নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যে কাব্যে ছন্দ নেই,যে সাহিত্যে রস নেই,যে প্রবন্ধে শিক্ষনীয় কিছু নেই,যে দর্শনের নিতীগত দিক নেই,আমি উহাসমগ্রের পাঠক।বরাবরই স্রোতের বিপরীতে চলাচল করে আসছি।আমি নকল সায়ানাইডের ফাদে পরে পার পেয়ে যাওয়া এক যুবক !!!

আমি একই সাথে প্রেমিক এবং বুর্জোয়া

রাব্বি রহমান

যে কাব্যে ছন্দ নেই,যে সাহিত্যে রস নেই,যে প্রবন্ধে শিক্ষনীয় কিছু নেই,যে দর্শনের নিতীগত দিক নেই,আমি উহাসমগ্রের পাঠক।বরাবরই স্রোতের বিপরীতে চলাচল করে আসছি।আমি নকল সায়ানাইডের ফাদে পরে পার পেয়ে যাওয়া এক যুবক !!!

রাব্বি রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিমু হতে না চেয়েও, আমি একজন হিমু

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:১৭

"হুমায়ুন ভক্ত না হতে পারলেও একজন হুমায়ুন ভক্তের প্রেমিক হও , তাতেই বুঝবে হুমায়ুন আহমেদ আসলে কি ছিলেন" ,

দুঃখ জনক হলেও সত্য আমি এর কোনটিই হতে পারিনি আমি তার ভক্ত না আবার তার ভক্তের প্রেমিকও না।

উপরের উক্তিটি আমার এক বন্ধুর ।

আমার ঐ বন্ধুটি এখন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছে,সে একজন হুমায়ুন ভক্ত ছিল আবার একই সাথে একজন হুমায়ুন ভক্তের প্রেমিকাও ছিল ।

আর আমি একজন হুমায়ুন ভক্তের প্রেমিকার বন্ধু হয়েই বুঝেছি তার সাহিত্য আসলে মানুষকে কতটা গভীরে নিয়ে যায় ।

ঐ একজনের কাছ থেকেই হুমায়ুন আহমেদের যত বই উপহার পেয়েছি তা রাখার যায়গা আমার শেলফে নাই ।

প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে আমিও একজন হিমু প্রেমিক ।

আমি মানিব্যাগ ব্যাবিহার করি না কিংবা এখনও কোন তরুনীর সাথে হৃদয়ঘটিত ব্যাপারে জড়াই নি । পূর্ণিমার রাতে পূর্ণচন্দ্রের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকি। মেঘ-বৃষ্টির কারণে চাঁদ দেখা না গেলে কল্পনায় চাঁদ দেখি ।



নাহ আমি নিজেকে হিমু ভাবি না, হিমুকে অনুসরন করে এসব করি না।

হুমায়ুন আহমেদ আমাদের মত তরুনদের নকল করেই লিখেছিলেন অথবা তৈরী করেছিলেন তার সব কাল্পনিক চরিত্রগুলো ।

ছোটবেলায় অনেকেরই মাসুদ রানা কিংবা তিন গোয়েন্দা হতে মন চাইত এগুলো পড়ার পরে কিন্তু হিমু পড়ার পরে কারো হিমু হতে মন চাইবে না আর চাইলেও সম্ভব না । আসলে প্রত্যেকটা তরুনের মাঝেই কোন না কোন ভাবে হিমু ভর করে আছে ।

আজ হিমুর বিয়েতে হিমু বলেছিল

"পৃথিবীতে আনন্দ এবং দুঃখ সব সময় থাকবে সমান সমান।
বিজ্ঞানের ভাষায়-Conservation of আনন্দ।
একজন কেউ চরম আনন্দ পেলে,অন্য জনকে চরম দুঃখ পেতে হবে।"


বাস্তবেও ব্যাপারটা তাই, আসলে এইসব বাস্তবিক কারনেই আমরা হিমুর মত মানুষদের অপছন্দ করলেও আমরা তাদের কথাই অনুসরন করি ।

