নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই রকম পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি যেখানে সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখা হবে। যেখানে থাকবে না কোন পাপ পঙ্কিলতা।

ইসিয়াক

সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ সাহসীকা

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:০৯



সুমি টানা দুই দিন কলেজে যায় নি। ফোনও বন্ধ রেখেছে । কারও সাথে কোন রকমের যোগাযোগ নেই তার। কি এমন হলো হাসি খুশি মেয়েটির?
তৃতীয় দিন সকালে সদলবলে বন্ধুরা সব হাজির সুমির বড় বোনের বাড়িতে যেখানে সুমি কলেজে যাতায়াতের সুবিধার জন্য আপাতত অবস্থান করছে। হোস্টেলে সিট পেলে উঠে যাবে এরকমই পরিকল্পনা ছিল। আর যাই হোক ২২ কিলোমিটার জার্ণি করে সময় মত কলেজ পৌছানো বেশ ঝামেলার ব্যপার। ক্লাস করতেও ক্লান্তি লাগে তার উপর বাসে যে ভীড়!
-কলেজে আসছিস না কেন?
সুমি কোন উত্তর দেয় না।
অনিমা আবার জিজ্ঞাসা করে
- কথা বলছিস না কেন? কি হয়েছে তোর? এমন দেখাচ্ছে কেন তোকে?
কি এক অজানা অভিমান নিয়ে জানালার দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয় সুমি। বলে,
- জানি না।
এই মুখ সে আর দেখাতে চায় না। কি করে দেখাবে? কি লজ্জা! কি লজ্জা!!
-দুই দিন কলেজে যাস নি, কোচিং এ ও এটেন্ড করছিস না সব ক্লাস তো হচ্ছে। তুই পিছিয়ে যাবি তো। কি সমস্যা তোর!
সুমি চুপ করে আছে। এত লোক জন তার কাছে অসহ্য লাগছে।কেন জানি তার কথা বলতে আর ইচ্ছে করে না।
অনিমা, তুলি, চৈতি একটা সময় পরে হাল ছেড়ে দিয়ে নানা কৌতুহল নিয়ে ফিরে চলে গেল।
কি হলো সুমির যে হঠাৎ বদলে গেল। এ প্রশ্নের কোন উত্তর পায় নি তারা।
সুমি ব্যাগ গোছায়। শরীরের ব্যাথা এখনও আছে।হঠাৎ দুর্যোগে জীবনের ছন্দ হারিয়ে গেছে তার। কোনকালে সে স্বতঃস্ফূর্ততা ফিরবে কি আবার?
নিজের বড় বোনের স্বামীর এমন পৈশাচিক রুপ দেখে জীবনের প্রতি ঘৃণা ধরে গেছে। এর থেকে কি মৃত্যু শ্রেয়?
ঘরের মধ্যে ঘৃণা ভরে থুতু ফেলল সে।
থু!থু!!থু!!!
আজ দুপুরের পর মা আসবে তাকে নিয়ে যেতে। বাবা হীন সংসারে মা-ই একমাত্র অভিভাবক। আরেক জনও অভিভাবক হিসাবে ছিল যাকে বাবার মত ভক্তি শ্রদ্ধা করতো সুমি।কিন্তু রক্ষক ই ভক্ষক হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে যখন তখন জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা আসা স্বাভাবিক। মা এলে বোনের বাড়ির পাট এবার চুকবে তার। তারপর? তারপর উদ্দেশ্যহীন গন্তব্য।

ইজিবাইক রবীন্দ্রনাথ সড়কের মাথায় আসতেই সুমি কেমন যেন বদলে গেল। বোনের কাকুতি মিনতি বোনাইয়ের নানা প্রলোভন মায়ের নীরবসম্মতি সব ভেসে গেল এক নিমেষে । ভিতর থেকে কে যেন শক্তি যোগাচ্ছে তাকে।
অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে সুমি। অপরাধী সে যেই হোক।
সুমি বেশ কড়া গলায় ড্রাইভারকে বলল
- ড্রাইভার সাহেব থানার সামনে গাড়ি থামান। আমি নামবো।
জোহরা খাতুন বিষ্ময়ে অবাক হয়ে তাকান। কিছু একটা ভাবেন। যাক মেয়েটা যা ইচ্ছে হয় করুক। তবুও যদি একটু স্বান্তনা পায়।

