নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সহজ মানুষ,সহজ মন,সহজ কথা,সহজ সত্য আমার মতামত । প্রচার করুন যদি একটি মাত্র আয়াতও হয়....লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ । ৫ ওয়াক্ত নামাজ মানুষের জীবনকে বদলে দেয় ইসলামিক বিধান মেনে একটি সুন্দর জীবন চায়।আল্লাহ্‌ আপনি সব কিছুর মালিক ।

আর বি এম টুটুল

সহজ মানুষ,সহজ মন,সহজ কথা

আর বি এম টুটুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুর ব্যাক্ত্বিত্ব গঠনেই, ভাল মানুষ হওয়ার হাতিয়ার

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৬

মনে রাখতে হবে, সন্তানের আক্বীদা ও আচরণের ভিত শিশুকালেই গড়ে দিতে হবে।
নইলে একটি শিশুর আক্বীদা বিনষ্ট করা তাকে জীবন্ত হত্যা করার চাইতে বড় পাপ।
তাই শিশুকালে সঠিক আক্বীদার ভিত একবার মযবুত হয়ে গেলে বয়সকালে সাধারণতঃ সে বিভ্রান্ত হয় না।
শিশুর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঠিক বৃদ্ধি হল শারীরিক বিকাশ ।
আর মানসিক বিকাশ হল আচার ব্যবহার, চিন্তা চেতনা,কথা বলা , অনুভূতি ও ভাবের আদান-প্রদানের ক্ষমতা অর্জন ।
তাই শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ছাড়া শিশু তথা মানুষের পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়।
শিশুর মানসিক বিকাশ মূলত মায়ের গর্ভ থেকেই শুরু হয় । তাই গর্ভকালীন সময় থেকে শিশুর মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে ।
এ সময় মাকে মানসিক চাপমুক্ত এবং হাসিখুশি রাখতে হবে । মা যদি এ সময় পারিবারিক কলহ কিংবা অশান্তিতে থাকে তবে শিশুর মানসিক বিকাশে এর প্রভাব পড়বে ।
শিশুর মানসিক বিকাশ মূলত মায়ের গর্ভ থেকেই শুরু হয় । তাই গর্ভকালীন সময় থেকে শিশুর মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে ।
এ সময় মাকে মানসিক চাপমুক্ত এবং হাসিখুশি রাখতে হবে । মা যদি এ সময় পারিবারিক কলহ কিংবা অশান্তিতে থাকে তবে শিশুর মানসিক বিকাশে এর প্রভাব পড়বে ।

গর্ভাবস্হা থেকে প্রথম ৫ বছর শিশুর বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ণ সময়।
জীবনের প্রথম বছরগুলোতে শিশু যা শেখে, যেভাবে শেখে তাই তাদের ভবিষ্যৎ বুদ্ধিমত্তা ,ব্যক্তিত্ব, নৈতিক ও সামাজিক আচরণের ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়। মানসিক বিকাশ মস্তিষ্কের বিকাশের ওপর নির্ভরশীল। মাতৃগর্ভে থাকা অবস্হায় নিউরন নামক মস্তিষ্কের কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। গর্ভবতী মায়ের সুষম খাবার, শারীরিক এবং মানসিক সুস্হতা গর্ভস্হ শিশুর নিউরনের সুষ্ঠু বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। জন্মের পর এ কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি হয় না , তবে পারস্পরিক ক্রিয়ামুলক উদ্দীপনার দ্বারা নিউরনগুলোর মধ্যে সংযোগ ঘটে এবং সেগুলো সক্রিয় হয় । এজন্য শিশু যাতে তার পাঁচটি ইন্দ্রিয় প্রতিদিন বারবার ব্যবহারের সুযোগ পায় তার দিকে যত্মবান হতে হবে।

শিশুর বিকাশ কয়েক পর্যায়ে ঘটে-
প্রথম পর্যায়ঃ- জন্মের পর সে পর্যায়ক্রমে উপুড় হয়। হামাগুড়ি দেয়, বসে, দাঁড়ায়, হাঁটে ও দৌঁড়ায়।
দ্বিতীয় পর্যায়ঃ- প্রথম দিকে শিশু শুধু মা-বাবাকে চিনতে শেখে, তারপর ধীরে ধীরে পরিবারের অন্যদের চেনে, জানে, সবার সঙ্গে মেশে।
তৃতীয় পর্যায়ঃ-শুরুতে কান্নাই হলো শিশুর ভাষা। আস্তে আস্তে সে বাবা, দাদা, মামা-এ ধরনের ছোট ছোট শব্দ বলে। এক সময় গুছিয়ে কথা বলতে শিখে ।
সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ও বিকাশ সবচেয়ে দ্রুত হয় মাতৃগর্ভে-যা প্রায় শতকরা আশি ভাগ।
আর অবশিষ্ট কুড়ি শতাংশ বৃদ্ধি হয়-জীবনের প্রথম কয়েক বছর পর্যন্ত।

