![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মহান আল্লাহ্ কোথায় রয়েছেন?
আল্লাহর কি কোন আকার আছে ? নাকি তিনি নিরাকার ?
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের আল্লাহ্ সম্পর্কে বিশ্বাস হল মহান আল্লাহ্ সর্বস্থানে বিরাজমান এবং তিনি নিরাকার। অথবা তিনি মুমিন বান্দার ক্বলবের ভিতর অব্স্থান করেন, আর মু‘মিন বান্দার ক্বলব বা অন্তর হলো আল্লাহর আরশ বা ঘর। অথচ মহান আল্লাহ্ সম্পর্কে এই ধরণের বিশ্বাস পোষণ করা সহিহ আকীদাহ্ বিরোধী।
স্রষ্টা সম্পর্কে যদি আপনি সঠিক ধারণাই না পান তবে তাঁর প্রতি কিভাবে ঈমান নিয়ে আসবেন?
বস্তুত মহান আল্লাহ সপ্তআসমানের উপর আরশে আযীমের উপর অবস্থান করেন। আল্লাহর কথাই এর দলীল। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
﴿الرَّحْمَنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَى﴾
অর্থ: ‘পরম দয়াময় আরশের উপর সমুন্নীত রয়েছেন। [সূরা ত্বা-হা: ৫]
মহান আল্লাহ আসমানের উপর বা আরশে আযীমের উপর সমুন্নত আছেন, এই অর্থে কুরআন মাজীদের একাধিক আয়াত রয়েছে। যেমনঃ সূরা ত্বহা-৫, ইউনুস-৩, রা’দ-২, ফুরক্বান- ৫৯, সাজদাহ্-৪, হাদীদ-৪ ।
অতএব যারা দাবী করেন যে, মহান আল্লাহ সর্ব জায়গায় বিরাজমান, অথবা তিনি মুমিন বান্দার ক্বলবের ভিতর অব্স্থান করেন, আর মু‘মিন বান্দার ক্বলব বা অন্তর হলো আল্লাহর আরশ বা ঘর। তাদের এ সমস্ত দাবী সবই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
অতএব বুঝা গেল আল্লাহ্ সর্বস্থানে বিরাজমান নন। বরং তিনি আরশে রয়েছেন।
আসুন এখন বুঝে নিই -আল্লাহ্ সর্বস্থানে বিরাজমান একথাটির আসল অর্থ কি?
বস্তুত এই কথাটির আসল অর্থ হচ্ছে-
আল্লাহ্ রয়েছেন আসমানে তাঁর আরশে এবং তাঁর জ্ঞান সর্বাস্থানে পরিব্যপ্ত , তার জ্ঞান থেকে কোন স্থান বাদ নেই। তাঁর ক্ষমতা অসীম ও সর্বব্যাপী। তিনি সব কিছু দেখেন ও শোনেন। কোন কিছুই তাঁর জ্ঞানের বাইরে নয়। তিনি আরশে আ’যীমে থেকেই সব কিছু সুচারুরূপে পরিচালিত করেন। তিনি ঐ আরশ থেকে নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল নিখুঁতভাবে পরিচালনা করেন। এবং এতে তাঁর কোন অসুবিধা হয় না। এটা আমাদের কাছে খুবই অবাক লাগতে পারে যে একজন সত্ত্বা কিভাবে সাত আসমানের উপর আরশে অবস্থান করে সমগ্র নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল নিখুঁতভাবে পরিচালনা করছেন!
এর উত্তরঃ তিনিই সেই আল্লাহ্, তিনিই সেই মহাশক্তিশালী সত্ত্বা যার জন্য এটা কোন সমস্যাই না।
আল্লাহ্ কে, তাঁর ক্ষমতা কতটুকু? তাঁর পরিচয় কি?
