নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবিষ্কারের নেশায়

রাকিব হোসেন ফুহাদ

এ ধরা ক্ষনিকের জন্য যেতে হবে চলে ক্ষনিকের মাঝে অসীম রহস্য উন্মোচন করে যাব বলে, যাহা আমি শিখিয়াছি এ ধরায় এসে তার চেয়ে ভাল কিছু করে যাব সাবইকে ভালবেসে। তোমরা যেখানে দেখাবে আমায় এক মুঠো মাটি আমি সেখানে খুজে বেড়াব যা সোনার চেয়েও খাটি। তোমরা যেখানে উড়াইয়া দিবে এক মুঠো ছাই আমি তাহাতে খুজে বেড়াব অসীম রহস্যের পাই।

রাকিব হোসেন ফুহাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিভাবে সফল হওয়া যায়

১৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৩৯

প্রশ্ন : সফলতা বলতে কী বোঝায়?

উত্তর : সাফল্য শুধু অর্থ ক্ষমতা শক্তি বা খ্যাতির নাম নয়। সাফল্য হচ্ছে জীবনের এমন এক অবস্থান যেখানে পৌঁছে আপনার মনে হবে, আপনার বেঁচে থাকাটা সার্থক হয়েছে। মনে হবে, নিজের মেধার কিছুটা হলেও স্ফূরণ ঘটাতে পেরেছেন। নিজের এবং মানুষের কিছু হলেও কল্যাণ করতে পেরেছেন। যখন আপনি তৃপ্তির সাথে চোখ বন্ধ করে বলতে পারবেন-আমার যা কিছু করার ছিলো করেছি, যা কিছু দেখার ছিলো দেখেছি, যা কিছু বলার ছিলো বলেছি। আর তখনই বলা যাবে, আপনি একজন সফল মানুষ।



একই সাথে সাফল্যকে আমরা বলতে পারি এমন একটা অনুভূতি, মেধা-ক্ষমতা এবং দক্ষতার এমন এক স্ফূরণ যেখানে প্রতিটি যুক্তিসঙ্গত চাওয়া পাওয়ায় রূপান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করে। আপনি যা চাচ্ছেন, এই মুহূর্তে আপনি সেটা না-ও পেতে পারেন, কিন্তু পাওয়ার প্রক্রিয়ায় তা প্রবেশ করেছে এবং আজ হোক, কাল হোক তা আপনি পাবেনই। আর নিজের চাওয়াকে পাওয়ায় রূপান্তরিত করার পাশাপাশি আরো বহু মানুষের চাওয়াকে পাওয়ায় রূপান্তরিত করতে সাহায্য করতে পারবেন তখন।



আসলে সাফল্যের ধরন অনেক। মানসিক সাফল্য হলো প্রশান্তি, শারীরিক সাফল্য সুস্বাস্থ্য আর আর্থিক সাফল্য হচ্ছে সচ্ছলতা। আত্মিক সাফল্য হচ্ছে আত্ম উপলব্ধি। অর্থ-বিত্ত, খ্যাতি-সম্মান, প্রভাব-প্রতিপত্তি সাফল্যের একেকটি উপকরণ হলেও এককভাবে এগুলো কোনোটাই সাফল্য নয়। সাফল্য মানে অভাববোধের অনুপস্থিতি।



সাফল্য এক বিরামহীন প্রক্রিয়া। সফল তিনিই যিনি আপাত ব্যর্থতার ছাই থেকে গড়ে নিতে পারেন নতুন প্রাসাদ। প্রতিটি অর্জনকেই মনে করেন নতুন শুরুর ভিত্তি। প্রতিটি অর্জন শেষে শুরু করেন আরো বড় অর্জনের অভিযাত্রা।

প্রশ্ন : সফল হওয়ার জন্যে তো অনেক উপকরণ প্রয়োজন। আমি একজন অভাবী মানুষ। আমার তো কোনো উপকরণ নেই। তাছাড়া আমি জিনিয়াসও নই। আমার কী হবে?

