নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
রোজা ও ঈদ উপলক্ষে স্কুলে লম্বা ছুটি পড়ে গেছে কিন্তু স্কুল ছুটির পরদিন বেতন তুলবার জন্য আমি ও আমার সহকর্মীরা স্কুল এ এসে হাজির হয়েছি। যথাসময়ে বেতন তুলে নেবার পরও একটু গল্প আর কিছু পেন্ডিং কাজ গুছিয়ে নিচ্ছি । বিশেষ করে আসন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি। এমন সময় স্কুলের ফোনে একটা কল এলো।
মোবাইলটা আমার কাছাকাছি দূরত্বে থাকাতে আমি কলটি রিসিভ করলাম।
- হ্যালো।আস সালামু আলাইকুম কে বলছেন প্লিজ?
- ওয়া আলায়কুম আস সালাম।
ওপাশ থেকে আর কোন শব্দ নেই।
- কে বলছেন নামটা বলুন প্লিজ।
একটু দ্বিধা জড়িত কন্ঠে লোকটি বলল
-আমি আসলে তেমন উল্লেখ যোগ্য কেউ না আমাকে আপনারা চিনবেনও না। একটা প্রয়োজনে ফোন দিয়েছি।আচ্ছা এটা কি সেঞ্চুরি প্রি ক্যাডেট স্কুল?
- জ্বী।আপনার প্রয়োজনটা বলুন প্লিজ ।
- আপনি কি স্কুলের কেউ?
- হু।
- আসলে আমি একটা ব্যপারে আপনার সাথে আলাপ করতে চাচ্ছিলাম।
- হ্যাঁ হ্যাঁ স্বাচ্ছন্দ্যে ।
- না মানে, আপনি কি স্কুলে আছেন? একটু বাইরে আসবেন? কিছু কথা ছিল।
- বাইরে!
- হ্যাঁ আমি আপনাদের স্কুলের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি।
- আপনি ভিতরে আসুন।সমস্যা নেই কোন।
- সামান্য একটু কথা বলতাম।দু'এক মিনিট লাগবে। আমি আসলে ভিতরে আসতে চাচ্ছিলাম না।
দু মিনিটের মাথায় বাইরে বেরিয়ে এসে দেখলাম একটা খালি রিকশার সামনে একজন মধ্য বয়স্ক লোক দাড়িয়ে আছে।সম্ভবত এই রিকশার চালক। এই ব্যক্তি কি আমাকে ফোন দিয়েছেন?
উনার দিকে তাকিয়প ফোন নাম্বারে আবার কল দিলাম।
ফোনটা বেজে উঠতে লোকটা মিষ্টি হেসে বললেন
- স্যার ভালো আছেন?
আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে বললাম
- আপনি ই তো ফোন দিয়েছিলেন? তাই না?
- জ্বী।
- আচ্ছা এবার বলুন কি বলবেন।
লোকটি ভনিতা না করে ই বলল
- গতকাল একজন মহিলা ও তার বাচ্চা আমার রিকশায় উঠেছিল।কোতয়ালী থানার সামনে থেকে।যাবে বলেছিল নেতাজী সুভাস বোস লেনে কিন্তু চলতি পথে মহিলার স্বামী মোটর সাইকেল নিয়ে হাজির হলে ভদ্র মহিলা বাচ্চাকে নিয়ে দ্রুত নেমে যান কিন্তু বাচ্চার স্কুল ব্যাগটা রিকশায় ফেলে রেখে যান। তখন আমি খেয়াল করি নি। পরে অন্য যাত্রী তুলতে গিয়ে দেখি এই ব্যাগটা রয়ে গেছে। আর ব্যাগ ভর্তি বই খাতা।গত কাল থেকে অনেক খুঁজেছি কিন্তু কোন খোঁজ মিলাতে পারলাম না উনাদের ।আমি ভাবলাম এখন এই ব্যাগ যদি হারিয়ে যায় তাহলে এত দিনের পড়াশোনার নিশ্চয় সমস্যা হবে বাচ্চাটার। তাই অনেক খুঁজে স্কুল ব্যাগটা ফেরত দিতে এলাম।
- আমাদের স্কুলের বাচ্চার ব্যাগ! এটা কি আপনি নিশ্চিত?
- হ্যাঁ।আমার মেয়েই তো বুদ্ধিটা দিলো।
- কিভাবে?
