নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যে কাব্যে ছন্দ নেই,যে সাহিত্যে রস নেই,যে প্রবন্ধে শিক্ষনীয় কিছু নেই,যে দর্শনের নিতীগত দিক নেই,আমি উহাসমগ্রের পাঠক।বরাবরই স্রোতের বিপরীতে চলাচল করে আসছি।আমি নকল সায়ানাইডের ফাদে পরে পার পেয়ে যাওয়া এক যুবক !!!

আমি একই সাথে প্রেমিক এবং বুর্জোয়া

রাব্বি রহমান

যে কাব্যে ছন্দ নেই,যে সাহিত্যে রস নেই,যে প্রবন্ধে শিক্ষনীয় কিছু নেই,যে দর্শনের নিতীগত দিক নেই,আমি উহাসমগ্রের পাঠক।বরাবরই স্রোতের বিপরীতে চলাচল করে আসছি।আমি নকল সায়ানাইডের ফাদে পরে পার পেয়ে যাওয়া এক যুবক !!!

রাব্বি রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনিরুদ্ধের রুদ্ধদার

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২২

উদভ্রান্ত হাটা চলা এক ধরনের অভ্যাসই অনিরুদ্ধের। প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় শূন্য পকেটে বাসা থেকে বের হয় মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র ছেলেটি। তার চলা ফেরা কেমন জানি অদ্ভূতুরে । প্রতিবেশীদের ভাষায় ইসলাম সাহেবের বাধ্য ছেলেটা বখে গেছে । অনিরুদ্ধের মেট্রিক আর উচ্চমাধ্যমিকে অনেক ভা রেজাল্ট ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পরে তার জীবনের গল্পটা বদলে যায়। তার কলেজ জীবনের সুন্দরবান্ধবীটিও অনেক আগেই আমেরিকায় চলে গেছে।

বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে রুদ্ধ অসন্তুষ্ট নয় ।



অনিরুদ্ধ জানে তার জীবনে গল্প নেই তবু বেচে থাকতে হবে। প্রায় সন্ধ্যাতে অনিরুদ্ধ হাটে আর গুন গুন করে আবৃতি করে-



হঠাৎ হঠাৎ ,



নিস্চুপ কবিতারা



সময় দিশেহারা,



তারপর চুপচাপ



সময় দিশেহারা



তবুও ঝুলে থাকার জয়।



বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হবার পরে কিছুটা বদলে যায় অনিরুদ্ধ স্কুল লাইফের পুরোনো অভ্যাস বই পড়ার সাথে যুক্ত হয় নতুন কিছু অভ্যাস । বিতর্ক জিনিসটা অনিরুদ্ধ অনেক ভালবাসে । জীবনে হাজারো নতুন মানুষের সাথে পরিচয় । হঠাৎ অনিরুদ্ধ নতুন করে প্রেমে পরে যায় । মেয়েটিকে সে অনেক ভালবাসে ফেলে । সে জানে মেয়েটি তাকে ভালবাসে না তবু সে ধরে নেয় মেয়েটি তাকেও ভালবাসে । প্রেমে পরলে মানুষ বদলে যায় এটাই নিয়ম । অনিরুদ্ধের ও কিছু বদল আসে সে রোমান্টিক গান,বই পড়া শুরু করে ।

তার বাবা মা অনেক দূরে থাকে তার থেকে, একমাত্র বড় বোন দেশের বাহিরে থাকায় অনিরুদ্ধ একাই একটা পরিবার। এখন সে প্রতিদিন রাস্তার ফুটপাথে বসে নিয়ন আলোয় ল্যাম্প পোষ্টের দিকে তাকিয়ে থাকে আর বিরবির করে কিছু বলতে থাকে ।



অনিরুদ্ধের কাছে শনিবারে সন্ধ্যা টা একটু অন্যরকমের এ দিনটা সে একটু অন্যভাবে কাটায় । কখনও অভিজাত হোটেলে রাতের খাবার খেয়ে , কোনদিন অভিজাত কোন ক্লাবের বারান্দায় মদ্যপানের আসরে নয়তো টিএসসির দেয়ালের সাহিত্য দর্শনের আড্ডায়।



সপ্তাহন্তরে এক নতুন শনিবার উপস্থিত । আজ সে তেমন প্ল্যান রাখে নি , বড় ভাই বন্ধুদের সাথে নিয়মিত আড্ডাখানায়ই কাটাবে। বাসা থেকে বের হয়ে চায়ের দোকানে গিয়ে বসার পরেই অনিরুদ্ধ দেখতে পায় তার প্রিয় মানুষটিকে যার জন্য তার বিপর্যস্ত জীবনের অবশীষ্টাংস উৎসর্গের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল । সব মানুষের সাধারন কিছু ইন্সোম্যানিয়া আছে নিজের পছন্দের উপরে কাউকে ভাগ বসাতে দিবে না। তেমনি কিছু বাছবিচার না করেই অনিরুদ্ধ ও ধরে নেই তার এলিয়েন আর তার নিয়ে ।

হঠাৎ তার কাছে জীবনের অর্থ বদলে যায় । অর্থহীন জীবন থাকা আর না থাকায় কোন তফাত- খুজে পায়না সে ।



মাথা,বুকের ব্যাথাটা প্রচন্ড রকমের বৃদ্ধি পায় । মন খারাপের সময়ে সিগারেট খাওয়া আগেরই অভ্যাস তার । আর আজ সে ঘুমুতে চায় তাই সে ঘুম হয় এরকমের পানীয় পান করে আর সাথে সাত আটট স্লিপীং পিল । মাঝ রাতে অনিরুদ্ধের ফোনে তার প্রেয়সীর ফোন । অনিরুদ্ধের আবেগী ভুল ধারনা ভেঙ্গে যায়। তার বেচে থাকার প্রচন্ড ইচ্ছে জাগে । রুদ্ধ তার এলিয়েনের হাতটা স্পর্শ করার জন্য হলেও আর কিছুদিন বাচতে চায়।



বেসিনের সামনে গিয়ে সে অনুভব করে তার চোখ গড়িয়ে জল বের হচ্ছে। ভাবে বন্ধুকে ফোন দিয়ে এম্বুলেন্স নিয়ে এসে তাকে বাচাতে হাসপাতালে নিতে।



পরক্ষনেই অনিরুদ্ধ রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরে কবিতার কয়েক টা লাইন মনে করে নিজেকে সান্তনা দেয় মৃত্যুও একটা অর্জন -





“আজিকে হয়েছে শান্তি, জীবনের ভুলভ্রান্তি, সব গেছে চুকে।



রাত্রিদিন ধুক ধুক, তরঙ্গিত দুঃখসুখ, থামিয়াছে বুকে।



যত কিছু ভালোমন্দ, যত কিছু দ্বিধা দ্বন্দ্ব, কিছু আর নাই।



বলো শান্তি, বলো শান্তি, দেহ সাথে সব ক্লান্তি, হয়ে যাক ছাই।”



বুকে প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে ঘুমুতে যায় অনিরুদ্ধ রাতে স্বপ্নে দেখে তার এলিয়েন তাকে সেবা শুশুশ্রা করে মৃত্যুর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে। সে তাকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে গভীরচুম্বনে মত্ত হয়।



আর ভাবে তার কাছে জীবন মানেই তার এলিয়েন কারন -

সে অনিরুদ্ধ নকল সায়ানাইডের ফাদে পরে পার পেয়ে যাওয়া এক যুবক ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.