIDE. নিচে ওর নাম লেখা। এখন দরকার শুধু দস্তখত! পাশেই আরেকজন একটা ব্যাগ খুলে নোটের তাড়া দেখিয়ে দিল। মুখে বলল ১০ লাখ আছে। সব ই নির্ভর করবে তার সাইন দেয়ার উপর। বাকিটা তারা সামলাবে। তারা জানে অমিত এখন অনেক অর্থ কষ্টের মাঝে আছে।



অমিত ওদের মুখের দিকে একবার তাকাল। হাসিমুখে বিনীতভাবে অফার ফিরিইয়ে দিয়ে আবার ফিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘুরে দাঁড়াল। ওর কাঁধে হাত দিল তৃতীয়জন। মুখে ভয়ংকর হাসি। হাতে চকচক করছে একটা কালো রিভলবার। কোন রাখঢাকের প্রয়োজন সে দেখছে না! অমিত এবার কিছুটা কঠোর হলো। এই প্রফেশনে সে অনেক হুমকিধামকি পেয়েছে। কিন্তু এখানে হাসপাতালের বাউন্ডারীতে এসে আজ পর্যন্ত এত বড় দুঃসাহস আগে কেউ দেখায় নাই। অমিত মেজাজ ধরে রাখতে পারল না। সে কোন কথা না বলে পেছন ফিরে হন হন করে হাঁটতে লাগল।



অটোপসি রুম এর দোতলায় মৃত স্ত্রী। সমস্ত দুনিয়া যেন অর্থহীন হয়ে গেছে জাফর এর কাছে। অন্ধকার নিচতলায় অনেক ক্ষন চুপচাপ বসে আছে ও। অমিত স্যার কে কারা যেন ডাকল। শাহাদাত আর অমিত স্যার এখনো ফিরে নাই। হঠাত বাইরে একটা ভোঁতা শব্দ হলো। একটা চাপা আর্তনাদ মত শোনা গেল আর এরপরেই কোন একটা গাড়ির টায়ার ঘষে চলে যাওয়ার শব্দ। জাফর উঠে দাঁড়াল। দরজা খুলতে গিয়েই দেখে সারা মেঝে জুড়ে লাল পানি। এত রঙ কোথা থেকে এল! জাফর ভেবে পায় না। আরেকটু সামনে এগোতেই স্তম্ভিত হয়ে যায় সে। ডা; অমিত পড়ে আছে সিঁড়ির উপরে। বৃষ্টির পানিতে আর রক্তে ভাসে যাচ্ছে সমস্ত সিড়ি। অভিজ্ঞতার আলোকে সে বুঝতে পেরেছে ডাঃ অমিত আর নাই। চলে গেছে আর ফিরে না আসার দেশে ঠিক তার সীমা’র মত। তার সীমা আত্মহত্যা করল না হত্যা, সেটা ঠিকভাবে বলতে পারার মত শেষ মানুষটাও চলে গেল। গত কিছুদিন ধরে অমিত স্যার হুমকি ধামকি পেয়ে আসছিল। স্যার এর এই এক সমস্যা। এখনকার সময়ে আপোষ না করলে হয়! গত কয়েকটা খুনের মামলার কোন আসামী পক্ষ ই হয়ত আজ এই কান্ডটা করার সাহস পেয়েছে। জাফর তাড়াতাড়ি অমিত এর মৃতদেহ নিয়ে সীমার পাশে রাখল। আমেনা ভয়ার্তভাবে জাফরের দিকে তাকাতেই জাফর তাগাদা দিল হাসপাতাল থেকে ডাক্তার নিয়ে আসতে আর লোকজনকে খবর দিতে। অমিত স্যার হয়ত কোমায় আছে কে জানে! চিকিতসা পেলে হয়ত ফিরে আসবে। পুলিশ ও আসা দরকার। আমেনা ছুটে বেরিয়ে গেল।



আটটা বেজে দশ মিনিট। শাহাদাত ফিরে এসেছে। অটোপসি রুম এর দরজা খোলা।বাইরের ঠান্ডা বাতাস, বৃষ্টির পানি সমানে ঢুকছে ঘরের মাঝে। আমেনা, জাফর ওরা কই? অমিত স্যার নিশ্চয়ই উপরে ব্যস্ত। জাফরকে নিচতলায় না দেখে একটু অবাক হলো শাহাদাত। কালবিলম্ব না করে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে আসল ও। ভেতরের অবস্থা দেখে বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে গেল ও।



