নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
সেহেরির পর বেশ টানা ঘুম দেয় সালেহা। হাতে কাজ কাম নেই তো কি করবে।করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আর লকডাউনে ফ্যাকড়া কলে পড়ে আবারও কাজ হারিয়েছে সে।
তার সাথে সাথে বাচ্চারাও ঘুমাচ্ছে গলা জড়িয়ে ঘুমাচ্ছে । আজ তৃতীয় রোজা।ঘরে যা চাল আছে আর একদিন চলবে। আনাজপাতি কিছুই নেই।
এরপর যে কী হবে কে জানে। সে আর ভাবতে চায় না। বিউটির বাবা যদি রিকশা নিয়ে বের হতে পারতো তাইলে তো চিন্তাই ছিল না।
বালিশের পাশে রাখা সস্তা সেল ফোনটা বার দুয়েক বেজে উঠতেই ঘুম জড়ানো কন্ঠে রিসিভ করে সে।
-হ্যালে কেডা?
- সালেহা নিহি? আমি মাজেদা।
- হ গো বুবুজান, আছো কেমন?
- এই আছি জীবন মরণ অবস্থা।
- ক্যান কি হইছে?
-আছি রিস্কের কামের মইধ্যে। তোর খবর সব ভালাতো?
- নারে বুবুজান।
- আমিও শুনছি তোর কথা তাই তোরেই ফোন দিলাম।শোন, তোর লগে একটা কথা।
- কি? কি কথা?
- কাম কাইজ কিছু পাইছস নি?
- নারে বুবুজান। কাজ কাম নাই, পোলা মাইয়া লইয়া এই লকডাউনে কি যে বিপদে পড়ছি কি আর কমু।গতবার তে বড়লোকগো সাহায্য সহযোগিতা পাইছি, এইবার তো কেউ ফিইরাও তাকায় না। বিউটির বাপে তো রিশকাও চালাইতে পারতাছে না।
কঠিন লকডাউনে আমগো মত গরীবগো খাড়াইয়া খাড়াইয়া মরণ ছাড়া উপায় নাই। সরকার তন ও কিছু পাই নাই গতবার তো দিছিলো ভালোই কিন্তু এইবার তো পড়ছি ফ্যাকড়া কলে। এতগুলা প্যাট চালামু ক্যামনে?
- শোন একটা কাম আছে করবি?
- কি কাম? কও? করুম না ক্যান?
- কথা হইলো খুব গোপন।
-গোপন ক্যান?
- আরে ছেমড়ি চুপচাপ শোন, আমার হাতে টাইম কম।
- ঠিক আছে তুমি কও।
- টাউন হল মার্কেটের এক গলি পর শের শাহ শুরি রোডে ওইযে চাক্কিওয়ালা বাড়ি চিনস তে?
-ওই যেহানে হলুদ মরিচ আটা ভাঙায় ওইহানে। ওই বাড়ি?
- হ হ
- ওই বাড়িতে হগলতের করোনা হইছে। বুঝছস। আমারে ফোন দিছিল, কি একটা অবস্হা। আম্মায় তো কি কান্দন যে কানলো। এত ট্যাকা পয়সার মালিক। করোনা আইয়্যা বোঝাইয়া দিলে এত এত ট্যাকা পয়সার কোন মূল্য নাই। যখন তখন ডাক আইলে যাইতে হইবো।
যাহোক বেচারারা বহুত কষ্টে আছে,বুঝছস? না বাজার সদাই, না খাওয়া না দাওয়া। তুই যদি কাজটা ধরছ তোর কপাল খুইল্লা যাইবো কইলাম। আরে করোনা তো সারাজীবন থাকবো না। মালদার পার্টি খুশি করতে পারলে তোর কপাল খুইল্লা যাইবো। একটু সাবধানে থাকবি, মাস্ক টাস্ক পইরা। পারবি না। শুধু রান্দোন বাড়োন।
-আমার ডর করে।
- ওরে পাগল যার হইবো তার হইবো,আগে তো বাঁইচ্যা ল। এডভান্সও দিবো।রাজী থাকলে ক। এক দেড় মাসের আগে বাড়ি ফিরতে পারবি না কইলাম। বান্ধা কাম করতে হইবো।
- তুমি কামডা করলা না ক্যান?
- আরে আমি তো হাবিব সাহেবগো বাড়িত আছি।
- হেগোরে বুঝি করোনায় ধরছে?
- চুপ আস্তে, তুই কামডা করলে আমারে ফোন দিস। কি করতে হইবো না হইবে সব শিখাইয়া দিমুনে।
সালেহা ভাবে প্রস্তাবটা মন্দ না। জসিম গেছে তাস খেলতে। রতনকে দিয়ে খবর পাঠায় সে।
সব শুনে জসিম প্রথমে রাজী হয় না। বউকে সে খুব ভালোবাসে কিনা।সালেহা জেদ করে।
- রাজী না হওনের তো কিছু নাই। এমনেও মরুম ওমনেও মরুম। তার চাইতে রিস্ক নিলে অসুবিধা কি। এতগুলান মুখ!
