নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই রকম পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি যেখানে সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখা হবে। যেখানে থাকবে না কোন পাপ পঙ্কিলতা।

ইসিয়াক

সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডায়েরীর পাতা থেকে ১

৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩৮


অন্যবার আমি খুব একটা রোজা রাখিনা। স্কুল খোলা থাকে বিশ বাইশ রোজা পযর্ন্ত ,রোজার মধ্যে রোজা রেখে স্কুল, টিউশনি, কোচিং চালিয়ে নেয়া খুব কষ্টকর হয় আমার জন্য।

তাছাড়া খিদে পেটে মেজাজ ধরে রাখাটাও একটা চ্যালেঞ্জ। এবার কিন্তু সব হিসেব বদলে দিয়েছে করোনা ভাইরাস।প্রথম থেকেই সবগুলো রোজা আছি এখন পর্যন্ত। যা হোক দেখি কয়টা রোজা রাখতে পারি। খুব বেশি পারবোনা সেটা আমি ভালোই জানি কারণ আমি খিদে খুব একটা সহ্য করতে পারি না। এটা একটা অযুহাত হয়তো কিন্তু এই অযুহাত দেখিয়ে রোজা রাখায় বিরতি দিয়েছি বহুদিন।

আর সত্যি কথা বলতে আমি একজন গান, মুভি, বই পাগল মানুষ। আমার কাজের বাইরে অবসরগুলো কাটে এগুলো নিয়ে সাথে আবার বাগানেরও শখ আছে। বেশ কেটে যায় সময়। ভালো লাগে খুব ভালো লাগে। আর বাকীটা সময় বাচ্চাদের সাথে কাটাতে আমার খুব ভালো লাগে।

সামাজিকভাবে আমি একজন অসামাজিক ব্যক্তি। বেশি লোকের সাথে মিশতে পারি না কোন দিনই।কারো বাড়ি যাই না খুব একটা। বিয়ে জন্মদিন এসব সাধারণত এড়িয়ে চলি।সবচেয়ে বড় কথা কারো সাথে একটা সম্পর্ক আমি বেশিদিন আমি টেনে নিয়ে যেতে পারিনা । আমি জানি এটা আমার দূর্বলতা ও ব্যর্থতা।কিন্তু এও জানি সবমানুষ এক রকম হয় না। আমি না হয় ব্যতিক্রমই হলাম।

অনেক সময় দেখা গেলো কেউ আমাকে বেশি রকমের আপন করে চাইছে। আমি নিজে থেকে সেখান থেকে সরে গেছি হঠাৎ করেই তাকে খানিকটা আহত করে। অভিমানি বালকের মতো। আসলে আমার অভিমানটা বরাবরই বেশি।সেই কারনে আমার জীবনে বন্ধু বা আত্নীয় স্বজন কারো সাথেই সম্পর্ক আমার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। একে কি দুঃখ বিলাস বলে? হয়তো।

অনেক সময় আমার আমিকে খুব স্বার্থপর মনে হয়।কে জানে? এতশত গভীর ভাবে ভাবিনি কখনো।আর ভাবনার সময়ইবা কই।যখন যা মনে আসে তখন তাই করি। মা ভালো বলতেন তোর কপালে ভবিষ্যতে সীমাহীন দুঃখ লেখা আছে। মা ভাগ্য গননা করতে পারতেন কিনা জানিনা তবে মায়ের কথা অনেকাংশে ফলে গেছে। তবে আমি সেই সমস্ত দুঃখগুলোকেও কৌশলে আয়ত্বে এনেছি। তাকে উপভোগ করেছি। আসল কথা হলো সুখ ও যেমন আমি উপভোগ করি দুঃখও তেমনি উপভোগ করি। ব্যপারটা মজার না?

সবসময় আমার মনে হয় খামাখা খামাখা শোকতাপ করে কোন লাভ আছে নাকি?জীবন তো দুদিনের।বাঁচলে হেসে খেলে বাঁচতে হবে।

যা হোক আজ সেহেরি খেয়ে আযান দিতেই প্রার্থনা সেরে ঘুমিয়ে পড়ি অন্য দিনের মতো।অনেকখানি বেলা হলেও আমার ঘুম ভাঙেনি, যখন ভাঙলো তখন কড়কড়ে রোদ উঠে গেছে । জানালা বেয়ে পুরো রোদ আমার মুখে। মুখটা গরম হয়ে উঠতেই আমি ঝটপট ঠেলে উঠি। বাইরে তখন দারুন রোদ ঝলমলে আকাশ। হালকা বাতাস বইছে চারপাশে। মানুষ বা অন্যান্য যান্ত্রিক শব্দের কোন বাড় বাড়ন্ত নেই্ বেশ প্রশান্ত চারপাশটা।
খুব ঝরঝরে লাগছে নিজেকে।