সুমি ঠিক করেছে গত দুই দিন আগে তার সাথে হয়ে যাওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ সে করবে। অপরাধীর এমন শাস্তি দেবে যেন আর কেউ রক্ষক হয়ে ভক্ষক হিসাবে আবির্ভূত হবার সাহস দেখাতে না পারে ।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:২৩

ভুয়া মফিজ বলেছেন: সুমির বড় বোনের বাড়ি থেকে কলেজের দুরত্ব ২২ কিমি? আসা-যাওয়া দিনে ৪৪ কিমি? বিষয়টা গোলমেলে মনে হচ্ছে।

গল্প ছোট হলেও ম্যাসেজটা অনেক বড়। ভালো লেগেছে। সমাজ থেকে এসব পশুদের উপড়ে ফেলতে মেয়েদের সাহসী হওয়া জরুরী।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৩৬

ইসিয়াক বলেছেন: প্রিয় ব্লগার, অনেক দিন পরে আপনাকে আমার পোস্টে পেয়ে ভালো লাগলো।

এবার আসি দূরত্বের হিসাবে। মনে করেন যশোহর শহর থেকে চৌগাছা উপজেলা ২৭ কিলোমিটার দূরে । মোটামুটিভাবে ১৮/২০ কিলোমিটার দূরত্ব এই এলাকার মেয়েদের কলেজে ( বিশেষ করে এম,এম কলেজ) আসার ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা।
১। সকালে বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষের বাসে প্রচন্ড ভীড় থাকে। যদিও পনেরো মিনিট অন্তর গাড়ি ছাড়ে।
২। লোকাল বাসে বাজে মানসিকতার লোকজন প্রায়ই থাকে। তাদের দ্বারা কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা অনেক সময় নিগৃহীত হয়।
৩। কোচিং টিউশনি সেরে আসতে আসতে কখনও কখনও রাত বা সন্ধ্যা হয়ে যায়। তখন আরেক সমস্যা। যদিও সি এন জি চলে তবু রাতে কিছু খোলা মাঠ পার হতে হয়।
এরকম নানাবিধ সমস্যার কারণে যশোর শহরের কোন কলেজে ভর্তি হলে নিকট আত্নীয়, মেস বা কলেজের হোস্টেলে অবস্থান করে।

সবচেয়ে বড় কথা উন্নয়নের জোয়ারে অত্র এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অতিশয় নাজুক।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন।
শুভ কামনা রইলো।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৫৮

ইসিয়াক বলেছেন: এই ২৭ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে এক ঘন্টা / সোয়া এক ঘন্টা সময় লাগে।বাসস্ট্যান্ড থেকে কলেজে পৌঁছাতে রিকশায় বা ইজিবাইকে আরও পনেরো / বিশ মিনিট সময় লাগে।
ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার।

২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:২৪

জটিল ভাই বলেছেন:
প্লটতো বর্তমান সমাজের। এখন কি থানাও বর্তমান প্রেক্ষাপটের ন্যয় আবার তাকে লাঞ্ছিত করবে???

জটিলবাদ প্রিয় ভাই।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৪৯

ইসিয়াক বলেছেন: একটা মেয়ে যখন এমন ঘটনার মুখোমুখি হয় তখন তার মনের যে কি যন্ত্রণা শুধু সেই ভুক্ত ভোগি মেয়েটিই জানে। এই ধরনের সমস্যা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে তার অনেক অনেক সময় লাগে। কারণ আমাদের সমাজ লাঞ্ছিত মানুষকে আরও লাঞ্ছনা দিতে উঠে পড়ে লাগে।
এক্ষেত্রে ভুক্তভোগী মেয়েটির প্রতি আমাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। অপরাধীকে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। অপরাধীকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।