উত্তর : এটা একটা সুন্দর প্রশ্ন। আসলে সফল হওয়ার জন্যে উপকরণ অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু সে উপকরণগুলো বাইরে কোথাও খুঁজে পাবেন না, বরং তার সবটাই আছে আপনার নিজের মধ্যে।

ধরুন, আপনার দেহ। পাঁচ শতাধিক মাংসপেশি, দুই শতাধিক হাড়, ৭০ থেকে ১০০ ট্রিলিয়ন কোষ বা সেলের সমন্বয়ে গঠিত এই শরীরের প্রতিটি সেলে খাবার পৌঁছানোর জন্যে রয়েছে শিরা ও ধমনীর ৬০ হাজার মাইল দীর্ঘ পাইপ লাইন। আর আপনার হার্ট কোনোরকম ক্লান্তি বা প্রতিবাদ ছাড়াই প্রতিদিন এক লক্ষবার স্পন্দনের মাধ্যমে ১৬ শত গ্যালনেরও বেশি রক্ত পাম্প করে দেহকে সচল রাখছে। আর এ সবকিছুই হচ্ছে এক অসাধারণ দক্ষ স্বয়ংক্রিয় সমন্বয়প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। এরকম বিস্ময়কর কর্মক্ষমতাসম্পন্ন দেহ ধারণ করার পরও যদি আপনি মনে করেন আপনার কোনো উপকরণ নেই, তাহলে এর চেয়ে ভ্রান্তি আর কিছু হতে পারে না।



আবার আপনি যদি নিজেকে অভাবী মনে করেন, তাহলে আপনার জানা থাকা দরকার যে, মস্তিষ্ককে নিউরোসায়েন্টিস্টরা সবচেয়ে আধুনিক কম্পিউটারের চেয়েও কমপক্ষে ১০ লক্ষ গুণ শক্তিশালীরূপে বর্ণনা করেছেন। তাহলে কম্পিউটারের দামের অনুপাতে আপনার ব্রেনের মূল্য কমপক্ষে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। পাঁচ হাজার কোটি টাকা পুঁজির মালিক আপনি। এরপরও আপনি অভাবী হন কীভাবে?



মস্তিষ্কের মাত্র একটি বিষয়ও যদি আপনি দেখেন, তাহলেও এর বিশাল কর্মক্ষমতা ও প্রতিটি মানুষের অফুরন্ত সম্ভাবনা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা করতে পারবেন। মস্তিষ্কের ১০০ বিলিয়ন নিউরোন সেলের প্রতিটি নিউরোন এক হাজার থেকে পাঁচ লক্ষ নিউরোনের সাথে সংযুক্ত। প্রতিমুহূর্তে কমপক্ষে ১০০ ট্রিলিয়ন যোগাযোগ ঘটছে মস্তিষ্কে। প্রতিটি নিউরোন মস্তিষ্কের যেকোনো নিউরোনের সাথে সংযোগ স্থাপনে সক্ষম। কতগুলো সংযোগ সম্ভব? যুক্তরাষ্ট্রে মেডিটেশন সংক্রান্ত গবেষণার অগ্রপথিক হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের প্রফেসর ডা. হার্বার্ট বেনসন খুব চমৎকারভাবে বলেছেন, ‘সংখ্যাটি হবে : ২৫,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০। এটাকে অন্যভাবেও দেখতে পারেন-আপনি আপনার টেবিলে একটার ওপর একটা সাধারণ সাইজের টাইপ করার কাগজ রাখুন। রাখতে থাকুন। এটা উঁচু হতে থাকবে। আপনি যদি আপনার মস্তিষ্কের সম্ভাব্য নিউরোন সংযোগ-সংখ্যার সমসংখ্যক কাগজ রাখতে যান, তাহলে কাগজের ঢিবি উঁচু হতে হতে চাঁদ পার হয়ে সৌরজগৎ পার হয়ে গ্যালাক্সি পার হয়ে যাবে। এমনকি আমাদের জানা মহাবিশ্বের সীমানা-১৬ বিলিয়ন আলোকবর্ষ-পার হয়ে যাবে। তারপরও কাগজ রয়ে যাবে।’