জাফর সীমার শরীরের কাটা অংশগুলা অসম্ভব যত্ন নিয়ে ধীরস্থির ভাবে সেলাই করছে।
আর একটু দূরে আরেকটা দেহ শুয়ে আছে। রুমে আর কোথাও অমিত স্যার নাই। নতুন আসা মৃতদেহটার দিকে এগিয়ে যায় ও। চেহারা টা চিন্তে পেরেই পেটের ভিতরটা পাক দিয়ে উঠে শাহাদাত এর। বিস্ফারিত প্রানহীন চোখে ছাদের দিকে তাকিয়ে আছেন অমিত স্যার। স্যার এর পরনের সাদা শার্ট লাল রক্তে ভিজে আছে। বুকের বাম পকেট এ একটা নীলচে আলো জ্বলছে নিভছে। কেউ একজন টানা ফোন করে চলেছে অমিত স্যারকে। নিশ্চয়ই স্যার এর দেরি দেখে অস্থির হয়ে উঠেছে কেউ একজন। স্যার যে চলে গেছেন আর না ফেরার দেশে।







সব দেখে শাহাদাত আর স্থির থাকতে পারে না।
পালিয়ে চলে আসে নিচতলায়। বাইরে প্রচন্ড জোরে বাজ পড়ল আরেকবার। অনেক মানুষের কন্ঠ এগিয়ে আসছে এদিকে। পুলিশের গাড়ির সাইরেন ও শোনা যাচ্ছে। বৃষ্টির গতি আরো একটু বেড়েছে।





মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:১৫

না পারভীন বলেছেন: পড়লাম , মনে পড়ে গেল সেই কতদিন আগের কথা , ১ম লাস কাটা । অল্প বয়সী আবার সাথে প্রেগনেন্সী , সুইসাইড । এর আগে ফরমালিনে ডুবানো এনাটমির বডি গুলোকে কোন দিন মানুষ ভাবিনি । খুব সাহস নিয়ে দেখার পর সারারাত অস্থিরতায় ঘুম হয়নি । গরুর চামড়া ছাড়ানোর মত করে ছাড়িয়ে ফেলা । একটা মরা ফিটাস ।
আমাদের সারের সেই কথা সারাজীবনের জন্য মনে রেখে দিয়েছি , ' ছেলে মেয়েরা , তোমরা কোন ভাবেই অন্য ভাবে মেয়েটির দিকে তাকাবেনা , এই মেয়েটা খুব অসহায় , বেঁচে থাকতে কারো ভালবাসা পায়নি , মারা গিয়ে ও আজ তোমাদের শিখানোর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ।"

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:১১

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: ব্লগার না পারভীন,

একটা অটোপসির গুরুত্ব জানার পরেও,

আমার কাছে মনে হয় অটোপসির মাধ্যমে একজন মৃত বা মৃতাকে অনেক কষ্ট দেয়া হয়। ঠিক বুঝাতে পারব না। যে দেহটাতে একটু আগেও প্রাণ ছিল, সেই নিষ্প্রাণ দেহটাকে এভাবে কাটাছেড়ার ব্যাপারটা আমার কাছে কেমন যেন লাগে।

ফরমালিন এ রক্ষিত অনেক দিন আগের শুকনা মৃতদেহ আমার মনে তেমন প্রভাব ফেলে না।

কিন্তু মর্গে নিয়ে আসা কেবল মৃত মানুষগুলাকে কাটতে দেখলে কেমন যেন লাগে। নার্ভরুট গুলা বা সেনসেশন গুলা হয়ত ইনট্যাক্ট থাকে তখনো। হয়ত অনেক কষ্ট হয়।

আবার এটাও ঠিক, তা করা না গেলে ও মৃত্যুর কারণ ও বের করা প্রায় অসম্ভব।



“It kills me sometimes, how people die.”