আল্লাহ্ নিজেই নিজের পরিচয় দিয়েছেন কুর’আনের বিভিন্ন জায়গায়। এখানে আমি কয়েকটা উদ্ধৃত করছি।
“[হে রসূল] আপনি বলুন, “আল্লাহ্ এক ও অদ্বীতিয়। আল্লাহ্ সব ধরণের অভাব থেকে মুক্ত। তিনি [সন্তান] কাউকে জন্ম দেননা এবং কারো থেকে জন্মও নেননি। তাঁর সমতুল্য কিছুই নেই”। [সুরা ইখলাসঃ ১১২/১-৪]
“আল্লাহ্ হচ্ছেন সেই সত্ত্বা যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ্ নেই। তিনি চিরঞ্জীব ও শাশ্বত-সুপ্রতিষ্ঠিত সত্ত্বা। তন্দ্রা ও নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করেনা। আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা সবই তাঁর। কে আছে এমন যে তাঁর দরবারে তাঁর অনুমতি ব্যতীত সুপারিশ করতে পারে? তাদের [তাঁর বান্দাদের] সামনে এবং পেছনে যা আছে তা সবই তাঁর জানা। তাঁর জ্ঞাত বিষয়সমূহের মধ্য হতে কোন বিষয়ই তারা [তাঁর বান্দারা] আয়ত্ত্বাধীন করতে পারেনা, শুধু তা ছাড়া যা তিনি নিজেই ইচ্ছে করে জানান। তার রাজত্ব সমগ্র আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীকে বেস্টন করে আছে। আর এসবের রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে তিনি কখনো ক্লান্ত হয়ে পড়েন না। বস্তুতঃ তিনি এক মহান-সুউচ্চ শ্রেষ্ঠতম সত্ত্বা।” (সুরা বাকারা, ২/২৫৫)
“বরকতময় হচ্ছেন সেই সত্ত্বা যার হাতে রয়েছে সমস্ত রাজত্ব-কর্তৃত্ব। আর তিনি প্রতিটি বিষয়ের উপরই কর্তৃত্ববান। তিনিই মৃত্যু এবং জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে করে তিনি তোমাদের মধ্যে কারা সৎকর্মশীল তা যাচাই করে দেখতে পারেন। তিনি সর্বোজয়ী-শক্তিমান এবং অত্যন্ত ক্ষমাশীল।” [মুল্ক, ৬৭/১-২]
“নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিশালতার অধিকারী ও সর্বজ্ঞ।” [আল-বাকারা, ২/১১৫]
“তিনি-ই আল্লাহ্; তাকে ব্যতিত উপাসনা করার যোগ্য আর কেউ নেই; গোপন ও প্রকাশ্য সব কিছুই তিনি জানেন; তিনি দয়াময় ও করুণাময়। তিনি-ই আল্লাহ্ যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই; তিনি সব ভুল-ত্রুটির উর্ধ্বে থাকা সার্বভৌমত্বের অধিকারী [বাদশাহ্]; তিনি পুরোপুরি শান্তিদাতা; নিরাপত্তা দাতা; সংরক্ষক; সর্বজয়ী, নিজের নির্দেশ বিধান ও শক্তি প্রয়োগে কার্যকরকারী এবং স্বয়ং বড়ত্ব গ্রহনকারী। লোকেরা তার সাথে আর যে সমস্ত সত্ত্বাকে অংশীদার করে তিনি তা থেকে মুক্ত ও পবিত্র। তিনি আল্লাহ্ই যিনি সৃষ্টি পরিকল্পনাকারী ও এর বাস্তব রূপদানকারী এবং সে অনুযায়ী আকার-আকৃতি রচনাকারী। তাঁর জন্যই উত্তম নামসমূহ্। আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সব কিছুই তাঁর প্রশংসা করে; আর তিনি মহা-পরাক্রান্ত ও অতীব প্রজ্ঞাময়।” [আল-হাশর, ৫৯/২২-২৪]
“তাঁর অসংখ্য নিদর্শনের মধ্যে এও রয়েছে যে, আকাশ এবং পৃথিবী তাঁরই হুকুমে সুপ্রতিষ্ঠিত রয়েছে। পরে যখনই তিনি তোমাদেরকে মাটি হতে আহবান করবেন, তখন শুধুমাত্র একটি আহবানেই তোমরা বের হয়ে আসবে। আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা সবই তাঁর গোলাম। সবকিছুই তাঁর নির্দেশের অধীন। তিনিই সৃষ্টির সূচনা করেন আবার তিনিই এর পূনারাবৃত্তি করবেন। আর এটা করা তাঁর পক্ষে সহজতর। আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীতে তাঁর জন্যই রয়েছে সর্বোত্তম গুনাবলী। তিনি মহাপরাক্রমশালী ও সুবিজ্ঞ।” [আর-রূম, ৩০/২৫-২৭]