আর সভ্যতার সবকিছুর পেছনেই রয়েছে এই ব্রেনের ক্ষমতার সৃজনশীল প্রয়োগ। যে মানুষ যাত্রা শুরু করেছিলো গুহা থেকে বা জঙ্গল থেকে, সে মানুষই এখন তৈরি করছে গগনচুম্বী অট্টালিকা, মহাকাশযান বা সুপার কম্পিউটার। মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে দেহের কার্যক্ষমতাকেও সে বাড়িয়েছে বহুগুণ। জয় করেছে দেহের সীমাবদ্ধতাগুলো। সময় যত এগুচ্ছে মানুষ মস্তিষ্কের সামর্থ্যকে তত বেশি বেশি কাজে লাগাচ্ছে। প্রযুক্তি শিল্প সাহিত্য- প্রতিটি ক্ষেত্রে তৈরি করছে নতুন দিগন্ত। তার মানে জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য হচ্ছে, প্রতিটি মানুষ সুপ্ত জিনিয়াস। মেধা তার মস্তিষ্কে ঘুমন্ত অবস্থায় রয়েছে। একে জাগিয়ে তুলেই মানুষ আপাত সব অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। আমরা ২০ বছর ধরে যে কথাগুলো বলে এসেছি, গবেষক ডেভিড শ্যাংক-এর সম্প্রতি প্রকাশিত বই ‘জিনিয়াস ইন অল অফ আস’-এ সে কথাকেই একটু ভিন্নভাবে বলা হয়েছে, ‘জন্মের সময় দিয়ে দেয়া হয়েছে-এমন আলাদা কোনো ‘গোল্ডেন জিন’ নেই। বিশেষ মেধা প্রকৃতিগত নয় বরং মেধা হচ্ছে অদম্য ইচ্ছা আর প্রাণান্ত প্রয়াসের ফসল। আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন, অদম্য সাহস আর নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে যে কেউ সফল, খ্যাতিমান ও জিনিয়াস হিসেবে বিখ্যাত হতে পারে।’

অতএব বুঝতেই পারছেন, প্রাচুর্যবান হওয়ার জন্যে যা যা উপকরণ প্রয়োজন সবই আছে আপনার মধ্যে। নিজের ওপর বিশ্বাসে অটল থাকুন, নিরলস পরিশ্রম করুন আর অন্তর্গত শক্তিকে লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগান। আপনি সফল হবেন।

প্রশ্ন : গুরুজী, এমন একটি জিনিসের কথা বলুন যেটি সাফল্যের জন্যে প্রথম প্রয়োজন।

উত্তর : সাফল্যের জন্যে, মন ও মস্তিষ্কের অফুরন্ত শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্যে প্রথমত প্রয়োজন এর ওপরে বিশ্বাস স্থাপন। বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘আমি পারবো, এই দৃঢ় বিশ্বাসই সকল সাফল্যের ভিত্তি’। তারা বলেন, পারবো বলে বিশ্বাস করলে আপনি অবশ্যই পারবেন। আসলে বিশ্বাস হচ্ছে সকল সাফল্য, সকল অর্জনের ভিত্তি। বিশ্বাসই রোগ নিরাময় করে, ব্যর্থতাকে সাফল্যে আর অশান্তিকে প্রশান্তিতে রূপান্তরিত করে। বিশ্বাসই মেধাকে বিকশিত করে, যোগ্যতাকে কাজে লাগায় আর দক্ষতা সৃষ্টি করে।