অনেক ধন্যবাদ পোস্টে মন্তব্য করার জন্য।

২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৫৩

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: চমৎকার ভাবে বর্ণনা করেছেন।


অনেক +++++++++++

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:২৩

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ব্লগার ইরফান আহমেদ বর্ষণ

ভাল থাকবেন।

৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:১৫

গ্রাম্যবালিকা বলেছেন: ডাক্তার ও মারা গেলেন ! কষ্টকর :(

অটোপসি শব্দটা কষ্ট করে মনে রেখেছিলাম, আজ ভাল্লাগলো :)

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:২৯

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: মাত্র ৭-৮ বছর আগের কথা, ঢাকা মেডিকেল এর ফরেনসিক মেডিসিন প্রফেসর নামায পড়ে মসজিদ থেকে বাসায় ফিরে আসার সময় একটা গাড়ির তার গায়ে উঠে পড়ে। তাঁর মৃত্যু হয়। জানা যায়, তাঁকে বিভিন্ন কেইস নিয়ে প্রচন্ড চাপের মাঝে পড়তে হয়েছিল। বর্তমান সময়ে আপোষ হীন লোকদের সংখ্যা যখন কমে আসছে, সে সময় ও তিনি নীতির পক্ষে ছিলেন। উনার ঘটনাটা এক্সিডেন্ট নাকি হত্যা ছিল তা শেষ পর্যন্ত আর কেউ ক্লিয়ার করে নাই। কালক্রমে ঘটনাটা মানুষ ভুলে যায়। ফরেনসিক মেডিসিন এর প্রফেসর যে পরিণতি হয়েছিল, তা উনার ছাত্র হিসেবে আমি আজ ও মেনে নিতে পারি নাই।
-
-
-
মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ব্লগার গ্রাম্যবালিকা, ভাল থাকবেন।

৪| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০২

সোহাগ সকাল বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। মোবাইলে আছি বলে বিস্তারিত মন্তব্য করতে পারছি না। :(

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:১৮

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ব্লগার সোহাগ সকাল,

আপনার বিস্তারিত মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকলাম। :)

ভাল থাকবেন।

৫| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

এরিস বলেছেন: ব্যাপারটা সত্যিই খুব বেদনাদায়ক। মরে গিয়েও শান্তি নেই। হয়তো জীবন নেই লাশটার ভেতর, তবুও কিছুক্ষণ আগেই সেই দেহটার ভেতর একটা মন ছিল। যেখানে কারো জন্যে অপেক্ষা ছিল, ভালোবাসা ছিল, একটা মানুষকে চিরতে যাবার কষ্ট ছিল, কারো চোখে জল দেখে বেজে উঠা কান্না ছিল। খুব সাহস করে একটা ভিডিও দেখেছিলাম এটার। ভয় পাইনি ঠিক। কিন্তু খুলি কাটার প্রসেসটা দেখে আমার নিজের মাথার তালুতে একটা তিব্র ব্যাথার তৈরি হয়েছিল, অনেকদিন ভুগেছি, শেষে ডাক্তার দেখিয়েছি, আর ভুলে যেতে যেতে কমে গেছে।
লেখার টপিকটা ইউনিক লেগেছে। তবে আমার মনে হচ্ছে গুছাতে পারেননি যেমন করে চেয়েছেন। আবেগটা খুব বেশি কাজ করছিল, লেখার সময় নিজে এলোমেলো ছিলেন, এজন্যে লেখাতেও কিছুটা অস্থির অগোছালো ভাব ছিল। আপনার কমেন্টগুলোর রিপ্লাই দেখেই মনে হয়েছে এই বিষয়টা আপনাকে ভাবায়, আরও অনেক কিছুর চেয়ে অনেক অনেক বেশী ভাবায়।
ভালো থাকুন। লেখায় ভালোলাগা দিয়ে গেলাম।
আপনাকে অনুসরণ করলাম।

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:১৪

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: ব্লগার এরিস,

কখনো কখনো একটা মন্তব্য একটা পোস্ট এর চেয়ে ও অনেক বেশি সুন্দর হয়, অনেক শক্তিশালী হয়। আপনার মন্তব্যের একটা অংশ,

হয়তো জীবন নেই লাশটার ভেতর, তবুও কিছুক্ষণ আগেই সেই দেহটার ভেতর একটা মন ছিল। যেখানে কারো জন্যে অপেক্ষা ছিল, ভালোবাসা ছিল, একটা মানুষকে চিরতে যাবার কষ্ট ছিল, কারো চোখে জল দেখে বেজে উঠা কান্না ছিল।