যে কোন বই ক্রয় করার পর সব সময়ই প্রথমে আমি দেখি এত কষ্ট করে লেখা বই লেখক কাকে উৎসর্গ করলেন । যাকে উৎসর্গ করা হয় সে হয়ত কোন না কোন ভাবে লেখকের বিশেষ কোন উপকারে এসেছিল ।
হিমুর বাবার কথামালা বইটা কেনার পর উৎসর্গের নিচে লেখা দেখলাম

"মধ্যরাত্রে যাদের সাথে হিমুর দেখা হয়,
বইটি তাদের জন্যে।"


আমার সাথে কখনও মধ্যরাতে হিমুর দেখা হয়নি। মধ্যরাতে আমি দেখি আঞ্জেলিনা জোলি,ক্যাটরিনা আরও অনেক কিছু হিমুও এইসব দেখত কিনা জানা নাই তবে যেটুকু জানি মধ্যরাতে চাঁদ দেখা হিমুর অন্যতম প্রিয় ব্যাপার ।

না আমি হিমুকে অনুসরন করি না , আমাকে/আমাদেরকে অনুসরন করেই হিমু লেখা । হয়ত পুরোপুরি যাতে না মিলে সে জন্য হিমু চরিত্রেও কিছু আতেলীয় ব্যাপার যুক্ত করা হয়েছে ।


হিমুকে নিয়ে আর একটু গভীরে গেলে হিমু চরিত্রের আরও কিছু বিষয় দেখা যাবে,

যেমন,

১/ হিমুরা রূপার কাছে ছুটে যায় না, রুপারা তাদের কাছে ছুটে আসে ।

২/ হিমুরা অবাক হবে না, অবাক হবে সাধারণ মানুষ ।

৩/ হিমুদের কোনো কাজে এত তাড়াহুড়া থাকতে পারে না, কিংবা তাদের কাছে একটি বেলা সময় চাইলে তারা সময় না দিয়ে মুখের উপর হনহনিয়ে হেঁটে চলে যায় না ।

যারা নিজেদের হিমু ভেবে থাকেন , ঐ সকল হিমুরা হিমু চরিত্রের এই সব বিষয় গুলোর মধ্যে শুধুমাত্র ৩ নাম্বারটা অনুসরন করতে পারবেন । ১ও ২ নাম্বারটা যদি কেউ অনুসরন করতে চান তাহলে তাকে নিঃসন্দেহে কোনো আলালের ঘরের দুলাল হতে হবে । কারণ মধ্যবিত্ত কোনো পরিবারের ছেলের পক্ষে এইসব করা সম্ভব নয় ।

তহলে কি শুধুমাত্র আলালের ঘরের দুলালরাই হিমু হবে ?



হিমু সিরিজের হিমুর একটা ঘটনা মনে পড়লো! বইটা আমার সংগ্রহে না থাকায় হয়তো লাইন বাই লাইন লিখতে পারবো না; তবে ঘটনাটা অনেকটা এমন-

হিমু রাস্তার পাশ দিয়ে আনমনে হেঁটে যাচ্ছিলো। হঠাৎ এক ঠেলাওয়ালা তাকে ধাক্কা দিয়ে পার্শ্ববর্তী আবর্জনা পরিপূর্ণ নালায় ফেলে দিলো। হিমু নালা থেকেই দেখতে পেলো সে যেখান দিয়ে হাঁটছিলো সেখান দিয়ে একটি ব্রান্ড নিউ পাজেরো হুস করে বেরিয়ে গেলো।
সে নালা থেকে উঠে এসে কৈফিয়তের দৃষ্টিতে তাকাতেই ঠেলাওয়ালা বৃদ্ধ লোকটি বললো- "ধাক্কা না দিলে মারা পরতেন ভাইজান…" হিমু কোনি কথা না বলে ঠেলাওয়ালার গালে ঠাশ করে চড় মেরে বসলো! অতঃপর বললো- "তুমি আমাকে নোংড়ায় ফেলে আমার কাপড়চোপড়ের বারোটা বাজিয়েছ! এর প্রায়শ্চিত্ত তোমাকে অবশ্যই করতে হবে! আমি যতক্ষণ না থামতে বলবো ততক্ষণ তোমার ঠেলায় করে আমাকে ঘোরাতে হবে! ঠেলাওয়ালা এ পৃথিবীর নিষ্ঠুরতায় হতবিহ্বল হয়ে গেলো! ঠেলাওয়ালার সাথে সাত- আট বছরের এক বাচ্চাও ছিলো হেল্পার হিসেবে। বেশ কিছুক্ষণ ঠেলায় করে ঘোরার পর ছায়া দেখে একটা স্থানে চা খাওয়ার জন্য দাঁড়াতে বললো হিমু। অতঃপর পকেট থেকে দুইটা পাঁচশো টাকার নোট দুজনকে দিয়ে বললো, "চাচা মিয়া! আমি লোকটা সুবিধার না ! আমাকে বাঁচিয়ে্ কাজটা তুমি ভালো কর নাই ! যাক তবুও যখন করেই ফেললা; দেখি আর কিছুদিন এ পৃথিবীর হাওয়া-বাতাস খেয়ে কেমন লাগে ! আজ আর ঠেলা ঠেলবার প্রয়োজন নাই। বাড়িতে গিয়ে রেস্ট নাও…"

