নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মহা-বিদ্রোহী রণ ক্লান্তআমি সেই দিন হব শান্ত,যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না –অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না

রাজেল

প্রগতিশীল বিজ্ঞানমনস্ক এবং মুক্তচিন্তার অধিকারী

রাজেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই পৃথিবীটার দেখা কি আমরা কখনো পাবো? আদৌ পাবো কি?

০৩ রা অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৯

কয়দিন আগে ক্রিকেটার তানজিম সাকিবের নারীবিদ্বেষী মন্তব্য নিয়ে লেখায় যারা আমাকে কুৎসিত গালাগাল করেছিলেন তাদের জানাই-কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার চারণকবি রাধাপদ রায় যার বয়স ৮০, তাকে পিটিয়েছে দুই ছেলের বয়সী লোক একজনের নাম রফিকুল ইসলাম আর অন্যজনের নাম কদুর আলী। জানা গেছে তারা দুইজন কেউই গানবাজনা পছন্দ করে না। কোন এক সালিশের সূত্র ধরে তারা পিটিয়ে পিঠ লাল করে দিয়েছে এই কবির।

এদিকে আশি বছর বয়সী রাধাপদ রায় কবি, সেইসাথে হিন্দু। কদুর ও রফিক দুইজনই জানে একজন হিন্দু সংখ্যালঘুকে প্রহার করলে কিছুই আসে যায়না, যেমন আসে যায়না ক্রিকেটার হয়ে দেশের কর্মজীবী মেয়েদের নিয়ে বাজে কথা বললে।
এটা একটা সমাজের সামগ্রিক চেহারা, সেই চেহারা জানিয়ে দেয়- গান, কবিতা এবং সংস্কৃতি একটা অংশ কি ভয়াবহ অপছন্দ করে যে আশি বছর বয়সী একজন বয়স্ক গুরুজনকে কেবলই ধর্মের কারণে পেটাতে সমস্যা হয় না।
এই অন্ধত্ব কি একদিনের?

না, এই অন্ধকারের জন্ম অনেক আগের। এরও অনেক আগে শাহ আবদুল করিমের স্ত্রী সরলার জানাজা করিয়েছিলেন শাহ আবদুল করিম নিজে, কারণ করিম গান গায়। গ্রামের মসজিদে তাকে নিয়ে গালাগাল করা হয়েছিল, জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- করিম কি গান ছাড়বা? করিম গান ছাড়েনি, গ্রাম ছেড়েছিল। অভিমান করে লিখেছিল-

আমি কূলহারা কলংকিনী
আমারে কেউ ছুঁইয়োনা গো সজনী।

রীতা দেওয়ানের নামে মামলা হয়েছিল, রীতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো- সে গানে ধর্ম অবমাননা করেছে। ব্যাস এইটুকুই!
রীতা কাউকে খুন করেনি, মারেনি। কেবল গান গেয়েছিল।

এতদিনেও এই জনপদের লোক বুঝতে শেখেনি- দেশ কেবল মানচিত্র, ব্রীজ আর রাস্তাঘাট না। দেশ মানে দেশের গানবাজনা, সংস্কৃতি। বিদেশে যদি আসেন হাতে করে রাস্তাঘাট ব্রীজ আনতে পারবেন না, আনতে হবে ওই গানবাজনা, কবিতা আর চিত্রকলাই। এইজন্যই লোকে শাহ আবদুল করিমের গান বিকৃত করে গায় জেনেও করিম বলতেন- আমি গানের মধ্যে দিয়ে একটা আদর্শ প্রচার করি, সেই আদর্শ হলো: পৃথিবীটা একদিন বাউলের হবে।

রাধাপদ রায়ের একটিই অপরাধ যে তিনি অপরাধ করেননি, কবিতা লিখেছেন। একটা সমাজ যখন অপরাধীরা চালায়, তখন তারা গান, কবিতাকে ভয় পায়, কবিকেই ভাবে সবচেয়ে বড় অপরাধী!
একদিন রাধাপদ রায় বেঁচে থাকবেন না। কিন্তু বেঁচে থাকবে এই আশাটুকু যে পৃথিবী একদিন মানুষের বসবাসের যোগ্য হবে, কবির হবে!

এই পৃথিবীটার দেখা কি আমরা কখনো পাবো? আদৌ পাবো কি?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.