মানসিক বিকাশ ব্যাহত হওয়ার কারন সমুহ ঃ
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের অপুষ্টি , বাবা মায়ের মধ্যে কলহ , পারিবারিক নির্যাতন , মাদকাসক্তি , থাইরয়েড ও অন্যান্য হরমোনের আধিক্য ও অভাব ,জন্মগত ত্রুটি , প্রসব কালীন জটিলতা ,শব্দ দূষণ ,ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ ইত্যাদি কারনে শিশুর মানসিক বিকাশ ব্যহত হতে পারে ।

মানসিক বিকাশে ব্যহত হওয়ার লক্ষন সমূহ ঃ ঠিক বয়সে বসতে হাটতে , কথা বলতে না পারা , অস্বাভাবিক আচরন করা ,অমনোযোগী থাকা , নিজের শরীরের ক্ষতি করা , হুট করে উত্তেজিত হওয়া , অতিরিক্ত চুপচাপ কিংবা চঞ্চল হওয়া , আদর গ্রহন না করা , স্কুল পালানো, সম বয়সীদের সাথে মিশতে অনীহা প্রকাশ , বড় বয়সেও বিছানায় প্রস্রাব পায়খানা করা , সারাক্ষন মন খারাপ কিংবা ভয়ে থাকা অথবা যে কোন ধরনের অস্বাভাবিক আচরণ করা ।

শিশুর মানসিক বিকাশে করনীয়ঃ-
গর্ভ কালীন সময়ে মা যেন অপুষ্টি , রোগ রক্তশূন্যতায় না ভুগে কিংবা কোন মানসিক চাপে না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।
শিশুকে সঙ্গ দিন ,তার সাথে গল্প করুন ।
একটু বড় হলে গল্পের ছলে বিভিন্ন জিনিস চিনিয়ে দিতে পারেন ।যেমনঃ-

* তাকে তার মত স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আচরণ করতে দিন । যদি মনে করেন শিশুটি ভুল করছে ,তবে তাকে আন্তরিক ভাবে বোঝান । কখনই কড়া শাসন করবেন না ।
* ভাল কাজের জন্য তাকে ছোট খাট উপহার কিনবা চমকের ব্যবস্থা করুন।
এতে করে তার আত্মবিশ্বাস যেমন বাড়বে তেমনি ভাল কাজে অনুপ্রাণিত হবে ।
* তাকে পূর্ব শিখন থেকে প্রশ্ন করুন ,তার প্রশ্নের জবাব দিন , কখনও তার প্রশ্নকে এড়িয়ে যাবেন না ।
* খাওয়ান,ঘুম পাড়ানো ,কান্না থামানো কিংবা অন্যান্য কাজের জন্য কখনই তাকে ভয় দেখাবেন না ।
* তাকে একটু একটু করে আত্মনির্ভরশীল করে তুলুন ।
* তাকে বেড়াতে নিয়ে যান ।
* তার পছন্দকে গুরুত্ব দিন , দেখবেন সে আত্মবিশ্বাসী হচ্ছে ।
* সৃজনশীল কাজের সাথে শিশুর পরিচয় ঘটান ।
* তার সাথে খেলা করুন ।
* তার সামনে বেশী করে ইসলামিক কথা বলুন।
* তাতে ধিরে ধিরে ইসলামিক শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করুন, ।
* শিশুরা অনুকরন প্রিয় তাই তাদের সামনে এমন সব আচরন করতে হবে ,যা তার মানসিক গঠনে সহায়ক হয় ।
* কখনই শিশুর সামনে নেতিবাচক কথা বলবেন না । মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিবেন না ।
* শিশু অমনোযোগী হলে কারন অনুসন্ধান করুন,প্রয়জনে ডাঃ এর পরামর্শ নিন ।
* তার স্বকীয়তা প্রকাশ করতে দিন । তাকে স্বাধীনতা দিন ।
তাকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান এবং যথাসময়ে টিকা প্রদান করুন ।
* ভাল কাজের অভ্যাস গড়ে তুলুন ।
* ছেলে মেয়ে শিশুর মধ্যে পার্থক্য করবেন না ,
* আপনার নেতিবাচক আচরন আপনার কন্যাটির মানসিক বিকাশে বাধা হতে পারে ।
* আপনি তাকে অনেক ভালবাসেন , তাকে নিয়ে আপনি গর্বিত এটা তাকে বারবার জানান এবং
বলুন সে পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ।