আসলে এইসব কিছু ঘটনার মধ্য দিয়েই প্রমানিত হয় যে হিমুকে অনুসরন করা ঠিক না কারন আমরা যতই চেষ্টা করি না কেন কেউ এক এক জন পরিপূর্ন হিমু হতে পারবো না ।



তবুও...............


প্রতি বছর বইমেলায় কিংবা হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে হয়তো হাজারো তরুণ হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে হিমু সাজার বৃথা চেষ্টা করবে! কিন্তু হুমায়ূন কি শুধু "পোষাকী হিমু" র ছবি তাঁর মানসপটে এঁকে স্রেফ বিনোদন দানকল্পে এ অনন্য চরিত্র বিনির্মানের প্রয়াস পেয়েছেন?

আমার তা মনে হয় না। বস্তুতঃ যে কোনো প্রথিতদশা লেখক তাঁর লেখনীর সাহায্যে পাঠককুলকে মেসেজ দেয়ার চেষ্টা করেন। হিমুর নিকট থেকে "মহাপুরুষ" হওয়ার মেসেজটা যদি তরুণ সমাজ পায় তবেই হুমায়ূনের লেখার পরিপূর্ণ সার্থকতা প্রকাশ পাবে।

কারো পক্ষে হয়তো মহাপুরুষ হওয়া সম্ভব নয় কিন্তু চেষ্টা করতে তো দোষ নাই। আমরা যারা হিমুভক্ত তারা কি পারিনা হিমুকে শুধু পোষাকে ধারণ না করে কিংবা শুধু বিনোদন না নিয়ে হিমুর মধ্যস্থ ভালো দিকগুলোও ধারণ করতে? আমি জানি হিমুভক্তদের প্রায় ৭৫% মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। এসব হিমুভক্তরা শুধু জোৎসনায় অবগাহনের সময় হিমুকে না ধারণ করে যদি জীবনে চলার ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত নিম্নবিত্তদের আর একটু সহানুভূতির চোখে দেখে তাহলে হয়ত আসলেই সুন্দর সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে …

ধুরর...

এসব কি ছাইপাঁশ চিন্তাভাবনা করছি আমি । আমি নিজে কি?

হিমুকে আমরা অনুসরন করি না হিমু আমাদের অনুসরন করবে ।

হয়ত মৃত্যুর পরেও ।

(হুমায়ুন আহমেদের কোন এক জন্মদিনে )

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন ।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:০৯

রাব্বি রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩২

আমিনুর রহমান বলেছেন:



দারুন লিখেছেন !

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:১৪

রাব্বি রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:০২

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লাগলো লেখাটা ভ্রাতা ।

শুভেচ্ছা নিবেন :)

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:১৫

রাব্বি রহমান বলেছেন: আপনিও শুভেচ্ছা নিবেন

৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:২৫

কলমের কালি শেষ বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন । পড়ে অনেক ভাল লাগলো । :)

৫| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:১৬

রাব্বি রহমান বলেছেন: পাশে থাকবেন চালিয়ে যেতে চাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.