নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই রকম পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি যেখানে সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখা হবে। যেখানে থাকবে না কোন পাপ পঙ্কিলতা।

ইসিয়াক

সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ আপনা মাংসে হরিণা বৈরী (শেষ অংশ)

০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২৬



প্রথম অংশ
( দুই পর্বে সমাপ্ত)
শেষ অংশ
****
প্রায় চব্বিশ ঘন্টার পর এই প্রথমবারের মত দোতালায় গৃহকর্তী জোবাইদা বেগমের নিজের কক্ষ ঢোকার অনুমতি মিলল জুলেখার। জুলেখাকে নিজের শয়নকক্ষে ডেকে আনবার অন্য কারণ অবশ্য আছে। জুলেখা যখন এলো তখন জোবাইদা বেগম জরুরী কাজে বাইরে যাবার জন্য শেষ পর্যায়ের সাজগোজে ব্যস্ত।বাইরে থেকে দেখে জুলেখা কিছুটা ইততস্ত করলেও শেষ পর্যন্ত সে ভিতরে প্রবেশ করলো টায়রার আহ্বানে।

সমস্ত ঘর জুড়ে আভিজাত্য আর শানশৌকতের চুড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ সেই সাথে শৈল্পিকতা আর রুচিবোধের অপূর্ব সংমিশ্রণ দৃষ্টিকে আরামদায়ক স্নিগ্ধতা দেয় জোবাইদা বেগমের শয়নকক্ষে প্রবেশের মুহুর্তেই। এই বিলাসবহুল শয়নকক্ষে পা রাখাবার সাথে সাথে বিষ্ময়কর জৌলুসে চোখ ধাঁধিয়ে গেল জুলেখার। হাজার চেষ্টায় ও জুলেখা নিজের দৃষ্টিকে সামলাতে করতে পারলো না।নিমেষে চোখ চলে গেল ঘরের আনাচে কানাচে, অভিব্যক্তিতে বিষ্ময় ফুটে উঠলো এক মুহুর্তে। তবে তা সামান্য সময়ের জন্য।জুলেখার নিজস্ব আত্নমর্যাদা জ্ঞান প্রবল।সে দ্রুত নিজেকে সামলে নিলো এবং এই কক্ষে ডেকে আনার অর্ন্তনিহিত কারণ তার কাছে চকিতে পরিষ্কার হয়ে গেল।

জোবাইদা বেগম চোখের কোনা দিয়ে জুলেখাকে এক ঝলক দেখলেন মাত্র জুলেখার অবাক দৃষ্টি তার ধূর্ত চোখের নজর এড়ালো না, অন্য রকম আত্নতৃপ্তি অনুভব করলেন তিনি। অহংকার মিশ্রিত তাচ্ছিল্যের মৃদু হাসি ফুটে উঠলো তার ঠোঁটের কোনে।এবং মুহুর্তে নিজের রং বদলিয়ে চোখ মুখ শক্ত করে শীতল গলায় বললেন
-কমপক্ষে একটা সালাম তো পেতে পারি? হলাম না হয় দুজন দুজনার শত্রু। স্বভাবিক ভদ্রতা বলে একটা কথা আছে।জানো না না-কি? তখনও তো সালাম দিলে না । নাকি অভ্যাস ই নেই। রড়দের সম্মান করতে হয়! যাকগে সে তোমার ব্যপার তারপর কি ঠিক করলে? কিছু কি ভাবলে?
-কি ঠিক করবো আর কি ভাববো? প্রশ্ন শুনে অবাক হলো জুলেখা।
- ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু পরিকল্পনা করোনি? এভাবেই কাটাবে জীবন?তোমার তো বেশি বয়সও না দেখছি ।দেখতে ও তো বেশ।আফসোস হয় তোমার জন্য। আহা! তোমার একটা ভবিষ্যৎ আছে না? শরীর কি শুনবে ? আমার মনে তো হয় না শুনবে ।কথা বলছো না যে? এখনও বোঝনি কিছু? আমি কি কঠিন করে বলেছি? আরে তোমার বিয়ের কথা বলছিলাম আর কি।
জুলেখা কিছুটা সময় নিলো তারপর বলল,
- কি বলছেন এসব যা তা? আপনার মাথা ঠিক আছে তো? এখন এসব ভাবার সময়? কিছুক্ষণ পরে ই তো আপনার ষড়যন্ত্রে, আপনারই নির্দেশে সাজানো মামলায়, রাষ্ট্রীয় সুযোগের পরিপূর্ণ স্বদব্যবহার করে নিরাপরাধ একজন মানুষকে চিরতরে শেষ করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে? জয় হবে আপনার?
-বাহ! বেশ ভালো বক্তা তো।কথা তো ভালোই জানো। কলেজে ছাত্র রাজনীতি করতে?
-ওসব রাজনীতির ধান্দাবাজিতে আমার পোষায় না।
-তো কিসে পোষায় শুনি?
-কি জন্য ডেকেছেন তাই বলুন।আমার হাতে সময় কম।
-বললাম তো তোমার জন্য আমার ভাবনা হয়। তোমার প্রতি ভাবনা থেকেই তোমাকে ডাকা।

-হাহ! হাসালেন। আপনি? আপনি যদি বলেন আমার জন্য আপনার ভাবনা হয়। আমি বলবো এটা কুমিরের কান্না ছাড়া কিছু নয়। এই ভাবনার পিছনে অন্য কোন মতলব আছে নিশ্চয়। অন্তত আপনার মুখে ভালো কথা মানায় না। আপনাকে আমি বিশ্বাস করি না।