শিশুর মানসিক বিকাশে বাবা মায়ের ভালবাসার, সান্নিধ্যের কোন বিকল্প নেই । পরিবারে মাকে নির্যাতিত হতে দেখলে শিশু নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে । শিশুর বাবা মায়ের বন্ধুত্তপূর্ণ ও মধুর সম্পর্ক শিশুর মধ্যে পরম সুখ ও নিরাপত্তাবোধ জাগায় ।
বাবাকেও শিশুর মানসিক বিকাশে ভুমিকা রাখতে হবে ।

আপনার সন্তানের যোগ্যতাগুলো বিকশিত করুন এবং যেসব কাজের মাধ্যমে তার ব্যক্তিত্ব তৈরি হবে সেগুলোর সঙ্গে তাকে সংশ্লিষ্ট করুন। এক্ষেত্রে ধৈর্য্য ও সহনশীলতার প্রয়োজন হবে। কেননা, শিশুরা প্রথম বারই কোনো কাজ নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করতে পারে না। তাই তার চেষ্টা পুরোপুরি সফল না হলেও তাকে ভৎর্সনা করা থেকে বিরত থাকুন। সাহস দিন ও শেখাতে থাকুন।আমরা ছোট থেকেই ঘরের কাজে অভ্যস্ত ছিলাম। এটাকে আমরা প্রতিদিনের জীবনের অংশ বলেই গ্রহণ করেছিলাম। এতে যেমন বড়দের অনেক সহযোগিতা হয়েছে তেমনি আমরাও ওই কাজগুলো সঠিকভাবে করতে শিখেছি। পরবর্তী জীবনে এটা আমাদেরকে অনেক সুফল দান করেছে।

আমরা সবাই আজ একটু ভেবে দেখি,সন্তান জন্মের পরপরই মা,বাবা ডাক শোনতে বড় উৎফুল্য হয়ে অপেক্ষা করি, কত মধুর লাগে সেই ডাক,সেই মুহূর্তটুকু । কিন্তু যখন সেই সন্তান একটু বেশী দুষ্টুমি বা বিরক্ত করে ঠিক তখনি আমাদের দায়িত্ব ভুলে বকাঝকা শুরু করি।ভুলে যাই একটু আগেইতো অপেক্ষা ছিলাম কখন সে আব্বু/আম্মু ডাকবে।একটু ভেবে দেখেছেন কি আপনার দমক,আপনার চোখ রাঙ্গানী,আপনার রাগের কর্কশ চেহারার মানসিক প্রেসার নেওয়ার মত সে সত্যি কি প্রস্তুত আছে ? শিশুর এই সময়টা খুব স্পর্শকাতর আপনি যা বলবেন সে তাই শিখবে, যেমন সন্তানকে আমরা আদর করে বলি, বলতো আব্বু, সে বলে আব্বু, বলতো আম্মু সে বলে আম্মু, বলতো আল্লাহু ,সে বলে আল্লাহু, সেই সময়টা শিশুদের যাই বলবেন তারা তাই অতি সহজে তাদের মাথা বল্টে জমা করে নিবে । তাই সেই সময়টা তার ব্যাক্ত্বিত গঠনের উত্তম সময় । তাই আমাদের সেই সময়কে অবহেলা না করে সুন্দর করে ইসলামিক চিন্তাধারা, ইসলামিক মূল্যবোধ,সুন্দর জীবন আদর্শ,ভাল,মন্দের বিষয় একটু একটু করে শিখিয়ে দেয়া । ইনশা আল্লাহ্‌ দেখবেন সেই শিশু যখন নিজেকে বা আশে পাশের পরিবেশ সম্পর্কে বুঝতে শিখবে, ঠিক তখন তার সেই গঠন সময়ের শিক্ষা গুলোও কাজে লাগাতে চেষ্টা করবে ।
তাই আসুন,আমরা যারা সন্তানের দায়িত্ব নেই,তারা যেন সযত্বনে, নিজ দায়িত্বে, খুব গুরুত্ব সহকারে সন্তানকে ভাল,মন্দের দিক ও জীবন গঠনের রুচিশীল ও ব্যাক্তিত্বশীল বিষয় গুলো শিখিয়ে দেই ।