শুভ কামনা রইলো প্রিয় ব্লগার।

৩| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৫৪

জাহিদুল ইসলাম ২৭ বলেছেন: গল্পের মতো প্রতিবাদী নারীই সমাজে বেশি প্রয়োজন।সুন্দর গল্প লিখেছেন।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:০১

ইসিয়াক বলেছেন: প্রতিবাদই পারে অন্যায়কে রুখতে। সেই সাথে আমাদের সকলকে আরও সচেতন হতে হবে।
কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভ কামনা সতত।

৪| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৫৫

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: উচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিবাদী হতেই হবে মেয়েদের

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:০২

ইসিয়াক বলেছেন: গল্প পাঠে, মন্তব্যে এবং লাইকে কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভ কামনা রইলো।

৫| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:৪৫

জোবাইর বলেছেন: ভালো হয়েছে গল্প, বিশেষ করে সমাপ্তিটা! একেবারে ছোট গল্পের মতই হয়েছে। তবে একটু বেশি ছোট হয়ে গেছে। আরেকটু পেছন থেকে শুরু করতে পারতেন। যেমন সুমির পরিবার ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক অবস্থা, বড় বোনের স্বামীর ভালোমানুষী মুখোশ ইত্যাদি। শুভ কামনা রইলো।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪২

ইসিয়াক বলেছেন: প্রিয় ব্লগার,
অনেক দিন পরে আপনাকে ব্লগে দেখে এবং আমার পোস্টে পেয়ে আনন্দিত হলাম।

ব্লগে বড় গল্প দিলে অনেক সময় ব্যস্ততার জন্য অনেকে এড়িয়ে যায়। আপনার মতামতের সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত যে গল্পটা আরেকটু বিস্তারিত হলে ভালো হতো।
পাশে থাকার জন্য ও চমৎকার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো।

আপনার জন্যও শুভকামনা।
ভালো থাকুন সবসময়।

৬| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৫

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: অশ্লীলতা না এনেই সমাজের অশ্লীলচিত্র তুলে ধরেছেন................. লেখা ভালো হয়েছে

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৩

ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন সবসময়।
শুভ কামনা রইলো।

৭| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ভালো লিখেছেন, বেশ ভালো লিখেছেন।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৬

ইসিয়াক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ সহ কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভ কামনা সতত।

৮| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৭

এপোলো বলেছেন: ভালো লেগেছে।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৭

ইসিয়াক বলেছেন: মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন সবসময় ।

৯| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:০৪

শায়মা বলেছেন: এখন আর সেই আগের নারীরা নেই।

নারীরা যথেষ্ঠ শক্তিশালী।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৯

ইসিয়াক বলেছেন: হ্যাঁ আপু দিন বদলে গেছে।
অন্যায়ের প্রতিকার করতে হলে সাহসী ও প্রতিবাদি হতে হবে।
শুভ কামনা রইলো আপু।

১০| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৪৭

অপু তানভীর বলেছেন: এটাও ছোট গল্পের সার্থকতা ! অল্প কথায় পুরো একটা চিত্র ফুটিয়ে তোলা ।
চমৎকার গল্প !

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৪১

ইসিয়াক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় গল্পকার।
মন্তব্যে প্রীত হলাম।

শুভ কামনা সতত।
ভালো থাকুন সবসময়।

১১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ ভোর ৪:১২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মেয়েরা এখন আর অবলা নাই। সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়েছে। ভালো লেখা

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৪৬

ইসিয়াক বলেছেন:

শুভকামনা রইলো মহী ভাই।

১২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৩০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: নারী কোথাও নিরাপদ নয়। অমানুষে ভরে গেছে দেশ।

১৩| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:১৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: এইরে দিল যে কেচ্ছা ফাঁস করে....
লেখা ভালো হয়েছে। মেসেজটা সুন্দর। ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সে মেয়েরা সবচেয়ে বেশি শিকার। নিকট আত্মীয়দের কাছে এমন ঘটনা খুবই বেদনাদায়ক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.