নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবিষ্কারের নেশায়

রাকিব হোসেন ফুহাদ

এ ধরা ক্ষনিকের জন্য যেতে হবে চলে ক্ষনিকের মাঝে অসীম রহস্য উন্মোচন করে যাব বলে, যাহা আমি শিখিয়াছি এ ধরায় এসে তার চেয়ে ভাল কিছু করে যাব সাবইকে ভালবেসে। তোমরা যেখানে দেখাবে আমায় এক মুঠো মাটি আমি সেখানে খুজে বেড়াব যা সোনার চেয়েও খাটি। তোমরা যেখানে উড়াইয়া দিবে এক মুঠো ছাই আমি তাহাতে খুজে বেড়াব অসীম রহস্যের পাই।

রাকিব হোসেন ফুহাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আত্মহত্যা দিবস

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৪

আত্মহত্যা একটি অপরাধ, কিন্তু এটি এমন একটি অপরাধ যে অপরাধ করার পরে অপরাধীকে আর কোন শাস্তি প্রয়োগ করার সম্ভব না। আত্মহত্যা কথাটি শুনলে অনেকের মনেই ঘৃনা তৈরী হয়। আবার অনেকে মনে করে এটাই হচ্ছে আমার জন্য সঠিক পথ। আসলেই কি আত্মহত্যা সঠিক পথ। আত্মহত্যা মানে কি? সেচ্ছায় কোন জীবনকে শেষ করে দিয়ে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নেওয়া, এককথায় নিজ ইচ্ছায় অত্মাকে হত্যা করার নামই হচ্ছে আত্মহত্যা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞাঅনুসারে আত্মহত্যা হলো “স্বজ্ঞানে এমর একটি ভয়ানক কাজ করা যা কোন ব্যাক্তির মৃত্যু ঘটায় এবং ঐ ব্যাক্তি কাজের প্রত্যাশিত ফলাফল সম্পর্কে পূর্ব থেকেই অবগত থাকে” আত্মহত্যা বা চিরতরে বিদায় মানে কি সব সমস্যার সমাধান? কখনওই না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী প্রতি তিন সেকেন্ডে একজন আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে এবং প্রতি মিনিটে একজন ব্যাক্তি আত্মহত্যা করে। ছোট ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতি মিনিটে আমাদের পৃথিবী থেকে একজন লোক চিরতরে বিদায় নিচ্ছে যা অকল্পনীয়। বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ৮৭৩০০০ লোক আত্মহত্যা জনিত কারনে মারা যায় আর আত্মহত্যা করার চেষ্টা চালায় প্রায় এক থেকে দেড় কোটি লোক। বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন গড়ে আত্মহত্যা করে প্রায় ৩০০০ জন। আমাদের দেশেও প্রতিদিন আত্মহত্যাকারীর সংখ্যা অনেক। প্রতিদিন যে পরিমান লোক অত্মহত্যা করছে তার মধ্যে বেশীরভাগই হচ্ছে কিশোর কিশোরী। কখনও মা-বাবার সাথে রাগ করে আবার কখনও প্রেমিক প্রেমিকার সাথে ঝগড়া করে অল্পতেই আত্মহত্যার পথ বেচেঁ নেয় তারা। কিশোর বয়সে ছোট খাট সমস্যাগুলোকে তারা তাদের জীবনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে আত্মহত্যার পথ বেচেঁ নিচ্ছে। আত্মহত্যার শিকার যে শুধু কিশোর কিশোরী তরুন সমাজ তা নয়। আত্মহত্যার পথ বেচেঁ নিচ্ছে সমাজের বিত্তবান,প্রবীণ শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, অভিনয় শিল্পী,ব্যবসায়ী, সরকারী কর্মকর্তা অনেকেই। আত্মহত্য প্রতিরোধ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রতি ১০ সেপ্টেম্বর আমরা “বিশ্ব আত্মহত্যা দিবস” হিসেবে পালন করে থাকি। আমাদের প্রতিটি দিনকেই মনে করতে হবে আত্মহত্যা দিবস। সচেতন করতে হবে সাধারন জনসাধারনকে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া আত্মহত্যা রোধ কখনওই সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মেডিকেলগুলোর গবেষনায় দেখা গেছে যারা আত্মহত্যা করে তাদের বেশীরভাগই মানষিক রোগী। তারা আত্মহত্যার পূর্বে তাদের পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা পরিবারের কাছ থেকে যথাযথ গুরুত্ব পায়নি। আত্মহত্যার আরেকটি অন্যতম কারন হচ্ছে নিজ পরিবারের কাছ থেকে যথাযথ গুরুত্ব না পাওয়া। আমাদের দেশের পরিবারের কর্তারা কখনওই তাদের ছেলেমেয়েদের মনের কথা বুঝতে চেষ্টা করেনা। তারা সবসময় তাদের নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকে বিদায় ছেলে মেয়েদের দিকে কোন খেয়াল থাকে না, দিনের পর দিন ছেলেমেয়ে মা-বাবার কাছে গুরুত্ব না পাওয়ায় ধীরে ধীরে তাদের মানসিক পরিবর্তন ঘটে এবং একসময় তারা মানসিক রোগে আক্রান্ত হয় এর মধ্যে অনেকেই সিজোফ্রেনিকে আক্রান্ত হয়। সিজোফ্রেনিক আক্রান্ত রোগীদের অনান্যদের তুলনায় আত্মহত্যা প্রবনতা বেশী থাকে। সিজোফ্রেনিক আক্রান্ত ১০-১৫ শতাংশ রোগী আত্মহত্যা করে। সিজোফ্রেনিক আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বিষন্নতা কাজ করে। সিজোফ্রেনিক আক্রান্ত অনেক রোগী গায়েবী আওয়াজ শুনতে পায় আবার অনেকে শুনতে পায় তার কানের কাছে কেউ এসে বলছে যে আত্মহত্যা করার জন্য, এভাবে একজন সিজোফ্রেনিক আক্রান্ত রোগী খুব অল্প সময়ে আত্মহত্যার পথ বেচেঁ নিয়ে তার সকল সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে। যে কোন রোগী যে কোন সময় এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে তবে সঠিক সময়ে সঠিক পরামর্শ নিলে এই রোগীকে খুব দ্রুত সুস্থ করে তোলা সম্ভব।



