নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
কয়েক মাস ধরে মাঝে মাঝে জ্বর আসে আবার সেরে যায়। গত দুপুরের পর থেকে হঠাৎ ই আবার ভীষণ জ্বর এলো ভিক্ষুক জরিনা বিবির।আজ সকালে জ্বর কিছুটা কমতেই প্রথমে পানি পিপাসা পেল খুব তারপর পড়লো পেটে টান ।পোড়া পেটে টান পড়লে বা কি! তাঁর তে সাত কুলে কেউ নেই। কে দেবে খাবার?কে দেবে খাইয়ে? কার এত দায় পড়েছে। প্রায় পুরো একটা দিন অভুক্ত সে।
জন্ম অবধি কখনও তার পরিচয় পথ শিশু কখনও কুলি বা ফুলওয়ালী আবার কখন ফাই ফরমাস খাটা ছুটা কাজের লোক।একসময় নানা কৌশলের ফাঁদে বা প্রলোভনে নিজের কুমারীত্ব বিসর্জন দিয়ে জমজমাট বারবনিতার জীবন। শেষে যখন রুপ যৌবনে ভাটা পড়ে গেলো তখন ধরলো দালালি। বরাবরই সে বেশ খানিকটা বুদ্ধিতে হালকা প্রকৃতির । সামান্য ভুলে একটা এক্সিডেন্টে ভিক্ষাই হলো শেষ গতি। সে জীবন দীর্ঘ জীবন।তাও প্রায় ত্রিশ বছর!!!¡!!!
অসুস্থ জরিনা বিবি অসহায় মুখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আশা নিয়ে বাঁচে মানুষ । যদিও সে ভালো করে জানে সেখান থেকে কোন সাহায্য আসবে না। তবু অভ্যাসের বশে তাকিয়ে আছে । সেখানেই তো যত অভাব অভিযোগ বঞ্চনার কথা জমা রেখেছে সে।তিনি তো অন্তর্যামী! একটু কি দয়া হয় না উনার ।
এভাবে অভুক্ত, পিপাসার্ত অবস্থায় ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তার একপাশে কৃষ্ণচূড়া গাছটার নীচে শুয়ে আছে প্রায় নিস্তেজ জরিনা। এই অবস্থায় কিছু পাওয়ার আশায় চলমান পথচারীর দিকে মাঝে মাঝে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে জরিনা বিবি। চিঁ চিঁ আওয়াজে কিছু বলতে চাইছে।কেউ শুনছে না। জ্বরের জন্য শরীর এমনিতেই দূর্বল তার আর এখন তো স্বাভাবিক চলৎশক্তি টুকু হারিয়েছে বৃদ্ধা জরিনা বিবি। তার আকুতি ব্যস্ত শহরের ব্যস্ত মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হলো।
দুপুরের প্রচন্ড রোদে গা পুড়ে যাচ্ছে তার।সরে যাবার শক্তি নেই। সময় গড়িয়ে দহন জ্বালা ধরেছে চামড়া ভেদ করে মাংসে। থরথর করে কাঁপছে দূর্বল দেহটি তার।
শরীরের পিছনের অংশ নিজের অজান্তে কখন যেন নোংরা হয়ে গেছে। দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে খুব। মাছিরা ঠিক টের পেয়ে গেছে। ভন ভন করে বিরক্ত করছে তাকে ঘিরে অবিরাম।
পথচারীরা নিদারুণ বিরক্তিতে কি সব বিড়বিড় করতে করতে জোরে হেঁটে স্থানটা অতিক্রম করছে।
কেউ কেউ বলতে বলতে যাচ্ছে এরা যে কোথেকে আসে,কে জানে?মরার আর জায়গা পায় না যত সব নোংরা আবর্জনা । অবশ্য জরিনা তখনও বেঁচে আছে।..... মরন কি অত সোজা।
অবশেষে ভিক্ষুক জরিনা বিবির দীর্ঘ জীবনের অবসান হলো।মধ্য রাত্রে মারা গেল সে।জরিনার দুই পাশে দুটো কুকুর তার গা ঘেঁষে বসে আছে। জরিনার ঠান্ডা দেহের অনুভব তাদের মনে অমঙ্গল চিহ্ন এঁকে দিয়েছে মনে হয়। করুন তাদের চোখের দৃষ্টি। মাঝে মাঝে মন কেমন করা সুরে ডেকে উঠছে তারা। শোক পালন করছে মনে হয়!
জরিনা বিবি কুকুর দুটোকে তাঁর বেঁচে যাওয়া খাবারগুলো খেতে দিতো।কৃতজ্ঞতা অথবা ভালোবাসার টান সেখান থেকে শুরু মনে হয়।...