- খবরদার আমার প্রতি আঙুল তুলবে না তুমি। আমার দিকে আঙুল তোলা মানুষকে আমার ভীষণ অপছন্দ।আমি তাদের ধ্বংস করে দেই আর শোন রাব্বি সম্পর্কে আমার পরিষ্কার বক্তব্য, আমি কোন খুনী ধর্ষককে প্রশ্রয় দিতে পারি না।সমাজে আমার একটা সম্মান আছে,এই সিকদার বাড়ির একটা সম্মান আছে।সিকদার বাড়ি একটি প্রতিষ্ঠান। সিকদার বাড়ির সম্মান রক্ষার্থে যা যা করার প্রয়োজন তা আমি করছি এবং ভবিষ্যতে ও করে যাবো। আর এ কাজ থেকে আমাকে কেউ বিরত রাখতে পারবে না। মনে রেখ।
আর এটাও ভালো করে শুনে রাখো তোমার স্বামী এ বাড়ির লোক তবে আমার নিজের কেউ নয়। তার প্রতি আমার বিন্দুমাত্র কোন আবেগ অনুভূতি আগ্রহ বা দায়বদ্ধতা নেই।

-অথচ তার সম্পত্তির উপর দাড়িয়েই কথাগুলো আপনি অবলীলায় বলে যাচ্ছেন।একটুও বাঁধছে না। সন্তান হলে পারতেন তার সাথে এমন করতে?

- তুমি কিন্তু তোমার সীমা ছাড়াচ্ছো? তুমি আমাকে চেন না। আমি নিজের স্বার্থে কি কি করতে পারি তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।

- হ্যাঁ আমি আপনাকে চিনি না এর আগে দেখিও নি কোনদিন। আপনাকে দেখার খুব শখ ছিল বলে এই মহা দূর্যোগের মধ্যেও এক ডাকে দেখতে এলাম আপনাকে ৷শুনতে এলাম আপনার কথা। অনেকদিন ভেবেছি, আপনার সাথে দেখা হলে আপনাকে একটা প্রশ্ন করবো।

- কি প্রশ্ন?

- আপনি কি রক্ত মাংসের মানুষ?

-এই শোন তোমার ন্যাকামি মার্কা কথা বাদ দাও তো। তোমার ন্যাকা ন্যাকা কথা শোনার সময় আমার নেই। যথেষ্ট ব্যস্ত থাকতে হয় আমাকে।অনেক কিছু ম্যানেজ করে চলতে হয়।অনেক বড় বড় লোকের সাথে ওঠা বসা আমার। দিনের মধ্যে হাজারটা কাজ সামলাতে হয় একা হাতে। তুমি কি জানো কি কি সোস্যাল ওয়ার্কের সাথে আমি জড়িত? কতগুলো কোম্পানি আর গার্মেন্টস আমার আন্ডারে চলে?ধারনাও করতে পারবে না। যাক ওসব বাদ দাও। তোমার ভাবনা বা কল্পনা ওসবের নাগাল পাবে না যেহেতু সেহেতু ওসব নিয়ে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।সময় নষ্ট না করে সোজা সাপটা বলি ।

প্রথমত তোমার বা তোমার মেয়ের প্রতি আমাদের কারো কোন দায়বদ্ধতা নেই। তোমার স্বামীর কারণে এমনিতেই আমরা বিব্রত। অনেক কৈফিয়ত দিতে দিতে আমরা চরম ক্লান্ত। আগামী কয়েক দিনও অনেক কথাই হজম করতে হবে।পত্রিকা নিউজ পোর্টালের অনেক ঝক্কি ঝামেলা সামলাতে হবে তবুও তোমার জন্য কর্তব্যের খাতিরে কিছুটা ভাবতে হচ্ছে আমাকে। হাজার হোক রাব্বি এ বাড়ির ছেলে, তুমি তার বিয়ে করা বউ।কোথায় যেন কিছুটা দায়বদ্ধতা থেকেই যায়।

জুলেখার খুব বলতে ইচ্ছে করল
-এত ছেলে ছেলে করে মুখ দিয়ে যে ফেনা তুলে ফেলছেন। সেই ছেলের বিরুদ্ধে এত বড় ষড়যন্ত্র করতে একটুও দ্বিধা হলো না আপনাদের ? তার যে একটা বাচ্চা মেয়ে আছে। সেই বাচ্চা যে এতিম হয়ে যাবে সেই কথা কি একবারও ভাবনায় এলো না। এমন পাষান মন আপনাদের। আপনারা কি মানুষ? রক্ত মাংস দিয়ে গড়া মানুষ?

জুলেখার আর কথা বাড়াতে ইচ্ছে করছে না খামোখা মুখ নষ্ট যা বলার তা বলা হয়ে গেছে এখন হঠাৎ করে জুলেখার মনে অন্য ভাবনা এলো যে ভাবনায় সে অস্থির সারাটা দিন আর মাত্র ক’ঘন্টা আহারে! লোকটা এখন কি করছে কে জানে? জুলেখাকে এখনই বেরোতে হবে। অনেক কাজ বাকি। এখানকার কাজ শেষ। বোঝা হয়ে গেছে যা বোঝার। শত্রুর বাড়িতে বেশিক্ষণ থাকা ঠিক নয়।
জোবাইদা বেগম বুঝতে পারলেন জুলেখা অন্যমনস্ক হয়ে গেছে তার কথা সে মন দিয়ে শুনছে না।কেউ তাকে গুরুত্ব না দিলে চট করে তার মাথা গরম হয়ে যায়।অনেক কষ্টে নিজেকে সামলালেন। এই অবাধ্য মেয়েটি তাকে সুক্ষভাবে অপমান করার চেষ্টা করছে। এত কিসের অহংকার ওর?