বিশ্বাস কীভাবে যোগ্যতা ও সাফল্য সৃষ্টি করে তার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। হাজার বছর ধরে দৌড়বিদরা মনে করতেন চার মিনিটে এক মাইল দৌড়ানো সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞরা বলতেন যে, মানুষের পায়ের পেশির শক্তি ও ফুসফুসের সামর্থ্য-এ দুটোই এক্ষেত্রে অন্তরায়। এমনকি চেষ্টা করলে সে মারাও যেতে পারে। হাজার বছর পর ইংল্যান্ডের যুবক রজার ব্যানিস্টার প্রথম বিশ্বাস শুরু করলেন, চার মিনিটে এক মাইল দৌড়ানো যাবে। অনুশীলনের পর অনুশীলন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ১৯৫৩ সালে তিনি চার মিনিটে এক মাইল দৌড়ের রেকর্ড করলেন। তার ১৫ দিনের মাথায় জন ল্যান্ডি চার মিনিটের চেয়ে দুই সেকেন্ড কমে এক মাইল দৌড়ালেন। বিস্ময় কিন্তু ওখানে নয়, বিস্ময় তারপরে। পরবর্তী ৩০ বছরে হাজারেরও বেশি দৌড়বিদ চার মিনিটে এক মাইল দৌড়িয়েছেন। যখন মানুষ বিশ্বাস করতো যে, সম্ভব নয়, কেউ পারে নি। যেদিন রজার ব্যানিস্টার বিশ্বাস করলেন এবং করে দেখিয়ে দিলেন, তারপর হাজার জন পারলেন।

বিজ্ঞানের অগ্রগতির যে ইতিহাস, এটিও বিশ্বাসের বিজয়ের ইতিহাস। যেকোনো প্রযুক্তি প্রথমে বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেছেন যে, এটি তৈরি করা সম্ভব, এটি বানানো সম্ভব। তারপরে তিনি বানিয়েছেন। আপনি দেখুন, বিমানের ইতিহাস। হাজার বছর ধরে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতেন যে, বাতাসের চেয়ে ভারী বস্ত্ত আকাশে উড়বে না। ওড়ে নি। প্রথমে রাইট ব্রাদার্স বিশ্বাস শুরু করলেন যে, না, বাতাসের চেয়ে ভারী বস্ত্ত আকাশে উড়বে যদি তার দেহ এবং ডানার অনুপাত ঠিক হয় এবং তাতে গতির সঞ্চার করা যায়। অন্যান্য বিজ্ঞানীরা তাদেরকে নিয়ে হাসাহাসি করেছেন। কিন্তু রাইট ব্রাদার্স বিশ্বাসে অটল থাকলেন। বিমান তৈরি করলেন। সভ্যতার চেহারা পাল্টে গেল।



পৃথিবীর যত বড় বড় ধনকুবের, তার শতকরা ৯০ জন খুব সাধারণ অবস্থা থেকে উঠে এসেছেন এই বিশ্বাসকে সম্বল করে। আমেরিকায় তার সময়কার সবচেয়ে বড় ধনকুবের এন্ড্রু কার্নেগি বস্তির ছেলে ছিলেন। ১২ বছর যখন তার বয়স তখন তিনি একটি পাবলিক পার্কে ঢুকতে চেয়েছিলেন। দারোয়ান তাকে ঢুকতে দেয় নি তার ময়লা নোংরা পোশাকের জন্যে। কিন্তু সেই ১২ বছর বয়সী ছেলেটির মনে এত প্রত্যয়, এত বিশ্বাস ছিলো যে, সেখানে দাঁড়িয়ে নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যেদিন আমার টাকা হবে, সেদিন এই পার্কটা আমি কিনে ফেলবো। ৩০ বছর পরে এন্ড্রু কার্নেগি তার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করেছিলেন। তিনি সেই পার্কটি কিনেছিলেন। সেখানে একটি নতুন সাইনবোর্ড লাগিয়েছিলেন। সে সাইনবোর্ডে লেখা ছিলো-‘আজ থেকে দিনে বা রাতে, সকালে বা বিকেলে, যেকোনো বয়সের, যেকোনো মানুষ, যেকোনো পোশাকে এই পার্কে প্রবেশ করতে পারবে’।



বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস-এর যে পার্থক্য, ছোট্ট একটি উদাহরণ দিয়ে আমরা বোঝাতে পারি। আপনার সামনে মেঝেতে যদি ছয় ইঞ্চি চওড়া একটি কাঠের তক্তা বিছিয়ে দেয়া হয় এবং বলা হয়, ভাই বা বোন! এর ওপর দিয়ে একটু হেঁটে যান। আপনি কী করবেন? আপনি দৌড় দেবেন। কারণ আপনি জানেন যে, আপনার পা ফেলার জন্যে ছয় ইঞ্চির চেয়ে বেশি জায়গার দরকার নেই। কারো পায়ের পাতাই ছয় ইঞ্চি চওড়া নয়।

কিন্তু এই তক্তাটাই যদি একটি উঁচু বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে রাস্তার ঐ পারের একটি বিল্ডিংয়ের ছাদে লাগিয়ে দেয়া যায় আর বলা হয় যে, ভাই বা বোন! একটু আগে আপনি কী সুন্দর দৌড় দিয়েছিলেন-এবার দৌড় দিতে হবে না, আস্তে আস্তে টুক টুক করে হেঁটে যান। আপনি কী করবেন? প্রথমে সামনের দিকে তাকাবেন। দেখবেন যে, কত দূর? তারপরে নিচের দিকে তাকাবেন যে, কত উঁচুতে? তারপর মনে হবে যে, যদি পড়ে যাই? এক পা, দুই পা, তিন পা। ব্যস, পড়ে গিয়ে একেবারে আলুর দম হয়ে যাবেন।



প্রথমবার পারলেন, দ্বিতীয়বার পারলেন না কেন? কারণ প্রথমবার আপনার মনে কোনো প্রশ্নই জাগে নি, পড়ে যাওয়ার কোনো চিন্তাই আসে নি। দ্বিতীয়বার আপনার মনে প্রশ্ন ঢুকে গেছে, যদি পড়ে যাই? অথচ সার্কাসে আপনারা দেখেছেন, দড়ির ওপর দিয়ে ১২ বছরের কিশোর দৌড়ে চলে যাচ্ছে। সে পারছে, আপনি পারছেন না কেন? কারণ সে বিশ্বাস করছে যে, সে পারবে। আর আপনার মনে প্রশ্ন জেগে গেছে, যদি পড়ে যাই?

আসলে আমাদের সবকিছুই আছে, অভাব শুধু বিশ্বাসের। আমরা নিজেদেরকে বিশ্বাস করতে পারি না। বিশ্বাস করতে পারি না যে, আমিও পারি। বিশ্বাস করতে পারি না যে, আমিও পারবো। যেদিন বিশ্বাস করতে পারবেন যে, আমিও পারি, সেদিন আপনার প্রতিটি যুক্তিসঙ্গত চাওয়া পাওয়ায় রূপান্তরিত হবে। বিশ্বাসই আপনাকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নেবে।

প্রশ্ন : কয়েকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। চরম হতাশায় ভুগছি। আমার পক্ষে কি সফল হওয়া সম্ভব?

উত্তর : অবশ্যই সম্ভব। বরং বলা যেতে পারে, ব্যর্থ হয়েছেন বলেই আপনার সফল হওয়াটা এখন সহজ। কারণ পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি সফল মানুষের শুরুটা ব্যর্থতা দিয়েই। জেমস ডাইসন। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার নামক যে যন্ত্রটি এখন আধুনিক মানুষের ঘরবাড়ি, অফিস, হোটেল ও অন্যান্য স্থান পরিষ্কারের এক প্রয়োজনীয় উপকরণ হয়ে গেছে তার আবিষ্কারক। মজার ব্যাপার হলো, এ মেশিনটিকে যথাযথ রূপ দেয়ার আগে জেমস ডাইসনকে ব্যর্থ হতে হয়েছিলো পাঁচ হাজার বারেরও বেশি।