সেদিন সন্ধ্যায় সালেহা বেরিয়ে পড়ে বাড়ি থেকে তাকে অনেকটা ঘুরে অলিগলি ঘুর পথে যেতে হবে। পিছনে তার সংসার। বাচ্চারা জানতে চেয়েছিল।
-মা তুমি কোথায় যাও?
- কামে।
- কামে যাইবা তো জামা কাপড় গোছাইছো ক্যান?
-এক দেড় মাস পর ফিরুম।
- তুমি আমাগো লগে ঈদ করবা না মা?
- নারে বাজান। এইবার কি আর ঈদ হইবো? লকডাউন আরো বাড়বো। আমি ট্যাকা পাঠামুনে তোগো বাপজান ঈদের জামা কিইন্যা দিবো,মজার মজার খাবার কিনবি। বিউটি ভাইবোনরে দেইখা রাখিস ঠিক ঠাক।
সবার চোখ ছল ছল করে। দেড় মাস দীর্ঘ সময়।
সালেহা অজানার উদ্দেশ্য রওনা দেয়। তারও চোখ ভিজে ওঠে। প্রিয় সংসার স্বামী সন্তানের সাথে আর দেখা হবে কিনা কে জানে? তাকে করোনায় ধরলে লাখ লাখ টাকা দিয়ে কি আর কেউ চিকিৎসা করাবে? না তার কপালে হাসপাতালের বেড জুটবে। তবুও সে বাঁচার তাগিদে মৃত্যু পুরীতে আশ্রয় খোঁজে। এছাড়া আর কি উপায়? গরীবের যে কেউই নাই।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৩৬
ইসিয়াক বলেছেন: বাকিটুকু আপনার কল্পনায় সাজিয়ে নিন প্রিয় কবি। ঘটনাটি আজ সকালের বাস্তব চিত্র। সালেহা এখন মৃত্যুপুরীতে টিকে থাকার আশায়।ভবিষ্যৎ ই জানে কি আছে তার কপালে।
ভালো থাকুন। শুভ কামনা রইলো।
২| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৩৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি বেতন পাচ্ছেন?
১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৩৭
ইসিয়াক বলেছেন: এই মাসে এখনও পাইনি।
৩| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৩৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনার বইয়ের কি অবস্হা?
১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪০
ইসিয়াক বলেছেন: মোটামুটি ভালো বিক্রি হয়েছে। এখনও অনলাইনে অনেকে কিনছে।
৪| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪১
মা.হাসান বলেছেন: এমনেও মরুম ওমনেও মরুম। তার চাইতে রিস্ক নিলে অসুবিধা কি। এতগুলান মুখ!
এটাই বাস্তবতা। গরিব লোকদের করোনায় মরার চেয়ে না খেয়ে মরার ভয় বেশি। করোনা হয়তো হবে, হয়ত হবে না। হলে হয়তো ভালো হবে, হয়তো মরে যাবে। কিন্তু কাজ না থাকলে তো না খেয়ে মরবে।
১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪৪
ইসিয়াক বলেছেন: ঠিক তাই প্রিয় ব্লগার। কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি আমরা সবাই। ভবিষ্যৎই জানে কি হবে আর কি হবে না।
শুভ কামনা সতত।
৫| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: দরিদ্র অসহায় মানুষের গল্প।
২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:০৫
ইসিয়াক বলেছেন: আপনি তো সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছেন।লক ডাউন সেলিব্রেট করছেন। গরীব মানুষের দুঃখ কষ্ট কি বুঝবেন? বড় জোর একটা পোস্ট লিখে ছেড়ে দিবেন।
"লকডাউনে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুঃখ কষ্ট, সাধারণ মানুষ যা ভাবছে। '
৬| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০২
আহমেদ জী এস বলেছেন: ইসিয়াক ,
বাস্তবের সংঘাতময় পরিস্থিতির ছবি।
দূর্যোগ কালে চাহিদা আর জোগানের সাংঘর্ষিক যাতাকলে সব সময় দলিত হয় সালেহারাই ..............
২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:০৭
ইসিয়াক বলেছেন: সঠিক উপলব্ধি। মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন শ্রদ্ধেয়।
শুভ কামনা সতত।
ভালো থাকুন সবসময়।
৭| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নির্মম বাস্তবতা !!
সত্যি সালেহাদের তো আর কোন
বিকল্প নাই। হয় করোনায় নয়তে
না খেয়ে একভাবে্ মরতেই হবে !!
চমৎকার মান ছুঁয়ে যাওয়া গল্পের জন্য
আপনাকে ধন্যবাদ কবি !
২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:২১
ইসিয়াক বলেছেন: পাঠে ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন প্রিয় ব্লগার।
শুভ কামনা সতত।
৮| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫১
ওমেরা বলেছেন: করোনা মানুষের জীবনকে খুবই কঠিন করে দিয়েছে।
বাস্তবতার ভরা গল্পটা সুন্দর হয়েছে।
২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:২১
ইসিয়াক বলেছেন: শুভ কামনা রইলো আপু।
ভালো থাকুন সবসময়।
৯| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৩
শায়মা বলেছেন: জীবনের রিস্ক নিতে হলো.....