আমি ব্যলকনিতে চেয়ার পেতে আরাম করে বসলাম। আমার ব্যলকনি ঘেসে চমৎকার একটা দিঘী আছে। দীঘির নামটা বেশ সুন্দর নামটা হলো পন্ডিত পুকুর। বেশ আগে এ এলাকা শ্মশান ঘাট ছিলো। এখন অবশ্য তার কোন চিহ্নই নেই চারপাশে সব বিশাল বিশাল বাড়ি। কালের আবর্তে সব হারিয়ে পুকুরটাই নীবর সাক্ষী হয়ে রয়ে গেছে।
জল টলমল দীঘি আমার বরাবরই আকর্ষণ করে।

সামনে খোলা নীল আকাশ। রোদটাও বেশ সহনীয়।আকাশের নীল আমায় মুগ্ধ করে । গাছের চকচকে পাতা আমায় মুগ্ধ করে। জলের টানে আহারের খোঁজে অনেক পাখী আসে এখানে ।আমি মুগ্ধ হয়ে দেখি চোখ মেলে, উপভোগ করি পাখীদের দুষ্টুমি আর ওড়াওড়ি।

কত রকমের পাখীযে আসে পানকৌড়ি মাছরাঙা, দাঁড়বক,কুঁজ বক।এরা সবাই মাছের লোভে আসে।কেউ কচুরিপানাতে লুকিয়ে থাকে কেই গাছের পাতার ফাকে লুকিয়ে থাকে। শিকার ধরবে বলে। এই সব পাখীদের লুকোচুরি খেলা আমার বেশ লাগে। মাঝে মাঝে যখন লোভী শিকারী আসে ওদের লক্ষ করে গুলি ছোড়ে আমার খুব খারাপ লাগে। বুকটা ভেঙে যায়। কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারি না। ওরা নেতা টাইপের লোক।আমি ছাপোষা সাধারণ মানুষ। পরে আমার না কোন ক্ষতি করে দেয় তারা।এদেশে এই শ্রেনি লোকেদের কদর বেশি। যা হোক এসব কথা বলে লাভ নেই।

এছাড়াও বিভিন্ন পাখী আসে চড়ুই, টুনটুনি, দোয়েল তো আছেই আরো আসে ফিঙে, টিয়া বুলবুলিরাও।

চড়ুইগুলো বড্ড দুষ্টু। শুধু কিচির মিচির করে। দোয়েল শিষ দেয় মধুর স্বরে ।কখনো কখনো আবার ঘুঘুও ডেকে ওঠে। ঘুঘুর ডাক সবসময় মন কেমন করে।

একটা পানকৌড়ি আমার বন্ধু ছিলো প্রতিদিন ওকে দেখতে দেখতে কেমন যেনো মায়া জন্মে গিয়েছিলো ওর প্রতি।ওর ডুব সাঁতার, ডুব দিয়ে শিকার ধরা,রোদে গা শুকানো। গা শুকানো হয়ে গেলে নিজেকে পরিপাটি করে সাজানো ।

সাধারণত পানকৌড়িরা সবাই এক রকমের দেখতে হয়। একে আমি চিনতাম আলাদা করে কারণ এর গলার কাছে সাদা কিছু পালক ছিলো যা অন্যদের থেকে একে সহজেই আলাদা করা যেতো ।

আজ কদিন পানকৌড়িটা আসছে না।ওকে না দেখতে পেরে আমার খুব মন খারাপ হয়। কি হয়েছে কে জানে কোন দিন হয়তো জানাও যাবে না ।হয়তো অসুখ করেছে বা কোনো শিকারীর শিকার হয়েছে। লোভী মানুষের তো পৃথিবীতে অভাব নেই।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৫৬

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




ইসিয়াক ভাই,
এ ধরনের বন্য পাখিতে ১০০ গ্রাম মাংস হয় কিনা সন্দেহ কিন্তু পাখি হত্যা করে খাবার জন্য ১৭ কোটি মানুষ ঠিকই তৈরি হয়ে আছেন। আগামী কাল শুক্রবার - আসলে এখন প্রতিদিনই শুক্রবার। পাবলিক রিলেশান কম থাকা ভালো - তাতে জীবনে ঝামেলা কম থাকে, নিজেকে সময় দেয়া যায়। পোস্টে +++




৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:০৫

ইসিয়াক বলেছেন: ঠিকই বলেছেন প্রিয় মাহমুদ ভাই,পাবলিক রিলেশন কম বলেই আমি নিজে সময়গুলো নিজের মতো করে উপভোগ করতে পারি।
চমৎকার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম ।
নিরন্তর শুভকামনা।

২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: অকপটে কি সুন্দর নিজের মনে রকিথা গুলো বলে গেলেন।