অসাধারণ লেগেছে।

আসলেও আমার নিজের জীবনে বেশ অস্থির সময় যাচ্ছে একটা।

অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

৬| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪

মামুন রশিদ বলেছেন: ভালো লাগলো অটোপসি রুমের গল্প ।

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: ব্লগার মামুন রশিদ ,

অনেক ধন্যবাদ ভাই। :)

ভাল থাকবেন।

৭| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪০

মুদ্‌দাকির বলেছেন: প্রথম যেদিন অটপসি করা দেখি, জীবনেও ভুলতে পারবোনা সেই দিনের কথা। হাল্কা হাল্কা বৃষ্টি হচ্ছিল, কি বিশ্রী বাজে গন্ধ!! ঢুকেই দেখি বেশ কয়েকটা লাশ। সব ধরনের লাশই ছিল। প্রথমে কাটা হল ২০-২৩ বছরের এক মেয়ে, ডোম খুব বেশী হলে ৩ মিনিটে পুরা শরীর মাথা থেকে পা পর্যন্ত দুইটুকরা করে ফেলল। ইউটেরাসটাও কাটা হল, ভেতরে একটা বাচ্চা ছেলে ৫-৬ মাসের হবে। কান্না পাচ্ছিল, এখনো পায়, কখন কখন দুই এক ফোটা ঝড়েও গিয়েছে। মেয়েটার পেটে লাথি দিয়ে ছিল(শুয়রেরবাচ্চা) স্বামীটা।বাস মেয়েটা সাথে সাথে উঠানে বসে পড়ে মারা যায়। কিন্তু অটপসিতে শারীরিক কোন প্রমান পাওয়া যায় নাই। স্যার বললেন (শুয়রেরবাচ্চাটার) স্বামীটার কিছুই হবে না। কারন কোর্টে কিছুই প্রমান হবেনা!! স্যার বললেন ঘটনা পরিস্কার পেটে লাথি খাবার কারনে হাইপোগেস্ত্রিক প্লেক্সসাস প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে ইনটেন্স ভেগালটোনের কারনে হার্ট হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে মেয়েটা মারা গিয়েছিল। কিন্তু কিছুই প্রমান করা যাবেনা। আমার থিউরিটিকাল কথা কেন অন্ধ পাল্লা হাতের লোকটা শুনবেন কেন?? তার যে অকট্য প্রমান দরকার!!! মনে হচ্ছিল মেয়েটাকে আর বাচ্চাটাকে দুজনকেই আদর করি.........।।।

কিছু কিছু সৃতি ভুলে যেতে ইচ্ছা করলেও ভুলা যায়না। সেরকম একটা সৃতি।

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:০৪

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: মাঝে মাঝে মনে হয়, পৃথিবীতে যারা অনেক অহংকার করে, তাদের একবার হাসপাতাল এর ওয়ার্ড এবং সম্ভব হলে অটোপসি রুম গুলাতে ঘুরে আসা উচিত। যে শরীর নিয়ে আমাদের এত গর্ব, যে শরীরের চাহিদা মেটাতে আমরা সবকিছু করি, সেই শরীর কত ভঙ্গুর, মৃত্যুর পর কত অসহায়।

“Everything Dies. That is the law of life-the bitter unchangeable law”
― David Clement-Davies, Fell

অনেক ধন্যবাদ ব্লগার মুদ্‌দাকির ,
ভাল থাকবেন।

৮| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫৩

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
চমৎকার লেখনি ও গোছানো পোস্টে অনেক ভাল লাগা রইল।

+++++++++++

আমি শুধু মাত্র এই কাটা ছেড়ার প্রতি ঘৃণা বোধ থেকে ডাক্তারী পড়া ছেড়ে দিয়েছিলাম। :(

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:১৫

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: ব্লগার কান্ডারী অথর্ব,

অনেক অনেক ধন্যবাদ, আপনার মন্তব্য সবসময় ই অনুপ্রেরণাদায়ক।

পরে কিসে পড়লেন ? :)

মনে হয় ডাক্তারী পড়া ছেড়ে দিয়ে ভাল করছেন।

It’s a job without appreciation these dayz! :(

ভাল থাকবেন।

৯| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৩৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালো থাকুন লেখক, দারুণ একটি আবেগি গল্প উপহার দেওয়ায় ধন্যবাদ।

০২ রা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:৫৭

প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ব্লগার প্রোফেসর শঙ্কু, :)

ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.