- কি হলো?

- আপনি বলেন আমি শুনছি।আপনি শেষ করেন আপনার কথা।

- তুমি কি শুনছো?

- যা বলছিলেন বলেন ! আমি কানে ভালো শুনি। বধির নই।

জোবাইদা এবার সুর নরম করলেন
-আমাদের ছেলেই যখন আর রইলো না তখন তোমাকে দিয়ে আমরা কি আর করবো বলো? তাই না! আর তোমারও বয়স অল্প ... কথায় কথায় অশ্লীল ইঙ্গিত জুলেখা ইঙ্গিত গায়ে মাখলো না।এরা শরীর দিয়ে সব বিচার করে এদের মন বলে কিছু নেই সে সবই শুনেছে এর আগে এদের সম্পর্কে । অসভ্য বর্বর একটা পরিবার।

জুলেখা জোবাইদা বেগমকে বাজিয়ে দেখার জন্য কন্ঠ মধুর করে বলল
-তরুর শরীরে আপনাদের পরিবারের রক্ত বইছে।

-সে ও প্রমান সাপেক্ষ ব্যপার?ঝট করে বললেন জোবাইদা বেগম। তার গলা চড়ে গেল হঠাৎ উত্তর মনে হয় তৈরি ই ছিল। ভালো প্রস্তুতি বলতে ই হয়।

-কি বলতে চান আপনি?এটাও কি আমাকে প্রমান দিতে হবে? আমি কি ওকে হাতে করে নিয়ে এসেছি না ও নিজে নিজে এই বাড়িতে বেওয়ারিশ কুকুর বেড়ালের মত এসে উঠেছে? জায়গা হয়তো দেননি কিন্তু ও এ বাড়িরই মেয়ে।অস্বীকার করতে পারবেন?

-ভাষা ঠিক করো জুলেখা এটা ভদ্র পাড়ায় ভদ্র বাড়ি।তোমাদের বস্তি না।জেনে বুঝে কথা বল।

- আপনার রাজপ্রাসাদের রাজকীয় ভাষা শেখার কোন ইচ্ছে নেই আমার আর আপনাদের এই রাজপ্রাসাদের থাকারও কোন সাধও নেই। এটাও জেনে রাখবেন।সে থাকতে যখন স্বীকৃতি মেলেনি আর এখন তো সে চলেই যাচ্ছে চিরতরে। এখন ওসব নিয়ে আর ভাবি না। সবচেয়ে খারাপ লাগছে তরুর বাবার করুন পরিণতির দিনে আপনার সাথে এ নিয়ে আমাকে তর্কে লিপ্ত হতে হচ্ছে।

-কেউ যদি স্বেচ্ছায় কোন ফাঁদে পা দেয় তার জন্য আফসোস আমার ও ।রাব্বির কি উচিত হয়েছে তোমার মত ফুটফুটে বউ বাড়িতে রেখে সামান্য অফিস সহকারী কলির সাথে সম্পর্কে জড়ানো।ভিডিও আছে তবু তুমি বিশ্বাস করোনি। পৃথিবীতে লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। কৌশলী হতে হয়।যে কেউ সুযোগ পেলে সুযোগ তে নেবেই।এক্ষেত্রে বুদ্ধিমানরা সব সময় রাজত্ব করে আর বোকারা ধ্বংস হয়।

-আপনা মাংসে হরিণা বৈরী।

-বাদ দাও বাদ দাও তোমার সাথে পারবে কে? এখন আসল কাজের কথায় আসি তোমাকে আমার বাড়িতে আসতে বলেছিলাম কারণ তোমাকে স্বচক্ষে দেখার ইচ্ছে ছিল। তবে স্বীকার করতেই হয় দম আছে তোমার। আমার ছেলেমেয়েগুলোর মধ্যে একটাও যদি তোমার মত হতো!একটু জ্ঞানী আর বোধবুদ্ধি সম্পন্ন তাহলে আমি নিশ্চিত হতাম।
যাকগে যে কথা বলছিলাম তোমার তো সামনে সম্পূর্ণ জীবন পড়ে আছে তো ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি? এ ব্যপারে জানতে চাচ্ছিলাম। অন্য কিছু মনে করে বসো না আবার।এমনিতে তোমার মাথা গরম আছে বুঝতে পারছি। আমার কথা শোন আখেরে তোমার ই ভালো হবে।

-আপনার কথা মানসিক ভারসাম্য রুগীর মত লাগছে। কি যে বলছেন আর কি যে বলতে চান নিজেই বোধহয় ঠিক জানেন না। আপনি কি কোন কারণে ডিসটার্বড। টেনশন করছেন কিছু একটা নিয়ে।

-তোমার সাহস দেখে আমি সত্যি অবাক হচ্ছি। এসব জিজ্ঞেস করার এখতিয়ার কে তোমাকে দিয়েছে। হাসিও পাচ্ছে আবার রাগও হচ্ছে
তবে তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে। লম্বা রেসের ঘোড়া তুমি। আফসোস ভাগ্য তোমার সহায় নয় এই মুহুর্তে।
যাক। সব সময় সবকিছু মনের মত মেলে না আমার হাতে একটা ছেলে আছে, বিয়ে করবে?