০১ লা মে, ২০২০ সকাল ১০:০৮

ইসিয়াক বলেছেন: আপনার ভালো লাগা মানে আমার কাছে অনেক কিছু এটা মানেন কিনা তা জানিনা।
মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।
শুভকামনা।

৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৫৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




ইসিয়াক ভাই, আমাদের গ্রামের বাড়ি এলাকায় সড়কে সড়কে সকল পুল কালভার্টের নিচে ইটের ফাঁকে ফাঁকে ঝাকে ঝাকে চড়ুই পাখি বাসা করে থাকতো। এখন দুর্বিন দিয়ে চড়ুই পাখি খোঁজতে হবে এমন অবস্থা হয়েছে। কান্ডজ্ঞানহীন মানুষ সব চড়ুই পাখি খেয়ে শেষ করেছে। পাখি হত্যার মতো অমানবিক কাজ যারা করছেন তারাই সমাজের ভারসাম্য নষ্ট করছেন দিনকে দিন।


০১ লা মে, ২০২০ সকাল ১০:১২

ইসিয়াক বলেছেন: আসলে আমরা মানুষেরা বড্ড বেশি নিজেকে নিয়েই ভাবি। এভাবে দিনে দিনে কত কিছুই যে হারিয়ে যাচ্ছে । ভাবতে মনটা খারাপ হয়ে যায়।

৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৪৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমার অবাক লাগছে এমন পরি্বেশ শহরের কোথায় আছে?
আমার গ্রামের বাড়ির কথা মনে পড়লো। আমাদের বাড়ির
সানবাধানো পুকুর ঘাটে বসে দাড় বক আর কুজো বকের
মাছ ধরার কসরৎ দেখতাম। তবে এখন আর সে দৃশ্য
চোখে পড়েনা। আচ্ছা আপনি থাকেন কোথায়?

০১ লা মে, ২০২০ সকাল ১০:১৪

ইসিয়াক বলেছেন: #প্রিয় নূর মোহাম্মদ নূরু ভাইয়া আমি থাকি যশোহরের আর এন রোড় সংলগ্ন খালধার রোড এলাকায়।
#পাঠে ও মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা রইলো। শুভকামনা সবসময়।

৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:০১

শের শায়রী বলেছেন: দারুন আত্মসচেতনার সাথে প্রকৃতির বর্ননা প্রিয় কবি।

০১ লা মে, ২০২০ সকাল ১০:১৫

ইসিয়াক বলেছেন: প্রিয় ভাইজান আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব ভালো লাগলো।
ভালো থাকুন সবসময় প্রিয় ব্লগার আমার।
শুভকামনা।

৬| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:০১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মনোমুগ্ধকর লেখনী, ভালো লাগলো।

০১ লা মে, ২০২০ সকাল ১০:১৬

ইসিয়াক বলেছেন: নেওয়াজ আলি ভাই সবসময় আপনি আমার পাশে থাকেন ।এটা আমার খুব ভালো লাগে।
কৃতজ্ঞতা জানবেন।

৭| ০১ লা মে, ২০২০ রাত ৩:৫২

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার ডায়েরীর একটা পাতার লেখাই যদি এতো চমৎকার হয়, তাহলে পুরো ডায়েরী প্রকাশ করলে সাহিত্যে আপনার নোবেল প্রাপ্তি সুনিশ্চিত। তবে এটাও ঠিক, এক অর্থে দেশে থেকে নোবেল না পাওয়াই ভালো। পেলে সাথে ইনডাইরেক্ট রাজাকারের তকমাটাও সুনিশ্চিত! :P

ওকে......জোকস এপার্ট। লেখাটা আসলেই খুব ভালো লেগেছে। ডায়েরীর পাতা এমনই হওয়া উচিত। সাদামাটা অগোছালো, পরিকল্পনাহীন, কিন্তু ভীষণভাবে টাচি!!

অ.টঃ এটা যদি সত্যিকারের আত্ম-বর্ণনা হয়, তাহলে আপনার সাথে চরিত্রগত ভালোই মিল আছে আমার। বেশ ভালো মিল। :)

০১ লা মে, ২০২০ সকাল ১০:৪১

ইসিয়াক বলেছেন: প্রিয় মফিজ ভাই,
আপনার প্রতিটা মন্তব্যই খুব আন্তরিকতায় ভরা। আমায় খুব স্পর্শ করে।
# ডায়েরীতে যা লেখা আছে তা একবিন্দুও মিথ্যা নয়। আমার জীবনে অনেক অনেক ভুল ক্রুটি আছে। আছে প্রিয় মানুষদের সীমাহীন বিশ্বাসঘাতকতা।আবার চলার পথে অযাচিত ভাবে পাওয়া অনেকের ভালোবাসা। সে সবই হয়তো পাবেন ডায়েরীর পাতা থেকে সামনের দিনগুলোতে।
শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.