![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এখন জানি না তার পালিত ময়ূরগুলো কোন ঋতুতে পেখম মেলে
এখন জানি না তার ঘরে রোদের অধিক কোন আলো খেলে যায় সারাদিন
শুধু জানি মহাপ্লাবনের দিনে আমরা সবাই যে যার মৃত্যু ও নশ্বরতা নিয়ে
কবিতা টবিতা লিখি, খামে ভরে শিয়রের কাছে রেখে দেই, সাদা খামে
কেননা আমরা জানি, সাদা হলো মৃত্যু-পরবর্তী রঙ। মরণের পর পর
সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে আমাদের প্রস্তুত করা হবে সৎকারের জন্য। আগে থেকে তাই
সামান্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখি।
জলে ডুবে যাদের মরণ হয় তারা নাকি বাকীটা সময় একটা ভেলার মতো
ভেসে থাকে। এখানে ওখানে যায়। ঢোল-ফোলা দেহ, লবণবিদ্ধ শরীর,
ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন দ্বীপের দেশে যায়। বিভিন্ন মাটির দেশেও। সমুদ্রসংলগ্ন যে সকল দেশে
কোনোদিন যাওয়া হয় নি, অথচ যাওয়ার ইচ্ছা ছিলো সেই সব দেশের মৃত্তিকা,
সমুদ্র সৈকত, ডেকে নেয়। ইচ্ছা হয়, বেঁচে থাকতে থাকতেই সেই সব দেশে
একবার যাওয়া যায় কিনা। সমস্যা হলো, দেশের নাম আমরা জানি না, জানি না ভূগোল,
অবস্থান - কেবল চোখজুড়ে হালকা স্বপ্নের মতো মায়া রেশ লেগে থাকে,
দেখি, উঠানে চড়ছে অসংখ্য ময়ূর, প্রত্যেকের গায়ে গায়ে, পেখমের স্বর্ণরাজ্যে
সোনাফুল ফুটে আছে, যদিও আমরা জানি, সোনাফুল বলে পৃথিবীতে কোনো ফুল নেই-
তাহলে হয়তো ময়ূরগুলোও পৃথিবীর ময়ূর না। অন্য কোনো রাজ্যের ময়ূর।
যে ঋতুর তাপে মাংসের মধ্যে জ্বলে ওঠে নিহিত আগুন ও পোড়ানোর অমোঘ তৃষ্ণা
ওই ঋতু এলে পাথুরে বালির সৈকতজুড়ে পেখমের মেলা বসে যায়।
পেখমের দৃশ্যে যেন অন্ধকার রাতের আকাশ আঁকা থাকে; ফলে আমরা অনেক
আকাশের মধ্য দিয়ে আমাদের ভাঙা নাও নিয়ে পার হয়ে যাই।
পেছনে ময়ূরগুলো পড়ে থাকে।
পড়ে থাকে তাদের একান্ত বালুকা, সৈকত
রোদভরা মিথুনের ছবি।
এমন একটা অগভীর স্বপ্ন নিয়ে আমরা জাহাজ তৈরি করি, আর আমাদের চোখজুড়ে
স্পষ্ট হতে থাকে সেই বালুবাগানের দেশ ও অসংখ্য ময়ূরের পালকে ফুটে ওঠা অলীক রাতের ছবি।
আমরা কেবল জাহাজ বানাই। একটার পর একটা জাহাজ। কেননা আমরা ততদিনে
শিখে যাই, প্রতিটা জাহাজের জলভাগ্য তাকে সমুদ্র যাত্রার দিকে ডাকে, অলৌকিক ময়ূরের দিকে!
©somewhere in net ltd.