এবার আল্লাহ্র আকার সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোকপাত করছিঃ
আল্লাহর চেহারা অর্থাৎ মূখন্ডল আছে। আল্লাহর কথাই এর দলীল ।
﴿كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ ـ وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ﴾
অর্থ: ‘কিয়ামতের দিন ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে (হে রাসূল! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার মহিমাময় ও মহানুভব পালন কর্তার চেহারা অর্থাৎ আল্লাহর সত্তাই একমাত্র বাকী থাকবে। (আর-রাহমান: ৩৬-৩৭)
মহান আল্লাহর হাত আছে, আল্লাহর কথাই এর দলীল।
﴿قَالَ يَا إِبْلِيْسُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ ﴾ (ص:৭৫)
অর্থ: ‘আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস ! আমি নিজ দুহাতে যাকে সৃষ্টি করেছি, তাকে সিজদা করতে তোমাকে কিসে বাঁধা দিল? (ছোয়াদ:৭৫)
মহান আল্লাহর চক্ষু আছে। আল্লাহর কথাই এর দলীল। যেমন তিনি হযরত মূসা (আঃ) কে লক্ষ্য করে বলেছিলেন:
﴿وَأَلْقَيْتُ عَلَيْكَ مَحَبَّةً مِّنِّيْ وَلِتُصْنَعَ عَلَى عَيْنِيْ﴾ طـه :৩৯)
অর্থ:‘আমি আমার নিকট হতে তোমার উপর ভালবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম, যাতে তুমি আমার চোখের সামনে প্রতিপালিত হও। (ত্বা-হা: ৩৯)
মহান অল্লাহ শুনেন এবং দেখেন। আল্লাহর কথাই এর দলীল। যেমন তিনি বলেন,
﴿ إِنَّ اللهَ سَمِيْعٌ بَصِيْرٌ﴾ (المجادلة
অর্থ:‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা শ্রবণ করেন ও দেখেন। (আল-মুজাদালাহ: ১)
তবে মানুষের চেহারা, হাত, পা, কানে শুনা ও চোখে দেখা, মহান আল্লাহর চেহারা, হাত, পা, কানে শুনা ও চোখে দেখা ইত্যাদির মধ্যে অবশ্যই বিরাট পার্থক্য রয়েছে। মহান আল্লাহর কথাই এর দলীল। যেমন তিনি বলেন,
﴿لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيْعُ البَصِيْرُ﴾ (الشورى: ১১)
অর্থ:‘আল্লাহর সাদৃশ্য কোন বস্তুই নাই এবং তিনি শুনেন ও দেখেন (শূরা:১১)।
অর্থাৎ তার সৃষ্টির কোন কিছুর সাথে তার কোন সাদৃশ্য নেই।
সুরা ইখলাসের ৪ নং আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেনঃ
"তার সমতুল্য কিছুই নেই।"
যদি কেউ বলেন মহান আল্লাহ্র হাত কেমন? তবে আমরা বলব জানি না।
যদি কেউ বলেন মহান আল্লাহ্র চেহারা কেমন? তবে আমরা বলব জানি না।
যদি কেউ বলেন মহান আল্লাহ্র পা কেমন? তবে আমরা বলব জানি না।
শুধু একটা কথাই বলব- "ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ" ("তার সমতুল্য কিছুই নেই।")
মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে পবিত্র কুরআনে যতটুকু জানিয়েছেন আমরা শুধু ততটুকুই জানি। এর বেশি আমরা জানি না। এবং এর সন্ধানও করি না। যদি এর বেশি জানার মধ্যে কোন কল্যাণ থাকত তবে মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে অবশ্যই জানাতেন।
২| ২৪ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৩৪
মুদ্দাকির বলেছেন: ভালো লাগল +++++++
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।