- স্কুল ব্যাগের ভিতর স্কুলের ডায়েরী আর খাতা আছে। ডায়েরির উপর স্কুলের মোবাইল নাম্বার দেওয়া আছে।সেই নাম্বারে ই তো কল করলাম।
বলেই আমার হাতে তিনি ব্যাগটা ধরিয়ে দিলেন।আমি লোকটার সততা আর দায়িত্ববোধে মুগ্ধ হলাম।গতকাল থেকে এত ঝামেলা না করে অনায়াসে এড়িয়ে যেতে পারতো বিষয়টা।এখনকার সময়ে সেটাই স্বাভাবিক। বিস্ময়ে ঘোর কাটিয়ে কিছু কিছু বলবো বলে ভাবছি তার মধ্যে ই সে খুব দ্রুত তার অটো রিকশা ঘুরিয়ে ভীড়ের মধ্যে হারিয়ে গেল। আমি পেছন থেকে কয়েকবার ডেকেও তাকে ফিরিয়ে আনতে পারলাম না।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক।
১৩ ই মে, ২০২৩ সকাল ১১:০৩
ইসিয়াক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার।
আসলে এমন মানুষ আছে বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর।
উনার আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
শুভেচ্ছা সতত।
২| ১১ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৫
শাওন আহমাদ বলেছেন: আহা! কি মন ভালো করা লেখা। ভালো থাকুক এই মানুষ গুলো যারা অন্যের ভালো থাকাটা চিন্তায় রাখে।
১৩ ই মে, ২০২৩ সকাল ১১:০৪
ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার শুভেচ্ছা রইলো।
ভালো থাকুন সবসময়।
৩| ১১ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৬
অর্ক বলেছেন: ভালো লাগলো। ছোটো কিন্তু গভীরভাবে প্রভাবিত করলো। এরকমই হওয়া উচিত।
শুভেচ্ছা জানাচ্ছি ভাই।
১৩ ই মে, ২০২৩ সকাল ১১:০৬
ইসিয়াক বলেছেন:
অনেক দিন পরে আপনাকে আমার ব্লগ বাড়িতে দেখে দারুণ ভালো লাগলো। মন্তব্যে দারুণ অনুপ্রাণিত হলাম।
ভালো থাকুন সব সময়।
শুভেচ্ছা।
৪| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:৩৬
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আজকে ঘুরপথে ব্লগে ফুল ভার্সন পেয়ে কি মজা যে পেয়েছি। পড়াশোনা করে আবার আসছি।
১৩ ই মে, ২০২৩ সকাল ১১:০৭
ইসিয়াক বলেছেন: আগে বলেন আপনার গল্পের বাকি অংশ কোথায়? আপনি দেখছি আমার থেকেও কুঁড়ে হয়ে গেছেন হা হা হা....
৫| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:৪৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: জীবনের গল্প। লোকটি খুবই সৎ মানুষ। স্কুলের বাৎসরিক পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ওনার সততার জন্য বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কিছু করা যায় কিনা ভেবে দেখতে পারেন...
১৩ ই মে, ২০২৩ সকাল ১১:১২
ইসিয়াক বলেছেন: আপনার প্রস্তাবটা সত্যি গ্রহণযোগ্য। আমি স্কুল কমিটিকে জানাবো তবে প্রস্তাব গ্রহণ করা না করা তাদের মর্জির উপর। আমি সামান্য সহকারী শিক্ষক!
তবে ওই দিন আমার পক্ষ থেকে ওনাকে একটা চায়ের অফার দিতে চেয়েছিলাম। স্কুলের ফোনে নাম্বারটা আছে। দেখি যোগাযোগ করা যায় কি-না!
পাঠ মন্তব্য ও লাইকের জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভেচ্ছা সতত।
৬| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৫১
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: বাহ্ !
মুগ্ধতা রয়ে গেল !!
১৩ ই মে, ২০২৩ সকাল ১১:১২
ইসিয়াক বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো।
শুভেচ্ছা সতত।
৭| ১১ ই মে, ২০২৩ রাত ১১:১৪
শেরজা তপন বলেছেন: এমন ভালমানুষ আছে বলেই পৃথিবীটা এখনো সুন্দর লাগে।
১৩ ই মে, ২০২৩ সকাল ১১:১৪
ইসিয়াক বলেছেন: একদম মনের কথা বলেছেন প্রিয় ব্লগার।শুভেচ্ছা রইলো।
ভালো থাকুন সবসময়।
৮| ১২ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভালো রিকশাওয়ালা বলতে হবে। এই যুগে সাধারণত কেউ কষ্ট করে ফেরত দিতে আসে না। তবে ব্যাগে টাকা থাকলে কি হত বলা মুশকিল।
৯| ১২ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯
মনিরা সুলতানা বলেছেন: সত্যি প্রশংসা পাবার যোগ্য, এই বাবা কন্যা।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৪:৩২
মিরোরডডল বলেছেন:
বিস্ময়ে ঘোর কাটিয়ে কিছু কিছু বলবো বলে ভাবছি তার মধ্যে ই সে খুব দ্রুত তার অটো রিকশা ঘুরিয়ে ভীড়ের মধ্যে হারিয়ে গেল।
কারণ বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা করেননি।
শুধু উপকার করতেই এসেছিলেন।
গল্পের রিকশাচালকের প্রতি মুগ্ধতা !!!
আছে অনেকে এরকম, এরা হচ্ছে মানুষরূপী এঞ্জেল।