আসলে যারা করোনার মাঝে অফিস আদালতে যায় বাধ্য হয়ে তাদের অবস্থাও সালেহার মতই।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:১৯
ইসিয়াক বলেছেন: কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি আমরা সবাই।
সাবধানে থাকুন। ভালো থাকুন সবসময়।
শুভ কামনা রইলো।
১০| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:১০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: গ্রাম বাংলার সহজ সরল জীবনের কাহিনী
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:২০
ইসিয়াক বলেছেন: কাহিনীটি শহরের পটভূমিকায়।
ধন্যবাদ।
১১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৪৬
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার প্রতি-মন্তব্য দেখে বুঝলাম, এটা সত্যি ঘটনা। সালেহা এই দেড় মাসে কতো টাকা পাবে, জানতে মন চায়।
সরকার যজ্ঞের ধনের মতো পাবলিকের টাকা নিয়ে বসে আছে। সেখান থেকে টাকা নিয়ে বড় বড় প্রোজেক্ট করে, আর কিছু মানুষ সেই টাকা মেরে কোটিপতি হয়। এই হলো দেশের প্রকৃত অবস্থা আর উন্নয়ন। অন্যদিকে গরীব না খেয়ে, বিনা চিকিৎসায়.....কোন না কোন ভাবে মরে।
দূর্ণীতিবাজদের এই প্রক্রিয়াতে একটা বড় ধরনের ঝাকি দেয়া এখন সময়ের দাবী।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:২৫
ইসিয়াক বলেছেন: সালেহাকে এই দেড় মাসে তিন হাজার টাকা দেবে। তার মধ্যে এক হাজার টাকা এ্যাডভান্স। থাকা খাওয়া ফ্রী।
কথা সেটা না।কথা হলো লকডাউন দিলে এই সব অভাবী মানুষগুলোর মুখে খাবার জোটানের দায়িত্ব সরকারের। সেটা কি সরকার আর তার পোষ্য নেতা কর্মীরা ভুলে গেছে। আজ অনেকে পথে বের হয়ে গেছে। দুএকজন প্রতিবাদ করছে। তবে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তেমন একটা বাড়াবাড়ি করছে না।
১২| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১:৪৩
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
সমসাময়িক ভাবনার বাস্তব চিত্রনাট্য। ভালো লেগেছে।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:২৬
ইসিয়াক বলেছেন: কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভ কামনা সতত।
১৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: বাস্তব চিত্রনাট্য ভাললেগেছে। তবে অনুগল্প হয়ে গেছে।
২৪ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৫৩
ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার। হঠাৎ ভাবনাগুলো ব্লগে জমা রাখি। আপনাদের সাথে শেয়ার করি। ভালো লাগলো জেনে অনুপ্রাণিত হলাম। শুভকামনা রইল।
১৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৫৬
অক্পটে বলেছেন: মন ছুঁয়ে গেল কবি। বাস্তবতা কত কঠিন। মৃর্ত্যুপুরীতে যাত্রা জীবন বাচাঁনোর তাগিদে। ৭০টাকা কেজি চাল। আর চালের আনুসাঙ্গিক সব কিছুই আকাশ ছোঁয়া। কোটি সালেহাদের এক বেলা খাবার জোটাতেই জীবনপাত করতে হয়। একেবারে সঙ্গত বাস্তবতা তুলে ধরেছেন, সময়ের ফ্রেমে বাঁধাই করে রাখার মতো।
২৪ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:২৩
ইসিয়াক বলেছেন: অকপটে আপনাকে আমার ব্লগে স্বাগতম।৷
মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন। কৃতজ্ঞতা রইলো ভাইয়া।
শুভ কামনা সতত।
১৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:১০
রাজীব নুর বলেছেন: সাহেলাকে কি আসলেই চিনেন? জানেন?
২৪ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:২৫
ইসিয়াক বলেছেন: একা একা কাচ্চি না খেয়ে আশাপাশে একটু চোখ বুলান হাজার সালেহার দেখা পাবেন।
১৬| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:০৪
শোভন শামস বলেছেন: বাস্তবতার ছবি, করোনা সময়ের জীবন
২৪ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:২৫
ইসিয়াক বলেছেন: কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয়।
শুভ কামনা সতত।
১৭| ২১ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৫৪
ঢুকিচেপা বলেছেন: বর্তমান সময়ের করুণ গল্প।
একটা কথা ঠিক, গত বছর অনেকেই হাত বাড়িয়েছিল, সেটা এবার নেই।
২৪ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:২৮
ইসিয়াক বলেছেন: ঠিক সে কথাই আমি গল্পে বলতে চেয়েছি। এবার গরীব অসহায় মানুষগুলোকে সরকার তো সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছেই না। বিত্তশালীরাও ফিরে তাকাচ্ছে না। আফসোস!
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:২০
নেয়ামুল নাহিদ বলেছেন: গল্পটা ভালো লেগেছে, আরো কিছুদূর এগোলে বোধহয় ভালো হতো!