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:০৯
ইসিয়াক বলেছেন:
রাােসল আপনাকে আমার ব্লগে স্বাগতম।
আসলে আমরা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মন চাইলেও অনেক কিছু করতে পারি না , নানা সামাজিক সীমাবদ্ধতার কারনে। তবু হাজার সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমাদের চেষ্টা থাকবে বাস্তব জীবনে ভুক্তভোগীদের জন্য কিছু করার। ধন্যবাদ।
২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৮
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এই মেয়েটা কাল সন্ধ্যায় ফুটপাতে পড়ে ছিল। পানি ছিঁটা দিয়ে জাগালাম। সারাদিন অভূক্ত ছিল। খুব কষ্টের জীবন এদের।
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:১২
ইসিয়াক বলেছেন:
আহা! কত ছোট বাচ্চা। ও কি স্কুলে যায়? পারলে পথ শিশুদের জন্য যে সব সংস্থা কাজ করে তাদের সাথে এই বাচ্চাটির যোগাযোগ করিয়ে দিন। সামনে শীত আসছে। এই টুকু বাচ্চা কি করে থাকবে রাস্তায় রাস্তায়!
৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কষ্ট গল্প
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:১৪
ইসিয়াক বলেছেন:
হ্যাঁ আপু কষ্টের গল্প। বাস্তব গল্প। লিখতে মন চায় না এত কষ্টের কথা। তবু কি করে যেন লেখা হয়ে যায়। কবে যে শেষ হবে এই বৈষম্যের।
৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৩৫
ফুয়াদের বাপ বলেছেন: ভয়াবহ কষ্ট বর্ননা গল্পের পরতে পরতে। ক্ষুধার্ত মানুষের কোন ধর্ম-বর্ন নেই। সামনে সুযোগ পেলেই সামর্থ্যমতো ক্ষুধার্তে অন্ন প্রদান সকলেরই কর্তব্য। করোনার এই কালে অনেক নিন্মবিত্ত পরিবার অর্ধহার-অনাহারে দিনাতিপাত করেছে। পথপারে পড়ে থাকা মানুষগুলোর খাদ্যকষ্ট বর্ননাতীত।
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:১৭
ইসিয়াক বলেছেন:
যথার্থ বলেছেন প্রিয় ব্লগার ,
ক্ষুধার্ত মানুষের কোন ধর্ম-বর্ন নেই। সামনে সুযোগ পেলেই সামর্থ্যমতো ক্ষুধার্তে অন্ন প্রদান সকলেরই কর্তব্য।
ভালো থাকুন সবসময়।
শুভকামনা রইলো।
৫| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৪৭
অধীতি বলেছেন: প্রতিদিনের গল্প, ভালো ভাবে লিখেছেন।
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:১৭
ইসিয়াক বলেছেন:
ধন্যবাদ ভাইয়া।
পাঠে ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
৬| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:১৪
জুল ভার্ন বলেছেন: কষ্ট.......
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:১৮
ইসিয়াক বলেছেন:
ধন্যবাদ
৭| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:০১
আহমেদ জী এস বলেছেন: ইসিয়াক ,
জরিনা শুধু একজন নয়, এমন জরিনারা হাযারে হাযার! সংসারে-সমাজে-রাষ্ট্রে এরা আবর্জনা হয়েই পড়ে থাকে। এমন কোনও আবর্জনাবাহী গাড়ী আমরা বানাতে পারিনি আজও যাতে করে এইসব আবর্জনা তুলে কোনও বর্জ্য পরিশোধনাগারে নিয়ে যেতে পারি!
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:২৬
ইসিয়াক বলেছেন:
জানি এর কোন সমাধান নেই। একমাত্র রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে যদি কিছু হয় কিন্তু যাদের করার কথা তারা তো অন্ধ ,কালা বধির।
ভালো থাকুন প্রিয় ব্লগার শুভকামনা রইলো।
৮| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১৭
জ্যাকেল বলেছেন: আহাঃ জরিনা।
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:২৭
ইসিয়াক বলেছেন:
ধন্যবাদ।
৯| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আহ!! নিদারুন জীবনের অবসান
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩৯
ইসিয়াক বলেছেন:
এরকমই তো হয় প্রিয় ব্লগার। যদিও এমনটি কখনও কাম্য নয়। কবে যে এই সব বৈষম্য দুর হবে আমাদের সমাজ থেকে। জানা নেই। তবু আশা রাখি।
শুভকামনা রইলো।
১০| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: জরিনাদের জন্য কিছু করতে হবে। কারন এরকম জরিনা সমাজে অভাব নেই।
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩৯
ইসিয়াক বলেছেন:
হুম।
১১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমি একজন জরিনাকে চিনি।
তাকে নিয়ে আজ লিখব। পড়ার দাওয়াত দিয়ে রাখলাম।
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪০
ইসিয়াক বলেছেন:
পড়েছি।
১২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:২২
কল্পদ্রুম বলেছেন: ভালো লাগলো পড়ে। সুচারুভাবে সমাপ্তি টেনেছেন।
১৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:২৬
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বেশ আবেগময় লাগলো।
পোস্টে পঞ্চম লাইক।
শুভকামনা প্রিয় ইসিয়াক ভাইকে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৮
রাসেল বলেছেন: ভাল এবং কষ্ট দুটোই অনুভব করলাম। কিন্তু বাস্তব জীবনে ভুক্তভোগীদের জন্য কিছুই করলাম না।