-না।

-তো কি করে কাটাবে এই দীর্ঘ জীবন? তুমি হয়তো বুঝতে পারছো না।সামনে কত বিপদ।
- বিপদ আসুক আর যাই হোক তরুকে নিয়ে আর রাব্বির স্মৃতি সাথে করে জীবন কাটিয়ে দেবো ইনশাআল্লাহ ।
- জীবনটা অত সহজ নয় মেয়ে, তোমার এ সিদ্ধান্ত এ যুগে হাস্যকর ও বটে।

- হাস্যকর কেন?
-চারিদিকে হায়েনার দল ওত পেতে আছে
-ভুতের মুখে রাম নাম!
- তুমি তো চরম অবাধ্য তোমার সাথে কথা বাড়াবার কোন ইচ্ছে আর নেই আমার । আমার সময়ের মূল্য অনেক। শেষ বার বলছি তোমার জন্য যে ছেলেটা দেখেছি। পেশায় সরকারী অফিসের ড্রাইভার । আয় ইনকাম ভালোই করে সবচেয়ে বড় কথা রাব্বির মত বাউন্ডেলে না।সংসারী। বসবাস করে আরাম পাবে?

- রাব্বি আপনার ছেলে ।
-ছেলে তবে সৎ।
- আপনি এমন কেন?

- আমি বাস্তববাদী মানুষ। জেনে সুখী হবে তোমার বিয়ে হয়ে গেলে তুমি ভালো থাকবে ছেলেটি আমার দুর সম্পর্কের আত্নীয়। ড্রাইভার হলেও অবস্থাপন্নেখা পড়াও করেছে, বি এ পাস।আমাকে ও বেশ সমীহ করে চলে। তোমাকেও ভালো রাখবে।
- ও সে তাহলে আপনার আজ্ঞাবহ। আপনি বললে আমায় আদর করবে আবার আপনি বললে মারধর। হা হা হা
- তোমার খুব অহংকার।
- সে ও কি আপনার কম?এমন ক্রান্তি লগ্নে এসব উদ্ভট চিন্তা ভাবনা শুধু আপনার মাথাতেই আসতে পারে।আপনি একটা সাইকো।একবারও ভেবেছেন তরুর কি হবে?

-ওমা ভাববো না কেন? ওকে এতিমখানায় দিয়ে দেবো।ওর খরচ চালিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব আমার এর বিনিময়ে তুমি আর তরু সমস্ত স্বত্ব ত্যাগ করবে। কোনদিন কোন দাবি নিয়ে আসবে না এ বাড়িতে। যদিও সে রকম চেষ্টা করো সুবিধা কোনদিনই করতে পারবে না সেটাও জেনে নিও। আমি কোন কাজেই ফাঁক রাখি না বলে এই প্রস্তাব রাখলাম তোমাদের জন্য

- আমি জানি এই বাড়ি আর সব সম্পত্তি সবই রাব্বির । আপনি বা আপনারা দখলদার। আপনি বাইরের লোক।অথচ.....
- তুমি কি চ্যালেঞ্জ করছো আমাকে?
- সত্য বললাম তাতে গোস্বা হলো বুঝি ? অস্বীকার করতে তো পারবেন না রাব্বি আপনাদের ষড়যন্ত্রের শিকার।
- তুমি ফালতু সময় নষ্ট করছো। কেন পুরানো কাসুন্দি ঘাটছো।একই কথা বার বার কেন বলছো ?কিছু ই প্রমান করতে পারবে না আমি আগেও বলেছি । সময় থাকতে আপোষে আসো।আমার সহযোগিতা পাবে সবসময়।সমাজে আমার দাতা হিসাবে বিশেষ খ্যাতি আছে। তুমি জানো কিনা জানি না তোমার অবগতির জন্য জানালাম। আমার কথা শুনলে আমার সাহায্য পাবে।

-সে আপনার কি আছে না আছে আমার জানার আগ্রহ নেই আর রাখেন আপনাদের দাতা হিসাবে বিশেষ খ্যাতি ।আমি কি আপনার সাহায্য চেয়েছি? আমি কোন আপোসে আসবো না তো। যা হবার হবে। আমি লড়বো। আমার মেয়ের অধিকার আমি লড়াই করে আদায় করবো। স্বামীর জন্য কিছু করতে পারিনি কিন্তু মেয়ে জন্য পারবো এ বিশ্বাস আমার আছে।

-খুব লোভ তোমার । ছোটলোকের বাচ্চা তো....নিচু বংশ বলে কথা।

- আপনি কিন্তু এবার সীমা ছাড়াচ্ছেন।বলতে বাধ্য হচ্ছি আজকের এমন দিনে আপনার কাছে আমি এসব কথা আশা করি নি।
-ও এখন তোমার কাছ থেকে আমাকে নতুন করে সব শিখতে হবে, না? একটু প্রশ্রয় দিলাম আর অমনি সাহস বেড়ে গেল।ভালো ব্যবহারকে দূর্বলতা ভেবো না জুলেখা ।শোন, কাল সকাল হবার আগে এ বাড়ি ছাড়বে তুমি। ঘুম থেকে উঠে আমি যেন তোমার মুখ না দেখি।