প্রতিটি অভিভাবক একজন মানবিক মানুষ গড়ার শিক্ষক। শিশুর জন্মদান শুরুর প্রক্রিয়া থেকে তাদের শিক্ষকতার কাজ অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে ভালোবাসার মাধ্যমে করা উচিৎ। শুধু বাচ্চার জন্ম দিয়ে পিতা মাতা হলেই হলো না। অনেকে আবার মনে করেন বাচ্চা দেখাশোনার কাজ কেবল মা করবে। এটাও ভুল ধারনা। বাবার যথেষ্ট দায়িত্ব থাকে একটি বাচ্চার জন্য।

আপনার বাচ্চা কে যদি জিজ্ঞেস করেন। তুমি কাকে বেশী ভালোবাস বাবাকে না মাকে? বাচ্চার মনের উপর ভীষণ রকম চাপ পরার মতন একটি প্রশ্ন। বাচ্চা কিছুতেই বলতে চায় না। কাকে বেশী ভালোবাসে কিন্তু জোর করে কথাটা শুনতে ইচ্ছুক বাবা বা মা। আমাকে একটু বেশী ভালোবাসুক অন্যজনের চেয়ে এমনটা চান। আমরা খুব আমিকে পছন্দ করি। আমার সব কিছু অনেক ভালো, সবার উপরে। এই ভাবনায় বাচ্চাকে আমাদের নিজেস্ব সম্পত্তি ভাবি। সে একটা আলাদা ব্যাক্তি। নিজের সন্তান আপন ইচ্ছা অনিচ্ছার 'আমি' এটা ভাবতে বা মানতে বড় কষ্ট হয়। মানি না, জানিও না অনেক সময়।

কিছু হলেই ইচ্ছে মতন বকা মার দিতে এতটুকু কাপর্ণ্য করা হয় না। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন। কতটা প্রভাব এতে বাচ্চার মনের উপর পরে। নিজের ছোটবেলার কথা ভেবে দেখুন। উন্নত দেশগুলোতে বাচ্চাকে না মারার জন্য আইন আছে। অনুন্নত দেশের অভিভাবক উন্নত দেশে এসে নানা রকম বিপত্তির মধ্যে পরেন নিজের সন্তানকে মারার কারণে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় অনেক সময়। জেলে থাকতে হয়। বাচ্চারা জানে তাদের সাহায্যের জন্য স্কুলে শিক্ষককে বলতে পারে বা জরুরী বিভাগে ফোন করে সাহায্য পেতে পারে।

তবে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চারা সহ্য করে যায় বাবা মা এর বকাঝকা, মার। বাবা মার বিরুদ্ধে সচরাচর তারা নালিশ করতে চায় না। এটা খুব ভেবে চিন্তে তারা করে না, তাদের ছোট্ট মনে কিভাবে যেন এই অনুভুতির জন্ম হয় তারা বাবা মাকে ভালবাসে। কিন্তু অনেক সময় বাচ্চার গায়ে মারের দাগ দেখে শিক্ষক বাচ্চার কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেন।

তবে ছোট মনে প্রতিক্রিয়া গুলো জমতে থাকে পলির পরে পলি পরে। তারা সুযোগ পেলে নিজেদের উপর অত্যাচারের প্রতিফলন ঘটায় ছোট ভাই বোন থেকে কাজের লোক যারা চিরকাল অবহেলিত তাদের থেকে বন্ধুবান্ধবের উপর ধীরে ধীরে স্বভাবটা মজ্জাগত হয়ে উঠে বিস্তার বাড়তে থাকে অত্যাচার করার। যদি অভিবাবক সঠিক ভাবে সঠিক সময়ে সেদিকে নজর না দেন।

বাবা মা দুজন যখন ঝগড়া করেন। তার এক বিশাল প্রতিক্রিয়াও বাচ্চাদের মনজগতে বাসা বাঁধে। তারা অসহায় হয়ে উঠে মনে মনে। এবং নিজেরাও অবচেতন ভাবে ঝগড়া করার বিষয়টি শিখে যায়।