জেমস চাইছিলেন এমন একটা ভ্যাকুয়াম তৈরি করবেন যাতে কোনো ব্যাগ থাকবে না। কারণ ব্যাগ থাকলেই ধুলোবালিতে আচ্ছন্ন হয়ে কিছুদিনের মধ্যেই মেশিন জ্যাম হয়ে যায়। পাফটা নষ্ট হয়ে যায়, ফলে ধুলোবালি টেনে নেয়ার ক্ষমতাটা আর মেশিনের থাকে না। এ লক্ষ্যে জেমস ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করে গেলেন পাঁচ পাঁচটি বছর। গবেষণায় পুরো সময় দেয়ার জন্যে চাকরিটা ছেড়ে দিলেন। স্ত্রীর উপার্জন দিয়েই এ সময় চলতে হয়েছে তাকে। পাঁচ বছরে অনেকবারই এমন অনেক পরিস্থিতি এসেছে যাতে হাল ছেড়ে দেয়াটাই ছিলো স্বাভাবিক। কিন্তু জেমসের কাছে এটা স্রেফ একটা মেশিন আবিষ্কার ছিলো না, এটা ছিলো তার জীবন।

বছর পাঁচেক পর মেশিনটা তৈরি হলো ঠিক। কিন্তু এটাকে কেনার জন্যে কোনো কোম্পানিকে রাজি করানো গেল না। তিনটি বছর তিনি শুধু এক কোম্পানি থেকে আরেক কোম্পানির দরজায় ঘুরেছেন কয়েকটি টাকার বিনিময়ে এই ভ্যাকুয়াম ক্লিনারটার লাইসেন্স বিক্রি করার জন্যে। কিন্তু সবাই মেশিনটার কার্যক্ষমতার প্রশংসা করলেও বাজারে চলবে কি না এটা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করতো। কারণ বাজার সয়লাব হয়ে আছে ব্যাগওয়ালা ভ্যাকুয়াম ক্লিনারে। সেখানে এরকম ব্যাগহীন একটা ভ্যাকুয়ামকে ক্রেতারা কীভাবে নেবে সেটা নিয়েই সবার আশঙ্কা ছিলো।



অবশেষে ১৯৯৩ সালে জেমস নিজেই এটার বাজারজাতকরণের উদ্যোগ শুরু করলেন। মাত্র দেড় বছরের মাথায় ডিসি ০১ হয়ে উঠলো বাজারের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত ভ্যাকুয়াম ক্লিনার। জেমস বলেন, যে ব্যাগ না থাকাকে এর বাজারে মার খাওয়ার কারণ হিসেবে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলো সবাই, সেই ব্যাগ না থাকাটাই হয়ে গেল এর জনপ্রিয়তার সবচেয়ে বড় কারণ। আর আমি সেটাই জানতাম। তাই তো প্রথমবার ব্যর্থ হয়ে আমি যেমন থেমে যাই নি, তেমনি ৫০ বার ব্যর্থ হয়েও হতাশ হই নি। হাল ছেড়ে দেই নি পাঁচ হাজার বার ব্যর্থ হয়েও। কারণ আমি জানতাম-এগুলো ব্যর্থতা নয়, বরং এ হলো একটু একটু করে সফলতার দিকে এগুনো।



কাজেই আপনার হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আপনার ব্যর্থতাগুলো আসলে আপনার সাফল্যের পথেরই একেকটি ধাপ। তাই আমরা কখনও হতাশ হবনা। আপনার আশেপাশের অনেক লোক আপনাকে আনেক কথা বলবে কেউ বলবে আপনি পাগল আবার কেউ বলবে যে এই লোক উল্টা পাল্টা বকছে। কিন্তু আপনি আপনার কাজ মন দিয়ে করে যাবেন তাহলে আপনি সফল হতে পারবেন। আপনার কাছে যত বাধা আসবে আপনি ভিত হবেননা। আপনার মনের ভিতর কনফিডেন্স থাকবে যে যত বাধা আসুক আমি সব বাধা পার হয়ে যেতে পারব তাহলে আপনি একজন সফল মানুষ।



আপনি চাইলে আমার সাথে ফেসবুকে ফ্রেন্ড হতে পারেন ফেসবুক লিংক https://www.facebook.com/rakibhossen.fuhat

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.