- আমি আজ রাতেই চলে যাবো।কিছুক্ষণ পরেই..কে থাকবে এই বাড়িতে?
- কোথায় যাবে?
- সেটা আপনার না জানলেও চলবে।তবে আমি না আসলেও আমার মেয়ে তার প্রাপ্য বুঝে নিতে আসবে একদিন এটা মনে রাখবেন। আমি ওকে সেভাবেই মানুষ করবো। আপনাদের মুখোশ উন্মোচিত হবেই।
- তুমি আমাকে হুমকি দিচ্ছো?
-আমি আপনাকে সর্তক করছি।
******
রাত বারোটা বাজতে কয়েক মিনিট বাকী।জুলেখা আর তরু জেল গেটে ।ভিতরে কি ঘটছে জুলেখা দেখতে না পেলেও ভালো যে কিছু হচ্ছে না অনুভব করতে পারছে সে।এখন সব মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় কি? রাব্বিদের বাড়ি থেকে এখানে আসার পর থেকে সমস্ত শরীর অবশ হয়ে আসছে নিজের অজান্তে জুলেখা থরথর করে কাঁপছে।আল্লাহর কাছে বারবার কাকুতি মিনতি করছে।তরু এসব দেখে কেমন যেন চুপসে গেছে সে তার মাকে জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে আছে। যেন সে ছেড়ে দিলেই হয় তার মা হারিয়ে যাবে নয় ,নয় অন্য কোথাও চলে যাবে।কিছু সময়ের বিরতি কিসের যেন শব্দ জুলেখা জেলখানার ব্যপার স্যপার জানে না তবুও তার মনে হচ্ছে এতোক্ষণে মনে হয় রাব্বির ফাঁসি হয়ে গেছে.... এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত। এবার যেতে হবে যাবার আগে কিছু কাজ বাকি। জুলেখা হাতের তসবী দ্রুত বেগে চলছে। তার সাথে সমান তালে নিঃশব্দে নড়ছে জুলেখার ঠোঁট। সে সমানে দোয়া কালাম পড়ে চলেছে। তরু কেমন যেন চুপ করে গেছে। নিথর নিশ্চল নির্বাক।
সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সেরে জুলেখা তার মেয়ে তরুকে নিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে উঠতেই কিছু সময়ের মধ্যে রাতের আঁধার ভেদ করে লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সটি এগিয়ে চললো তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে ।.....।