মনের মধ্যে পরিসুদ্ধ হওয়ার মানবিক ফিলটার সব সময় মানুষ হওয়ার পথে এগিয়ে নিয়ে যায় কিন্তু পরিবেশের প্রভাব সেই পরিশুদ্ধিকরণ প্রথা অকেজো করে ফেলে। ভয়ংকর বিভৎস চিন্তায় নিমজ্জিত করে ফেলে। যার ফলে এক সময় তার প্রকাশ হয় ভয়াবহ ভাবে। আর ভালোবেসে বাচ্চাদের হাতে যুদ্ধ খেলা (ফাইটিং গেইম), বন্দুক ইত্যাদি তুলে দিয়েও তাদের ভয়ঙ্কর হওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়া হয় অবচেতন ভাবে অনেক সময়।

আপনার বাচ্চাকে কি প্রচলিত প্রথার গড্ডালিকায় ভেসে যেতে দিবেন নাকি তাকে সুস্থতার ও ইসলামী চিন্তা চেতনার বিকাশ হওয়ার সুযোগ দিবেন। তা বাচ্চা জন্ম দেয়ার আগেই ভাবুন। নয়তো শুধু বাবা মা হওয়ার জন্য বাচ্চা জন্ম না দেয়াই ভালো।

খেলার চলে সেই যে মাকড়শা ভীতি ওর মাঝে ঢুকে গেল। অনেক কিছু বেশী বুঝলেও মাকড়শা ভীতি আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

তাই বাচ্চাদের মনে কখন কোনটার প্রভাব কিভাবে পরে সেদিকে প্রখর খেয়াল রাখা দরকার অভিবাবকের।

বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে সব বাচ্চারা অযত্নে অবহেলায় বড় হয় তাদের মধ্যে নানান রকম বিকৃত মনোভাব। অন্য বাচ্চাদের অবদমন করার চেষ্টা, রাগ, বদরাগ, বা অবদমিত প্রতিহিংসা নিয়ে বড় হয়।

বাচ্চাদের ভালোবাসা মানে বাচ্চাদের খেলনা, কাপড়, খাওয়া যখন যা চাইল তা দিয়ে স্পয়েলড করাটাও ঠিক না আপনার আছে বলেই। অনেক অভিভাবক আবার আছে বলে দেখানোর জন্য বা না বুঝেই এমন অনেক কিছু দিয়ে বাচ্চাদের মাথায় বড়াই অহংবোধ ঢুকিয়ে দেন।

আপনি যখন গল্প করছেন বন্ধুর সাথে বা অন্য কারো সাথে দেখবেন বাচ্চা অনেক বেশী তখন আপনাকে ডাকছে। আপনি বলবেন বড্ড বিরক্ত করছে। সে কিন্তু আসলে অসহায় অনুভব করছে আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। বাচ্চা বড় করে তুলার সময়টায় নিজের অনেক বিষয় আসলে বাদ দিয়ে বাচ্চার জন্য সময় করতে হবে। অনেকে আবার টিভি চালিয়ে দিয়ে বাচ্চা বসিয়ে রাখেন সেই ছবি মনে কি প্রতিক্রিয়া করছে তার খবর নিয়ে দেখেছেন?

সবচেয়ে বড় কথা হলো আপনি যাই করুন বাচ্চাদের জন্য সময় বের করুন। তাদের সাথে নানান বিষয়ে কথা বলুন। বাচ্চাদের অসংখ্য কৌতুহলগুলো ভালোবাসা দিয়ে মিটান। গল্প বলেন। ইতিহাস, সংস্কৃতি, পৃথিবী নিয়ে তাদের জ্ঞানের সীমা বাড়িয়ে দেন যেন তারা মানবতায় ভালোবাসায় মানবিক হয়ে উঠতে পারে। যতদিন সম্ভব বাচ্চার সাথে সময় কাটান তাদের মানুষ করে তুলতে। এক সময় সময়ের প্রয়োজনে তারা দূরে চলে যাবে কিন্তু আপনার ভালোবাসা তাদের ঠিক আপনার কাছে রাখবে আর তাদের সফলতা আপনাকে দিবে আনন্দ্। হবেন সার্থক পিতামাতা।

