![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রগতিশীল বিজ্ঞানমনস্ক এবং মুক্তচিন্তার অধিকারী
পৃথিবীতে সিভিলাইজড এবং ইতিহাস ঐতিহ্যে সৌন্দর্য ভরপুর শহরগুলির মধ্যে একটা শহর হচ্ছে প্যারিস। সবচেয়ে সুন্দর শহরগুলির একটা জ্বলতে চোখের সামনে দেখাটা একটা ভয়াবহ অনুভূতি। ঘন্টাখানেক আগে খবর এসেছে, প্যারিসের একটা সাবার্বের মেয়র অভিযোগ করেছেন তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে, তার স্ত্রী, সন্তান আহত হয়েছে। ফ্রান্সে এখন যা হচ্ছে তা মূলত একটা রায়ট, ধর্ম আর রেসিজম মিলেমিশে যা হয়েছে সেটা মূলত একটা আধুনিক কুরুক্ষেত্র। কালো সাদার দ্বন্দ্ব আগেই ছিলো সাথে যুক্ত হয়েছে ধর্মীয় পরিচয়।
আলজিরিয়ান বংশোদ্ভূত ১৭ বছরের মুসলিম তরুণ নাহেলকে এক পুলিশ গুলি করেছে। পুলিশ কর্তৃক এমন আচরন কখনই কাম্য নয়। আমি বা আমরা যারা মানবাধিকার কর্মী আমরা কখনও এভাবে নাহেল হত্যাকে মেনে নিতে পারি না এবং স্পষ্টত এইটা মানবাধিকার লঙ্গন।কিন্তু আপনি একই সাথে খবর নিয়ে দেখেন ফ্রান্সের পুরো এডমেনিস্ট্রসন একসাথে জোর গলায় জানিয়ে দিয়েছে এই হত্যার পরিপূর্ণ এবং সুষ্ট বিচার হবে এবং সেটা তারা শুরু করে দিয়েছে। সেই পুলিশকে অলরেডি মার্ডার কেসের চার্জে ফেলে ডিটেনশনে নেয়া হয়েছে।
কিন্তু এইদিকে কি হয়েছে?
যারা প্রতিবাদ করছিলো তারা এই জিনিস এমন ধর্মীয় জায়গায় নিয়ে গেছে, ৮০ বছর বয়সী গির্জার ফাদারকে পেটানো হয়েছে, দোকানপাট লুট, মার্সেইতে লাইব্রেরী পুড়ানো, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বন্ধ করা- এই মুহূর্তে ফ্রান্স পুরো দুনিয়ার লিড নিউজে বসে আছে। ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট জরুরী এলার্ট জারি করেছে। ইউরোপের প্রায় সব দেশ ট্রাভেল এলার্ট জারি করেছে। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো তার সফর বাতিল করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের জন্য।
সম্ভবত সামনে একটা জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হতে পারে।
এইজন্য এখন সবচেয়ে উগ্র আচরণ কারা দেখাচ্ছে?
উত্তর হচ্ছে- মেইনলি মুসলিমরা।
অথচ আপনি জেনে অবাক হবেন কাবা শরীফে যখন জিম্মি নাটক সাজানো হয়েছিল, তখন গিয়ে কাবা উদ্ধার করেছিল ফ্রেঞ্চ মিলিটারি!
কোনো তথাকথিত মুসলিম দেশ না। অথচ শার্লি হেবদোর ঘটনার পর ফ্রান্সকে বয়কট করার হিড়িক কেন পড়েছিল?
কারণ শার্লি হেবদোর ঘটনায় ফ্রান্সের সাধারণ মানুষ বাক স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়েছিল।
দুনিয়ায় ধর্ম একটা না, আরো ধর্ম আছে। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবনের বারোটা বাজানো, অন্য ধর্মের যাজককে লাঞ্চিত করার অধিকার কারোর নাই। এইগুলি একেকটা ক্রাইম।
যারা অন্যদের মানুষ হিসেবে ট্রিট করতে শেখে নাই, নিজেদের ওপর অন্যায়ের জন্য অন্যদের ওপর অন্যায় করতেছে- তারা ন্যায়বিচার পাবে কেমন করে?
ধর্ম যদি মানুষকে বর্বরতা হাত থেকে সামনে নিয়ে আসতে পারে তবে কেনও এই শতাব্দীতে এসেও নির্দিষ্ট কিছু ধর্মের মানুষ এমন বর্বরতা আর হিংস্রতা চালায়।
কিন্তু এই কথা গুলো বলতে এখন থেকে আমাকে কী ১০০ বার চিন্তা করতে হবে? হয়ত পরেরবার এই কথা বলতে আমি ভয় পাবও কারন আমার সামনে আমি দেখেছি কী বিশাল ধ্বংসলীলা
অথচ আমার বলতে ভালো লাগে-
মিথ্যা শুনিনি ভাই,
এই হৃদয়ের চেয়ে বড়ো কোনো মন্দির কা'বা নাই।
আপনি না পারলেন মানুষকে আপন করে নিতে, না পারলেন ধর্মীয় সহাবস্থান রাখতে, না পারলেন অন্য ধর্মের মানুষের জন্য আশ্রয় হতে। আপনি নিজেকেই নিজে চিনলেন না, অন্যের ব্যথার কারণ হলেন, এখন আপনি ব্যথা পেলে অন্যমানুষ আপনার ব্যথা চিনবে- এই আশাই বা কেমনে করেন?
আপনি শান্তির কথা বলে মানুষের শান্তি শেষ করে দিলেন, কাজটা কি ঠিক হলো?
যে ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষের শান্তি শেষ করে দেয়, সেই স্বার্থপর কেমন করে শান্তি পাবে?
©somewhere in net ltd.