পরদিন সকালের ক্যাবল টিভিতে সকল চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজ দেখাচ্ছে পলাশবাড়ী মহাসড়কে ফাঁসির আসামি লাশ বাহি এ্যাম্বুলেন্স আর বিপরীত মুখী ট্রাকের ভয়াবহ সংঘর্ষ। এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার সহ আরোহী সকলে নিহত। রহস্যময় কারনে এ্যাম্বুলেন্সটি যাত্রী সহ সম্পূর্ণ ভস্মীভুত হয়ে গেছে। ট্রাক ড্রাইভার পলাতক। তদন্ত চলছে....
____________________________________________
আঠারো বছর পর। জুলেখার বয়স হয়েছে এখন। বাতের ব্যাথা ইদানিং তাকে বেশ কাবু করে রাখে। তিনি সহসা এদিক ওদিক যান না। নানা বই পড়ে তার সময় ভালো ই কাটে।তবে আজ বেরিয়েছেন বিশেষ এক জায়গায় যাচ্ছেন তারা। সেটা এমনই এক জায়গা হাজার ঝামেলাতে সেখানকার মানুষের ডাক উপেক্ষা করতে পারেন না সে।কিসের এত টান ? যদিও এমন ডাক বহুবছর আগে আর একবার মাত্র এসেছিল । জীবনের কঠিন বাঁকের সে সময় ছিল বড় বেশি উত্তাল। আজ জীবন সায়াহ্নে সেই উন্মাদনা অস্তমিত,যুদ্ধের দামামা আর বাজছে না । কিন্তু আকর্ষণ কমেনি একটুও সেই ডাকের। অতীতের দুঃখ কষ্ট মেয়ের সাফল্য সব ধুয়ে মুছে দিয়েছে। কতদিন হয়ে গেল রাব্বির স্মৃতি আঁকড়ে ধরে বেশ কেটে যাচ্ছে দিন জুলেখার।এখন আর কোন দুঃখবোধ নেই তার।সময়ের সাথে সাথে সয়ে গেছে সব। এতদিন রাব্বি বেঁচে থাকলে সে ও নিশ্চয়ই তার মত বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়তো।কদিনের আর জীবন তার জন্য মানুষ কত কি না করে! মেয়েটি তার পড়াশোনা শেষে বি সি এস এ টিকেছে এবার। গতকাল এই নিয়ে কত আনন্দ মা মেয়েতে সারারাত ঘুমায়নি পর্যন্ত । মাশাল্লাহ তরু বেশ মেধাবী। সে বহুদূর যাবে এটা নিশ্চিত। তার আত্নবিশ্বাস প্রবল।
তরু এখন জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।সে জানে না তার মা তাকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছে। হঠাৎ প্রশ্ন করলো,
-মা আমরা কোথায় যাচ্ছি? এই পথটাকে চেনা চেনা মনে হচ্ছে । আমরা কি এর আগে এই রোডে কোনদিন এসেছি?
- এসেছি। তখন তুমি খুব ছোট ছিলে মা।তোমার হয়তো সেভাবে সবকিছু স্মৃতিতে নেই।
- মনে পড়েছে মা মনে পড়েছে। বাবার ফাঁসির দিন এসেছিলাম। এটা আমার বাবার বাড়ির সেই রাস্তা?
-হ্যাঁ ।জুলেখা বলল।
-ড্রাইভার ভাইয়া ট্যাক্সি বামের বাড়িটার সামনে থামান। তারপর তারা মা ও মেয়ে ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে গেটের দারোয়ানকে আসবার কারন জানাতে জুলেখা বাইরে থেকে দেখল টায়রা তর তর করে সিড়ি বেয়ে নেমে আসছে তাদের দিকে।
জুলেখা উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল,
-তোমার বয়স তো একেবারে সেই কুঁড়িতেই থমকে গেছে ননদিনী।
-কি যে বল না ভাবি।
-যা বলছি সত্যি বলছি।
- চল আগে মায়ের সাথে দেখা করবে তো? মা তোমাদের কথা প্রায় বলে। খোঁজ জানতে চায়।
- তুমি কি বল?
- আমি বলি আমি জানি না মা ওরা কোথায়।
- কেন আবার খোঁজ খবর ? এখনও পুড়িয়ে মারার প্লান আছে নাকি।
-দিন বদলে গেছে ভাবি।সময়ের সাথে সাথে সব কিছু পালটে যায়। ক্ষমতাও চিরস্থায়ী নয় কারো। মা ও বদলে গেছে অনেক। দয়া করে আর খোঁচা দিও না।
- হ্যাঁ ঠিক সময় গেলে সব কিছু একটু একটু করে বদলে যেতে থাকে। কত পরিবর্তন হয়।
- মা কিন্তু কিছুটা অনুতপ্ত। মুখে বলে না কিন্তু হাবভাবে প্রকাশ পায়।
- হয়তো। কিছু পাপের শাস্তি তাকে পেতেই হবে।এটাই নিয়তি।
-তুমি আর মা কেউ কোন অংশে কম না। একেবারে কাঠখোট্টা আর অহংকারী ।
- তোমার মা শিকারী আর আমি শিকার।
টায়রা কথা ঘুরালো।
- কিরে তরু এখানেই দাড়িয়ে থাকবি? দিদার সাথে দেখা করবি না।
-চলো ননদিনী উপরে যাই আগে ওনার সাথে দেখা করি। হাজার হলেও উনি মনে করে তলব করেছেন!
-মা তো এখন উপরে থাকে না ভাবি।
-ভাবি? ডাকটা বেশ লাগছে কিন্তু।
- ওভাবে বলো না। সে রাতে কিন্তু তোমাকে ভাবি বলেই সম্মোধন করেছিলাম তুমি উত্তেজনায় খেয়াল করোনি হয়তো।
- থাক পুরানো কথা। তিক্ততা বাড়বে এতে।তবে তোমার সে উপকার আমি কখনও ভুলনো না।ওই ঘটনা ভাবতে এখনও আমার গায়ে কাঁটা দেয়। যদি তুমি ফোনটা না করতে তাহলে আমরা মাঝ পথে গাড়ি থেকে নেমে পড়তাম না।ড্রাইভার অবশ্য বিরক্ত হয়েছিল হঠাৎ গাড়ি থামার কথা বলতে। মাথা খারাপ হয়ে গেছে আমার ভেবেছিল। যদি তোমার কথা বিশ্বাস না করতাম তাহলে আজ আমরা কোথায়? মরে ভুত হয়ে যেতাম। যাক প্রসঙ্গ বদলানো যাক।তোমার মা নিচের ঘরে কেন? উপরে কি হয়েছে?
- সময়ের পালা বদল ঘটেছে
- মানে?
-মায়ের আদরের ছেলেরা যাদের জন্য মায়ের এত এত অন্যায় দূর্নীতি করতে হলো সেই তারা মা কে তুমি যেই ঘরটাতে এসে উঠেছিলে সেই ঘরটাতে রেখেছে। দেখ তুমি নিজেই এসে দেখে যাও তার শেষ পরিণতি।বিছানা থেকে উঠতে পারে না। এই বয়সে তার হাজারটা অসুখ। আর সেজন্য তো তোমাকে ডাকা।শুধু নিজের মা বলে সহ্য করি তার অন্যায়গুলো। এখন আর ভালো লাগে না। জানো তো।
-কর্মফল বলে একটা জিনিস আছে তুমি বিশ্বাস করো টায়রা।
-আমার বিশ্বাস অবিশ্বাসে কিছু যায় আসে না।শোন জরুরী কথাটা বলে রাখি সেই রাতে যে আমি তোমাকে ফোন করেছিলাম তুমি যেন সেই কথা কাউকে বলবে না। কি করে বেঁচে গেলে সেই প্রশ্ন আসতে পারে। মা কিন্তু আমার কাছে অনেকবার জানতে চেয়েছে। বিশেষ করে বছর পাঁচেক আগে তার কোন এক কর্মচারী ষখন তোমাদের মা মেয়ের খোঁজ এনে দেয় তখন থেকে। সত্য জানাজানি হলে আমার সমস্যা হবে। মায়ের অবশ্য কোন ক্ষমতা নেই কিন্তু অন্য কেউ জানতে পারলে সমস্যা আছে। জানো, মা এখন সবচেয়ে বেশি অসহায়।এখন সে একরকম ভিখারিই বলা চলে। ছেলেরা সব কেড়ে নিয়েছে। আর জানো কি না জানি না ভাইয়ারা সব বিনা পরিশ্রমে পাওয়া সম্পত্তি দেদারছে বেঁচছে আর টাকা উড়াচ্ছে। বড়টা তো ক্যাসিনো ব্যবসার সাথে জড়িত।কি বলবো। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোর ও একই অবস্থা ধুঁকে ধুঁকে চলছে কোন রকম। সব পাপের ফল বুঝলে। যাক অনেক কথা বললাম। তরু কি নিয়ে পড়ছে?.ওর কি পড়াশোনা শেষ?
বি সিএস দিয়েছে ।
-তোমার লড়াই করার স্পীড দেখে আমি সত্যি অবাক হয়ে যাই। মায়ের যোগ্য মেয়ে।
-সে রাতে তুমি যদি উপকারটুকু না করতে তাহলে এই দিন দেখতে হতো না টায়রা । আমি চির কৃতজ্ঞ তোমার প্রতি। কিন্তু তুমি হঠাৎ বদলে গেলে কীভাবে?এটা কি কোন মিরাকল ছিল?
- মায়ের সমস্ত অন্যায়ের স্বাক্ষী আমি।তুমি চলে যাবার পরে আমাদের গাজীপুরের জুতোর ফ্যাক্টরীতে আগুন লাগে। আমার কেন জানি মনে হয় প্রকৃতির প্রতিশোধ শুরু হয়ে গেছে। ঠিক তখনই আরো বড় অন্যায়ের কথা জানতে পারি । পৈশাচিক ষড়যন্ত্রের কথা যখন জানতে পারলাম। এত বড় পাপ থেকে কেউ বাঁচতে পারবো না আমার মনে হলো। আগুনের লেলিহান শিখা আমাদের দিকে ধেয়ে আসবে।মা প্রতিশোধের খেলায় উন্মত্ত হয়ে গেছে। বিচার বোধ হারিয়েছে। এর ফল কখনো ভালো হতে পারে না। পুড়িয়ে মারবে সব্বাইকে পুড়িয়ে মারবে এখনই প্রতিকারের ব্যবস্থা না করলে। তখন তোমাকে খবরটা জানাবার প্রয়োজন বোধ করলাম।
-ফোন নম্বর পেলে কোথায়? আমাদের উকিল তোমার উকিলের কাছ থেকে জোগাড় করেছিলো। তুমি তোমার কর্মস্থল থেকে কোথায় কোথায় বদলি হয়ে গিয়েছিলে? কোথায় পালিয়ে ছিলে এত দিন।
-সে অনেকদুর। কয়টা জায়গারর নাম বলবো । তোমাদের প্রতি আমার এখনও আস্থা ফিরে আসেনি ,রাগ করো না। ....
ফিরে আসার সময় জোবাইদা বেগমের চাহনি এখনও ভুলতে পারছে না জুলেখা। জোবাইদা বেগমের আজকের পরিণতিতে তার শুধু একটা কথাই মনে হয়েছে মানুষ ক্ষণিকের জীবন নিয়ে এই যে এত বড়াই করে।এত এত আয়োজন করে, সব কি ভোগ দখল করতে পারে? এতে কি লাভ হয় শেষ পর্যন্ত ? জীবন তো ক’দিনের মাত্র।অলীক মায়াজাল ছাড়া কিছু নয়।সবই মিছে সবই ফাঁকি । দিন শেষে পাপের বোঝা ই শুধু ভারি হয়। আর কিছু নয়।
সমাপ্ত
সতর্কীকরণঃ কপি এবং শেয়ার করা সম্পূর্ণ নিষেধ।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