যদিও প্রতিটি ধর্মেই উল্লেখ আছে যে আত্মহত্যা মহা পাপ যিনি আত্মহত্যা করবেন তিনি পরকালে কঠিন শাস্তি ভোগ করবেন। কিন্তু আমরা আত্মহত্যাকে মানে করছি সকল সমস্যার সমাধান। আত্মহত্যা নিয়ে বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন যন্ত্রনাদায়ক কঠোর শাস্তির কথা বলেছেন



ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রস্থ আল কুরআনে সূরা আন নিসার ২৯-৩০নং আয়াতে বলা হয়েছে “আর তোমরা নিজেদের হত্যা করোনা। নিশ্চই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু এবং যে কেউ জুলুম করে অন্যায়ভাবে আত্মহত্যা করবে, অবশ্যই আমি তাকে অগ্নিদগ্ধ করবো, আল্লাহর পক্ষে উহা সহজসাধ্য”।



খ্রিষ্টান ধর্ম আত্মহত্যা সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলেনা যে যিনি আত্মহত্যা করবে তিনি স্বর্গে প্রবেশ করতে পারবে কিনা। তবে এটা বলে যে যিনি আত্মহত্যা করল সে শুধু নিজের যাত্রা নরকের দিকে তরান্বিত করা ছাড়া আর কিছুই করলনা। বাইবেল অনুযায়ী অত্মহত্যা হচ্ছে ইশ্বরের বিরুদ্ধে করা ভয়ানক পাপ।

সনাতন ধর্ম অনুযায়ী রামের মৃত্যুর পরে মানুষ গনহারে আত্মহত্যা করতে শুরু করে। পরে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ আত্মহত্যাকে নিষিদ্ধ করেন।



গৌতম বুদ্ধের মতবাদ হচ্ছে হচ্ছে “অহিংসা পরম ধর্ম, জীব হত্যা মহা পাপ” গৌতম বুদ্ধের মতবাদের প্রথম লাইনেই বলা হয়েছে জীব হত্যা মহাপাপ তাই বৌদ্ধ ধর্মেও আত্মহত্যাকে পাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।



সকল ধর্মেই আত্মহত্যাকে নিষিদ্ধ বা পাপ বলা হয়েছে। কিন্তু আত্মহত্যার জন্য নেই কোন আইন। আত্মহত্যা একটি অপরাধ হলেও এটি সংঘটিত হওয়ার পরে তাকে আর কোন শাস্তি দেওয়া সম্ভব হয়না। আজ ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আত্মহত্যা দিবস। আমরা সকলে মিলে আত্মহত্যা প্রবন ব্যক্তির পাশে দাড়াই । আমাদের আশেপাশে যারা আছে তাদের মধ্যে আত্মহত্যা প্রবন ব্যক্তিদের সনাক্ত করে তাদেরকে আমাদের সঙ্গী করে আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসি। আমাদের ছোট খাট উদ্যোগের কারনে বেচেঁ যেতে পারে একটি প্রান। যারা বিষন্নতায় ভুগছেন তাদের বন্ধু হয়ে একসাথে মিলে বিষন্নতাকে জয় করে তাদেরকে আবার ফিরিয়ে দেই নতুন জীবন। যারা আত্মহত্যাপ্রবন ব্যাক্তি আমরা তাদের নিজ জীবনে ভালবাসতে শিখাই দেখব আমাদের চারিপাশে আর কোন আত্মহত্যাকারী থাকবেনা। প্রত্যেকে প্রত্যেকের জীবনকে ভালবাসতে শিখবে। গড়ে তুলবে সুন্দর সমাজ ও দেশ। আসুন এই আত্মহত্যা দিবসে আমরা প্রতিজ্ঞা করি এবং সবাই একসাথে এই স্লোগান তুলি “আর একটিও আত্মহত্যা নয়, জীবনকে ভালবেসে সকল বাধা করব জয়”।

লেখক- রাকিব হোসেন ফুহাদ

https://www.facebook.com/rakibhossen.fuhat

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.