কারন উত্তম পরিবারের অন্যতম প্রধান নিদর্শন হ’ল উত্তম সন্তানাদি। এদের মাধ্যমেই পরিবারের আদর্শ ও বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়। পরিবারের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি বিকশিত হয়। তাই সন্তানকে শিশুকাল থেকেই ইসলামী কৃষ্টি-কালচার অনুযায়ী গড়ে তোলা পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের উপর অপরিহার্য দায়িত্ব। বন্ধুকে দেখে যেমন বন্ধুকে চেনা যায়। তেমনি সন্তানকে দেখে বাপ-মাকে চেনা যায়। অতএব এ বিষয়ে পিতা-মাতা যেমন সজাগ হবেন, সন্তানদেরও তেমনি সজাগ থাকতে হবে। যেন নিজেদের কোন ভুলের জন্য বাপ-মা ও বংশের বদনাম না হয়। পরিবারে একজন বদনামগ্রস্ত হলে পুরা পরিবার ও বংশ বদনামগ্রস্ত হয়। এই বদনাম যুগ যুগ ধরে চলে। যার অভিশাপ পোহাতে হয় পরবর্তী বংশধরগণকে। একজনের অন্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সকলে। সেকারণ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে উত্তম পরিবার গড়ার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। অবশ্য আল্লাহর বিধান মানতে গিয়ে পারিবারিক রসম বর্জন করায় কোন বদনাম নেই। বরং সেটাই সুনাম। কিন্তু অনেকে এটা বুঝতে পারে না। বরং বাপ-দাদা ও পারিবারিক রেওয়াজের দোহাই দিয়ে কুফর এবং শিরক ও বিদ‘আতের পাপে ডুবে থাকে। এতে তাদের ইহকাল রক্ষা হলেও পরকাল ধ্বংস হয়।
আল্লাহ বলেন, قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالْأَخْسَرِينَ أَعْمَالًا- الَّذِينَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُونَ صُنْعًا- أُولَئِكَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِآيَاتِ رَبِّهِمْ وَلِقَائِهِ فَحَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فَلَا نُقِيمُ لَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَزْنًا ‘তুমি বল, আমি কি তোমাদের খবর দিব ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে’? ‘পার্থিব জীবনে যাদের সকল কর্ম নিস্ফল হয়েছে। অথচ তারা ভাবে যে, তারা সৎকর্ম করেছে’। ‘ওরা হ’ল তারাই, যারা তাদের প্রতিপালকের আয়াত সমূহ ও তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎকে অস্বীকার করেছে। ফলে তাদের সকল কর্ম বরবাদ হয়েছে। অতএব আমরা ক্বিয়ামতের দিন তাদের জন্য মীযানের পাল্লা খাড়া করব না’ (কাহফ ১৮/১০৩-০৫)।
পরিবারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হ’ল সন্তান। সন্তানকে শিশু অবস্থায় গড়ে না তুললে বড় অবস্থায় খুব কমই ফেরানো যায়। এজন্যই ইসলামের বিধান, مُرُوا أَوْلاَدَكُمْ بِالصَّلاَةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرِ سِنِينَ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِى الْمَضَاجِعِ ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের সাত বছর বয়সে ছালাতের নির্দেশ দাও। দশ বছর বয়সে এজন্য প্রহার কর এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দাও’।[34]

কেবল শিশুরাই নয়, বরং পরিবারের সবাই যেন নিয়মিত ছালাতে অভ্যস্ত হয়, সে বিষয়ে আল্লাহ বলেন, وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلاَةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لاَ نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَحْنُ نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى ‘তুমি তোমার পরিবারকে ছালাতের আদেশ দাও এবং এর উপর তুমি নিজে অবিচল থাক। আমরা তোমার নিকট রিযিক চাই না। বরং আমরাই তোমাকে রিযিক দিয়ে থাকি। আর শুভ পরিণাম কেবল আল্লাহভীরুদের জন্য’ (ত্বোয়াহা ২০/১৩২)। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, অর্থ-সম্পদে ধনী হওয়ার চাইতে আল্লাহভীরুতায় ধনী হওয়াটাই আল্লাহর কাম্য। নিঃসন্দেহে এর মধ্যে রয়েছে মানবতার সর্বোচ্চ মর্যাদা। নইলে ধন-সম্পদ তো চোর-গুন্ডাদেরই বেশী। কিন্তু সমাজে তাদের মর্যাদা কোথায়?

আল্লাহ্‌ সবাইকে হেদায়েত ও রহমত দান করুন ।
আল্লাহ্‌ তুমি সর্ব ক্ষমতার অধিকার ও সঠিক বিচারকর্তা ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪১

মহা সমন্বয় বলেছেন: আল্লাহ্‌ সবাইকে হেদায়েত ও রহমত দান করুন ।
আল্লাহ্‌ তুমি সর্ব ক্ষমতার অধিকার ও সঠিক বিচারকর্তা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.