ছবির লিঙ্ক প্রথম পর্বে দেওয়া আছে।

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:৪৮

জুল ভার্ন বলেছেন: চমতকার সমাপ্তি! +

০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:৫৯

ইসিয়াক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ সহ কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভকামনা রইল।

ভালো থাকুন সবসময়।

২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:০২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: মিয়া ভাই আপাতত উপস্থিতির জানান দিলাম।বড় গল্প সময় নিয়ে রাতের দিকে আসছি।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:০২

ইসিয়াক বলেছেন: অপেক্ষায় রইলাম প্রিয় ব্লগার। শুভকামনা সব সময়।

৩| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:৪৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: ইসিয়াক,




বাহ.... চমৎকার এন্ডিং! গল্পটার সবটুকু সুন্দর ও জোড়ালো বুনটের।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:০৩

ইসিয়াক বলেছেন:


চমৎকার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।

পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো।

শুভকামনা সতত।

৪| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:৫৩

অক্পটে বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন। শেষ পর্বে এসে তড়িঘড়ি করে শেষ করার চেষ্টা করেছেন।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:১৬

ইসিয়াক বলেছেন: প্রিয় ব্লগার,
আমি আপাতত একটা রহস্য উপন্যাস নিয়ে ব্যস্ত আছি। তার মধ্যে সেদিন হঠাৎ করে একটা লাইন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগলো। কিছুতেই নামাতে পারলাম না। লাইনটা হলো" মা বাবার কি আজ ফাঁসি হয়ে যাবে?" ।

লিখতে লিখতে গল্পটা বড় হয়ে গেল। যতবার পড়ি তত বড় হয় কি একটা অবস্থা। কমপক্ষে দুইশোবার পড়েছি আর বাড়তি লাইন কেটে ছেটে দিয়েছি বা যোগ করেছি। এদিকে রহস্য উপন্যাসটি তাড়াতাড়ি না লিখলে মাথা থেকে বের হয়ে যাবে।একেবারে শেষ দুটো অংশ আরও বড় ছিল। বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে বলে কেটে ছোট করেছি বাধ্য হয়ে। কারণ ব্লগে বড় গল্পের পাঠক কম।

এটা কোন অজুহাত নয়। আপনার আন্তরিক মন্তব্যের কারণে বলতে ইচ্ছে হলো। চমৎকার গঠন মূলক মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন প্রিয় ব্লগার।

শুভকামনা সতত।

৫| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:৩৭

অক্পটে বলেছেন: না না অজুহাত তো অবশ্যই নয়। ব্যপারটা বুঝতে পেরেছিলাম।
আপনার এই লেখার প্লটটি খুব চমৎকার ছিল। আমিও খুব মনোনিবেশ দিয়ে পড়ছিলাম (ভাল লেখা বড় হলে আমার আপত্তি নেই বরং ভালো লাগে) তাছাড়া আপনার লেখায় জীবন চরিতের খাটিঁ দকি গুলো থাকে বলে ভালো লাগে খুব। আরো একটু সময় দিতে পারলে লেখাগুলো নিশ্চিত অনবদ্য হবে।

১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৯:২৭

ইসিয়াক বলেছেন:


আবারো চমৎকার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত করলেন প্রিয় ব্লগার। পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন ।

শুভকামনা সতত।

৬| ১০ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১:১৭

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্পটি যদিও বেশ কয়েক বসাতে শেষ করেছি। তাও আমার কাজের ফাকে ফাকে পড়ার কারণে। তবে পড়ে মনে হলো একজন সার্থক রুপকারের বর্ণনা এমনি হয়। লেখার চুম্বক অংশ শুরু থেকেই উপলব্ধি করেছি। ধন্যবাদ এমন একটি তরতাজা গল্প উপহার দেওয়ার জন্য।

১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:১৮

ইসিয়াক বলেছেন: প্রথমে দেরিতে প্রতি মন্তব্যে আসার জন্য ক্ষমা চাইছি। আপনার চমৎকার মন্তব্য আমাকে আরও লিখতে অনুপ্রেরণা জোগাবে নিশ্চয়ই।
অনেক দিন পরে আপনার মন্তব্য পেয়ে সত্যি ভালো লাগছে।

শুভকামনা রইল।
ভালো থাকুন সবসময়।

৭| ১০ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:৫৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন:
অসাধারণ। খুব ভালো লাগলো।সত্যিই ভালো লিখেন

১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:০৮

ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ মহী ভাই।

৮| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর গল্প। লেখায় মুন্সিয়ানা আছে।

১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:০৮

ইসিয়াক বলেছেন: চেষ্টা করছি ভালো করার দেখি সামনে কি হয়।

৯| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:২১

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সুন্দর সমাপ্তি। যে যেমন করে তেমনই পায়।
ধন্যবাদ সুন্দর গল্প উপহার দেয়ার জন্য

১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:০৯

ইসিয়াক বলেছেন: পাঠে মন্তব্যে ও লাইকে কৃতজ্ঞতা রইলো । ভালো থাকুন সবসময়।

১০| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:১৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আবার দৌড়াইতে গেলাম। পরে পাইড়া বড় কইরা রিভিউ দিমু নে। আপনে মন্তব্যের উত্তর দেন বহুত দেরীতে। অভ্যাস বদলানের চেষ্টা করেন। :P

১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:১৩

ইসিয়াক বলেছেন:




এত দৌড়াইলে তো জীবন যৌবন সব এক্কেরে শেষ হইয়া যাইবো। কি আর করুম। শুনবেন না যখন....। আইয়েন আপনের সুযোগ মত। মন্তব্যের উত্তর দেরিতে দেওনের কারণ আছে দেখি কত বার আপনে আমারে খোঁজেন। ভালোবাসার পরীক্ষা লই আর কি ! হা হা হা B-)) :-B :P

১১| ২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:৪৮

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: গল্পের দুটো পর্বই একসাথে পড়ে নিলাম। গল্পের প্লট ভালো ছিলো। তবে নামকরণ নিয়ে আমার একটু কথা আছে। গল্পের নাম
' আপনা মাংসে হরিণা বৈরী'। চর্যাপদের এই প্রবাদটিকে খুব সুন্দর করে তুলে এনেছেন সম্পত্তির কারণে রাব্বির অকালে প্রাণ হারানোর মধ্যে দিয়ে। কিন্তু এই ব্যাপারটি গল্পের প্রধানতম অংশ নয়। বরং একটি সাবপ্লট হিসেবে কাজ করেছে। এই গল্পের মূল বিষয় হচ্ছে জুলেখা,তরুর সাথে জোবাইদা গং এর দ্বন্দ্ব, জুলেখা-তরুর জীবন সংগ্রাম এবং জোবাইদার কর্মফল। গল্পের মূল বিষয়গুলোকে হালকা সাপোর্ট দিয়েছে প্রবাদবাক্য সম্পর্কিত বিষয়টি। আর গল্পের মূল থিম অনুসারে নামকরণটি পুরোপুরি সার্থক হয় নি বলে আমার মনে হয়েছে। এক্ষেত্রে আপনার মতামত ভিন্ন হতে পারে।

গল্পের সমাপ্তিটা ভালো হয়েছে। শুভচিন্তার জয় হয়েছে।ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের যাপিত জীবনের সংগ্রাম, দুঃখ, মানুষের লোভ, নীচতা ও পাশবিকতার গল্প ভালো লেগেছে।

২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:১১

ইসিয়াক বলেছেন:





: প্রিয় তমাল ভাই,
এত সুন্দর একটা গঠনমূলক মন্তব্যে সত্যি অনুপ্রেরণা পেলাম। এই গল্পটা লেখার আগে একটা লাইন মাথায় ঢুকে গিয়েছিল। মা আজ কি বাবার ফাঁসি হবে? কেন এমন হলো জানি না। কিছুতেই মাথা থেকে লাইনটা ঝেড়ে ফেলতে পারলাম না। তখন একটা ঘটনা দাড় করাব চেষ্টা করলাম।আপাতত তার উপরে কিছুটা লিখলাম। নামটা তখন উপযুক্ত ছিল। কিন্তু যতবার পড়ি ততবার গল্পটি বড় হতে থাকে। তখন গল্পটি অন্য দিকে মোড় নেয়। কিন্তু নামটা আর বদলাতে ইচ্ছে করলো না তখন।

#আপনার মত মনোযোগী পাঠক দু-চারজন পেলে বারবার লিখতে ইচ্ছে করে। সাথে থাকার জন্য, কৃতজ্ঞতা জানবেন প্রিয় ব্লগার।
শুভকামনা সতত।

১২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:২৩

কল্পদ্রুম বলেছেন: আপনার গল্পে একটা ব্যাপার লক্ষণীয়। আপনি সংলাপ খুব ভালো লিখেন। অনেকটা নাটকের সংলাপের মত। গল্প নিয়ে আরো ভাবতে পারতেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.